মাওলানা আব্দুস সোবহান এর বিরুদ্ধে মামলার অসংগতিগুলো জানুনঃ
লিখেছেন লিখেছেন আলোকিত পথ ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১০:৪১:১৬ সকাল
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর মাওলানা আবদুস সুবহানকে ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর সকালে টাঙ্গাইলে বঙ্গবন্ধু সেতুর পূর্ব প্রান্ত থেকে আটক করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
ওই রাতেই তাকে পাবনা কারাগারে নেওয়া হয়। ২৬ সেপ্টেম্বর পাবনা কারাগার থেকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তর করা হয় তাকে। পরে তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর প্রসিকিউশনের আবেদন আমলে নিয়ে মাওলানা সুবহানকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ট্রাইব্যুনাল। গণহত্যা, হত্যা, অপহরণ, আটক, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও ষড়যন্ত্রসহ আট ধরনের নয়টি মানবতাবিরোধী অপরাধে মাওলানা সুবহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ (চার্জ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল।
প্রসিকিউশনের দাবীর অসারতা:
প্রসিকিউশন দাবী করে যে, মাওলানা আব্দুস সোবহান পালানোর চেষ্টা করছিলেন।
আপনাদের কাছে প্রশ্ন করি। কেউ যদি পালাতে চায় তাহলে কি সে দূর থেকে বাড়ির কাছাকাছি আসে? মাওলানা আব্দুস সোবহান ঢাকা থেকে তার দেশের বাড়ি আসছিলেন এবং পথে তিনি গ্রেফতার হন। এবার আপনারাই বিচার করুন। তিনি পালাচ্ছিলেন কিনা?
মাওলানা আব্দুস সোবহান এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের অবাস্তব অভিযোগ:
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে মাওলানা আব্দুস সোবহান সুকৌশলে দেশে বিদেশে বিচারের বিরুদ্ধে প্রচারনা চালাচ্চ্ছিলেন, দেশে বিদেশে সাক্ষ্য প্রমান ধ্বংসের কাজে রত ছিলেন।
মূলতঃ এ মামলার সাক্ষীরা সব দেশী। বিদেশী সাক্ষী নেই রাষ্ট্রপক্ষের। অভিযুক্ত ঘটনাস্থল সব দেশের মধ্যে। তাহলে কি করে তিনি বিদেশে সাক্ষ্য প্রমান ধ্বংসের কাছে লিপ্ত হতে পারেন?
যথাসময়ে আদালতে হাজির করা হয়নি বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সাবেক এমপি মাওলানা আব্দুস সোবহান কে
গ্রেফতারের পর যথাসময়ে আদালতে হাজির করা হয়নি তাকে। এর মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ আইন, মানবাধিকার এবং সংবিধান লঙ্ঘন করেছে। ২০ তারিখ গ্রেফতারের পর ২৩ তারিখ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে তাকে গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করা হয়েছে। রাজনৈতিক উদ্দেশে তার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে।
এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) নুর হোসেন এর অসঙ্গতিপূর্ন রিপোর্ট ও সাক্ষ্যঃ
এ মামলায় কন্দরপুর ও সিন্দুরপুর গ্রামের নাম না থাকলেও
তদন্ত কর্মকর্তা আসামীপক্ষের জেরার জবাবে বলেছিলেন তিনি কন্দরপুর ও সিন্দুরপুর গণকবর পরিদর্শন করেছেন। পরে তিনি বলেছেন, ওই দুটি গ্রাম নদীগর্ভে বিলিন হয়ে গেছে।
তাহলে তিনি ঐ গ্রাম দুটি তিনি পরিদর্শনই বা করলেন কিভাবে?
মাওলানা আব্দুস সোবহান এর পক্ষে ও বিপক্ষে সাক্ষীর সংখ্যার বৈষম্য :
মাওলানা আব্দুস সোবহান এর বিপক্ষে সাক্ষ্য দিয়েছেন দুই তদন্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমান ও মো. নূর হোসাইনসহ সরকারপক্ষের ৩১ জন সাক্ষী। আর জব্দ তালিকার দুই সাক্ষী হচ্ছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার গ্রন্থাগারিক আনিসুর রহমান ও বাংলা একাডেমির সহকারী গ্রন্থাগারিক এজাবউদ্দিন মিয়া।
অন্যদিকে তার পক্ষে সাফাই সাক্ষ্য দেয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক মাত্র ৩ জন নির্ধারণ করে দেওয়া হয়!
মাওলানা আব্দুস সোবহান এর বিরুদ্ধে মামলার ৯ নং অভিযোগের সাক্ষীদের বয়সঃ
রাষ্ট্রপক্ষের সাক্ষী সানোয়ারা খাতুন ও আজিজুল ইসলাম। ভোটার আইডিতে তাদের দেয়া তথ্য থেকেই জানা যায় মুক্তিযুদ্ধকালে তাদের বয়স ছিল যথাক্রমে মাত্র ৫ ও ২ বছর। কেননা ভোটার আইডিতে তার জন্ম তারিখ লেখা আছে যথাক্রমে ১৯৬৬ ও ১৯৬৯ সাল। কাজেই মুক্তিযুদ্ধকালে যাদের বয়স ছিল মাত্র ৫ ও ২ বছর তাদের সাক্ষ্য কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে কি? জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন রইলো।
মাওলানা আব্দুস সোবহান এর বিরুদ্ধে মামলার ৯ নং অভিযোগের সাক্ষী সানোয়ারা খাতুন ও তার সাক্ষ্য সম্পর্কে জানুনঃ
সানোয়ারা খাতুন তার দেয়া সাক্ষ্যে বলেছেন, ঘটনার দিন তার চাচা ও বড়ভাই ও অন্যান্য বয়স্ক লোকজন বাড়িতে উপস্থিত থাকার পরেও তিনি নিজেই ভিকটিমকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন।
পুরুষরা থাকতে তার (সানোয়ারা খাতুন) এই এগিয়ে আসাটা কি স্বাভাবিক ঘটনা?
ভোটার আইডিতে তার দেয়া তথ্য থেকেই জানা যায় যুদ্ধকালে তার বয়স ছিল মাত্র ৫ বছর (জন্মসাল ১৯৬৬)।
বেশির ভাগ সাক্ষীই 'সেফ হোম' বা ঐ ধরনের কোন তোতাপাখি প্রশিক্ষন কেন্দ্রের প্রোডাক্টঃ
আসুন এ পর্যায়ে একটা আয়াত ও হাদীস সম্পর্কে অবগত হইঃ
জাতির বিবেকের কাছে প্রশ্ন: মাওলানা আব্দুস সোবহান যদি মানবতাবিরোধী/যুদ্ধাপরাধী হতেন তাহলে কি এলাকার মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ট হয়েও তাকে ১৯৯১ ও ২০০১ সালে বিপুল ভোটে জাতীয় সংসদ সদস্য হিসাবে নির্বাচিত করতো?
মাওলানা আবদুস সোবহান যদি রাজাকার হতেন তাহলে কি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আই কে গুজরাল তাদের সাথে এমন অন্তরঙ্গ বৈঠক করতেন? জাতির বিবেকের কাছে আজ এই প্রশ্ন
আমরা কোন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত বিচার দেখতে চাই না
সব অবস্থায় ধৈর্য্য ধারন করার বিষয়েই ইসলাম শিক্ষা দেয়। আর বিরুদ্ধবাদী, ইসলাম বিরোধীদের এটা অবশ্যই মনে রাখা উচিৎঃ
সবশেষে একটু মাথা খাটানোর অনুরোধ করবো। একটু ভাবে দেখুন বিষয়টাঃ
আরো জানতে লাইক করুনঃ Free Jamaat Leaders
বিষয়: বিবিধ
৩৪৬১ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন