বিশ্বের সবচেয়ে বড় কবরস্থান,মাওনা লোয়া এবং অন্ধকার গুহা সম্বন্ধে কিছু কথা।

লিখেছেন লিখেছেন মোঃ সুজন হাওলাদার ০৯ মার্চ, ২০১৪, ১২:০৭:৪৫ দুপুর

“ওয়াদি আল সালাম” (Wadi Al-Salaam) হচ্ছে পৃথিবীর সব থেকে বড় কবরস্থান। এটি শিয়া মুসলিম ধর্মালম্বিদের গোরস্থান। এটি ইরাকের পবিত্র শহর “নাযাফ” (Najaf) এ অবস্থিত। প্রতি বছর এখানে অর্ধ মিলিয়ন মৃত লোককে নতুন করে কবর দেওয়া হয় আর এই কবরস্থান ১৪৮৫.৫ একর জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে। এই কবর স্থান মূলত গড়ে উঠেছে “ঈমাম ইবনে আবি তালিব” এর কবরকে কেন্দ্র করে। যিনি ছিলেন শিয়া মুসলিমদের প্রথম ঈমাম এবং সুন্নি মুসলিমদের ৪র্থ খালিফা। এই কারনে ইরাকে যারা মারা যান তাদের অনেকের মনের ইচ্ছা থাকে যে তাদের যেন এখানে কবর দেওয়া হয়। এই কারনে ইরাকের প্রায় ৯০% শিয়া মুসলিমদের কবর এখানে।

মাওনাঃ-

আগ্নেয়গিরির অগু্ন্যৎপাতের ঘটনা বিশ্বের অন্যতম ভয়ানক দুর্যোগের একটি। গত ৫০০ বছরে কমপক্ষে ২ লাখ লোক মৃত্যুবরণ করেছে এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ঘটনায়। আজ অবধি পৃথিবীতে প্রায় ১৫১০টি সত্রিয় আগ্নেয়গিরি আবিষ্কৃত হয়েছে, যার মধ্যে ৮০টি বা তার বেশি আবার সমুদ্রের নিচে। এসব ভলকানো পাহাড় বা আগ্নেয়গিরির মূল বিপদটি হচ্ছে, উত্তপ্ত গলিত পাথর, ছাই আর গ্যাস বের হয়ে জনপদের দিকে ধেয়ে আসা। আগ্নেয়গিরির গলিত পাথর ও ছাইগুলোর তাপমাত্রা এতটাই বেশি থাকে, প্রমাণ লাভার স্রোতে লাভার তাপমাত্রা থাকে ৭০০-১২০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তারও বেশি। পৃথিবীর ভেতরের দিকে যে গ্যাসগুলো জমা হয় সেগুলোই অতিরিক্ত তাপ ও অতিরিক্ত চাপের ফলে পৃথিবীর ফাটল দিয়ে বাইরে বেরিয়ে এসে এসব ভলকানো পাহাড়ের সৃষ্টি হয়। সক্রিয় আগ্নেয়গিরি প্রায়ই অগ্ন্যুৎপাত করে। এ পর্যন্ত আবিষ্কৃত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় সক্রিয় আগ্নেয়গিরি হলো মাওনা লোয়া। এটি প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা আমেরিকার হাওয়াই দ্বীপে। মাওনা লোয়া ৪,১৭০ মিটার লম্বা। এটি মাউন্ট এভারেস্টের চেয়েও বড়। ১৮৭৩ সাল থেকে এই আগ্নেয়গিরি আজ অবধি ৩৩ বার অগ্ন্যুৎপাত করেছে। ে

অন্ধকার গুহাঃ-

পৃথিবীর প্রাচীনতম আবাসের তালিকায় রয়েছে পাহাড়ের বুকের গুহা। এসব গুহার বেশির ভাগই প্রাকৃতিকভাবে ছিল। সারা বিশ্বে বিভিন্ন জায়গায় এ ধরনের গুহা ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য পাহাড় পর্বতে। এগুলোর কোনোটা আকারে ছোট আবার কোনোটা আকারে অনেক বড়। এসব গুহার বৈচিত্র্যের কথা বলে শেষ করা যাবে না। বিশ্বের নিত্যনতুন রহস্য এখনো সভ্যতার সামনে প্রথম বারের মতো আলোর মুখ দেখে এসব গুহার অন্ধকার থেকেই। পৃথিবীর বৃহত্তম ও ভয়ঙ্কর গুহার তালিকায় সবার প্রথমেই বলতে হয় ‘হ্যাংসন ডুং’ নামক গুহার কথা। ভিয়েতনামের কোং বিন প্রদেশের বো টাচ জেলায় এই গুহা নেটওয়ার্কের অবস্থান। এটি কোনো আলাদা একটি পৃথক গুহা নয়। রীতিমতো নেটওয়ার্ক দিয়ে যুক্ত লম্বা পথের বেশ কয়েকটি গুহা। তাই এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় গুহা নেটওয়ার্ক বলা হয়ে থাকে। ১৯৯১ সালে গুহাটি প্রথম আবিষ্কৃত হয়। এক স্থানীয় ব্যক্তি গুহাটি আবিষ্কার করার আগে কেউ জানতই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর গুহাটি সাধারণের চোখের আড়ালে পর্বতের বুকেই ছিল। গুহাটি প্রথম আবিষ্কার করেন হো-খানহ। ব্রিটিশ গুহা গবেষণা সংগঠনের প্রধান হাওয়ার্ড ও ডেভ লেমবার্ট ১০ থেকে ১৪ এপ্রিল ২০০৯ সালে বিশ্বের বৃহত্তম এই গুহা নেটওয়ার্কের আয়তন ও প্রশস্ততা পরিমাপ করতে সমীক্ষা শুরু করেন। এই গুহার সবচেয়ে বড় কক্ষটির পরিমাপ ২০০ মিটার উঁচু এবং ১৫০ মিটার চওড়া, যা মোট ৫.৬ কিলোমিটার। অবিশ্বাস্য শোনালেও এই লম্বা রাস্তার পুরোটাই পাথরের দেয়ালে মোড়া এবং আলো না থাকায় ভয়ঙ্কর অন্ধকারে ঢেকে রয়েছে। ভিয়েতনামের জাতীয় উদ্যান ফুং না কিং ব্যাংয়ের পাশেই হ্যাংসন ডুংয়ের অবস্থান। রহস্যময় গুহাটি প্রায় ১৫০টি গুহার সমন্বয়ে গঠিত। এ গুহাটি নিয়ে এখনো সম্পূর্ণ গবেষণা শেষ হয়নি। গবেষক দল গুহাটির আয়তন পরিমাপ করতে পারলেও এর শেষ খুঁজে বের করতে পারেননি। বারবার গবেষণা থমকে গিয়েছিল এই গুহার। গুহা আবিষ্কারের সময় সম্মুখীন হন নানা বিপদ-আপদের। তারা গুহার মধ্যে পান বিষধর সাপ, বড় মাকড়সা, অদ্ভুত সব প্রাণী ও অজানা-অচেনা বৃক্ষরাজি। তারা গুহার মধ্যে দেখতে পান ছোট ছোট পানির ফোয়ারা। গুহার মধ্যে রয়েছে অনেক সুড়ঙ্গপথ, যেসব পথ দিয়ে অতি সহজেই ভিয়েতনামের এক প্রদেশ থেকে অন্য প্রদেশেযাতায়াত করা যায়। প্রথম দিকে এ গুহা এলাকার দিকে স্থানীয় লোকজন আসতে ভয় পেত, কারণ তারা এই গুহার তলদেশের নদী থেকে উচ্চৈঃস্বরে শব্দ শুনতে পেত। গুহাটি আবিষ্কারের পর এখনো এটি সাধারণ জনগণের জন্য উন্মুক্ত নয়। কারণ এ গুহাটি অত্যন্ত ভয়ানক। এখানে পৃথিবীর অন্যতম মারাত্দক সব জীবজন্তু ও পোকামাকড়ের আবাস।

মূত্রমনা বাংলাব্লগ

বিষয়: বিবিধ

১৭৮৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

189335
০৯ মার্চ ২০১৪ দুপুর ০২:০৯
দ্য স্লেভ লিখেছেন : ভাল লাগল।
189545
০৯ মার্চ ২০১৪ রাত ০৯:২৮
মোঃ সুজন হাওলাদার লিখেছেন : ধন্যবাদ




189872
১০ মার্চ ২০১৪ সকাল ১১:৩০
সজল আহমেদ লিখেছেন : তথ্যবহুল পোষ্ট।অনেক ধন্যবাদ মামা।
191753
১৩ মার্চ ২০১৪ বিকাল ০৫:১৫
সজল আহমেদ লিখেছেন : স্বাগতম ১৫০০তম মন্তব্য আপনাকে দিলাম।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File