শিয়া-সুন্নীর মধ্যে পার্থক্য কি? (শুধু মাত্র ঝগড়াপ্রবন ইসলামপন্থিদের জন্য)
লিখেছেন লিখেছেন এমরুল কায়েস ভুট্টো ২১ জুন, ২০১৪, ০৯:৩৯:৩৮ সকাল
দুখের বিষয় হল কিছু ইসলাম পন্থি ভাই আছে যারা না জেনে কথায় কথায় শিয়াদের কাফির বলতেছে। কাউকে কাফির হিসেবে ঘোষনার পূর্বে আপনাকে জানতে হবে মুসলিম হতে হলে একজন মানুষকে কি কি শর্ত পালন করতে হয়? সেগুলো শিয়ারা পালন করে কিনা? অথ্যং ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো তারা মানে কিনা??
প্রশ্ন : শিয়া ও সুন্নী মাজহাবের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যগুলো কি কি? এছাড়া উভয় মাজহাবের মধ্যে কোন কোন ক্ষেত্রে মিল আছে তাও জানতে চাই।
উত্তর : শিয়া মাজহাব মুসলিম মাজহাবগুলো থেকে বিচ্ছিন্ন কোনো মাজহাব নয়।
মুসলিম মাযহাবগুলোর মাঝে বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে। যদিও সেগুলোর বেশিরভাগই কালাম শাস্ত্রের সঙ্গে সম্পর্কিত এবং বেশিরভাগ সাধারণ মুসলমানই সেগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখেন না। বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য থাকা সত্ত্বেও বহু অভিন্ন বিষয় খুঁজে পাওয়া যায় যা এই মাযহাবগুলোর ঐক্যের বন্ধন হিসেবে কাজ করতে পারে। এসব অভিন্ন বিষয়ের সংখ্যা বিভেদ সৃষ্টিকারী বিষয়গুলোর তুলনায় অনেক বেশি। দুঃখের বিষয় হলো মতানৈক্য সৃষ্টিকারীরা যৌথ বা অভিন্ন বিষয়গুলো যেন তুলে না ধরারই পণ করেছেন।
বিভিন্ন মাযহাবের ফিকাহগত বিষয় যেমন, বিয়ে, তালাক,হজ্ব, উত্তরাধিকার আইন ইত্যাদি ক্ষেত্রে অনেক মিল রয়েছে। শিয়া ফেকাহতেও উপরোক্ত বিষয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আহলে সুন্নাতের অপর ৪ মাযহাবের সঙ্গে মিল রয়েছে।
মাসলা-মাসায়েলের মত শাখাগত বিষয় এমনকি কোনো কোনো বিষয়ের ফরজ হওয়া বা ফরজ না হওয়া নিয়ে সুন্নিদের মাজহাবগুলোর মধ্যেই অনেক মতপার্থক্য দেখা যায়, শিয়া মাজহাবও এর ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোতে শিয়া ও সুন্নিদের মধ্যে অমিলের চেয়ে মিলের সংখ্যাই বেশি। যেমন,
শিয়া ও সুন্নি উভয় মাজহাবই এক ও অদ্বিতীয় আল্লাহতে বিশ্বাসী। বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে শেষ নবী ও রাসূল মনে করে। কোরআনকেও অবিকৃত মনে করে উভয় মাজহাবই। উভয় মাজহাবই বিশুদ্ধ হাদীসকে মান্য করতে বলে। উভয় মাজহাবই রোজা রাখা, নামাজ কায়েম করা, যাকাত দেয়া, হজ্ব পালন, অতীতের নবী-রাসূলদের স্বীকৃতি দেয়া, কিয়ামত বা পুনরুত্থাণে বিশ্বাস ইত্যাদিকে ইসলামের মৌলিক বিশ্বাসের অংশ মনে করে।
যাই হোক, শিয়া-সুন্নি পার্থক্যের কয়েকটি দিক হল:
শিয়াদের প্রধান ধারা বা ১২ ইমামি শিয়া মুসলমানরা মনে করেন রাসূল (সা.)'র পর কে মুসলমানদের নেতা বা খলিফা হবেন তা "তানসিসি" বিষয়। অর্থাৎ মহান আল্লাহর নির্দেশে ও রাসূল (সা.)'র ব্যাখ্যার মাধ্যমে খলিফা বা ইমাম নির্বাচিত হবেন।
অন্যদিকে সুন্নি মুসলমানরা মনে করেন এই পদে কে বসবেন তা নির্বাচন বা বেছে নেয়াম মাধ্যমে নির্ধারণযোগ্য বিষয়। শিয়া মুসলমানরা মনে করেন রাসূল (সা.)'র পবিত্র আহলে বাইত থেকেই মুসলমানদের রাসূল (সা.) পরবর্তী ইমাম বা নেতা কিংবা কোরআনের ভাষায় "উলিল আমর" মনোনীত হয়েছেন। আমিরুল মুমিনিন হযরত আলী (আ.) ও তাঁর বংশে জন্ম নেয়া আরো ১১ জন ইমাম মুসলমানদের জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের মনোনীত নেতা। হযরত ইমাম মাহদী (আ.) এই ১২ জন ইমামের মধ্যে সর্বশেষ ইমাম। শিয়া মুসলমানরা এই ১২ ইমামকে নিষ্পাপ মনে করেন এবং তারা কখনও ভুলও করেন না। কোনো সুস্থ ও বিবেক-সম্পন্ন মানুষের পক্ষে বিষ-পান যেমন অসম্ভব বিষয়, তাঁদের জন্যও পাপ ও ভুল করা অসম্ভব বিষয়। পবিত্র কোরআনে সুরা আহজাবের ৩৩ নম্বর আয়াতে বিশ্বনবী (সা.)-এর আহলে বাইত সম্পর্কে বলা হয়েছে:
إِنَّمَا يُرِيدُ اللَّهُ لِيُذْهِبَ عَنْكُمُ الرِّجْسَ أَهْلَ الْبَيْتِ وَيُطَهِّرَكُمْ تَطْهِيرًا
এর অর্থ: হে নবীর আহলে বাইত। আল্লাহ কেবল চান তোমাদের থেকে অপবিত্রতা দূর করতে এবং তোমাদেরকে পূর্ণরূপে পূত-পবিত্র রাখতে।
সুন্নি মুসলমানরাও শিয়া মুসলমানদের সব ইমামকেই শ্রদ্ধা করেন এবং তাঁদেরকে উচ্চ মর্যাদা-সম্পন্ন মুসলমান বলে মনে করেন, তাঁরা সবাই আল্লাহর মনোনীত খলিফা বা ইমাম ছিলেন বলে সুন্নি ভাইরা মনে করেন না। সুন্নি মুসলমানরা হযরত আলী (আ.)-কে চতুর্থ খলিফা হিসেবে সম্মান করেন। শিয়াদের দৃষ্টিতে আহলে বাইতের সদস্য বলে বিবেচিত হযরত ফাতিমা (সা.)-কে সুন্নিরাও বেহেশতী নারীদের সর্দার মনে করেন। তাঁর দুই পুত্র হযরত ইমাম হাসান ও হোসাইন (আ.)কেও বেহেশতী যুবকদের সর্দার মনে করেন সুন্নি ভাইরা। শিয়া ভাইদের ১২ জন ইমামের সবার নামই পবিত্র মদীনার মসজিদুন্নবীর ছাদ-সংলগ্ন বিভিন্ন বিম বা পিলারে এখনও খচিত রয়েছে। সুন্নি ভাইরাও ইমাম মাহদী (আ.)-কে মুসলমানদের শেষ ইমাম মনে করেন।
তবে তাঁর জন্মকাল ও আবির্ভাব নিয়ে এ দুই মাজহাবের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
শিয়া ভাইরা মনে করেন আল্লাহ মুসলমানদের জন্য সব সময়ই নেতা বা ইমামের ব্যবস্থা করেছেন। এখনও ইমাম মাহদী (আ.) মুসলমানদের নেতা, তবে তিনি জন্মের কিছুকাল পর অদৃশ্য অবস্থায় রয়েছেন এবং শ্রেষ্ঠ ইসলামী আইনবিদ বা ওলীয়ে ফকিহ ইমাম মাহদী (আ.)'র প্রতিনিধি হিসেবে মুসলমানদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তার পিতা ইমাম হাসান আসকারী (আ.) ছিলেন মুসলমানদের ১১ তম ইমাম। উপযুক্ত সময়ে ও পরিবেশে ইমাম মাহদী (আ.) আবারও আবির্ভূত হবেন এবং হযরত ঈসা (আ.) হবেন তাঁর সহকারী বা সহযোগী। ইমাম মাহদী (আ.) সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন।
সুন্নী মুসলমানরাও মনে করেন ইমাম মাহদী (আ.) সারা বিশ্বে ইসলামী শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবেন এবং হযরত ঈসা (আ.) হবেন তাঁর সহকারী বা সহযোগী। তবে সুন্নি মুসলমানদের অনেকেই তাঁর জন্ম এখনও হয়নি বলে মনে করেন না।
সুন্নি মাজহাবের অন্যতম প্রধান ইমাম আবু হানিফা (র.) ও মালিকি মাজহাবের প্রধান মালিক ইবনে আনাস ছিলেন শিয়া মুসলমানদের ষষ্ঠ ইমাম হযরত জাফর সাদিক (আ.)'র ছাত্র।
শিয়া ভাইদের সম্পর্কে একটা মারাত্মক ভুল ধারণা প্রচলিত রয়েছে অনেকের মধ্যে। এ ভুল ধারণাটি হল, শিয়ারা হযরত আলী (আ.)-কে মর্যাদার দিক থেকে রাসূল (সা.)'র সমতুল্য মনে করে। কিন্তু এ অভিযোগ মোটেই সত্য নয়। শিয়া মুসলমানরা এবং তাঁদের ইমামরাই হযরত মুহাম্মাদ (সা.)-কে সব দিক থেকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব মনে করেন।
(রেফারেন্স : 'শিয়ে পাসোখ মিদাহাদ'- সাইয়েদ রেজা হুসেইনী নাসাব)
লেখাটি পড়ে মনে হলো শিয়া সুন্নির মধ্যে তেমন কোন পার্ধক্য নেই। সুন্নি মুলসমানরাও নবী (সা এর ওয়ারিশদের ভালবাসে। হযরত আলী (আ-কে ইসলামের জ্ঞানী ব্যক্তি হিসেবে জানে। মূলকথা ইসলামের মুল বিষয়গুলো একই। সামান্য যে বিষয়গুলো মতভেদ আছে তা অতি সামান্য। তাই শক্তিশালী মুসলিম জাতী গঠনে সামান্য মতভেদ ভুলে এক হয়ে কাজ করতে হবে। মাহযাব নিয়ে বাড়াবাড়ি করে অমুসলিমদের সুযোগ সৃস্টি করে দেওয়া ঠিক হবে না। কোন মাযহাব ভাল বা সঠিক তা নিয়ে বিবেদ না করে আল্লাহ ও রাসুল (সা-এর প্রদর্শিত পথে চলার নাম ইসলাম। শিয়া মুসলমান সুন্নিদের হত্যা করবে আর সুন্নিরা শিয়া মুসলমানকে হত্যা করবে এটা তো কোন মাযহাবই মেনে নেয় না। মুসলমান মুসলমানকে হত্যা করা হারাম।
collected by বঙ্গমিত্র
শিয়াদের ব্যাপারে আরো জানতে চাই...
বিষয়: বিবিধ
৩৫২৬ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শিয়া কোন মাজহাবের নাম নয়! যেভাবে আপনি বলেছেন।
শিয়া হল একটি ফেরকার নাম! রাসুল (সাঃ) পথভ্রষ্ট ৭২ টি ফেরকার কথা বলেছিলেন, শিয়ারা তাদেরই অধিভুক্ত!
মাজহাবের ভিতরে ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে কোন দ্বিমত নাই। যে সমস্ত বিষয় সরাসরি কোরআন-হাদিসে বর্ণিত নাই, সে সব বিষয়ের বিশেষজ্ঞ মতামত দেওয়ার নামই হল মাজহাব। কিংবা কোরআন হাদিসের ব্যাখা মুলক উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে মাজহাবের ভুমিকা আছে। এক কথায় মাজহাব অর্থ হল 'বিশেষজ্ঞ মতামত'। তা মানা না মানা কারো ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল।
শিয়া একটি ফেরকা। তারা ইসলামের মৌল বিষয়ের উপর প্রশ্ন তুলে। নামাজ পাঁচ বারের জায়গায় তিন বার পড়া, ফেরেশতাদের অহি বন্টনে ভুল করা, খোলাফায়ে রাশেদীনদের গালাগালি করা ইত্যাদি। এ জাতীয় চিন্তা বিশ্বাস ইসলামের মুল ভিত্তির উপর আঘাত করে। কোরআন কে সরাসরে অস্বীকার করার নামান্তর।
সুতরাং শিয়া বিতর্ক আর মাজহাবি বিতর্ক এক নয়, একনকি কাছাকাছি ও নয়। দুটি সম্পুর্ন্ন ভিন্ন বিষয়। কেউ মাজহাব না মানলে তাকে দন্ড দেওয়া হয় না কিন্তু শিয়াদের ভিতরে থেকে কখনও নিজেকে সুন্নী দাবী করলে তার মরণ পন সমস্যা হতে পারে।
যাই হোক, এটা নিয়ে মতবিরোধ বাড়ালে মুসলমানদের শত্রু বাড়বে। তাই চুপ থাকা উচিত, প্রয়োজনে নিজেদের মধ্যে যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সমাধান খোঁজা উচিত। পাশ্চাত্য ও ইহুদী শক্তি শিয়া-সুন্নী ধুয়া তুলে একে অপরের বিরুদ্ধে শত্রুতা লাগিয়ে চায়। একথা পরীক্ষিত সত্য যে, ইসলাম কে সামনা সামনি মোকাবেলা করে পরাস্ত করা যায়নি। সেটাকে পরাস্ত করতে নিজেদের মধ্যে আভ্যন্তরীণ হানাহানিই হল যুতসই অস্ত্র। ফলে তাই চলছে বছরের পর বছর ধরে।
আমি অনেক কিছু জেনে এই পুষ্টটি দিয়েছি। হ্যা শিয়া-সুন্নি মধ্যে এখন আকিদা গত বিরাট পাথ্যর্ক সৃষ্টি হয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে মুসলিম হতে হলে একজন মানুষকে কি কি শর্ত পালন করতে হয়? কাউকে কাফির হিসেবে ঘোষনার পূর্বে আপনাকে অবশ্যই সেটা জানতে হবে। সেগুলো শিয়ারা পালন করে কিনা? অথ্যং ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো তারা মানে কিনা?
এই কথাটির সাথে আমি এক মত নই, আর হব'ই বা কেন ? আপনি তো এর পেছনে কোন লজিক'ই দাড় করাতে পারেন নি
দ্বিতীয়তঃ "বার" মানে আপনি অয়াক্তকে বুঝিয়েছেন,আর তারাও নামাজ পাঁচ অয়াক্তই মনে করে। তবে আদায় করারার সময় নিয়ে আপনারা ডিবেট করেন সেটার এন্সার আপনি দুই হজের দিকে তাকালেই পাবেন কারন দুই হজে সব মুসলিমরা জোহর আছর এবং মাগরিব এশা পর পর আদায় করে এটা। এটাকে আপনি মৌলিক বিষয়ের অবক্ষয় মনে করেন তাহলে আপনি কোরআনকে অস্বীকার করলেন। সুরা হুদে নামাজের সময় সম্পর্কে আয়াতটি দেখতে পারেন "সুরা হুদ, আয়াত ১১৪"
তৃতীয়তঃ আপনারা খোলাফায়ে রাশেদীন মনে করেন ৪ জনকে, তারা চতুর্থ জনকে ইমাম মানে তাকে গালি দেয়ার প্রশ্নই আসে না। বাকি তিন জনকে গালাগাল করে কিনা তা আমি জানি না। তবে সেটা নিঃসন্দেহে অবমাননাকর। আর তাদের গালাগালি করলে কোরআনকে অস্বীকার করা হয় তা তো জানতাম না জানালে খুশি হব।
আর কোন প্রশ্ন করবনা আপাতত এগুলোর উত্তর দিন।
বিঃ দ্রঃ- দ্বিমত পোষণের কারণে আমাকে অনেকেই শিয়া বলে ট্যাগ দিতে পারেন তাদের বলি আমি মুসলিম শিয়া বা সুন্নি নই (জন্ম সুত্রে সুন্নি)
যাক, রাসুল (সাঃ) বলেছেন আমার মৃত্যুর পর ত্রিশ বছর পর্যন্ত খেলাফত বহাল থাকবে। হয়রত হোছাইন যেদিন শাহাদাত বরণ করেন তখন খেলাফতের ত্রিশ বছর পূর্ন হয়। সুতরাং এ কথা প্রমাণিত হয় যে, চার জন্য খলিফার খেলাফতকে রাসুল (সাঃ) মৃত্যুর আগেই সু-নিশ্চিত করেছিলেন।
শিয়া সম্পর্কে প্রচুর প্রচুর তথ্য দিতে পারতাম যদি সময় পেতাম। তারপরও হঠাৎ এবং উপস্থিত স্মরনযোগ্য কিছু তথ্য দিলাম।
কিছু প্রশ্ন ও উত্তর:
- শিয়ারা আলীর দোহাই দেয় এবং আলীর সন্তান হিসেবে শুধু হোছাইনের জন্য কান্না করে, কিন্তু হুসাইনের ভাই আবু বকরের জন্য কান্না করেনা, অথচ তিনিও শহীদ হয়েছিলেন।
- শিয়ারা হোছাইন (রা) এর সন্তানদের কে নিয়ে মাতম করে কিন্তু হাসান (রাঃ) সন্তানদের নিয়ে কোন দুঃখ কিংবা প্রলাপ করেনা অথচ তারাও ফাতিমা (রাঃ) সন্তান।
- শিয়ারা হোছাইন (রা) এর সকল সন্তান নিয়ে কান্না করেনা, তারা কেবল মাত্র তাঁর স্ত্রী শাহের বানু বিনতে ইয়াজদাজারদ এর অধঃস্থন বংশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কেননা শাহের বানু ইরানের সর্বশেষ সম্রাট ও সাসান বংশের মেয়ে ছিলেন। বিহারুল আনোয়ার ৪৫
- শিয়ারা সকল সাহাবীদের বিশ্রী ভাষায় গালাগালি করলেও সালমান ফার্সিকে সম্মান করে। আরও বিশ্বাস করে যে সালমান ফার্সি (রা) এর কাছে ওহী আসে কেননা তিনি ইরানী ছিলেন।
- মূলত শিয়াদের উৎপত্তি ইহুদী থেকে আর বর্তমানেও ইরানে ৩৫ হাজার ইহুদীর বসবাস।
- শিয়ারা বলেন, ইমাম গন জানেন তারা কখন মারা যাবেন এবং নিজেদের ইচ্ছা ব্যতীত তারা মৃত্যুবরণ করেন না।
যার উত্তর শিয়াদের কাছে নাই।
• শিয়ারা বলে আবু বকর ও ওমর কাফের এবং আলী নিষ্পাপ ও মাসুম। কিন্তু এই দুই জনের আমলে আলী (রাঃ) বেঁচে ছিলেন। তিনি কোনদিন ওদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেন নি বরং সহযোগীতা করেছেন। তাছাড়া তাদের দৃষ্টিতে ওমরের মত একজন কাফের কে কিভাবে আলী (রাঃ) তাঁর নিজ মেয়েকে বিয়ে দেন?
• শীয়ারা তাদের কোন সন্তানের নাম আবু বকর কিংবা ওমর রাখে না। তবে আলী নামটি ঘরে ঘরে রাখে। ফাতিমা (রাঃ) মৃত্যুর পর আলী (রা) আরো পাচটি বিয়ে করেছিলেন তাঁদের ঘরে ১৩ জন সন্তানের মধ্যে দুই জনের নাম আবু বকর ও ওমর। তাহলে কি আলী (রা) ভুল করেছিলেন?
• শীয়ারা একটি কথা বলে, ফাতেমা (রাঃ) রাসুলুল্লাহর শরীরের একটি অংশ। তাঁকে আবু বকর অপমান করেছেন! তার পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে দিয়েছেন, তার বাড়ি জালিয়ে দেবার আদেশ করেছেন, ফাতিমার গর্ভের বাচ্চা ফেলে দিয়েছেন, শীয়ারা এই সন্তানটিকে মুহসিন হিসেবে চেনে? প্রশ্ন হল তখন আলী (রাঃ) কোথায় ছিলেন? তিনি কেন স্ত্রীর উপর এসব নির্যাতনের প্রতিবাদ করেন নি?
• শীয়ারা দাবী করে (গাদীরে খুমে) রাসুলুল্লাহ (সাঃ) হাজারো সাহাবীর সামনে আলীকে খলিফা মনোনীত করে যান। আবু বকর ওমরের প্ররোচনায় তা কার্যকর হয়নি। প্রশ্ন হল তাহলে হাজার হাজার সাহাবী যখন রাসুলের (সাঃ) এই কথাটি শুনেছে তাহলে কেন তারা প্রতিবাদ করেনি আর আলীই বা কেন আবু বকরের বাইয়াত হলেন!
• শীয়াদের বিশ্বাস ইমাম মাহদী দুনিয়ায় আসলে তিনি দাউদের বিধান মোতাবেক ফায়সালা করবেন। কোন দলীল সম্পর্কে তিনি প্রশ্ন করবেন না। অর্থাৎ ইসলামের সাথে সাংঘার্ষিক।
মূলত আরবীতে ইমাম মাহদী শব্দের অর্থ 'সত্যপন্থি ইমাম'। অর্থাৎ তাঁর কাজ ও মিশন হবে সত্য ও ন্যায়ের পথে। মূলত সেই নেতার কাম হবে মেহেদীর মত! সেই নেতার নামই যে ইমাম মাহদী হবে
এমন দৃঢ় বিশ্বাস জন্মাবার কোন দলীল নাই।
• তারা দাবী করে ইমাম মাহদী যখন আসবেন, তিনি ইহুদী ও নাসারাদের সাতে সন্ধি করবেন আর আরব ও কুরাইশদের সাথে যুদ্ধ করবেন। এই কথাটিও ইসলামের মুল আকিদার সাথে সাংঘার্ষিক।
• শিয়ারা দাবী করে হুসাইনের চাইতে আলী উত্তম, তাহলে তারা হুসাইনের মৃত্যুর দিন বিলাপ করে কিন্তু আলীর মৃত্যুর দিন বিলাপ করে না কেন? এই যুক্তিতে রাসুলের সম্মান আরো শ্রেষ্ট্র তাহলে তার মৃত্যুর দিন কি হওয়া উচিত ছিল?
• শিয়ারা বিশ্বাস করে হুসাইন পানির তৃষ্ণায় মারা গেছেন, তাই তারা পানির ট্যাংক বা কুয়ায় লিখে রাখে পান করার সময় হুসাইনের তৃষ্ণার কথা মনে কর। যেহেতু ইমামেরা নিজের মৃত্যুর কথা জানেন তাহলে হুসাইন কেন সেদিন সাথে পানির বন্দোবস্ত রাখলেন না।
• শিয়ারা বিশ্বাস করে যে, সকল সাহাবীরা পথভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছে অল্প সংখ্যক ব্যতীত, যাদের সংখ্যাও সাতের বেশী নয়। তাহলে আহলে বাইতের অন্যরাও কি কাফের যেমন হযরত আলীর বাকি সন্তানেরা।
সবোপরী শিয়াদের মাঝে অগুনিত ফেরকা আছে। সুন্নীদের তো চারটি মাজহাব। শিয়াদের মাজহাব অগুনিত। এক ইমাম এক কথা বলেতো অন্য ইমাম আগ বাড়িয়ে বলে। যে কারণে বাহাই, ইসমাইলীয়া সহ বহু মতবাদ শুধুমাত্র শিয়াদের থেকেই সৃষ্টি হয়েছে।
তাছাড়া আপনার বাকি পযেন্ট গুলোর দ্বারা কি কাউকে কাফির বলার সূযোগ আছে? @নজরুল ইসলাম টিপু
আপনি আমার প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে উল্টো আমাকে প্রশ্ন করছেন? আপনি যেহেতু পোষ্ট দিয়েছেন আপনাকে এ সম্পর্কিত প্রশ্নের উত্তর দিতে হবে। বরং আমরাই প্রশ্ন করতে পারি, জানার জন্য চেষ্টা করতে পারি। তারপরও উপস্থিত জ্ঞানে আমি কয়েকটি প্রশ্ন করেছি, আপনি সেগুলোর উত্তর না দিয়ে সেখান থেকে আবার আমাকে প্রশ্ন করেছেন?
আমার কাছে যে সব তথ্য আছে সে সব তথ্য আপনার সাথে শেয়ার করার আগ্রহ প্রকাশ করেছি? এর চেয়ে উত্তম প্রস্তাব আর কি হতে পারে? তাছাড়া আমি কোথাও শিয়াদের কাফের বলিনি। গালাগালিও করিনি, আমি তো প্রথমেই লিখেছি এসব নিয়ে বিভেদ নয় বরং আশু সমাধান দরকার।
আপনি ইরান ইরাকের উদাহরণ টেনেছেন কেন? মুসিলম বিচার করবেন কোরআন আর হাদিস দিয়ে। একদা ফিলিপাইন, স্পেন প্রায় শতভাগ মুসলমানদের দেশ ছিল! এখন সেগুলো খ্রীষ্টান দেশ। তাই বলে তাদের সিদ্ধান্ত নিয়ে আমি কি আমার যুক্তি উপস্থাপন করব?
শিয়াদের জন্মই হয়েছে, কুফা, বসরা, ইরাক, সিরিয়া, ইরান থেকে। কিছু প্রভাব ছিল ইয়েমেন ও মিশরে। সুতরাং এদের সংখ্যা গরিষ্টতা ওখানে তো থাকবেই! এটাতে আশ্চর্য হবার কিছুই নাই।
মুসলিম মাপার মানদন্ডই হল কোরআন-হাদীস, রাসুলের জীবন এবং সাহাবাদের অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত। অনেক ধন্যবাদ।
https://www.facebook.com/emrul.kayech/posts/679580072096586
শিয়াদের একটি গোত্র সম্পর্কে এই ব্লগে আমার দুটি প্রতিবেদন আছে, আশা করি সময় পেলে পড়বেন।
আগা খান ও ইসমাইলিয়া সম্প্রদায়: অখ্যাত গোত্রের বিখ্যাত কারবার
প্রিন্স আগা খান ও ইসমাইলিয়া সম্প্রদায়: সম্পদের পাহাড় যাদের দখলে
শিআদের মতে, নবী (সাঃ) পরবর্তী যুগে ৬ জন বাদে সকল সাহাবা মুরতাদ হয়ে গিয়েছিলো (নাউজুবিল্লাহ)
শিআরা আম্মাজান আয়িশা রাযি. কে পতিতা নারী হিসেবে আখ্যা দেয়। (নাউজুবিল্লাহ)
এরপরও কি শিআদের মুসলমান মনে করবেন?
শিআদের অমুসলিম হওয়ার ফাতওয়া আজ থেকে ১৩০০ বছর পূর্বেই জারি হয়েছিলো, ইমাম শাফেই (রহ.) কর্তৃক। পরবর্তী কোন উলামায়ে হক এর প্রতিবাদ বা ভিন্ন মত পোষণ করেননি।
শিআদের আকিদা সম্পর্কে জানতে মাওলানা কাসেম নানুতুবী (রহ.) রচিত "হাদিয়াতুশ শিআ" পড়ে দেখতে পারেন। ইবনে তাইমিয়া (রহ.)-এর রচিত এই বিষয়ে চমৎকার একটি কিতাব রয়েছে। এছাড়াও Youtube থেকে পাকিস্তানের বিখ্যাত আলেম ও মুজাহিদ শহীদ মাওলানা জিয়াউর রহমান ফারুকী রহ. সাহেবের বয়ানগুলো দেখে নিতে পারেন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন