বৈধ ভালবাসা বনাম নিষিদ্ধ প্রেম......
লিখেছেন লিখেছেন তানভীর রানা জুয়েল ১৩ মার্চ, ২০১৪, ০৯:৫৫:০১ সকাল
ভালবাসা ও নিষিদ্ধ প্রেম
চারটি অক্ষরের সমন্বয় খুব ছোট একটি শব্দ
ভালবাসা যাকে আরবী ভাষায় মুহাব্বত ও
ইংরেজী ভাষায় Love বলে। যার অর্থ হচ্ছে,
অনুভূতি, আকর্ষণ, হৃদয়ের টান; যা মানুষের
অন্তরে আল্লাহপাক সৃষ্টিগতভাবে দিয়ে দেন। সাধারণত
ভালবাসা দুই ধরনের (১) বৈধ ও পবিত্র (২)
অবৈধ ও অপবিত্র । বিবাহের পূর্বে আধুনিক
যুবক-যুবতীরা যে সম্পর্ক গড়ে তুলে তাকেই
অবৈধ ও অপবিত্র ভালবাসা বলে। আর পবিত্র
ভালবাসা বলতে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর প্রতি ভালবাসা,
সন্তানের প্রতি পিতা-মাতার
ভালবাসা,স্বামী- স্ত্রীর ভালবাসা ইত্যাদিকে বুঝায়। আল্লাহপাক
আমাদেরকে সৃষ্টির সেরা মাখলুক
হিসেবে পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। অন্য
কোন জীব জন্তুকে আমাদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান
করেননি। এমনকি সর্ব শ্রেষ্ঠ
আখেরী নবী মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর উম্মত
আমাদেরকে বানিয়েছেন। তাই
প্রতিটি মুসলমানের উচিত সর্ব প্রথম এই
নিখিল বিশ্বের স্রষ্টা মহান আল্লাহ
তাআলাকে ভালবাসা এবং আমাদের সর্বশেষ
নবী ও হাবীবে রাসূল মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালবাসা।
আল্লাহপাক কুরআন শরীফে এরশাদ করেন:
ِﻪَّﻠِﻟ ﺎًّﺒُﺣ ُّﺪَﺷَﺃ ﺍﻮُﻨَﻣَﺁ َﻦﻳِﺬَّﻟﺍَﻭ
যারা ঈমানদার মুমিন, তাদের
অন্তরে আল্লাহর মহব্বত
ভালবাসা হবে সর্বাধিক প্রগাঢ়। সূরা আল বাকারা। (আয়াত সূরা আল বাকারা: ১৬৫) আর
নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন: কোন
লোক পূর্ণ মুমিন হবে না যতক্ষণ না সে নিজের
জীবন এবং পরিবার পরিজনের
চেয়ে আমাকে বেশী ভালবাসবে। এর দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, আল্লাহ তার রাসূল
মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-
কে ভালবাসা প্রতিটি মুসলমানের কর্তব্য
তথা ফরয। রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-কে ভালবাসার অর্থ
হচ্ছে তার সুন্নত ও আদর্শের অনুসরণ করা। আর যে ব্যক্তি নবী করীম সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সুন্নতের
বেশী অনুসরণ করবে তাতে বুঝা যাবে তার
অন্তরের মধ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি প্রেম-
ভালবাসা অধিক গাঢ় এবং যারা নবীজির সুন্নতের অনুসরণ করেনা, তাঁর শরীয়ত
মানে না শুধু লোক সমাজে মুখে আশিকে রাসূল,
আশিকে নবী তথা নবী প্রেমিক
বলে দাবী করে প্রকৃত
পক্ষে তারা আশিকে রাসূল নয়। তারা শয়তান-
ধোকাবাজ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেন,
যে ব্যক্তি আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরায়,
সে আমার উম্মত নয়। অন্যথায় রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
বলেন, যে আমার সুন্নাতকে ভালবাসল, সে যেন
আমাকে ভালবাসল, আর যে আমাকে ভালবাসল সে আমার সাথে বেহেশতে থাকবে।
আল্লাহ ও রাসূলের পরেই রয়েছে মাতা-
পিতার প্রতি মহব্বতের ফযিলত। প্রিয় রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সে ব্যক্তি নিপাত
যাক! সে ব্যক্তি নিপাত যাক! সাহাবারা আরজ করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! সে ব্যক্তি কে?
তিনি বললেন, মাতা-পিতাকে জীবিত পেয়েও
তাদের সেবা-যত্ন করে যে জান্নাত খরিদ
করেনি। এ ছাড়া মাতা-পিতার দুআ সন্তানের
জন্য অনিবার্যভাবে কবুল হয়।
স্বামী-স্ত্রীকে ভালবাসার ফযিলত : হাদীস শরীফে আছে, স্বামী-স্ত্রী মহব্বতের
সাথে আলাপ আলোচনা করা কথা-
বার্তা বলা নফল ইবাদতের চেয়ে উত্তম।
অন্যথায় রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
যে মহিলা (স্ত্রী) তার স্বামীকে সন্তুষ্ট রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয় সে অবশ্যই
বেহেশতে প্রবেশ করবে।
সন্তানকে ভালবাসার ফযিলত : রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজ
সন্তান ফাতিমাকে অত্যাধিক ভালবাসতেন।
তিনি স্বীয় জবানে এরশাদ করেন, ফাতিমা আমার কলিজার টুকরা, তাকে কেউ
কষ্ট দিলে আমাকেই কষ্ট দেয়া হবে। নবীজির
পাক জবানের বর্ণনায়
ফুটে উঠে যে সন্তানকে ভালবাসা ছাওয়াবের
কাজ।
পক্ষান্তরে আমাদের সমাজে বেগানা যুবক- যুবতীর প্রেম-ভালবাসার নামে যে পাশ্চাত্য
সংস্কৃতি উত্তাল সাগরের উর্মিমালার মত
বহমান রয়েছে তা সম্পূর্ণ রূপে অবৈধ ও
হারাম। বিবাহের পূর্বে এরূপ প্রেম-
ভালবাসা শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈধ নয়, অবৈধ।
ইসলামের বিধি-বিধান অনুযায়ী কোন যুবতী কোন অবস্থায় কোন যুবকের
সান্নিধ্যে থাকতে পারেনা। উমর (রা
হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, কোন পুরুষ
যখন কোন নারীর সাথে একান্তে থাকে, তখন
তাদের মাঝে তৃতীয় জন হিসেবে উপস্থিত হয় স্বয়ং শয়তান তাদের
মাঝে ভাবাবেগকে উৎসাহিত
করে এবং উভয়ের মাঝে খারাপ
কুমন্ত্রণা দিতে থাকে এবং সর্বশেষে লজ্জাকর
পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটায়।
এতে তারা নিজেরা যেমনি কঠিন গোনাগার হবে, তেমনি তাদেরকে এই মেলামেশার সুযোগ
দেয়ার কারণে তাদের পিতা-মাতা ও
অভিভাকদেরকে হাদীস শরীফে দাইয়ুস
বলা হয়েছে। আরো বলা হয়েছে যে, দাইয়ুস
জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে না। তাই
এইসব ব্যাপারে সকলের কঠোরভাবে সাবধান হওয়া জরুরী এবং তা ঈমানের দাবী। আর এই
অবৈধ ভালবাসার প্রতিরোধের জন্যই আল্লাহ
নর-নারীকে দিয়েছেন পর্দার বিধান। এই
বিধান নারী-পুরুষ উভয়ে পরিপূর্ণ রূপে পালন
করলে সমাজে ঐ রকম অবৈধ ভালবাসার কোন
অবকাশই থাকবে না। আমাদের সমাজের অনেকের আবার মন্তব্য যে, প্রেম-
ভালবাসা নাকি বৈধ, তাদের উক্তি হল যে,
প্রেম পবিত্র, ভালবাসা পবিত্র। তাদের এই
সব কথা সম্পূর্ণ ভুল, নাজায়িয, অবৈধ,
অপবিত্র এবং ইসলাম বিরোধী।
ভালবাসা কখনও বৈধ হতে পারে না। বস্তুত: এ ধরনের প্রেম ভালবাসা সম্পর্ক ইসলাম
সাপোর্ট করে না। তবে হ্যা যে কেউ তার
মনের মত জীবন সঙ্গীনী পছন্দ
করে রাখতে পারে বটে। কিন্তু তাই বলে তার
সাথে বিবাহের পূর্বে কোন রকম প্রেম-প্রেম
খেলা শুরু করতে পারবে না। কেননা বিবাহের ইচ্ছা থাকলেও বিবাহ না করা পর্যন্ত
এভাবে প্রেম-
ভালবাসা করা গুনাহে কবিরা ও হারাম। এমন
কি বিবাহের কথা পাকাপাকি হয়ে গেলেও
আকদ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত কোন প্রেম-
ভালবাসা জায়িজ নয়। বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রী হওয়ার পরই কেবল
প্রেম ভালবাসা করতে পারে এবং তা পবিত্র
ও ছাওয়াবের কাজ।
কিছুদিন আগে একজন মেয়ে, তার এক
ক্লাসমিটের গল্প বললো এভাবে - তার
সাথে দেখা হয়। ভাল-মন্দ আলাপের এক পর্যায়ে সে আমাকে এভাবে বলতে শুরু করল-
জানিস সারিরা কিছুদিন আগে আমি নানার
বাড়িতে গিয়েছিলাম, ওখানে আমার কয়েকজন
খালাতো বোনের সাথে দেখা হয়।
তাদেরকে পেয়ে আনন্দে মেতে উঠি। এই সেই
অনেক গল্প হয়। তাদের মাঝে একজনের বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। আমি তাকে জিজ্ঞাস
করলাম কিরে মোহনা! বর কি তোকে দেখছে?
তখন সে বলল, দেখছে মানে! আমাদের
প্রতিদিনই ফোনে কথা হয়। আমি বললাম,
এটা ঠিক হয়নি। জাননা- বিবাহের
পূর্বে প্রেম করা নাজায়িজ, হারাম। তখন তারা সবাই হেসে উঠল, তাদের এই হাসির
কারণ কি আমি বুঝতে পারলাম না।
মোহনা বলল, আরে আমাদের বিয়ের সব কিছু
ঠিক, এখানে আবার গুনাহের কি আছে।
তাছাড়া যদি বিয়ের আগে প্রেম না করি,
তাহলে একে অপরকে জানব কেমন করে। হঠাৎ অপরিচিত একজনের সাথে সংসার করব কেমন
করে। তাছাড়া প্রেম-ভালবাসা পবিত্র, তখন
সবাই এক সাথে বলল হ্যা। প্রেম
ভালবাসা পবিত্র তাদের যুক্তি হল- ইউসুফ-
জুলাইখা প্রেম করছেন। তিনি নবী হয়ে যখন
প্রেম করলেন তাহলে অবশ্যই অবশ্যই প্রেম পবিত্র। আমি তাদেরকে অনেক বুঝালাম,
তারা বলল, যদি সঠিক ও স্পষ্ট
যুক্তি দেখাতে পারিস তাহলে আমরা তোর
কথা মেনে নেব।
দেখলেন তো তাদের যুক্তি, তাদের ধর্মীয়
জ্ঞান না থাকার কারণে তারা ইউসুফ- জুলাইখাকে দিয়ে যুক্তি ধরেছে। অথচ তারা জানেনা, ইউসুফ (আ এই ঘটনায় জড়িত
কি না, জুলাইখার এই ভালবাসার রহস্য কি?
কত বছর আগে জুলাইখা ইউসুফ (আ কে স্বপ্নের
মধ্যে সান্নিধ্য লাভ করেছেন? তার
ভালবাসা বর্তমান যুগের যুবক-যুবতীর প্রেম
ভালবাসার মত কি না। আর এই না জানার জন্যই তারা প্রেম ভালবাসা পবিত্র
বলে অবৈধ প্রেম করে বেড়াচ্ছে। এ ধরনের
অবৈধ প্রেম-ভালবাসায় জড়িত হয়ে অনেক
তরুণ-তরুণীর জীবন অকালে ঝড়ে পড়ছে।
তাদের লেখা-পড়ার ক্ষতি হচ্ছে, সময়ের
অপচয় হচ্ছে। ¯^v¯’¨ নষ্ট হচ্ছে, সাজানো সংসার ভেঙ্গে চুরমান হচ্ছে,
সবচেয়ে বড় কথা হল- ঈমানের
জ্যোতি নিভে যাচ্ছে, দীনদারিত্ব নষ্ট
হচ্ছে। আসলে ভালবাসা বলতে যা বুঝায়-
বর্তমান যুবক-যুবতীর এই ভালবাসা সেই
ভালবাসা নয়। তাদের ভালবাসার মূল মিনিং হচ্ছে অনেক সময় দেখা যায় তাদের
এই ভালবাসায় অভিভাবকদের
সম্মতি থাকে না বিধায় তাদের
মুখে চুনকালি দিয়ে পালিয়ে যায়। আবার কিছু
দিন পরে যখন প্রেমের আবেগ নিশা টুটে যায়,
তখন কালো মেঘের ছায়ার মত নেমে আসে নানাবিধ অস্বস্তি ও যন্ত্রণা।
তখন তড়িৎ গতিতে বিচ্ছেদ ঘটে যায়।
তারা সর্বনাশা প্রেমে একুল-অকুল
সবি হারায়।
তারা কি জানেনা! প্রেম কি? ভালবাসা কি?
তার প্রতিফল কি? কেন জানবে না, হ্যা তারা জানে, প্রেম এক মরণাত্বক
যন্ত্রণার নাম। একটি হৃদয় বিদারক
সংক্রামক রোগ, যা অত্যন্ত ছোয়াছে বড়ই
মারাত্মক এ প্রেম। যে একবার এ
পথে পা বাড়িয়েছে সে কখনও সুখের
ছায়া দেখেনি। কেননা তাতে রয়েছে আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
এর নারাজী। প্রেমের প্রধান উৎস
হচ্ছে আবেগ আর প্রচন্ড এই আবেগই
হচ্ছে প্রেমের চালিকা শক্তি। কিন্তু গভীর
এই আবেগকৃত প্রেমের গভীরতা যখন
থেমে যায়, তখন প্রেমের বদলে জন্ম নেয় মোহ। কচুপাতার পানির মত এক সময় এই মোহও
ঝড়ে পড়ে। তখন স্বপ্ন সাধ, আশা,
ভালবাসা সবই হয়ে যায় চুর্ণ। কেউ কেউ
আবার প্রেমে ব্যর্থ
হয়ে প্রতিক্রিয়া দেখায়। কেউ প্রতিশোধ
নেয় (এসিড, খুন বা যুবতীর বিবাহ ভঙ্গন) কেউ চিরকুমার থেকে যায়, কেউ করে আত্মহত্যা।
আরে বাবা এত ভয়ক্ষর রাস্তার নামই
কি ভালবাসা! তারপরও
বুঝে আসে না কি করে যে বিনা বিবেচনায়
আজকের তরুণ-তরুণীরা তা বরণ করে নেয়।
যারা অবৈধ প্রেমের জন্য নিজের জীবন উৎসর্গ করে তাদেরকে বলছি এ হারাম
পথে কেন নিজের জীবন উৎসর্গ করতে চান?
খোদার পথে জীবন পরিচালিত হয়ে নিজের
জীবন উৎসর্গ কর। যেখানে থাকবে না কোন
অশান্তি, কোন কষ্ট, শুধু থাকবে সুখ আর সুখ,
শান্তি আর শান্তি, বর্তমান আধুনিক বিশ্বে ভালবাসা বলতে যা পরিলক্ষিত হচ্ছে,
তা নিঃসন্দেহে ইসলাম বিরোধী। কিন্তু শত
আফসোস হলেও সত্য যে, বর্তমান
বিশ্বে অধিকাংশ কিশোর-কিশোরী, তরুণ-
তরুণী, যুবক-যুবতী বিশেষ করে আধুনিক
শিক্ষিত ও সচেতন স্কুল, কলেজ ও ভার্সিটির ছাত্র-ছাত্রীরা এই ভালবাসা নামক
মরণব্যাধিতে আক্রান্ত। যার
ফলে অকালে ঝড়ে যাচ্ছে হাজারো জীবন।
প্রতিনিয়ত এসিডে দগ্ধ
হচ্ছে হাজারো নারী। আধুনিক বিশ্বে আধুনিক
প্রেমের বেলায় এটি কি সত্য। তাই বলতে হয় এটা ভালবাসা নয় এটা মরণ নেশা।
ভালবাসার নামে দেশের ভবিষ্যত
সম্ভাবনাময় যুব সমাজকে ধ্বংস ও নিঃশেষ এর
দিকে টেলে দিচ্ছে। যার ফলে পরিবার,
সমাজ সবই হচ্ছে কলংকিত, অধ:পতিত। যার
জলন্ত প্রমাণ প্রতিদিনই পত্রিকার পাতায় চোখ ভুলালেই দেখতে পাই। তারপরও
কি আমরা সে পথ থেকে ফিরে আসতে পারি না?
সময়
থাকতে তা থেকে শিক্ষা নিতে পারি না?
হ্যা ভালবাসা বড় মহৎ একটি গুণ। মহান
আল্লাহপাক এই ভালবাসাকে একশত ভাগ করে নিরানব্বই ভাগ নিজের
কাছে রেখে মাত্র একভাগ সারা বিশ্বে সকল
প্রাণী জগতে দান করে দিয়েছেন। যার
দ্বারা মা সন্তানদেরকে ভালবাসে, স্বামী-
স্ত্রীকে ভালবাসে, আত্মীয় স্বজন একে অপরকে ভালবাসে। বাকি নিরানব্বই
ভাগ ভালবাসা মহান আল্লাহ নিজের
কাছে রেখে দিয়েছেন। কিয়ামতের দিন
তা দ্বারা তিনি স্বীয় বান্দাদের
প্রতি করুণা প্রদর্শন করবেন। মহান আল্লাহ
প্রেম-ভালবাসা নামক ধ্বংসাত্বক রোগের প্রতিরোধের জন্য পর্দাপ্রথা দিয়েছেন।
এরই মাধ্যমে বাচানো সম্ভব হবে ব্যক্তি,
পরিবার সমাজ এবং দেশকে রক্ষা করা।
আল্লাহপাক নারীদের উদ্দেশ্য করে বলেন- ِﺔَّﻴِﻠِﻫﺎَﺠْﻟﺍ َﺝُّﺮَﺒَﺗ َﻦْﺟَّﺮَﺒَﺗ ﺎَﻟَﻭ ﻰَﻟﻭُﺄْﻟﺍ
তোমরা জাহেলী যুগের ন্যায় নিজেদের
প্রদর্শন করে বাহিরে বের হয়ো না। (আল-
কুরআন) যারা অবৈধ ভালবাসাকে পবিত্র
বলতে দুঃসাহস দেখান এবং বলেন প্রেম
পবিত্র। শালিনতার সাথে প্রেম করলে তা নাজায়িয হবে কেন?
তাদেরকে আবারও বলছি, এটা আপনাদের নিছক
মুর্খতা ও সম্পূর্ণ অমূলক ভুল এবং ভুল ধারণা।
অবৈধ ভালবাসা কখনো পবিত্র
হতে পারে না এবং পবিত্র হবার কোন পথও
নেই। যুবক ও যুবতীর ভালবাসা সম্পূর্ণ নাজায়িয ও হারাম। এক মাত্র বৈবাহিক
সম্পর্কের পর পরই প্রেম-ভালবাসা পবিত্র
হতে পারে। বিয়ের আগে তা পবিত্র নয়,
হারাম ও কবিরা গুনাহ। যদি বিয়ের তারিখ
ঠিক হয়েও যায় তবুও এ কাজে লিপ্ত
হতে পারবে না যতক্ষণ না আকদ হয়েছে। এমন কি আকদের পূর্ব পর্যন্ত প্রেম সংক্রান্ত গোপন
চিঠি আদান প্রদান, দেখা-সাক্ষাত,
ফোনে কথা-বার্তা বলা সবই নিষিদ্ধ,
কবীরা গুনাহ।
তাই আমাদেরকে সঠিকভাবে বাচতে হলে দেশ,
জাতি ও পরিবারকে বাঁচাতে হলে এই অবৈধ প্রেম ভালবাসার পথ চিরতরে বন্ধ
করতে হবে। এ বিষয়ে প্রত্যেক মুসলমানদের
সতর্ক হওয়া অতীব জরুরী। পরিশেষে বলব,
যদি আমরা যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরী, তরুণ-
তরুণীদের শরীয়ত সম্মতভাবে বৈবাহিক
বন্ধনের ভিত রচনা করি তাহলে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতে সুখী হতে পারব। দেশ ও
সমাজকে পাপাচার থেকে মুক্তি দিতে পারব
এবং সামনে আগত প্রত্যেক শিশুকে সুন্দর
ভবিষ্যত এবং কাঙ্খিত দেশ সমাজ ও পরিবেশ
উপহার দিতে পারব। তাই আসুন, আমরা সবাই
সচেতন হই এবং যুবসমাজকে সঠিকভাবে বাঁচার জন্য
সুন্দর পথ দেখাই।
সমাপ্ত
বিষয়: সাহিত্য
১০২৭ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখাটা একটু লম্বা হলেও দরকারি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন