ব্লগিং:আক্ষেপ ও আত্মতৃপ্তির মিশ্রিত অনুভূতি!
লিখেছেন লিখেছেন এহসান সাবরী ২১ মার্চ, ২০১৪, ০৯:০৩:৫৩ সকাল
ব্লগিং করব একথা কখনো ভাবিনি। বরং শাহবাগের ব্লগারদের কীর্তিকলাপ দেখার পর অনেকটা এড়িয়েই চলার চেষ্টা করতাম এই বিষয়টাকে। শাহবাগী ব্লগাররা ৫ফেব্রুয়ারির পর প্রথম দু-এক দিন কিছু মানুষের কাছে হিরো হিসেবে আবির্ভূত হলেও ভন্ডামির রূপ বের হয়ে আসতে দেরি হয়নি। অনেকের মত তখন আমারও এই ব্লগার শ্রেণীর উপর মন উঠে গিয়েছিল।সঠিক ভাবে না জানা,আর দেশীয় মিডিয়া সমূহের প্রচারণায় ঐ শ্রেণীর ব্লগারদের গুণ গান করায় এ অবস্থা ছিল।বেশ আগে থেকেই ফেসবুকে টুকটাক লেখালেখি করা হত।কিন্তু মনের সাধ মিটত না। কারণ ফেসবুকে বন্ধু নির্বাচনে অনেক সতর্কতা অবলম্বনের জন্য খুব ভালো ভাবে সবার কাছে নিজের কথা পৌঁছে দেয়ার সুযোগ ছিলনা। এর মাঝে খোদার রহমতে ব্লগ,ব্লগিং ও ব্লগার নিয়ে নিজের ভুলও বুঝতে পারি। কিন্তু কোথা থেকে শুরু করব তা বুঝা হয়ে উঠছিল না। ইত্যবসরে খুব কাছের এক ছোটোভাই চেপে ধরল ব্লগিং করার জন্য। অনেকটা তার ক্রমাগত তাগিদের জন্যই আসা হয় ব্লগ নামক এই বিস্তৃত জগতে।সব ঠিকঠাক চলছিল। কিন্তু ব্লগিং করে আমি কি করতে পারছি এই অস্বস্তিদায়ক খোঁচা থেকে মুক্তি পাচ্ছিলাম না। আসলেই তো! একজন ব্লগার কতটুকু ভূমিকা রাখতে পারে সমাজের পরিবর্তনে? তার লেখা থেকে কি সমাজ পরিবর্তন হয়ে যায়? কি লাভ এই ব্লগিং এ? এমন অনেক প্রশ্নই উঁকি দিচ্ছিল মনে। আপাত দৃষ্টিতে ব্লগার খুব একটা উপকার করে না। তার লেখাও হয়ত অল্প কিছু মানুষই পড়ে। কিন্তু ব্লগিং এ যে আত্মতৃপ্তির এক বিশাল যায়গা আছে এটা মোটেই উপেক্ষা করার মত না। আমাদের বর্তমান কঠিন সময়ে কেউই যখন নামতে পারছে না রাস্তায়। প্রতিবাদ করতে পারছে না কোনো অনাচার,অবিচারের। সত্য কথা বলাই যখন জেল জুলুমের দিকে ধাবিত করছে তখন বিবেকের আওয়াজ অন্তত গুমরে মরছে না এই ব্লগ নামক জগতটার জন্য। আপন মনের অনুভূতি খুব নির্দ্বিধায় প্রকাশ করা যাচ্ছে।বিবেকের যে আবেদন একজন সচেতন মানুষকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে ক্রমাগত,বাধ্য হয়ে যেখানে চোখ বন্ধ রাখতে হচ্ছে সেখানে কলম গর্জে উঠার জায়গা কিন্তু এই ব্লগিং। আর সমাজ পরিবর্তন?? একার চেষ্টায় যেমন তা সম্ভব নয়,তেমন কেউ চুপ করে থাকলেও তা অসম্ভব। আমি আমার জায়গা থেকে তো কিছু বলতে পারছি! এই আত্মতৃপ্তি কিন্তু ব্লগিং জিনিসটাই দিতে পারছে। আর সবার প্রচেষ্টাই একদিন সম্মিলিতরূপে সফল হবে এটা আশা করা তো দোষের কিছুনা। আর মন যখন হতাশ হয়ে পড়ে তখন আরব বসন্তের কথা মনে আসে। এই বসন্তে বড় ভূমিকা রেখেছিল এই ভার্চুয়াল জগতটাই।
পরিশেষে সকল ব্লগার ভাইদের জন্য শুভকামনা। বিবেক কথা বলুক আপন কলমের ভাষায় এই কামনা রইল।
বিষয়: বিবিধ
১১১১ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর এক্ষেত্রে অনলাইন এক্টিভিজমের সবচেয়ে বড় মাহাত্ন্য হলঃ আপনি এই লাইনকে ছেড়ে দিলে এটা আপনার উপকারে তো আসবেই না বরং ভবিষ্যতে বিষফোঁড়া হয়ে উঠতে পারে । অন্তত এই অবস্থা যেন না হয় সেজন্যই সকল কাজের ফাঁকে অনলাইনে আসি ।
একারণেই আপনার মত খাঁটি লেখকদেরও আর বেশি বেশি ব্লগিং এ সম্পৃক্ত হওয়া উচিৎ ( অবশ্যই বাস্তবের দায়িত্ব পালন করে.. )
মন্তব্য করতে লগইন করুন