লক্ষ কন্ঠে সোনার বাংলা এবং আমাদের দায়বদ্ধতা
লিখেছেন লিখেছেন তূর্য রাসেল ৩১ মার্চ, ২০১৪, ১০:৫৮:২৪ সকাল
বাচ্চাটি প্লাষ্টিকের বোতল কুড়াতে এসেছিল 'লক্ষ কন্ঠে সোনার বাংলা' অনুষ্ঠানে। বাচ্চাটির হাতে আজ বই খাতা-কলম থাকার কথা ছিল। কিন্তু আজ এই বাচ্চাটিকে দুমুঠো ভাতের জন্য জীবন সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হয়েছে। আমরা ৯০ কোটি টাকা খরচ করে বিশ্বরেকর্ড এর পিছনে ছুটাছুটি করি, যে রেকর্ড স্থান পাবে কে বেশিদিন গোসল না করে কাটিয়েছে, বিশ্বের সর্ববৃহৎ নখ, বিশ্বের সর্ববৃহৎ চুল এর পাশে। আজ যদি আমরা এই টাকা এই পথশিশুদের শিক্ষার কাজে ব্যায় করতাম তাহলে নিশ্চিত এদের মধ্য থেকে বের হয়ে আসত স্যার সলিমুল্লাহ, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানি, আর বিরুনি, ইবনে সিনা, ওমর ইবনে খৈয়াম, জগদীশ চন্দ্র বসু, অমর্ত্য সেন, রাজা রামমোহন রায়, জহির রায়হান এর মত মানুষ।
বিষয়: বিবিধ
১১১৩ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমি এর উত্তরে যা লিখেছি- ভাইয়া আমি যা বোঝাতে চেয়েছি তা হয়তো আপনি বুঝতে পারেননি। এদেরকে কে বোতল কুড়াতে পাঠিয়েছে? সরকার তো প্রাথমিক শিক্ষা ফ্রি করেছে তাহলে তারা স্কুলে যাচ্ছে না কেন? এদেরকে তার পিতামাতাই বোতল কুড়াতে পাঠিয়েছে। কেন জানেন? অভাবের তাড়নাই। এই ঢাকা শহরে এই নিম্নবিত্ত মানুষগুলো কতো টাকাই বা আয় করে বলুন? ঢাকা শহরে একটা নিম্নমানের ঘর ভাড়া কত জানেন? নিম্নে ২০০০ টাকা। তারা যা আয় করে তা দিয়ে তারা ঘর ভাড়া দিবে, না বিদুৎ বিল দিবে, না পানি বিল দিবে? আর চাল ডালের যে উর্দ্ধগতি তাতে খাবার খরচ চালানই দুষ্কর। তাইতো এই বাচ্চাগুলোকে পড়ালেখা বাদ দিয়ে জীবিকা অন্বেষন করতে হয়। এই বোতল-কাগজ কুড়িয়ে যে ৫০-৬০ টাকা পায় সেটাই তাদের সংসারে অনেককিছু। গতকাল তন্দ্রা চাকমার স্কুল নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম(এই লিঙ্কে- https://www.facebook.com/russel.rowan/posts/855347264482391?stream_ref=10 )। এমন অনেক স্কুল দেশের আনাচে কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এমনও স্কুল আছে যার অবস্থা এর চেয়েও খারাপ। স্কুলটা কিন্তু সরকারি।
কিছুদিন আগে আমি আরেকটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম(এই লিঙ্কে- https://www.facebook.com/russel.rowan/posts/850939641589820?stream_ref=10 )। যেখানে দুইটা ছেলের কথা বলেছিলাম। একজনের বাবা নেই তাই তাকে ভাল রেজাল্ট করার পরেও পড়ালেখা বাদ দিয়ে জীবন সংগ্রামে নামতে হয়েছে। আরেকজন যার বাবা কৃষক। নিজস্ব কিছু জমি আছে আর কিছু অন্যের। গ্রামে গেলে বুঝতে পারবেন কৃষকরা কি পরিমাণ কষ্টে আছে। দফায় দফায় সার, ডিজেল আর বিদুৎ এর দাম বাড়ছে। কিন্তু বাড়ে না কৃষিতে ভর্তুকি। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েদের বিয়ে দিতে হয় ছোটতে আর ছেলেকে বাবার সাথে মাঠে কাজ করতে হয় অথবা খুজতে হয় অন্য পেশা। পড়ালেখা করবে কিভাবে? আর চিকিৎসার কথা? সেটা নাইবা বললাম। ভাইয়া আপনার হয়তো মনে আছে কিছুদিন আগে ব্রাজিলে বিক্ষোভ হয়েছিল, সে দেশের জনগণ বিক্ষোভ করেছিল যাতে তাদের দেশে ফুটবল বিশ্বকাপের আয়োজন না করা হয়। তাদের কি টাকা পয়সা কম? না, তারা এইতো কয়েক বছর আগে জিডিপিতে সারাবিশ্বে ৭ম হয়েছিল। জনগণের একটাই দাবি ছিল বিশ্বকাপে যে টাকা ব্যায় হবে সেটা যেন শিক্ষা ও চিকিৎসা খাতে ব্যায় করা হয়। আর আমরা? আইসিসি উদ্ভধনি অনুষ্ঠান করতে না চাইলেও কোটি কোটি টাকা খরচ করে উদ্ভধনি অনুষ্ঠানের আয়োজন করি। আমদের দেশে যেখানে শিক্ষা ও চিকিৎসা ব্যাবস্থার করুণ দশা সেখানে কি আমাদের এই বিলাসিতা মানায়?
মন্তব্য করতে লগইন করুন