বাবার অবদান ও তার প্রতি কৃতজ্ঞতা
লিখেছেন লিখেছেন আলোকিত পথ ২২ মার্চ, ২০১৪, ০৪:০২:১১ বিকাল
যে মানুষটিকে হয়তো কখনও বলা হয়ে ওঠেনি যে “তোমাকে ভালোবাসি” কিন্তু হৃদয়ে সবসময় উপলব্ধি ছিলো এবং আছে। সে হলো আমাদের বাবা; যার অবদানের কারনেই এই সুন্দর পৃথিবীর বুকে আসা ও জীবনধারন করা। আমাদের অস্তিত্বে মিশে থাকা সেই বাবা; এই ছোট্ট কথাটি শোনার অপেক্ষা বা তোয়াক্কা না করেই তার সন্তানদের ভালোবাসেন, আগলে রাখেন তার সমস্ত শক্তি, রক্ত বিন্দু দিয়ে। সেই সকল বাবাকে উৎসর্গ করেই এই লেখা।
যে মানুষটি তার জীবনের শ্রেষ্ঠ উপহার হিসাবে এক ফুটফুটে সন্তান পাওয়ার পর প্রতিটি মুহুর্ত আন্দোলিত হন, পুলকিত হন এবং পণ করেন; নিজের জীবনের সকল সুখ, আশা-আকঙ্খা বিসর্জন দিয়ে হলেও সন্তানের সুখের জন্য জীবনের শেষ রক্তবিন্দু উৎসর্গ করে দিবেন, সেই মানুষটির অবদানের কথা কি আমরা চিন্তা করি? হয়তো করি তবুও আরেকবার মনে করিয়ে দেওয়া।
জন্মের পরই আযানের মাধ্যমে যে মানুষটির কন্ঠ আমাদের কানে প্রবেশ করে হৃদয়ে গেথে গিয়েছিলো তা হলো আমাদের বাবার কন্ঠ। এরপর মায়ের বিনিদ্র রাত যাপনের সঙ্গিও কখনো কখনো হয়েছেন তিনি। মনে কি পড়ে? তার কোলে, ঘাড়ে এমনকি পিঠে ওঠে তাকে ঘোড়া বানিয়ে চলা, নিজের কচি হাতটি তার দৃপ্ত হাতের ভিতর ঢুকিয়ে মসজিদে, স্কুলে যাওয়া আবার সেই হাতটিকেই শাসনের হাত হিসাবে পিঠের উপর পড়ার অভিজ্ঞতা? তার সাহায্যেই সাইকেল চালানো, সাঁতার শেখা? আরো মনে পড়ে বাবার সাথে মাঠে বা টিভিতে খেলা দেখা, দোলনায় দোল খাওয়া, হোমওয়ার্ক করা, একসাথে মাছ ধরতে যাওয়া ইত্যাদি।
মনে পড়ে ছোটবেলার সেই আকুতিগুলো;
যেগুলো তিনি অপূর্ন রাখেননি। তিল তিল করে গড়ে ওঠার সময়ে তারা আদর, শাসন ও শিক্ষাদানের এক অপূর্ব সমন্বয়ের কারনের আজকের এই আপনি!
পরিবারের প্রধান হিসাবেও তিনি অনন্য। সকলের প্রয়োজন মেটাতে, পরিবারকে একটা ইউনিট হিসাবে গড়ে তুলতে ও সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টিতে তার অবদানের কথা মনে পড়লেই চোখ ভিজে যায়। মায়ের একজন উপযুক্ত সঙ্গী, ছেলের জন্য এক বটবৃক্ষ ও মেয়ের জন্য পরম আদরের ও সদা জাগ্রত একজন অভিভাবক হিসাবে তিনি আজীবন সার্ভিস দিয়ে যান।
বাবার এত অবদান এর কথা ভাবার পর নিজেকে বড়ই ছোট মনে হয়। তার প্রতি আমাদের ফিডব্যাক বা কর্তব্যের বিষয়গুলো চিন্তার সাগরে হাতঁড়ে বেড়িয়েও হয়তো পাওয়া যায় না কিছুই। আমাদের কি আসলেই কিছুই করার নেই? মুখ ফুটে হয়তো বলতে পারি না, বাবা; তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি কিন্তু আর কি কিছুই করার নেই এই কোন প্রতিদান/ বিনিময়ের জন্য অপেক্ষা না করা এই সত্তার প্রতি?
ছোটবেলায় তিনি আমাদের ট্রলি ঠেলে কত জায়গায় নিয়ে গেছেন; আমরা কি পারি না তার হুইল চেয়ারটি ঠেলে নিয়ে তাকে সঙ্গ দিতে?
আমাদের অসুখের সময় রাত-বিরাতে বিভিন্ন ফার্মেসীতে ঔষধের জন্য দৌড়ে বেড়ানো সেই মানুষটির মুখে কি আমরা ঔষধ তুলে দিতে পারি না?
সব চাইতে বড় কথা হলো; আমাদের সৃষ্টিকর্তাই বাবাদের এবং আমাদের সৃষ্টি করেছেন। তিনি আমাদের এই অপ্রকাশিত ভালবাসা, দৃঢ় বন্ধন সম্পর্কে অবশ্যই বেখবর নন। তাই তিনি কি সুন্দর উপায় বাতলে দিয়েছেন তার সৃষ্টির প্রতি সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার আল কুরআনে !!!
তিনি বিরক্তিকর কোন শব্দ এমনকি “উহ” বলতেও নিষেধ করেছেন! কারন তিনি জানেন তাদের হৃদয় কতটা ব্যাথা পায় তাদেরই সন্তানের দেওয়া কষ্টে। এর পরের আয়াতেই তিনি যা বলেছেন আসুন আমরা সন্তানেরা কুরআনের সেই আয়াতের সাথে কন্ঠ মিলিয়ে বলি;
বিষয়: Contest_father
৫৫১৩ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
পোস্টে প্লাস+++++++++++
ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া শাখা প্রশাখাকে যেমন এই গাছটি বহন করে রেখেছে বাবা ও হচ্ছেন ঠিক তেমন ছড়িয়ে ছিটিয়ে যাওয়া ভাই বোনদেরকে এক সূত্রে গেঁতে রাখার শক্ত মজবুত একটা বাঁধন ঠিক এই গাছটির মত ।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন