অর্চিব
লিখেছেন লিখেছেন তাবিজ বাবা ০১ মে, ২০১৪, ০৮:২০:৫৯ রাত
ফার্মগেটের নিউ স্টার হোটেল, (বাটা সিগন্যালের পাশেই)
-বস কি খাইবেন ?
-সেরকম কিছু না । এই গরমে আর কি খাব? একটা হাফলিটার সেভেনআপ আর একটা ভাল দেখে আইসক্রিম দাও
বলেই যেন হাপিয়ে উঠল ছেলেটা । অবশ্য সেটা না ।ছেলেটা অনেক আগেই হাপিয়ে উঠেছে । শাহবাগ থেকে এই পর্যন্ত আসতে প্রায় ৪৫ মিনিট লেগেছে । তারপরে আবার একুশে ভবনের সামনে থেকে এই পর্যন্ত হেঁটে এসেছে জ্যাম থাকার কারণে । ছেলেটার নাম শোভন ।Uniaid কোচিং সেন্টারের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক । অবশ্য আজকাল এদেরকে কেউ স্যার বা শিক্ষক বলে না,ভাই/ভাইয়া বলে ডাকে ।
-অর্ডার দিয়েছি কোনসময়,এতক্ষণ লাগে?
-স্যরি মামা ।
-ঠিক আছে যাও ।
শোভন তাকিয়ে দেখে পুরা হোটেলই ভর্তি ।সবাই নানারকম খাবার খাচ্ছে । বিরিয়ানি,তেহারি,গ্রিল উইথ নান।সে ভাবে এই গরমেও এরা এই তৈলাক্ত খাবার কিভাবে পেটে চালান করে দিচ্ছে!?
হঠাৎ চা চুমুক দেওয়ার বিরক্তিকর শব্দ।পরপর কয়েকবার। উৎস খুজতেই শোভন খেয়াল করল, প্রায় সবাই একটি অসম্ভব রুপবতী মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে।মেয়েটা এই ৪২ ডিগ্রী তাপমাত্রার গরমে এই দুপুরে কিভাবে ধোয়া উঠা চা খাচ্ছে,ভাবতে গিয়েই খেয়াল করলো মেয়েটা তার অতীব পরিচিত।মেয়েটির নাম অর্চিব ।মেয়েটি চা খাওয়া শেষ করে শোভনের দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বেরিয়ে গেল। শোভন জানে,পিছু নিতে গেলে মেয়েটা হাওয়ায় মিলিয়ে যাবে !।
২০১০ সাল ।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ভবন । কক্ষ নং ১০২০ । ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা শুরু হবে সকাল ১০টা থেকে । "অপরাজেয় বাংলা"র কাছে এসে থামল একটি এক্স করোলা। অর্চিব গাড়ি থেকে নেমেই হনহন করে হেটে এসে লাইনে দাঁড়িয়ে গেল । ৯টা বাজতেই বিএনসিসির সদস্যরা ইশারা করল হলে ঢোকার জন্য । অমনি করে লাইনটা নড়ে উঠে ট্রেনের মত করে হলে ঢুকতে শুরু করল। শুরু হল অভিভাবকদের চিল্লা পাল্লা । কেউ তার সন্তানকে বলছে, "আগে বিসমিল্লাহ পড়ে নিও",কেউ বলছে "তাড়াহুড়া করবে না,চিন্তা ভাবনা করে উত্তর দেবে"--এরকম সাবধানবাণী ।
অর্চীবকে এগিয়ে দিতে কেউ আসেনি ড্রাইভার হারুন ছাড়া । সে এখন তার গাড়ি ঘোরাতে ব্যস্ত । সে এছাড়া কিইবা করতে পারে ,কিইবা বলতে পারে অর্চীবকে ।
(চলবে)
বিষয়: বিবিধ
৯৮৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন