কয়লা হয়ে যাওয়া মনুষ্যত্ব ! ধিক্কার আওয়ামী পশুত্ব !
লিখেছেন লিখেছেন কাজি সাকিব ২৫ মে, ২০১৪, ১১:৩৭:১৫ সকাল
এ কেমন বর্বর যুগ পার করছি আমরা !
কোন মানুষের আজ স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই!
প্রতিদিন শুধু লাশ আর লাশ!
পুকুরে লাশ,ডোবায় লাশ,নদীতে লাশ,পথে লাশ,ঘাটে লাশ,বাড়িতে লাশ,গাড়িতে লাশ, লাশময় এক শশ্মান ঘাটের জীবণ অতিবাহিত করছি আমরা!
নেই কোন বিচার!
দেশে কোন সরকার আছে বলে মনে হয় না!
প্রতিনিয়ত স্বজনেরা আতংকে তার কেউ আজ আবার লাশ হয়ে ফিরে আসবে না তো?
নির্বাচন বিহীন অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে রাখা আওয়ামী সরকার এ সকল নির্মমতার বিরুদ্ধে একটাই ব্যবস্থা নিচ্ছে আর তা হচ্ছে কিছু হলেই প্রথম সুযোগেই একাজ স্বাধীনতা বিরোধীরা করেছে বলে নির্লজ্জ তামাশা করা!
আর খুব বেশি বিপদে পড়ে গেলে আসল অপরাধীদের বাদ দিয়ে ২য় সারির কাউকে ধরে এসি রুমে রিমান্ডে নেয়ার নাটক সৃষ্টি করে দৃষ্টি আড়ালের অপচেষ্টা চালায়!
আইন শৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে অপরাধ দমনের পরিবর্তে সার্বক্ষণিক ব্যতিব্যস্ত রাখা হচ্ছে বিরোধী রাজনীতি দমনে! জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার বদলে আজ তারাই জান নিয়ে নিচ্ছে!
সমগ্র দেশ আজ ভেঙ্গে পড়েছে! অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের শুধু একটাই কাজ যেভাবেই হোক অবৈধভাবে আকড়ে থাকা ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে যা করণীয় তাই করা আর দেশ গোল্লায় যাক !
সময়ঃ২০'ই মে,২০১৪,রোজ মঙ্গলবার,সকাল সাড়ে দশটা !
রোজকার দিনের মতই চলছিল ফেনীর সাধারণ মানুষের জীবণযাত্রা,কেউ জানতো না ফেনীর আকাশ আজ ঘিরে ফেলেছে অশুভ প্রেত্মাতারা !
হঠাৎ করেই যেন রক্তাক্ত জনপদ ফেনীতে শুরু হয়ে গেল ক্ষুদার্থ হায়েনাদের চারণভুমি!
প্রকাশ্য দিবালোকে গুলি করে,কুপিয়ে,আগুন দিয়ে পুড়িয়ে কাবাব বানিয়ে ফেলা হল ফেনীর ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামকে !
দিনে দুপুরে নগরীর প্রাণকেন্দ্রে এভাবে একজন মানুষকে পৈশাচিকভাবে হত্যা করা হল কেউ এগিয়ে এল না,না পুলিশ না সাধারণ মানুষ!
হত্যাকান্ডটি সংগঠিত হওয়ার পরপরই বরাবরের ন্যায় কোনরকমের তদন্তের ধার না ধেরে অবৈধভাবে ক্ষমতা আকড়ে থাকা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়ে দিলেন এ ঘটনা জামায়াত-বিএনপি ঘটিয়েছে!
http://www.newsevent24.com/2014/05/20/featured/132507
কিন্তু একটু অনুসন্ধানেই জানা গেল কারা আসলে এই অপরাধ করেছে!
হত্যাকান্ডের পরেই এলাকাবাসী এর জন্য দায়ী করলো নিজাম হাজারীকে।
http://www.dailynayadiganta.com/details.php?nayadiganta=NDAwMzE%3D&s=MjM%3D
এমনকি সাবেক সাংসদ গডফাদার জয়নাল হাজারীও নিজামকে অভিযুক্ত করলো!
অন্যদিকে নিজাম দায়ী করলো জয়নালকে!
http://prothom-feni.com/?p=322
কিন্তু একটু অনুসন্ধানেই বেরিয়ে পরলো আসল কাহিনী,ততক্ষণে ফেনীবাসীর হাতে হাতে ফিরছে মোবাইলে ধারণ করা একরাম হত্যাকান্ডের ভিডিও,মুখে মুখে ফিরছে হত্যাকারীদের নাম!
সন্দেহের শুরু হত্যাকান্ডের আগেরদিন জয়নাল হাজারীর পত্রিকা হাজারিকায় একরাম হত্যা হতে পারে সে বিষয়ে প্রকাশিত রিপোর্ট হতে!
http://hazarikapratidin.com/2014/05/19/
কথা উঠে তখনি,একরাম হত্যা হতে পারে এমন খবর আগের দিন বের হওয়ার পরেও কি কারণে প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নিতে পারলো না ?
তাহলে কি এমন কেউ এর সাথে জড়িত প্রশাসন যার আজ্ঞাবহ? তখনি বেরিয়ে আসে আসল কাহিনী !পরিষ্কার হয়ে যায় একরাম হত্যাকান্ডের সাথে কারা জড়িত,আরো পরিষ্কার হয়ে যায় যখন ভিডিওটি প্রকাশিত হয় !
একরামুল ‘গুলি-কুপিয়ে-পুড়িয়ে’ হত্যা'র নেপথ্যে
১। সম্প্রতি গণমাধ্যমে নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে সাজা কম খেটে জালিয়াতি করে জেল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার যে সংবাদ প্রকাশ পেয়েছে, এর সঙ্গে একরামের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে সন্দেহ করে ভীষণ ক্ষুব্ধ হন নিজাম হাজারী, তিনি একরামুলকে দেখে নিবেন বলে জানিয়েছেন তার ঘনিষ্ঠদের।
যার সত্যতা পাওয়া যায় ঐ রিপোর্টারের ফেসবুক স্ট্যাটাস থেকে যেখানে তিনি হত্যাকান্ডের জন্য নিজেকেই দোষারোপ করছিলেন !
২। ৫-ই জানুয়ারির নির্বাচনে একরামুল ফেনী-১ আসন থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন এবং এ নিয়ে নিজাম হাজারী বিক্ষুব্দ ছিল।
৩। সর্বশেষ উপজেলা নির্বাচনেও একরামুলকে সহযোগিতা করেনি নিজাম হাজারী।একরামুলের নির্বাচনী কাজে নিয়োজিত কয়েকটি মাইক্রোবাস পুড়িয়ে দেয় নিজাম হাজারী। একরামুলের চেয়ারম্যান হওয়া মেনে নেয়নি নিজাম হাজারী।
৩। অনুসন্ধানে জানা গেছে, টেন্ডার বাণিজ্য, ফেনীর ডায়াবেটিক হাসপাতালের আধিপত্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন ও কমিটি ঘোষণা নিয়ে ফেনী-২ আসনের এমপি নিজাম হাজারীর সঙ্গে একরামের চলছিল চরম বিরোধ হয়।
৪। সম্প্রতি তিন দফা নিজাম হাজারীর বাহিনীর সাথে মারামারি হয় একরামের দলবলের।
৫। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নিজাম হাজারীর কয়েকজন সমর্থককে নমিনেশন দেননি একরামুল।
এক বনে দুই বাঘ থাকতে পারেনা। জেল-জালিয়াতির প্রতিবেদনই একরামুল হত্যাকান্ডের কারণ!
ফেনীর মানুষের মুখে মুখে সপ্তাহব্যাপী ঘুরে বেড়ানো গুঞ্জনটি সত্য হলো। ছককাটা পরিকল্পনা অনুযায়ী নিখুঁতভাবে ঘটলো একটি হত্যাকান্ড। সবার একই কথা, এক বনে দুই বাঘ থাকতে পারে না। প্রভাব-প্রতাপ ধরে রাখার এটি এক নির্মম মরণ কামড়। ক্ষমতার দ্বন্দ্ব আর টেন্ডার ভাগাভাগিই ফেনীর রাজপথকে করেছে রক্তাক্ত।
সকল পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হলো কারা জড়িত এর সাথে !
http://dailynayadiganta.com/details.php?nayadiganta=NDAxODM%3D&s=MQ%3D%3D
দ্বন্দ্বের সূত্রপাত ও কিছু ঘটনা
রাজনীতিতে একরামের উত্থান জয়নাল হাজারীর হাত ধরেই। জয়নাল হাজারীর আধিপত্য খর্ব হওয়ার পর অন্যরা নিজাম হাজারীর অনুসারী হলেও একরাম ছিলেন ব্যতিক্রম। তিনি নিজাম হাজারীর সঙ্গে ভাল সম্পর্ক রাখলেও জয়নাল হাজারীকেই মেনে চলতেন।
তারপরও দীর্ঘদিন ধরে নিজাম ও একরাম একসঙ্গেই চলতেন। কিন্তু নিজাম হাজারী ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত ও সদর আসনের এমপি হওয়ার পর প্রভাব নিয়ে দূরত্বের সৃষ্টি হয়। নিজাম হাজারী কোনভাবেই বেয়াড়া একরামকে মেনে নিতে পারছিলেন না।
অন্যদিকে একরামকে ঠেকানোও যাচ্ছিল না। প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদার একরাম দলের শীর্ষমহলে তদবির ও নানা ঘাটে ম্যানেজ করে একের পর এক প্রকল্প বাগিয়ে নেন। এলাকায় অনেক রাস্তাঘাটের কাজ নিজের টাকায় আরম্ভ করে পরে টেন্ডার করিয়ে নেন। নিজের ফুলগাজী উপজেলা ছাড়াও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় তিনি ব্যাপক প্রকল্পের কাজ শুরু করেন।
কিন্তু এককভাবে এ প্রকল্প বাগিয়ে নেয়া ও টেন্ডার নিয়ে নাখোশ হন জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা। বছর দেড়েক আগে পানি উন্নয়ন বোর্ডে টেন্ডার নিয়ে একরামের সঙ্গে নিজাম হাজারীর লোকজনের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল।
২০১৩ সালে সোনাগাজীতে বাঁকানদী সোজাকরণ নামে একটি বড় বাজেটের বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের কাজ পান একরাম। কিন্তু সে কাজ করতে গিয়ে তিনি নিজাম হাজারীসহ কয়েকজনকে তাদের নির্দিষ্ট কমিশন দিতে অস্বীকার করেন। এ নিয়ে নিজাম হাজারীর সঙ্গে তার দূরত্বের সূত্রপাত ঘটে।
এছাড়া বালুমহাল নিয়ে একরামের সঙ্গে নিজাম হাজারীর অনুসারী আওয়ামী লীগ নেতাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছিল।
উপজেলা নির্বাচনে সে দ্বন্দ্বের বহিঃপ্রকাশ ঘটান নিজাম হাজারী। তিনি উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের কাছ থেকে সমর্থন দেয়ার বিনিময়ে মোটা দাগের অর্থ ও সমীহ আদায় করলেও সেপথে হাঁটেননি একরাম। ফলে একরামকে নির্বাচনে হারাতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন হাজারী।
ফুলগাজী উপজেলা নির্বাচনে বিএনপি প্রার্থীকে স্বপ্রণোদিত হয়ে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ ছড়িয়ে পড়ে। পরে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তিনি কয়েকদিন একরামের প্রচারণায় অংশ নেন।
উপজেলা নির্বাচনের প্রচারণা চলাকালে দুইবার একরামের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছিল। নির্বাচনের দিন বকশীবাজার এলাকায় জেহাদের নেতৃত্বে একরামের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি করে। এ ঘটনায় রনি নামের একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযোগ রয়েছে, এসব ঘটনার পেছনে রয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগেরই কয়েকজন নেতা।
উপজেলা নির্বাচনের পর ফেনী ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে একরাম জেলা আওয়ামী লীগের দুই প্রভাবশালী নেতা জাহাঙ্গীর আদেল ও হারুনুর রশিদকে সেখান থেকে সরিয়ে দেন। এ নিয়ে বিরোধের সৃষ্টি হলেও পরে জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের হস্তক্ষেপ করে সেটা মিটমাট করে দেয়।
কিছুদিন আগে একরামের ঘনিষ্ঠ কাজীরবাগ যুবলীগ নেতা লোকমানের ওপর হামলা এবং পৌর ছাত্রলীগ নেতা আরমানকে দল থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। স্থগিত করা হয় একরামের গঠিত কয়েকটি ইউনিয়ন কমিটি। এ নিয়ে একরামের সঙ্গে নতুন করে দূরত্ব বাড়ে নিজাম হাজারীর।
সর্বশেষ নিজাম হাজারীর বিরুদ্ধে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পর সেটা দৃঢ়তা পায়। একদা জয়নাল হাজারীকে পেশী-প্রভাবে বধ করতে একজন বিখ্যাত ব্যক্তির সহযোগিতায় ফেনীর রাজনীতিতে সামনে এসেছিলেন নিজাম হাজারী। কিন্তু যিনি সে সময় সহযোগিতা করেছেন পরবর্তীতে তিনিই রাজনৈতিকভাবে বধ হন।
ফেনী আওয়ামী লীগের দুই প্রতিদ্বন্দ্বীতে পরিণত হন নিজাম হাজারী ও একরামুল হক। এলাকাবাসী বলেন, এক বনে দুই বাঘ থাকতে পারে না। একবাঘ আরেক বাঘকে খেয়েছে।
এদিকে প্রভাব-প্রতিপত্তি নিয়ে দলীয় কোন্দল এমন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে যে, হত্যাকা-ের পর ফেনী আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে শহরে কোন বিক্ষোভ বা প্রতিবাদ হয়নি। পরে ফুলগাজী থেকে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা শহরে এসে বিক্ষোভ প্রকাশ করে। গতকাল একরামের জানাজা শেষেও নিজাম হাজারীকে অভিযুক্ত করে ফুলগাজী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা স্লোগান দেন।
http://www.dailynayadiganta.com/details.php?nayadiganta=NDAwMzE%3D&s=MjM%3D
যদিও ফেনীতে একরামকে হত্যা করার সময় ঢাকায় আলাউদ্দিন চৌধুরী নাসিমের সঙ্গে ছিলেন নিজাম হাজারী।
ফেনীর একরাম কিলিং মিশনে অংশ নিয়েছিল যারা-
একরাম হত্যাকা-ের মিশনের নেতৃত্বে ছিল ১১ সন্ত্রাসীর একটি টিম। তাদের সহায়তা করেছে শতাধিক সহযোগী সন্ত্রাসী। হত্যাকা-ের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ফেনীতে। সেখানে দেখা গেছে লোমহর্ষক ও হৃদয়বিদারক সে হত্যাকা-ের দৃশ্য ও খুনিদের অনেকের চেহারা।
এছাড়া ঘটনার সময় বিলাসী সিনেমা হলের পাশে নিউ সেভেন রেস্টুরেন্টে নাস্তা করছিলেন একজন প্রত্যক্ষদর্শী। পুরো ঘটনাটি তার চোখের সামনে ঘটেছে। ফেনী শহরের একটি আবাসিক ফ্ল্যাটে বসে তিনি তার খুব ঘনিষ্ঠ কয়েকজনের কাছে বর্ণনা করেছেন মর্মান্তিক সে ঘটনা। নিজাম হাজারী আতঙ্কে কেউ প্রকাশ্যে মুখ না খুললেও কিলিং মিশনে জড়িতদের নাম এখন ফেনীবাসীর মুখস্থ।
ফুলগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান একরামুল হক কিলিং মিশনে তিন ভাগে অংশ নেয়া শতাধিক সন্ত্রাসীর মধ্যে বাস্তবায়ন করেছেন অন্তত ৫০ জন মিলে।
কিন্তু মূল কিলিং মিশন পরিচালনা করে ফুটবল-ক্রিকেটের মতো ১১ সদস্যের একটি টিম। কোচের ভূমিকা নিয়ে আধ ঘণ্টা আগে মোটরসাইকেলে করে ঘটনাস্থল রেকি করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের বুদ্ধিদাতা খ্যাত জাহাঙ্গীর আদেল।
মূল কিলার গ্রুপে ছিলেন- ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেজানুর শিবলু, আওয়ামী লীগ নেতা জেহাদ চৌধুরী, মহিলা আওয়ামী লীগ নেত্রী বড়মনি’র ছেলে আবিদ (নিজাম হাজারীর মামাতো ভাই), আবিদের বন্ধু বিরিঞ্চি ইটালি ভবনের বাসিন্দা শিপন, একাডেমি রোডের পূর্বপাশে বড়বাড়ির ছেলে বাপ্পী, হুংকারবাড়ির রুটি সোহেল, বারুইপুরের কাওসার, বনানীপাড়া বিরাজ মজুমদার বাড়ির সামনের বাড়ির রাকিব, গজারিয়ার আবুল হোসেন জাহাঙ্গীর, বনানীপাড়ার আসিফ ও বনানীপাড়া রেলক্রসিং এলাকার তুষার।
শেষের সাতজন আবিদের সমসাময়িক ও জুনিয়র বন্ধু এবং এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী। তারা প্রত্যেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। এছাড়া কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম থেকে কিছু ভাড়াটে সন্ত্রাসী মিশনে অংশ নেয়ার কথা ছড়িয়ে পড়েছে ফেনীর মানুষের মুখে মুখে।
যার যা ভূমিকা
হত্যাকা-ের তিনদিন আগে ফেনী পৌরভবনে একটি বৈঠকে কিলিং মিশন চূড়ান্ত হয়। যে বৈঠকের খবর প্রকাশিত হয় হাজারিকা প্রতিদিনে। বৈঠকের একটি সূত্র দূতের মাধ্যমে সাবধান করেছিল একরামকেও।
হত্যাকান্ডের দুদিন আগে স্টেডিয়ামে কাউন্সিলর শিবলুর নেতৃত্বে ও জেহাদ চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে আবিদকে অস্ত্র দেয়া হয়। পরস্পরের মধ্যে অঙ্গিকার হয় মিশন সফল হলে আগামীবার আবিদকে নির্বাচিত করা হবে ওয়ার্ড কাউন্সিলর।
ঘটনার দিন সকালে কিলিং স্পটের পাশের ইউআরসি ট্রেনিং সেন্টারে যান কমিশনার শিবলু। এলাকায় গ-গোল হতে পারে এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে অনেকটা জোর করেই প্রতিষ্ঠানটির ছুটি ঘোষণা করান তিনি। এরপরই কিছু ছেলের গায়ে দেখা যায় ফেনী কলেজের ইউনিফর্ম। তখন একরামের অবস্থানস্থল ফেনী ডায়াবেটিস হাসপাতাল থেকে পুরো রাস্তা জুড়ে বিভিন্ন স্পটে ভাগ হয়ে কিলিং মিশনের লোকজন অবস্থান নেয়। তারা একরামের প্রতিটি পয়েন্টের ব্যাপারে স্পটে কিলিং গ্রুপকে অবহিত করে। একরাম হাসপাতাল থেকে বের হওয়ার পর বিরিঞ্চি রেলক্রসিং থেকে রাস্তায় গাড়ি চলাচল অনেকটাই বন্ধ করে দেয়া হয়। ফলে সে রাস্তায় হত্যাকা-ের সময় ছিল অনেকটাই ফাঁকা। ঘটনার সময় কাউন্সিলর শিবলু ও জেহাদ চৌধুরী স্পটেই উপস্থিত ছিলেন। একরামের ব্যক্তিগত প্রাডো গাড়িটি যখন স্টেডিয়াম পার হয় তখনই পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথমে একটি ঠেলাগাড়ি দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়। একরামের গাড়ি ব্রেক করলে দুইপাশ থেকে মুখোশধারী মূল কিলার গ্রুপটি চারদিক থেকে ঘিরে ধরে। একরামের গাড়িটি ধাক্কা দিয়ে এগিয়ে গেলেও ততক্ষণে রাস্তায় একটি ইজিবাইক ও পৌরসভার একটি ময়লার ভ্যান দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়। শেষে রাস্তায় গড়িয়ে দেয়া হয় একটি গ্যাস সিলিন্ডার। এতে গাড়িটি আটকে পড়লে গুলি করে ও কুপিয়ে কাচ ভাঙে মুখোশধারী কিলাররা। প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র নিশ্চিত করেছে, তাদের মধ্যে ছিল শিপন, বাপ্পী, রাকিব, আসিফ, তুষারসহ কয়েকজন। এ সময় খুব কাছ থেকে একরামুলের মাথা, বুক ও পেটে কয়েকটি গুলি করে আবিদ ও রুটি সোহেল। গুলির পর রাকিব, আসিফ ও তুষার মিলে উপর্যুপরি কোপাতে থাকে একরামকে।
প্রথমে একটি মোটরসাইকেলে করে কিলারদের চারজন ফেনী কলেজের দিকে চলে যায়। তারপর চারদিক থেকে ঘটনাস্থলে কিছু লোক জড়ো হয়। এ সময় হলুদ ড্রামে করে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয় গাড়িতে।
তারপর ঘটনাস্থল থেকে কয়েকজন বিরিঞ্চির দিকে, কয়েকজন শিবলু কমিশনারের বাড়ির দিকে এবং কয়েকজন উত্তর দিকে চলে যায়। তবে বেশিরভাগই চলে যায় পূর্বমুখী গলি ধরে বড়বাড়ির দিকে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পেট্রোল ঢেলে গাড়িতে আগুন লাগানোর কাজটি করে কাওসার। এ সময় মানুষকে আতঙ্কিত করতে বিস্ফোরণ ঘটানো হয় কয়েকটি হাতবোমার। ২০ মিনিটের এ হত্যাকা-ে অংশ নেন কমিশনার শিবলু, জেহাদ চৌধুরী ও আবিদের অনুসারী ও সন্ত্রাসী বন্ধুরা। হত্যাকা-ের শেষ পর্যন্ত ঘটনাস্থলে দেখা গেছে কমিশনার শিবলুকে। ঘটনাস্থলে দেখা গেছে পৌর মেয়র হাজী আলাউদ্দিনের এক নিকটাত্মীয়কেও। গাড়িতে আক্রমণকারী প্রথম কয়েকজনের মুখোশ থাকলেও পরে সবাই ছিল মুখোশবিহীন। তারপর তাদের বড় অংশটিই স্পট থেকে পূর্বদিকে ঢোকা গলি দিয়ে বড়বাড়ির দিকে চলে যায়।
এ সময় একরামের গাড়ির পেছনে ছিল তার উপজেলা পরিষদের গাড়িটি। চালক ঘটনা পাশ কাটিয়ে জোরে গাড়িটি কিছুদূর সামনে নিয়ে যান। সেখানে পুলিশের গাড়ি দেখে পুলিশ কর্মকর্তার সাহায্য চান। অভিযোগ উঠেছে পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো দিকে চলে যায়।
কে এই জিহাদ চৌধুরী:
ফুলগাজী উপজেলার আনন্দপুর ইউনিয়নের হাসানপুর গ্রামের বাসিন্দা জিহাদ চৌধুরী।
একরামকে যে স্থানটিতে হত্যা করা হয় ২০০০ সালে ওই জায়গায় যুবলীগ নেতা বশির আহমেদকে (বইশ্যা) হত্যা করে প্রথম আলোচনায় আসেন জিহাদ চৌধুরী যে হত্যার অন্যতম আসামী এবারের হত্যাকান্ডের শিকার একরাম নিজেই।
জিহাদ ফুলগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (বহিস্কৃত)। চতুর্থ উপজেলা নির্বাচনের আগে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে জিহাদ চৌধুরীকে দল থেকে বহিস্কার করেন একরাম। এর একদিন পর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও তার গুরু নিজাম উদ্দিন হাজারী তার বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করেন।
গত মার্চ মাসের শুরুতেও একরামকে তিন/চার বার হত্যার চেষ্টা করেছিলেন জিহাদ। এছাড়া নির্বাচনের সময় একরাম সমর্থকদের নানান হুমকি-ধামকি দেয়ার ঢালাও অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।
[b]দেশের মানুষের আজ একটা জিজ্ঞাসা;আর কতদিন এই আওয়ামী পশুদের সহ্য করতে হবে ?
[/b]
আমরা আর ঐ আওয়ামী শুটিং ক্লাব অথবা ফিশারিজ কিংবা কাবাব ঘরের সদস্য হতে চাই না !
বিষয়: বিবিধ
৮৫৫২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আসুক হাসিনা দেশে , সবগুলোর ডায়রিয়া শুরু হয়ে যাবে ।
হাসুদির রান্না করা বিরিয়ানীতে কি সমস্যা আছে নাকি যে ডায়রিয়া হপ্পে !
একেবারে ধ্রুব সত্য একটি কথা বলেছেন!সন্ত্রাসের আরেক নামই হচ্ছে আওয়ামী লীগ!এর প্রতিটি নেতা সেই তৃণমূল হতে শুরু করে কেন্দ্রীয় পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেকে সন্ত্রাসি!এবং খুব কম আওয়ামী সাংসদই পাওয়া যাবে যার বিরুদ্ধে অন্তত একটি মার্ডার কেসের অভিযোগ নেই!
মন্তব্য করতে লগইন করুন