মন্দির ভাঙ্গার গেম এর প্লেয়ার কারা?

লিখেছেন লিখেছেন এমরুল কায়েস ভুট্টো ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ০৪:১৪:৪৯ বিকাল



আবারো একটি অপ্রিতিকর ঘটনা ঘটে গেল ব্রাহ্মনবাডিয়াতে। বেশ কয়েকটি মন্দির এবং বসতবাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটেছে। যা আমার কাছে খুব দুঃখজনক। আমার জানামতে বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী এবং শাস্তিপ্রিয়। এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্থদের প্রতি সহমর্মিতা প্রকাশ করতেছি। নাগরিক হিসেবে নিরাপত্তা পাওয়া তাদের সংবিধানিক অধিকার আছে।

কিন্তু কেন ঘটে এসব ঘটনা গুলো?

যুক্তিবিদ্যার ”কার্য-কারন” নীতির সূত্রানুসারে বলা হয় প্রতিটি কার্যের পেছনে এক বা একাদিক কারন দায়ী থাকে। কারন ছাড়া কোন কার্য সম্পাদিত হয় না। তাহলে এখানেও তেমনি কিছু কারন আছে।

ঘটনার সূত্রপাতঃ বিভিন্ন মিড়িয়ার মারফত জানতে পারলাম, রসরাজ দাস নামের এক হিন্দু যুবক প্রথমে মুসলিমদের প্রবিত্র কাবার ছবির উপর তাদের শিব মুর্তি প্রতিস্থাপন করে “জয় হরি জয় হরি” বলে ফেইচবুকে স্টেটাস দিয়েছিল। যা মুসলিমদের ধর্মাবেগের উপর মারাক্তক আঘাত লাগার কথা। মুসলিম হিসেবে এমন কাজ আমিও মেনে নিতে পারব না। যার ফলশ্রুতিতে এই হামলার ঘটনা ঘটে। অথ্যাৎ প্রথম ঘটনার জন্যই দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটেছে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল উত্তম বড়ুয়ার জন্য কক্সবাজারের রামুতে।

এখানে বলে রাখা ভাল বাংলাদেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মানুষের উপর বা ঘরবাড়িতে আক্রমন করা ফৌজদারী অপরাধ। তেমনি কোন ব্যক্তিদ্বারা অন্য কারো ধর্ম কে অবমনানা করাও ফৌজদারী অপরাধ। ধর্মঅবমানার বিষয়টি সংবিধানেও উল্লেখ আছে। যদি কেউ তারপরও সংবিধান অমান্য করে কারো ধর্ম নিয়ে ইচ্ছাকৃত ভাবে কুৎসা রাটায় তবে তা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল হবে। কারন সংবিধান অমান্য করা রাষ্ট্রদ্রোহিতার শামিল।

কিন্তু আমার প্রশ্ন হল রসরাজ দাস নামক যুবকটি এত বড় জঘন্য কাজ করতে গেল কেন? কই এর আগে তো কখনো মুসলিমরা এই হিন্দু পাড়াতে হামলা করেনি। তাহলে আজ কেন করল? যার উত্তর হবে ঐ যুবকটি ইচ্ছাকৃত ভাবে সমাজে বিশৃংঙ্খলা ঘটনানো জন্য এই কাজটি করেছে। এবং এই জন্য এই সাম্প্রদায়িক ঘটনাটি ঘটেছে।

তবে এখানে আরেকটি প্রশ্ন দাড়ায় তা হল, একজন অপরাধ করলে কি তার জন্য পুরো একটি গ্রামে হামলা করা যায়? না। কখনোই যাবে না। কারন আইন অনুযায়ী যার অপধানের জন্য কেবল সেই দায়ী।

কিন্তু আমার প্রশ্ন হল, রসরাজ নামক যুবকটি যে এতদিন ধরে ইসলাম নিয়ে যাই ইচ্ছে তাই লেখে যাচ্ছে তা কি তার পাড়ার কারো চুখে পড়েনি? তার ফ্রেন্ড লিস্টে কি তার আত্বীয়স্বজন/বন্ধুবান্ধব বা পাড়া প্রতিবেশি কেউই ছিলনা? তার উত্তর হবে, অবশ্যই ছিল। তারমানে তারা রসরাজ দাসকে এই রাষ্ট্রদ্রোহিতার কাজের বাধা দেওয়ার পরিবর্তে প্রকাশ্য বা মৌন সমর্থন দিয়ে উল্টো তার রক্ষাকবজ হিসেবে কাজ করেছিল। এমন রসরাজ দাস ঐ পাড়াতে আরো অনেক রয়েছে। কিন্তু তাদের সমাজ কি কখনো এসব রাষ্ট্রবিরেধী কাজের জন্য কাউকে পুলিশে দিয়েছে? এমন নজির কি আছে? অপরাধ যে করে সে যেমন অপরাধী, অপরাধীকে সহায়তাকারী এবং প্রশ্রয়দানকারীও আইনের চুখে সমান অপরাধী। তারমানে কি এই অপরাধের আশ্রয় প্রশ্রয়দানের জন্য তার সমাজ অপরাধ করেনি?

মনে রাখবেন, একটি বিশাল অগ্নীকান্ড সৃষ্টি করে সব কিছু ভষ্মিভুত করে দিতে দিয়াশলায়ের একটি কাঠিই যথেষ্ট। সামান্য একটি কাটি দিয়েই সব কিছু পুড়িয়ে দেওয়া যায়। আর এখানে দিয়াশলাই হিসেবে কাজ করে রসরাজ দাস এবং উত্তম বড়ুয়ারা। ফলশ্রুতিতে সমাজে ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহ দাবানল।

প্রশাসনের উচিত হবে দাবানল যাতে ছড়াতে না পারে সেদিকে নজর রাখা। সাম্প্রদায়িকতার দাবানলকে রুখতে হলে সর্ব প্রথম দিয়াশলায়ের কাঠি হিসেবে কাজকরা রসরাজ দাস এবং উত্তম বড়ুয়াদের বিবোদ্ধে প্রশাসনের জিরো টলারেন্স ঘোষনা করা উচিত। ফেইচবুক ব্লগে ভালমত নজরদারি করলে এমন ঘটনা ঘটানো সাহস পাবেনা রসরাজ দাস এবং উত্তম বড়ুয়ারা। অন্যদিকে মুসলিমদেরও উচিত হবে আইন হাতে তুলে না নিয়ে আইনের আশ্রয় নেওয়া। প্রতিবাদ, মানববন্ধান, স্বারকলিপি এবং সংবাদসম্মেলন করে বিষয়টি মিড়িয়ার নজরে আনা।

বিষয়: বিবিধ

১৮১৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

379299
৩১ অক্টোবর ২০১৬ বিকাল ০৫:৩২
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / ধন্যবাদ /
০১ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০১:৪৫
314093
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : ধন্যবাদ আপনাকে। সময় করে শুনব তফসিরটা।
379304
৩১ অক্টোবর ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:১৬
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন :
আমার জানামতে বাংলাদেশের মানুষ সাম্প্রদায়ীক সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী এবং শাস্তিপ্রিয়।

কি সাংঘাতিক কথা, শাস্তিপ্রিয়!
একটি বিশাল অগ্নীকান্ড সৃষ্টি করে সব কিছু ভষ্মিভুত করে দিতে দিয়াশলায়ের একটি কাঠিই যথেষ্ট।

পড়ে ভালো লাগল। যৌক্তিক মতামত দিয়েছেন। অনেক দিন পরে আসলেন, ধন্যবাদ নেবেন।
০১ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০১:৪১
314090
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : ব্রাহ্মনবাড়িয়ার ঘটনা শেষ হতে না হতে এখন রাঙ্গামাটিতেও একই ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের উগ্র পাহাড়ীদের সংগঠন পিসিপির সেক্রেটারী কুনেন্টু চাকমা এবার পবিত্র কোরআন শরিফের উপর বসে নিজের ছবি আপলোড দিয়েছে!!! এই জঘন্য কাজটি করে সে কি চাচ্ছে সেটা বুঝতে বাকি আছে? হ্যা, কুনেন্টু চাকমাও মানুষকে উত্তেজিত করে রামুর উত্তম বড়ুয়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার রসরাজ দাসের মত দাঙ্গা ছড়াতে চাচ্ছে।
379307
৩১ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৮:৫৭
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ঘটনার শুধু মন্দির ভাঙ্গা অংশ এসেছে মিডিয়াতে। অথচ এর পুর্বের ঘটনাগুলি কিছু আসেনি। বুঝার আর কি বাকি থাকে!
০১ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০১:৪৩
314091
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : সেই জন্যই বললাম, যুক্তিবিদ্যার ”কার্য-কারন” নীতির সূত্রানুসারে বলা হয় প্রতিটি কার্যের পেছনে এক বা একাদিক কারন দায়ী থাকে। কারন ছাড়া কোন কার্য সম্পাদিত হয় না। তাহলে এখানেও তেমনি কিছু কারন আছে।
379315
৩১ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:০৪
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..

যদি সবকিছুই শীর্ষপর্যায়ের পরিকল্পিত না হয় তবে আমাকে নতুন করে প্রাইমারিতে ভর্তি হতে হবে!!

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
০১ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০১:৪৭
314094
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : প্রাইমারিতে ভর্তি হতে হলেও সত্যকে সামনে আনা উচিত।
379329
০১ নভেম্বর ২০১৬ সকাল ১১:২৬
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশে রায়ট লাগানোর জন্য বিশেষ গ্রুপ এরকম উস্কানিমূলক কাজ করে যাচ্ছে । এতে আখেরে মুসলমানেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
০১ নভেম্বর ২০১৬ দুপুর ০১:৪৪
314092
এমরুল কায়েস ভুট্টো লিখেছেন : একটি বিশাল অগ্নীকান্ড সৃষ্টি করে সব কিছু ভষ্মিভুত করে দিতে দিয়াশলায়ের একটি কাঠিই যথেষ্ট। সামান্য একটি কাটি দিয়েই সব কিছু পুড়িয়ে দেওয়া যায়। আর এখানে দিয়াশলাই হিসেবে কাজ করে রসরাজ দাস এবং উত্তম বড়ুয়ারা। ফলশ্রুতিতে সমাজে ছড়িয়ে পড়ে সাম্প্রদায়িকতার ভয়াবহ দাবানল।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File