গণজাগরণ মঞ্চ আজ একা কেন? কোথায় আজ জাফর ইকবাল শাহরিয়ার কবির?
লিখেছেন লিখেছেন তূর্য রাসেল ০৬ এপ্রিল, ২০১৪, ০৬:৫৮:৫৪ সন্ধ্যা
প্রথমে ছাত্রলীগ-যুবলীগ এর হাতে তারপর পুলিশ এর হাতে পিটুনি খেলো গণজাগরণ মঞ্চ। কিন্তু কেন? আমরা দেখেছি এই গণজাগরণ মঞ্চে একসময় ছাত্রলীগ-যুবলীগ সহ আরও অনেক ছাত্রসংগঠন মিলামিশে একসাথে কাজ করেছে কিন্তু আজ এমন কি হল যে তাদের মধ্যে এ বিরোধ? আকাশে অনেক কথাই ভেসে বেড়াচ্ছে। একদিকে শোনা যাচ্ছে ক্ষমতার দন্ধ আবার অন্যদিকে শোনা যাচ্ছে টাকা ভাগাভাগি নিয়ে দন্ধ। যে মিডিয়া এক সময় তাদের নিয়ে হেড লাইন করত সেই মিডিয়া আজ তাদেরকে প্রথম পৃষ্টায় জায়গা দিতে কার্পণ্য করে। যে পুলিশ ২৪ ঘন্টা প্রটেকশন দিয়েছে সেই পুলিশ আজ তাদেরকে দূরদূর করে তাড়িয়ে দিচ্ছে। এমনকি ইমরান এইচ সরকার যেকিনা গণজাগরণ মঞ্চের কান্ডারী তাকেই ঐ মঞ্চেরই এক অংশ অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছে। শুধু কি তাই? যে জাফর ইকবাল দুই দিন পরপর সেই সিলেট থেকে গণজাগরণ মঞ্চে ছুটে আসতেন সেই জাফর ইকবালও আজ নিরব। কিন্তু কেন? যেই শাহরিয়ার কবির যিনি গণজাগরণ মঞ্চকে নিজের ঘরবাড়ি বানিয়ে নিয়েছিলেন সেই শাহরিয়ার কবিরও আজ নীরব। কিন্তু কেন? তবে কি গণজাগরণ মঞ্চের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে? যেই মঞ্চ একদিন কোটি কোটি মানুষকে স্বপ্ন দেখিয়েছিল সেই স্বপ্ন দেখানো কি শেষ? কিসের দ্বন্ধে আজ গণজাগরণ মঞ্চ মূখ থুবড়ে পড়ল? আমি আশা করেছিলাম জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবির গণজাগরণ মঞ্চের এই ক্রান্তিকালে পাশে এসে দাড়াবেন কিন্তু তাদের কোন চিহ্নই খুজে পাওয়া যাচ্ছে না। তারা আজ এক অজানা কারণে উধাও হয়ে গেছেন। ছত্রলীগ এমনও অভিযোগ করেছে, গণজাগরণ মঞ্চ বিভিন্ন জামাতি প্রতিষ্ঠান থেকে টাকা নিচ্ছে তাই তারা নিজেদের গণজাগরণ মঞ্চ থেকে সরিয়ে নিয়েছে। তারা এমনও দাবি করেছে যে, সেদিন ছাত্রলীগ বা যুবলীগ গণজাগরণ মঞ্চে হামলা করেনি। এটা ছিল তাদের নিজেদের দুই গ্রুপের মধ্যে গন্ডগোল।
অপরদিকে গণজাগরণ মঞ্চের অভিযোগ সেদিন ছাত্রলীগ যুবলীগই গণজাগরণ মঞ্চের উপর হামলা করেছিল। কারণ লক্ষ কন্ঠে সোনার বাংলা অনুষ্ঠানে ইসলামী ব্যাংকের নিকট থেকে টাকা গ্রহণের বিরোধিতা করা।
তবে এটা স্পষ্ট গণজাগরণ মঞ্চ আজ মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত। এক অংশে আছে ইমরান সমর্থিত গ্রুপ এবং অন্য অংশে ছাত্রলীগ-যুবলীগ সমর্থিত গ্রুপ। হয়ত আমাদেরকে সামনে আরো অনেক কিছু দেখতে হতে পারে। এর জন্য আরো কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে।
গণজাগরণ মঞ্চের আরেকটি বড় অবদান দেশের তরুণ সমাজকে দুই ভাগে বিভক্ত করে দেওয়া। আজ দেশের তরুণ সমাজ স্পষ্টতই দুই ভাগে বিভক্ত। আর এর ফলেই জন্ম নিয়েছিল হেফাজতে ইসলাম।
যে সরকার একসময় গণজাগরণ মঞ্চকে শেল্টার দিয়েছিল সেই সরকারের কাছে আজ গণজাগরণ মঞ্চ গলার কাঁটা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এই গণজাগরণ মঞ্চের কারণেই সরকারকে বিভিন্ন সময় বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখিন হতে হয়েছে। গণজাগরণ মঞ্চের কতিপয় ব্লগার এর অতিরিক্ত বাড়াবাড়ির কারণেই হেফাজতে ইসলামের মত সংগঠনের আবির্ভাব হয়েছিল। গণজাগরণ মঞ্চ প্রথম থেকেই যদি একটু সতর্ক হতো তবে হয়তো অনেক অনাকাংখিত ঘটনা এড়ানো সম্ভব ছিল।
তবে যে যাই বলুক এটা স্বীকার করতেই হবে গণজাগরণ মঞ্চের বিদায় ঘন্টা বেজে গেছে। আজ গণজাগরণ মঞ্চের পাশে কেউ নাই। না মিডিয়া, না শাহরিয়ার কবির, না জাফর ইকবাল, না রোকেয়া প্রাচি। সেদিন হয়ত খুব বেশি দেরি নাই যেদিন গণজাগরণ মঞ্চের স্থান হবে ইতিহাসের আস্তাকুড়ে।
বিষয়: বিবিধ
১৫৮২ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তাই আজ কেন ইমরানের পাশে দাড়াবে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন