ইন্ডিয়া কি আসলে আমাদের শত্রু? ইন্ডিয়া কেন আমরা ঘৃনা করি??
লিখেছেন লিখেছেন এমরুল কায়েস ভুট্টো ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০২:২১:৩৯ দুপুর
সাম্প্রদায়ীক মনোভাব নিয়ে নয় শুধু বাস্তবতার আলোকে আলাচনা।
বৃটিশ আমল থেকে শুরু করা যাক: অবিভক্ত ভারত বর্ষে পূর্ব বাংলাই বার্তমানে বাংলাদেশ। পূর্ব বাংলার অধিকাংশ লোক ছিল মুসলিম এবং নিতান্তই দরিদ্র প্রজা শ্রেনীর। অপর দিকে জমিদার গন ছিল অধিকাংশই হিন্দু, তারা পশ্চিমবঙ্গে বিলাসী জীবন যাপন করত। অবিভক্ত ভারত বর্ষে ইংরেজদের দালালি করে পূর্ব বাংলার সংখ্যাগরিষ্ট মুসলিমদের শোষন নির্যাতন করত। তখন বাংলার রাজধানী ছিল কলকাতা। পূর্ব বাংলার মানুষদের ঢাকাকে রাজধানী করা হলে তারা তা মেনে নেয়নি । পূব বাংলাতে কোন ভাল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হতে দেয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রক্কালে তারা জোর বিরোধীতা করেছিল। কারণ তারা এটা বুঝতে পারে যে পূর্ব বাংলাতে সব কিছু হয়ে গেলে পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে পশ্চিম বাংলার গুরুত্ব কমে যাবে। পূর্ব বাংলার মানূষ কখনো চাইনি বাংলা সম্পূর্ন আলাদা হয়ে হাজার হাজার মাইল দূরের পাকিন্তানের সাথে রাষ্ট্র গঠন করতে। কিন্তু হিন্দু অধ্যষিত প্রদেশ গুলোতে মুসলিম বিরোধী ক্রমবর্ধমান দাঙ্গার কারনে অনিচ্ছা সত্যেও পাকিন্তানের সাথে রাষ্ট্র গঠন করতে হয়। কিন্তু দেশ বিভাগ হয়ে পাকিস্থান এবং ভারত নামে আলাদা রাষ্ট্র গঠিত হলেও কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে তাদের বৈরতা দূর হয়নি। তারা একে অপর কে ঘয়েল করতে নানা পন্থা অবলম্বন করত। এদিকে পাকিস্তানিদের ক্রমাগত শোষন নির্ষাতনের ফলে পর্ব পাকিস্তানের মানুষ অধিকার আদায়ের জন্য সোচ্ছার হয় । পর্ব পাকিস্তানের মানুষ অধিকার আদায়ের আন্দোলন এক পর্যায়ে সতস্ত্র স্বাধীনাতার আন্দোলনে রূপ নেয়। তখন এই সুযোগটা ভারত কাজে লাগায়। ১৯৭১ সালের ১১ ডিসেম্ভর ভারত বাংলাদেশ কে স্বীকৃতি দেয়। যদিও ভারতের উদ্দেশ্য ছিল স্বাধীন বাংলাদেশ নয়। তাদের উদ্দেশ্য ছিল পাকিস্তান কে ভাগ করে দুর্বল করা। ভারতের উদ্দেশ্য যাই হোক না কেন এই 'স্বীকৃতি" পর্ব পাকিস্তানের আন্দোলনরত মানুষের মনোবল ফিরে পাই। এরপর ভারত সামরিক সহয়তা দেয়। স্বীকৃতি দানের ঠিক ৫দিন পর অথ্যাৎ ১৬ই ডিসেম্ভর বাংলাদেশ স্বাধীন হয়। এই দিন নিয়াজির নেতৃত্বে ৯৩ হাজার পাকিন্তানী বাহিনী অস্ত্রসস্ত্রসহ আত্বসমপর্ন করে। এই খানে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল "যোদ্ধ ক্ষেত্রথেকে লব্দ এবং আত্বসমপর্নের অস্ত্রসস্ত্রসহ সব যোদ্ধাস্ত্র ভারতীয় বাহিনী নিয়ে গেলে তাদের আসল উদ্দেশ্য কি ছিল তা পরিষ্কার হয় য়ায়"
**স্বাধীনতা পরবর্তিঃ**
পানি আগ্রসনঃ যোদ্ধাত্তর দেশ তখন ধংসস্তুপের মত। পাকিস্তানীরা পরাজিত হয়েছে বটে কিন্তু তারা দেশকে ধংসস্তুপ বানিয়ে ফেলে। যার ফলে নব গঠিত রাষ্ট্র বাংলাদেশের অর্থনীতি খুবই দুর্বল হয়ে পড়ে। অচিরেই দেখা দেয় দুর্ভিক্ষ। অনাহারে লাখ লাখ মানুষ মারা যায়। এই র্দুসময়ে ভারত প্রতিবেশি দেশ হিসাবে বাংলাদেশের পাশে দাড়ানোর তো দুরের কথা উল্টো আর্ন্তজাতিক আইন তয়াক্কা না করে "ফারাক্কা বাধ" দিয়ে ভাটির দেশ বাংলাদেশের উত্তারাঞ্চলকে গ্রীষ্মকালীন মরুভূমিতে পরিনত করেছে। এভাবে নদীগুলোতে উজানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির ফলে বাংলাদেশের অনেক খরস্রোতা নদী আবহমান রূপ হারিয়ে মৃত প্রায় হয়ে আছে। অনেক নদী নিয়ে দুদেশের চুক্তি হলেও বাংলাদেশ হিস্য অনুযায়ী পানি কখনো পায়নি। এখনো অনেক নদীর কোন চুক্তিও হয়নি। এখন দিচ্ছে আবার "টিপাইমুখ বাদ"।
এক কথায় ভারত প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের উপর পানি আগ্রাসন চালিয়ে আসতেছে।
সীমান্ত হত্যাঃ বিএসএফ কতৃক সীমান্তে বাংলাদেশীদের হত্যা এখন নিত্যদিনের ব্যাপার। প্রতি বছর শত শত বাংলাদেশীকে হত্যা করে চলছে। একটি হত্যা কান্ডেরও সঠিক তদন্ত করেনি ভারত সরকার। এই রকম নরকিয় সীমান্ত হত্যা আর কোনদেশে নজির নাই। এমন কি অনেক সময় তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব কে পদদলিত করে বাংলাদেশের ভেতরে ঢুকে বাংলাদেশীদের হত্যা, নির্যাতন, অপহরণ করে আসতেছে।
রাজনৈতিক হস্তক্ষেপঃ একটা দেশে যখন বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের মানুষ বসবাস করে তখন তাদের মাঝে ব্যক্তিগত কারণে বা অর্থনৈতিক কারনে অথবা রাজনৈতিক কারণে মত পার্থক্যের সৃষ্টি হতে পারে। এটা সত্য যে শুধু ধর্মের কারণে বাংলাদেশে একটা হিন্দুকেও হত্যা করা হয়নি যা প্রতিনিয়ত ইন্ডিয়াতে হয়ে আসতেছে। বাংলাদেশে যা হয় তা হল ব্যক্তিগত কারণে বা অর্থনৈতিক কারনে অথবা রাজনৈতিক কারণে। এগুলো সাম্প্রদায়িক পর্যায়ে পড়ে না। অতচ ইন্ডিয়ান সরকার এসব বিষয়কে সাম্প্রদায়তি আক্ষাদিয়ে বিভিন্ন সময় উসকানিমূলক বিবৃতি দিয়ে থাকে। এইরকম ইন্ডিয়া অভ্যন্তরিন ব্যপার নিয়ে বাংলাদেশ সরকার কোনদিনও কথা বলেনি।
বাংলাদেশের সারকার কোনদিনও "শিবসেনা" নিয়ে কথা বলেনি। কিন্তু ইন্ডিয়া বাংলাদেশের জামাত-শিবির এবং হেফাজত নিয়ে কথা বলে।
বাংলাদেশ বিরোধী কর্মকান্ডঃ বর্তমানে ইন্ডিয়ার টার্গেট বাংলাদেশ গার্মেন্টস এবং মধ্য প্রাচ্যের শ্রম বাজার তাদের দখলে নেওয়া। এই জন্য ইন্ডিয়া চায় বাংলাদেশে সহিংসতা লেগে থাকুক। গার্মেন্টস এবং মধ্য প্রাচ্যের শ্রম বাজারে বাংলাদেশের বিকল্প বাজার হচ্ছে ইন্ডিয়া। গার্মেন্টস বাজার প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশের সাথে ঠিকতে না পেরে তারা এখন এই ঘৃন্য পথটি বেচে নিয়েছে। তাই তারা বাংলাদেশের বিতর্কিত বিষয়ে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। দেশের আলেম-ওলামাদের জঙ্গি আক্ষা দিয়ে ভারত পন্থি আওয়ামীলীগ সরকারকে সাহায্য সহযোগিতা করতেছে তাদের কে নির্মূল করার জন্য। এতে মধ্য প্রচ্যের মুসলিম দেশ সমূহের সাথে বাংলাদেশের সম্পর্ক নষ্ট হবে। যার ফলে বাংলাদেশ থেকে তারা আর জনশক্তি নেবে না । তখন ইন্ডিয়া তা দখল করবে।
এ হল ইন্ডিয়া....
ইন্ডিয়ার সাথে বাংলাদেশের সম্পর্কের লাভ-ক্ষতি গুলো যদি আমরা বিবেচনা করি তাহলে আমরা খুব সহজে ইন্ডিয়া কে শত্রু বা বন্ধু হিসেবে চিন্থিত করতে পারি।
এবার আপনাই বিচার করুন ইন্ডিয়া আমাদের বন্ধু নাকি শত্রু....?
বিষয়: বিবিধ
৩০৯৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন