শুধু অন্তরে বিশ্বাসের নামই কি ঈমান?
লিখেছেন লিখেছেন তূর্য রাসেল ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:৫৩:৫৭ দুপুর
একটা মজার গল্প বলি। আবু জেহেল এর একজন খুব ঘনিষ্ট সহচর ছিল। নাম আহনাস ইবনে সুরাইর। তো একদিন আহনাস ইবনে সুরাইর আবু জেহেলকে জিঙ্গেস করল, "আবু জেহেল মুহাম্মদকে আমরা ৪০ বছর ধরে চিনি। কোনদিন সে মিথ্যা কথা বলেনি। এজন্য আমরা তাকে আল আমিন উপাধি দিয়েছিলাম। আর আজ আমারা তাকে মিথ্যাবাদী, গণক, যাদুকর, পাগল ইত্যাদী বলছি। আমার কেন যেন মনে হচ্ছে মুহম্মদ যে নবুওয়াত এর দাবী করছে তা সত্য। কিন্তু তোমার ভয়ে আমি কিছু বলিনি। তোমার কি মনে হয়? সে কি সত্য কথা বলছে?" আবু জেহেল বললো, "আশেপাশে কি কেউ আছে?" সুরাইর বললো, "না কেউ নাই।" আবু জেহেল তখন বললো, "আমার ভাতিজা মুহাম্মদ যা বলছে সেটা সত্য বলছে, সে সত্যি আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।" সুরাইর বললো, "আমারও তাই মনে হচ্ছে, তাহলে চলুন আমরা ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করি, সে তো আপনারই ভাতিজা, তার সাথে ঝামেলা করে কি লাভ?" আবু জেহেল তখন সুরাইরকে ধমক দিয়ে বললো, "ধুর বোকা, তোর মতো বুদ্ধি নিয়ে চললে আজ আমি দেশ শাসন করতাম না।" সুরাইর বললো, "কেন? আমি ভুল কি বললাম?" আবু জেহেল বললো, "আরে মিয়া আমি যদি ইসলাম কবুল করি তাহলে রাষ্ট্রপ্রধান কে হবে? তখন মুহাম্মদকে নেতা মানতে হবে। তখন তো আমি আর নেতা থাকবো না। কালেমা পড়লে তো তাকেই একমাত্র নেতা হিসেবে মানতে হবে। এটা আমার পক্ষে সম্ভব না।"
:
এই গল্পের একটি বড় শিক্ষনীয় দিক রয়েছে, আমরা বেশিরভাগ বিশ্বাস করি ঈমান অর্থ আল্লাহর একাত্ববাদে বিশ্বাস, নবী রাসূলে বিশ্বাস, নবুয়াতে বিশ্বাস, ফেরেশতায় বিশ্বাস ইত্যাদী। কিন্তু ইবলিস তো অন্তর থেকে আল্লাহর একাত্ববাদে বিশ্বাস করে, তাহলে সে কি ঈমানদার? আবু জেহেল তো রাসূলকে বিশ্বাস করতো, তার নবুয়াতকে বিশ্বাস করতো তাই বলে সে কি ঈমানদার? না, আমরা এটা বলতে পারি না। ঈমান হচ্ছে অন্তরে বিশ্বাস এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। এটাই ঈমান। আপনি যখন কালেমা পড়বেন তখন আল্লাহকেই একমাত্র মালিক হিসেবে মানতে হবে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে। শুধু মসজিদে নয়, জীবনের প্রতিটি জায়গায়। আর নবী (সা) কে একমাত্র নেতা হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। যেটা আবু জেহেল বুঝেছিল। কিন্তু আমরা?
বিষয়: বিবিধ
১০০৩ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ-নবী রাসুল-কিতাব-আখেরাত প্রভৃতির উপর অন্তরের বিশ্বাস করা ঈমানদার হওয়ার সংগা নয়,অর্থাৎ এগুলোর উপর বিশ্বাসই শুধু ঈমান নয়,সাথে আরো বিষয় আছে।
উল্লেখিত বিষয় গুলো কে অন্তরে বিশ্বাস করে মৌখিক ভাবে স্বীকৃতি দিয়ে কর্মে বাস্তবায়ন করাই হল ঈমান।এমন ব্যক্তি ঈমানদার বলে পরিগনিত।
সুন্দর বিষয়ের আলোচনার জন্যে অনেক ধন্যবাদ ......
মন্তব্য করতে লগইন করুন