শিবিরকে মানুষ কেন অপছন্দ করে
লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ তাহসীন ০৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১২:৩৯:৫০ রাত
বিভিন্ন সময় অনেকেই শিবিরকে নিয়ে নানা রকম কথা বলে। অনেকেই বলেন শিবির চাদা নেয়। বেশির ভাগই বলে যে শিবির ক্যাম্পাসকে মাদ্রাসা বানায়ে ফালাইছে। বিশেষ করে যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিবির বেশি সেখানকার ছেলেদের অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা বলে যে তোরা তো মাদ্রাসায় পড়িস।
তো এমনি একটা ঘটনা শেয়ার করব।
দেশের বাইরে পড়াশোনা করতে এসেছি। একদিন এক বন্ধুর অ্যাপার্টমেন্টে গেলাম গিয়ে বন্ধুর বাসার লোকজনের সাথে পরিচিত হচ্ছিলা। এক ভাইয়ের সাথে পরিচয় হলাম। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে পরিচয় দিলেন। এরপর ঘটনা প্রসংগে জানতে পারলাম উনি নাকি শিবির করতেন এখন আর শিবিরকে পছন্দ করেন না। বললেন, শিবির ভালো না। যখন ই শুনলাম শিবির করতেন তখন জিজ্ঞাসা করলাম শিবিরের কি ছিলেন, বলে যে একটা সংগঠনের সভাপতি ছিলাম। আমার তখন সন্দেহ হলো যে, একটি সংগঠন বলতে কি বুঝাচ্ছেন।
বলে যে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন আছে সেটার দায়িত্বে ছিলেন, বুঝতে বাকি রইলো না তারপর জিজ্ঞাসা করলাম যে, আপনি শিবিরের কি ছিলেন, বলে যে কর্মী ছিলাম।
তখন জিজ্ঞাসা করলাম, শিবিরকে অপছন্দের কারন টা খুলে বলবেন?
উনি বলা শুরু করলেন,
যে আমি ঐ একটা সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলাম। ক্যাম্পাসে তখন ছাত্রলীগের দৌড়াত্ব একদিন আমি রুমের দিকে ফিরছিলাম হঠাত পাহাড়ী রাস্তায় দেখি ৫-৬ জন ছাত্রলীগের ছেলে। আমি ভীষন ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম। কোন রকম চুপচাপ চলে এসেছি। এরপর শিবিরের লোকজন কে বললাম আমার প্রটেকশন দিতে ওরা দিলোনা। তো আমি কেন শিবির করবো। জানের ভয় নিয়ে শিবির করে আমার লাভ কি। এজন্যই তখন থেকে আর শিবির করিনা। আমি বললাম আপনি তো কখনই শিবির করেননি।
সে যাই হোক, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে অনেকেই শিবির করে ধান্ধাবাজী করে। এরা অবশ্য শিবিরে টিকটে পারে না। বিভিন্ন ভাবে সংগঠনকে ব্যবহার করতে চেষ্টা করে। পরে এসব মানুষই সংগঠন থেকে দুরে সরে গিয়ে কুতসা রটায়। বাংগালী বলে কথা কুতসা রটিয়ে নিজেকে ভালো প্রমানের চেষ্টা করে।
একটি ঘটনা বলি; বিদেশে আসলাম আমরা বেশ কজন বন্ধু পড়াশোনা করতে। তো আমাদের দেখে অনুপ্রেরনা পেয়ে পরের বছর আরো কিছু ছেলে আসলো। তাদের মধ্যে এক ছেলে ছিলো সে আসার পর, কোন সাবজেক্টে পাশ করতে পারলো না। আবার জব ও ম্যানেজ করতে পারলো না। শেষে জিগির তুললো যে, মাইগ্রেন এর ব্যাথা। দেশে ফিরে যাবে বাইরে আসার দু-মাসে মাথায় বলছে দেশে যাবে। সে আবার আমার এলাকার ছেলে। সে আমার এক বন্ধুর রেফেরেন্সে এসেছিলো। তো সে বন্ধু বিরক্ত হয়ে তার জন্য টিকেট কনফার্ম করলো। ছেলে আসলো আমাদের বাসায় আমি অনেক বুঝানোর পর সে থাকতে রাজি হলো কিন্তু আমার বন্ধু বললো যে, না তুমি দেশে চলে যাও দু-দিন পর বলবা যে ভালো লাগছেন না। তো সে দেশে ফিরে গেলো দেশে ফিরে গিয়ে এখন কি বলা যায়, দেশে গিয়ে বললো যে, ঐ দেশে মানুষ থাকে যা ঠান্ডা ঘর থেকে বের হওয়া যায় না। সবাই অনেক কষ্টের কাজ করে। বলে নেওয়া ভালো যে, বিদেশে এসে অনেক ছা্ত্র ই পড়াশোনার পাশাপাশি নিউজপেপার জব, ডিশওয়াশিং জব করে। সে দেশে গিয়ে নিজেকে বড় করে বাকি সবাইকে ছোট করে দিলো।
ঠিক এমনি হয়, শিবিরকে নিয়ে নানাজন নানা কথা বলে। কিন্তু বাস্তবতা হলো সংগঠন হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবির অতুলনীয়। তবে কিছু মানুষ থাকে যারা সংগঠনকে ব্যবহার করে ব্যক্তিগত ফায়দা লুটে। এমন কিছু লোক সংগঠনে টিকে যায়, এবং যারা সংগঠনের বিরোধিতা করে তারা এই কিছু অংশকেই বড় করে ফুটিয়ে তুলে।
এই ক্ষুদ্র অংশটিকে সংগঠন থেকে বিতাড়ন করা বা সংশোধন করে সংগঠনকে একেবারে পরিশুদ্ধ করার কাজ করা উচিত। মানুষ শিবিরকে নিয়ে অনেক স্বপ্ন দেখে কিন্তু অনেক সময় ছোটখাটো ক্রটিগুলোর কারনে মানুষ দুরে সরে যায় সেটির জন্য হয়ত আমাদেরই দায়বদ্ধতা থেকে যায়
বিষয়: বিবিধ
২১০৮ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
....কিন্তু বাস্তবতা হলো সংগঠন হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবির অতুলনীয়....
মন্তব্য করতে লগইন করুন