"আমার গায়ে যত দুঃখ সয়..."

লিখেছেন লিখেছেন তাবিজ বাবা ১২ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:০৮:৪৫ দুপুর

দেশটা বোধহয় আমাদের তাঁর বুকে ধারণ করে খুব পাপ,মহাপাপ করে ফেলছে । নাহলে আজ তাঁর রুগ্ন দশায় আমরা এত্ত নিষ্ক্রিয় কেন?

আচ্ছা আমাদের দেশের রথী মহারথীরা কি উপায়ে দেশ পরিচালনা করে?খুব জানতে ইচ্ছে করে । অন্যান্য দেশের কাহিনী জানতে ইচ্ছে করে না কারণ সেগুলো নেটে ইন্টারনেটে আবার এমনিতেই জানতে পারি।আমাদের দেশের বিলেত ফেরত মানুষের মুখে মুখে ফেরে তাদের দেশের কথা।

বলছি সুন্দরবন বিপর্যয় নিয়ে।

মনে করেন,আপনার একটি বড় কোন শপিং মল বা অফিস আছে বা আপনি এরূপ কোন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক আর আপনি খুবই সচেতন ,নিজের প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভাল মন্দ বিবেচনার দায়িত্ব তো আপনার তাই না?

তাহলে আপনার প্রতিষ্ঠানের সংকটকালীন মুহূর্তের কথা বা বিপদ আপদের কথা আপনার মাথাতে তো থাকবেই-থাকা চাইই ।আর আপনি তার উপায়ও খুজে বের করবেন । এটাই স্বাভাবিক,খুব্বই সিম্পল। সেরূপ মহড়াও হবে তাহলে

কিন্তু আমাদের কর্তৃপক্ষ বা সরকার সেটা করেনি।করলে আজ এ বিপর্যয় হতো না।

সরকারপন্থী বা সুযোগ সন্দ্ধানী পাবলিক হয়তো বলবেন আমি আবেগ দিয়ে বলছি ।হ্যা বলছি তবে বাস্তবতা বিবর্জিতও নয়।সুন্দরবন আমাদের নিজেদের সম্পদ এটা একার আওয়ামিলীগেরও না বি.এন.পি র ও না।ভুলে গেছেন প্রলয়ংকরী ঝড় সিডরের কথা ? সেদিন সুন্দরবনের ভূমিকার কথা? কিভাবে রক্ষা করেছিল আমাদের সে কথা? তাহলে সুন্দরবনের মধ্য দিয়ে কেন তেলবাহী জাহাজ চলাচল করতে দেওয়া হলো যেখানে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী নিজে জাহাজ চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন । তবে কি লেজে মাথা নাড়াচ্ছে?

""সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে একটি জাহাজ ডুবে সাড়ে তিন লাখ লিটারের বেশি তেল ছড়িয়ে পড়েছে।ফলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই শ্বাসমূলীয় বনের গাছপালা, ডলফিন, মাছ ও বন্য প্রাণীর জন্য এক মহাবিপর্যয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। কারণ, পানিতে তেলের আস্তরণ প্রাণের অস্তিত্বের জন্য বিরাট হুমকি। আশ্চর্যের বিষয় হলো, দুর্ঘটনার পর ১২ ঘণ্টা পার হয়ে গেলেও বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান কিছু জানতেন না। জাহাজ উদ্ধার ও তেল অপসারণের কোনো উদ্যোগও নেওয়া হয়নি। অর্থাৎ এ ঘটনার বিপর্যয়ের দিকটি বোঝার সক্ষমতাও ওদের নেই। এদের দিয়ে দেশের কোন উপকারটা হবে?""

উদ্ধৃতি চিহ্নের অংশটুকুন ১১ তারিখের প্রথম আলো থেকে নেওয়া।তাহলে বুঝুন অবস্থাটা । এমনকি সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে ইউনেস্কোরও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ।

এখন প্রশ্ন তাহলে এতসব ওষুধেও কেন কাজ হচ্ছে না?

উত্তর হচ্ছে আন্তরিকতার ও আগ্রহের অভাব ।

আমাদের দেশে অধিকাংশ দায়িত্বপ্রাপ্তদের নিজকাজে কোন আগ্রহ নেই । নৌপরিবহন মন্ত্রী ব্যস্ত থাকেন গার্মেন্টস সামলাতে,গাড়িচালকদের লাইসেন্সপ্রাপ্তির আন্দোলনে । পিনাক-৬'র মত লন্ঞ্চডুবির পরও ওনাদের টনক নড়ে না । উনারা একটু সচেতন হন না । অবশ্য এটা যে কোন সরকারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ।

সাড়ে তিন লাখ লিটারের বেশি তেলবাহী জাহাজ থেকে এ পর্যন্ত কতটুকু তেল বেরিয়েছে তা বলা যাচ্ছেনা ।সুন্দরবনে প্রায় ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনাটি ম্যানগ্রোভ বা শ্বাসমূলীয় বনের ক্ষেত্রে বিশ্বে সবচেয়ে বড় বিপর্যয়ের ঘটনা। এর আগে ইন্দোনেশিয়া, পানামা, নাইজেরিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও পুয়ের্তোরিকোতে এ রকম তেল ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা ঘটেছিল। তবে এসব দুর্ঘটনার কোনোটাতেই পাঁচ-ছয় হাজার হেক্টরের বেশি এলাকায় তেল ছড়ায়নি।

আর গত তিন দিনে সুন্দরবনের প্রায় আট হাজার হেক্টর (৮০ বর্গকিলোমিটার) জায়গায় ফার্নেস তেল ছড়িয়ে পড়েছে বলে বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে।

এর আগে যেসব দেশের শ্বাসমূলীয় বনে এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, তার সবখানেই প্রথম দিন থেকেই তেল নিয়ন্ত্রণে প্রচেষ্টা নেওয়া হয়েছিল। তার পরও ওই দেশগুলোতে বনের দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি এড়ানো যায়নি।

সুন্দরবনের আগে কাছাকাছি মাত্রার দুর্ঘটনা ঘটেছিল নাইজেরিয়ার উপকূলবর্তী নাইজার ব-দ্বীপে। ২০০৮ সালে সেখানে শেল কোম্পানির পাইপ থেকে তেল নিঃসরণের ফলে প্রায় ৩০ হাজার মানুষের জীবিকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এতে করে ধ্বংস হয় এক হাজার হেক্টর শ্বাসমূলীয় বন। আর দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির শিকার হয় পাঁচ হাজার হেক্টর বনভূমি, যেটাকে লন্ডনভিত্তিক আইনি সংস্থা লেই ডে তখনকার সময়ের সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বিপর্যয় বলে আখ্যায়িত করে।

২০১৩ সালের মধ্যে বিশ্বে যতগুলো এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটেছে, সেগুলোর উল্লেখ করে গত বছর একাধিক প্রতিবেদন ছেপেছে হাফিংটন পোস্ট ও গার্ডিয়ান পত্রিকা। সেখানে ক্ষয়ক্ষতির যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, তা গত মঙ্গলবারের সুন্দরবনের বিপর্যয়ের তুলনায় কম।

বন বিভাগের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত সুন্দরবনের পশুর, শ্যালা, রূপসা ও বলেশ্বর নদের ৮০ বর্গকিলোমিটার এলাকায় তেল ছড়িয়ে পড়েছে। নদীতীরবর্তী এলাকার চাঁদপাই, জয়মনি, তাম্বুলবুনিয়া, হরিণটানা এলাকায় প্রায় তিন ধরনের বনজীবী বসবাস করেন। বন থেকে মাছ ও রেণু পোনা ধরা, মধু ও গোলপাতা আহরণ তাঁদের প্রধান জীবিকা। বনে তেল ছড়িয়ে পড়ার ফলে এই বিপুলসংখ্যক জনগোষ্ঠীর জীবিকা ব্যাহত হচ্ছে।মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ অবশ্য ডুবে যাওয়া জাহাজ উত্তোলনে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়টাকে দায়ী করেছে। তারা বলছে, ডুবন্ত জাহাজ উদ্ধারের জন্য উদ্ধারকারী বড় জাহাজ, তেল ছড়িয়ে পড়া রোধে রাবার বুম (একধরনের ভাসমান বাধা, যাতে তেল ছড়িয়ে পড়তে না পারে), স্কিমার, সরবেন্ট ম্যাটারিয়ালসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি তাদের নেই। যে কারণে প্রথম দিন থেকেই তারা তাদের তৎপরতা শুরু করতে পারেনি।

এ তেল বনের বৃক্ষের শ্বাসমূলে আটকে থাকবে। ফলে গাছ নিঃশ্বাস নিতে পারবে না এবং আক্রান্ত গাছগুলো মারা যাবে। গাছের পাতা খেয়ে বনের হরিণ বাঁচে। তেল লেগে যাওয়া পাতা কোনো হরিণ খেলে সেটি কিডনি অকার্যকর হয়ে মারা যেতে পারে। আক্রান্ত এলাকার ডলফিন, উদবিড়াল, গুঁইসাপ এবং সব ধরনের ক্ষুদ্র জলজ প্রাণী আস্তে আস্তে মারা যাবে। ফলে এ বিপর্যয়ের ফলে পুরো এলাকার বনজীবী এবং প্রাণীর জীবন বিপন্ন হবে।

এখন আসেন আমরা FBতে পতাকাটানানো নিয়া যুদ্ধ করি।সুন্দরবন আমাদের কি?মরুক সুন্দরবন,মরুক জনগণ,মরুক কর্পোরেট বাংলা

বিষয়: বিবিধ

১১৪৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File