আমাদের মুক্তিযুদ্ধ; হত্যাকান্ড ৩০ লক্ষ না ৩ লক্ষ? কোনটা ঠিক?
লিখেছেন লিখেছেন তূর্য রাসেল ৩০ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৪৮:০৭ দুপুর
এ ব্যাপারটা নিয়ে লেখার দুঃশাহস আমার নাই তবুও কিছু কথা লিখতে হচ্ছে বিবেকের তাড়নায়। আমরা তরুণ প্রজন্ম, আমরা ছোট থেকেই ভূল ও বিভ্রান্তিকর ইতিহাস জেনে বড় হচ্ছি। জানিনা কোনটা সঠিক আর কোনটা ভূল। আমি যখন অ্যান্থনির বই পড়ি তখন একধরণের তথ্য পাই আর আমি xxxx এর বই পড়ি তখন এক ধরণের তথ্য জানতে পারি। কিছুদিন থেকে তাজউদ্দিন কন্যার বই থেকে কিছু লেখা ধারাবাহিকভাবে কিছু দৈনিক পত্রিকা ছাপছে। সেখানে রয়েছে আলোড়ন সৃষ্টি করা অনেক তথ্য। আর আমি যখন সেক্টর কমান্ডার মেজর জলিলের বই পড়ি তখন দেখি চমকপ্রদ অনেক তথ্য। যার সাথে অনেক কিছুর মিল খুজে পাই না।
কিছুদিন আগে একজন আমার সাথে তর্ক জুড়ে দিল। আমাদের স্বাধিনতা যুদ্ধে নাকি ৩০ লক্ষ মানুষ মারা গেছে(শহীদ বললাম না, কারণ সবাই হয়তো শহীদ হয়নি, যাদের আপত্তি আছে তারা শহীদের প্রকৃত সংঙ্গাটা জেনে নিবেন)। আমি তার সাথে একমত হতে পারলাম না। তাই সে বলল আমি নাকি রাজাকার। আমি বুঝলাম না কোন হিসেবে সে আমাকে রাজাকার বলল। রাজাকারের সংঙ্গা কি?
যারা বলেন ৩০ লক্ষ মারা গেছে তাদের কাছে আমার প্রশ্ন এটার কি কোন শুমারি হয়েছিল? কোন এলাকায় কত মারা গেছে তার কি কোন হিসাব আছে? কোন হিসেবে আপনি বলেন ৩০ লক্ষ? আমি ইন্টারনেটে সে সময়ের পত্রিকা দেখলাম। ইন্ডিয়া এবং আরো কিছু বিখ্যাত কিছু পত্রিকা দেখলাম তাদের হিসেব মতে আড়াই থেকে তিন লক্ষ মারা গেছে। সবচেয়ে বেশি মারা গেছে ঢাকা শহরে। ৩০ হাজার।
একটা সহজ চিন্তা করেন। আপনার এলাকায় কতজন মারা গেছে? আপনার এলাকার মুরব্বিদের জিঙ্গেস করুন।
আমাদের গ্রামে একজন মারা গিয়েছিল। আমাদের গ্রামে পাকিস্তানের ক্যাম্প ছিল। পাশের রাজারামপুর গ্রামে ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের ক্যাম্প। এখানে প্রায়ই গোলাগুলি হত। মহানন্দা নদী পার হয়ে মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানিদের আক্রমন করত। আমাদের গ্রামে পাকিস্তানের ক্যাম্প থাকার পরেও মাত্র একজন মারা গিয়েছিল। এটা আমি আমাদের গ্রামের বৃদ্ধদের কাছ থেকে শুনেছি। আমাদের বাড়ি থেকে কিছু দূরে ছিল পাকিস্তানিদের ক্যাম্প আর আমাদের বাড়ির পাশে আম বাগানে ছিল অনেকগুলো "চিমনি" যার মধ্যে মানুষ আশ্রয় নিত। আমাদের গ্রাম আর রাজারামপুর গ্রামের মাঝে যাদের বাড়ি ছিল সাধারণত তারাই চিমনিগুলোতে আশ্রয় নিত।
আমি জানিনা কেন মুক্তিযুদ্ধে মৃতদের নিয়ে এমন লুকোচুড়ি খেলা হচ্ছে। বেশি করে বললেই কি আমাদের মর্যাদা বাড়বে? যদি কোনদিন সঠিক পরিসংখ্যান বের হয়ে আসে তবে কি তখন আমরা বিশ্বে মিথ্যুক জাতি হিসেবে পরিচিত হব না?
বিষয়: বিবিধ
১৫২৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু কোথায় এতগুলো লোক মারা গেল কয়দিন মারা গেল কেউ বলতে পারবেনা....?
সেখানে কি ধরনের অস্ত্র ব্যবহার হল তা তো প্রশ্ন জাগতেই পারে...?
যা গত ১০ বছর ধরে চলা ইরাক যুদ্ধে হয়নি.... তারমানে এখনকার থেকে ৪৩ বছর আগের অস্ত্র অত্যাধুনিক ছিল....?
আমি যতটুকু ইতিহাস ঘাটাঘাটি করেছি- তাতে ২০/৩০ টি উল্লেখযোগ্য যুদ্ধ হয়েছে যেখানে ৫০-২০০জন উভয়পক্ষের মারা গিয়েছে। এটা আমাদের মাননীয় সেক্টরকমান্ডারগণই ভালো বলতে পারবেন....।
আর গণহত্যা ২৫মার্চ কালরাত্রিতে ঢাকা থেকে দেশের আর কোথায় বেশী লোক নিহত হয়েছে বা এর কাছাকাছি এবং আরো ৫/১০ দিন এইরকম ঘটনা ঘটেছে বলে আমি কোথাও পাইনি।
গণহত্যার ঘটনা অনেক ঘটেছে তবে সেটা ১০/২০/৩০/৫০/১০০ জনের গণকবর ছাড়া কিন্তু হাজার হাজার জনের আর কোথাও পাওয়া যায়নি।
অতএব সময় এসেছে সঠিক সত্যটি উদঘাটন করার বিকৃত ইতিহাস পরিহার করে সত্যটি জানবার।--- ধন্যবাদ
বাংলাদেশে তখন ৬৮০০০ গ্রাম ছিল, ৩০ লক্ষ প্রতি গ্রামে ৪৪ জন মারা যাওয়ার কথা আর ৩ লক্ষ হলে ৪.৪ জন। সুতরাং যার যার গ্রামের বা ইউনিয়নের শহীদের তালিকা এই ঠিকানায় পাঠিয়ে দিন। ইউনিয়নের সঙ্খ্যা ৪৫০০। ৩০ লক্ষ হলে ইউনিয়ন প্রতি ৬৬৭ জন, ৩ লক্ষ হলে ৬৭ জন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন