স্বদেশী ঠাকুর অপেক্ষা বিদেশী কুকুর উত্তম!
লিখেছেন লিখেছেন এহসান সাবরী ০২ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:২৪:৪৩ রাত
সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুগণ! ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি শুরুতেই। বাংলা প্রবাদ বদলে ফেলার মত দুঃসাহসকে স্নেহশীল দৃষ্টিতে দেখবেন। কি আর করব বলেন!যা দিনকাল।সব জিনিসই উল্টে যাচ্ছে। পাগলেও নাকি নিজের ভালো বুঝে। মাগার আমরা বাঙ্গালীরাই খালি বুঝলাম না। আমাদের কাছে বিদেশী কুকুরের কদরই এখন তুঙ্গে! দেশের কথা ভাবতে ভাবতে আমাদের দেশপ্রেমিক নেতাদের মাথার চুল পেকে যাচ্ছে। ভাত খাওয়া বন্ধ হয়ে পোলাও চালু হয়ে গেছে। কি আর করব রে ভাই! এজন্য প্রবাদের অর্থও এখন উল্টে গেছে। প্রসঙ্গ ভুলে অন্য দিকে চলে গেলাম। আসলে ঘরপোড়া গরু তো সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ডরায়! যা নিয়েই কথা বলতে চাই, ঘুরেফিরে স্বাধীনতার দিকেই কথা হাঁটা শুরু করে।ঘটনা হল, বিদেশী কুকুর আমাদের কাছে আজকে থেকে এত প্রিয় না। এ ইতিহাস অনেক পুরনো!
তবে সর্বাপেক্ষা তরতাজা জখম দিয়েই। কয়েকদিন আগে টি-টুয়েন্টি ওয়ার্লড কাপে আইয়ুব বাচ্চুর আক্ষেপ এই উল্টো প্রবাদ বারবার স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গন নিয়ে কথা যখন উঠল আরো কিছু কথা বলে ফেলি। ওপারের যত বিখ্যাত(!) সেলিব্রেটিদের আনা হয়,তাদের নিয়ে যত মাতামাতি করা হয় তা কি আমাদের কারো চোখেই লাগেনা? কারো অন্তরেই খোঁচা দেয়না বিন্দুমাত্র? ব্যবহার্য জিনিসের দিকে তাকাই। ইন্ডিয়ান রসুন,পেঁয়াজ,চিনির নিম্নমানের কথা মা খালাদের মুখে প্রচুর শুনেছি।কিন্তু তারপরেও আমাদের বাজারে এই ইন্ডিয়ান জিনিসের কাটতি ব্যাপক। ভারতীয় শাড়ি-কাপড় আমাদের এদেশীয় উন্নতমানের ও রুচিশীল বস্ত্রশিল্পের যে চরম সর্বনাশ করেছে সেটা বোধকরি আমরা এখনো উপলব্ধি করতে পারিনি। এবার একটু পেছনের দিকে যাই।আমাদের দেশে শ্রী রবীন্দ্রনাথের জন্মবার্ষিকী পালনে যে পরিমাণ আদিখ্যেতা দেখানো হয় তা আর কারো বুকে লাগে কিনা জানিনা আমার লাগে। কারণ এই বিশ্বকবির কথা উঠলেই মনে পড়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় বলে ব্যঙ্গ করার কথা। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ হওয়ায় এদেশীয় আপামর জনতা যখন একটু উন্নত জীবনের স্বপ্নে বিভোর ছিল তখন এই বিশ্বকবি আর তার অনুসারীরাই বাধ্য করেছিল ব্রিটিশদেরকে মাত্র ছয় বছরের মাথায় এই প্রদেশভাগকে বানচাল করতে।আমার দৃষ্টিতে রবীন্দ্রনাথ বড় মাপের সাহিত্যিক হতে পারেন বটে কিন্তু চরমমাত্রায় এক সাম্প্রদায়িক ব্যক্তিত্ব। আচ্ছা, কেউ কি বলতে পারবেন, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মবার্ষিকী বা মৃত্যুবার্ষিকী এত নিরবে নিভৃতে চলে যায় কেন? আমাদের তরুণ প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করা হয় মাস্টারদা সূর্যসেনসহ আরো অনেক বিপ্লবীদের কথা বলে। কেউ জানে কেউ জানেনা, এরা কিন্তু ব্রিটিশ বিরোধী হয়েছিল বঙ্গভঙ্গকে কেন্দ্র করেই| অথচ, তিতুমীর কিংবা হাজি শরীয়তুল্লাহ কিংবা মজনু শাহদের নাম
ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে আমাদের থেকে। স্বদেশী ঠাকুরদের এই উপেক্ষা আর কতকাল?
বিষয়: বিবিধ
১২০১ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন