বিএনপির স্বভাব বদল; কিন্তু কেন?

লিখেছেন লিখেছেন তূর্য রাসেল ১২ এপ্রিল, ২০১৪, ০৮:০৫:১৩ রাত

হঠাৎ করেই বদলে গেছে বিএনপির স্বভাব। এতদিন আওমেলীগের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়া ও তার পরিবার নিয়ে নানা ধরণের কটুক্তি করতে দেখা গেছে। বিএনপি তা নিরবে হজম করেছে। কখনও তেমন একটা প্রতিবাদ করেনি। আওমেলীগ বিএনপিকে নিয়ে একের পর এক ইস্যু তৈরি করেছে। যেমন খালেদা জিয়া সারারাত জেগে থেকে দিনে ঘুমান, পাঁচ ওয়াক্ত নাময পড়ে না, চুল কেমন, এমনকি ব্লাউজ নিয়েও কথা বলেছে। এসব অনর্থক কথা বলে মাঠ গরম রাখত আওমেলীগ।

কিন্তু এখন ঘটছে তার উল্টো। রাজনীতিতে ইস্যু তৈরি হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আওয়ামী লীগের পরিবর্তে তা তৈরি করছে বিএনপি। আর বিএনপির সৃষ্টি করা এসব ইস্যুর জবাব দিতে হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগকে। বলা যায়, বিএনপির স্বভাবগত পরিবর্তন ঘটেছে। যে কাজ সাধারণত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা করতো এখন তা করছে বিএনপি। মূলত ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ঠেকাতে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি এই পথ বেছে নিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। যাতে করে ক্ষমতাসীনরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং তাদের বিরুদ্ধে কঠোর কোনো ব্যবস্থা নিতে উদ্যোগী হয়। আর তা করা হলে বিএনপি আবার ইস্যু পেয়ে যাবে। সক্রিয় হতে পারবে আন্দোলনে।

২০০৯ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত দেশে নতুন নতুন রাজনৈতিক ইস্যু তৈরি করেছিল ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। আর বিএনপিকে আওয়ামী লীগের তৈরি করা ইস্যুর জবাব দেওয়া নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়েছিল। কিন্তু এবার এ ধারাবাহিকতায় অনেকটা ভিন্নতা দেখা দিয়েছে।

২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বিএনপিকে বিভিন্ন ইস্যুতে ব্যস্ত রেখেছে আওয়ামী লীগ। বিশেষ করে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে তার ৪০ বছরের স্মৃতি বিজড়িত বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, মহাজোট সরকারের তৎকালীন রেলমন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পাওয়ার কিছুদিন পরই বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী গুম হওয়া, মতিঝিল শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের অবস্থান উৎখাতসহ বিভিন্ন ইস্যু তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে সংবিধান থেকে তত্ত্বাধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করে বিএনপির জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী ইস্যু তৈরি করে সরকার। যে ইস্যুতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট এখনও আন্দোলন করছে।

সম্প্রতি বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যার তারেক রহমান লন্ডনে বক্তব্য দিয়ে সমালোচনার ঝড় তুলেছেন। গণমাধ্যমসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবাসাইটে এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে সমালোচনার ঝড় বইছে। এভাবে আওয়ামী লীগকে ব্যস্ত রেখেছেন তারেক রহমান। শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি বলে বক্তব্য দিয়ে আওয়ামী শিবিরে তোলপাড় সৃষ্টি করেছেন তিনি। অবশ্য তিনি তার বক্তব্যের স্বপক্ষে যথেষ্ট প্রমাণপত্রও জোগাড় করেছেন। তার এ বক্তব্যে দেশজুড়ে নতুন করে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিন আওয়ামী লীগের নেতারা বক্তব্য দিতে গিয়ে তারেক রহমানের এ বক্তব্য নিয়েই বেশি কথা বলেছেন।

এর কিছু দিন পর গত মঙ্গলবার লন্ডনে এক সুধী সমাবেশের বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান তারেক রহমান ‘জিয়াউর রহমানই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি’ এ কথা আবারও উল্লেখ করেন। এর সঙ্গে এবার যুক্ত করেন, শেখ মুজিববুর রহমান বাংলাদেশের ‘প্রথম অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’। তারেক রহমানের এ বক্তব্যে আওয়ামী শিবিরে আবারো তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়।

কিন্তু অপরদিকে দেখা যায় আওমেলীগ কোন তথ্যভিত্তিক প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। উল্টো অশ্লিল ভাষা প্রয়োগ করছে। এমনকি সংসদের মত পবিত্র জায়গায় অশ্লিল ভাষার প্রয়োগ করতে দেখা গেছে।

তবে অনেকেই বলছেন বিএনপির এ রূপ আগেই দেখানো উচিত ছিল। কারণ যে যেধরণের তার সাথে সেধরণের আচরণ করাই শ্রেয়।

বিষয়: বিবিধ

১১৮১ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

206580
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:১০
সবুজেরসিড়ি লিখেছেন : সময়ের প্রয়োজনে স্বভাব পরিবর্তন করতে হলো , শয়তানের সাথে লড়াই করতে কিছুটা শয়তান না হলে শয়তান কে প্রতিরোধ করা যায় না . . .
206581
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:১১
অনেক পথ বাকি লিখেছেন : ভালো লাগলো ।
206595
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:১৭
আঁধার কালো লিখেছেন : শয়তান কে প্রতিরোধ করা যায় না . . . ভালো লাগলো । ধন্যবাদ ।
206604
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:২৬
এহসান সাবরী লিখেছেন : এই ধর্ষিত সংসদের পবিত্রতা আছে বলে মনে হয়?
পবিত্র শব্দের পবিত্রতা রক্ষা করুন।
206624
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৮:৫৮
হতভাগা লিখেছেন : হাসিনার সাথে কেন যে শুধু শুধু পাঙ্গা নিতে যায় এরা.. বুঝিনা ।
206626
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০০
শফিউর রহমান লিখেছেন : এই কাজটা যদি আরও আগে থেকেই করতে থাকতো তবে আলীগ এদেশের রাজনীতিতে হাসিনার নেতৃত্বে পূণর্বাসনের পরেও মানুষের কাছে ধীকৃতই থাকতো। কিন্তু বিএনপি মানুষের মনে আলীগের কালো দিকগুলোকে মনে রাখতে একটুও পদক্ষেপ নেয় নি। বরং শেখকে হত্যা করাটাকে বিভিন্নভাবে সমালচোনা করে জনগণের সিমপ্যাথি আলীগের জন্য জমা করে দিয়েছে। আজ তারই ফল ভুগছে তারাসহ পুরা জাতি।

চোরকে চোর বলা বন্ধ হয়ে গেলে একদিন সেই চোরই অন্যকে চোর বলে গলা ফাটাতে পারবে, আর তা জনগণ গলধঃকরণও করবে। কারণ এই জাতি হলো, ভুলো জাতি।
১২ এপ্রিল ২০১৪ রাত ০৯:০৪
155261
তূর্য রাসেল লিখেছেন : ঠিক বলেছেন...Happy Happy Happy Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File