গলাকাটা ডাকাতেরাই যখন জঙ্গীবাদ বিশ্লেষক,সুশীলতা কি ভন্ডামীই নয় তবে?
লিখেছেন লিখেছেন কাজি সাকিব ১৪ আগস্ট, ২০১৪, ০৬:৩৮:২২ সন্ধ্যা
ছয়জনের সু্ইসাইড স্কোয়াড তৈরি করেন আনোয়ার হোসেন!
স্বাধীন রাষ্ট্রের সকল আইনকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে
দেশব্যাপী সশস্ত্র হামলা পরিচালনাকারী
দস্যুদল গণবাহিনী প্রধান আনোয়ার হোসেনেরাই যখন আজকে ভোল পালটে
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ধারক-বাহক আর সুশীল!
কর্নেল তাহেরকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে “ঢাকা নগর গণবাহিনীর কমান্ডার আনোয়ার হোসেন একটি পরিকল্পনা আঁটেন, যা এদেশে এর আগে কখনো ঘটেনি। ছয়জনের একটা সুইসাইড স্কোয়াড তৈরি হয়- এর সদস্যরা হলেন সাখাওয়াত হোসেন বাহার, ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, মীর নজরুল ইসলাম বাচ্চু, মাসুদুর রহমান, হারুনুর রশীদ ও সৈয়দ বাহালুল হাসান সবুজ।”
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে লেখক ও গবেষক মহিউদ্দিন আহমদের প্রকাশিতব্য গ্রন্থে এ সব কথা বলা হয়েছে। দৈনিক প্রথম আলোর ঈদ সংখ্যায়- ‘৭ নভেম্বরের সাত-সতেরো’ শিরোনামে বইটির অংশবিশেষ প্রকাশিত হয়েছে।
“প্রথমে মতিঝিলে আদমজী কোর্টে অবস্থিত মার্কিন দূতাবাস ‘রেকি’ করা হয়। পরে সিদ্ধান্ত বদল করে ধানমন্ডির ২ নম্বর সড়কে ভারতীয় হাইকমিশন ‘রেকি’ করা হয়। ঠিক হয়, গণবাহিনীর একটি দল হাইকমিশনে গিয়ে হাইকমিশনারকে জিম্মি করে তাহেরের মুক্তি এবং আরও কিছু দাবি-দাওয়া উপস্থাপন করবে। তারা খোঁজ দিয়ে জেনেছে, হাইকমিশনার সমর সেন সকাল সাড়ে নয়টায় অফিসে আসেন।
২৬ নভেম্বর সময়মতো ছয়জন অকুস্থলে হাজির। দলের নেতা বাহার তিনজন অবস্থান নিলেন রাস্তার দক্ষিণ পাশে জার্মান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের চত্বরে। তিনজন অপেক্ষা করতে থাকলেন ভারতীয় ভিসা অফিসের সামনে। সবাই সশস্ত্র। এমন সময় হাইকমিশনার এসে গাড়ি থেকে নামলেন।
সঙ্গে সঙ্গে বাহারদের দলের দুজন তাঁর দুই হাত ধরে বললেন, ‘আপনি এখন আমাদের হাতে জিম্মি। আপনার ঘরে চলুন। আপনার সঙ্গে আমাদের কিছু কথা আছে।’ সিঁড়ি দিয়ে একতলা থেকে দোতলায় যাওয়ার পথে ওপরে অপেক্ষমাণ নিরাপত্তারক্ষীরা ব্রাশফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই বাহার, বাচ্চু, মাসুদ ও হারুন নিহত হন। বেলাল ও সবুজ আহত হন।
হাইকমিশনারের কাঁধে গুলি লেগেছিল। চোখের পলকে ঘটনা ঘটে গেল। রেকি করার সময় কজন নিরাপত্তারক্ষী ঠিক কোন কোন জায়গায় ডিউটি করেন, তা তাঁরা জেনে গিয়েছিলেন। কিন্তু তাঁরা জানতেন না, একদল ভারতীয় নিরাপত্তারক্ষী দোতলায় পাহারায় থাকেন।
তিতুমীর কলেজ ছাত্রসংসদের সহসভাপতি কামালউদ্দিন আহমেদ এই অভিযানে অংশগ্রহণকারী ছয়জনের জন্য মগবাজারের নয়াটোলায় একটা শেল্টারের ব্যবস্থা করেছিলেন। ছাত্রসংসদের সহসম্পাদক ফোরকান শাহ'র বাড়িটি শেল্টার হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেখান থেকেই এই স্কোয়াডের ছয়জন ২৬ নভেম্বর সকালে রওনা হয়েছিলেন। ঘটনার পর ফোরকানের বাবা ইসরাফিল সাহেবকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
বাহার, বাচ্চু, মাসুদ ও হারুনের মৃতদেহ পুলিশের জিম্মায় দেওয়া হয়। ভারতীয় দূতাবাসের পেছনে ৩ নম্বর সড়কে ধানমন্ডি থানার পোর্টিকোর নিচে একটা ভ্যানে মৃতদেহগুলো রাখা ছিল। কামাল ও তাঁর বন্ধু ওয়াহিদুল ইসলাম শুটুল থানায় মৃতদেতগুলো দেখতে যান। শুটুলের বাবা শফিকুল ইসলাম ছিলেন ধানমন্ডি থানার সেকেন্ড অফিসার। তিনি তাঁদের দ্রুত সরে যেতে বলে।
ভারতীয় হাইকমিশনে এই অভিযানের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া হয়েছিল। প্রায় সব রাজনৈতিক দলের নেতারা এক সুরে এর সমালোচনা করতে শুরু করলেন, ডান-বাম কোনো ভেদাভেদ থাকল না।
ঢাকার পূর্ব পাশে বেরাইদ গ্রামে ঢাকা নগর গণবাহিনীর একটা জরুরি সভায় আনোয়ার হোসেন এ ঘটনার সব দায় স্বীকার করেন। সভায় শরীফ নুরুল আম্বিয়া এবং ঢাকা নগর গণবাহিনীর অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন। অধিকাংশ সদস্য আনোয়ারের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তাঁকে ফায়ারিং স্কোয়াডে পাঠানোর দাবি জানান।
শেষমেশ তাঁকে লঘু শাস্তি দেওয়া হয়। তাঁকে নগর গণবাহিনীর কমান্ডারের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। আনোয়ারের ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকায় ‘অপরাধে’ রফিকুল ইসলামকে ভর্ৎসনা করা হয়।
জাসদের নেতা-কর্মীদের পুলিশ খুঁজে বেড়াচ্ছে। গ্রেপ্তার এড়ানোর জন্য সবাই গা ঢাকা দেন। তবু গ্রেপ্তার এড়ানো কঠিন হয়ে পড়ল। একে একে আখলাকুর রহমান, মোহাম্মদ শাজাহান, আ ফ ম মাহবুবুল হক, মাহমুদুর রহমান মান্না এবং বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার অনেক সংগঠক গ্রেপ্তার হন।
পুলিশের একটি দল বাগেরহাট ও পিরোজপুরের মাঝামাঝি একটি অঞ্চলে অভিযান চালিয়ে মেজর জিয়াউদ্দিনকে ধরে নিয়ে আসে। প্রথমে তাঁকে খুলনায় নিয়ে যাওয়া হয়। খুলনা শহরে তখন একটা মেলা চলছিল। মেলা প্রাঙ্গণে তাঁকে বেঁধে রাখা হয়েছিল, যাতে সবাই দেখতে পান।”
অত্যন্ত হাস্যকর হলেও সত্য এককালের ডাকাতদলের প্রধানেরা নির্বিচারে মানুষের গলা কাটায় অভ্যস্ত বাম-রামেরা আজ সুশীল সেজে বসে আছে!মিডিয়াতে বসে বসে শুদ্ধ ভাষায় দেশের সকল কিছুতে জঙ্গীবাদের ঘ্রাণ খুঁজে বের করে!
কর্ণেল তাহের কি ছিলেন না ছিলেন সে বিতর্ক নাহয় নাই করলাম কিন্তু তারা যে দেশের প্রচলিত সকল আইনকে অস্বীকার করে সশস্ত্র হামলা করেছিলেন ভিনদেশী রাষ্ট্রদূতের উপর তাতো ১০০% সত্য!
তাহলে পরে আজ তারা কি করে সুশীল সেজে ভদ্রতার ভান ধরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফেরী করে জঙ্গীবাদের ঘ্রাণ খুঁজে বেড়ায়?
এই বাংলাদেশে আজো অবধি ঐ নষ্ট-ভ্রষ্ট ইনু-মিনুদের সর্বহারা পার্টিগুলোই সবচাইতে বড় জঙ্গীবাদী দল!
জাতির কপাল কতটা খারাপ হলে পরে এজাতীয় লোক আজ চেতনার প্রতীক বনে গেছে আর সুশীলতার ভান ধরে সুশীল শব্দটিকে করেছে কলংকিত!
বিষয়: বিবিধ
১৯৭১ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন