মানুষ ছাত্রশিবিরকে কেন অপছন্দ করে

লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ তাহসীন ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৫৬:০৬ রাত

সংগঠন বেশিদিন করা সম্ভব হয়নি। তবে যে কয়দিন করা সম্ভব হয়েছিলো তাতে ভালো-খারাপ দুটোর ই স্বাদ পেয়েছি। তবে শিবিরকে নিয়ে যেসব অভিযোগ উঠে সেগুলোর বেশিরভাগেরই হয়ত বাস্তবতা নেই। আবার অনেক অভিযোগ থাকে যেগুলো মিথ্যা না, তবে সেগুলো হয়ত সংগঠনের চোখের আড়ালে ঘটে যায়। যেমন, সংগঠন থেকে এক নির্দেশনা থাকে হয়ত কিছু দায়িত্বশীল নিজের মত করে তার আয়াত্বাধীন সংগঠনকে চালিয়ে নেয় ফলে ব্যক্তিগত দূর্বলতা সংগঠনের দূর্বলতা হিসেবে প্রকাশ পায় কারন অনেক ক্ষেত্রে সংগঠনের দায়িত্বশীল বলে সংগঠন এই মাইনর শ্রেনীর লোকগুলোকে ফেরেশতার মত মনে করে যার ফলে প্রভাব পড়ে পুরো সংগঠনের উপর।

যাহোক আমি ভালো কিছু ঘটনা বলি, অনেকেই বলে শিবিরের সভাপতি হলের ডাইনিং এ ফ্রি খায়। আমি সংগঠন করার সময় ইশার নামাজ পড়ে অথবা পড়ার পর অনেক সময় সভাপতিকে ডাইনিংয়ে পেতাম। একদিন ও দেখিনি উনি অন্য সভার চেয়ে ভালো বাটি (তরকারী বাটিতে দেয়া হত) নিয়েছে।

একদিন তবে ডাইনিং এর কর্মচারীরা অনেককেই বাটি এনে দিত। যারা সালাম দিত সন্মান করত উনারা আদর করে নিজে বাটি এনে দিতেন। একদিন ডাইনিং এ একসাথে খাইতে গেলাম। খাবার টেবিলে বসলে, হলের এক ডাইনিং কর্মচারী সভাপতিকে দুটো বাটি এনে দিলেন তো সভাপতি বাটি না নিয়ে বললেন যে এসব কি? পরে উনি বাটিটি পাশের সাধারন এক ছাত্রকে দিয়ে নিজের বাটি থেকে খেলেন।

আমার হলে থাকা কালীন কখনও কোন ছাত্রের সাথে খারাপ ব্যবহার করতে শুনিনি। আমি তখন হলের ছাত্রকল্যান সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলাম। একদিন অভিযোগ আসলো এক নবাগত ছাত্রের বেড নাকি বাইরে ফেলে দিয়েছে তারই অগ্রজ রুমমেট। রুমমেট বড়ভাই হিন্দু সে রুমে মুসলিম ছেলেকে উঠাবে না। হলে সীট দেয় হল প্রশাসন। অভিযোগ আসলো হলের সভাপতির কাছে। সভাপতি আমাকে নিয়ে গেলেন ঐ হিন্দু ছেলের রূমে। রুমে গিয়ে কথা বলে যা বুঝা গেলো সে মুসলিম ছেলেকে রুমে উঠাবে না। সে আমাদের দেখে বুঝে গেলো যে সে ঠিক কাজ করেনি। নানা রকম কথা শুরু করলো সে নিজে গিয়ে বেড নিয়ে এসে সে ছেলেকে থাকতে দিলো। এখন সে যদি বলে শিবির খারাপ তাহলে তো সমস্যা নেই। কারন শিবিরের কাজ ই ছিলো অন্যায়কে প্রতিহত করা।

এরকম একদিন আমি দুপুরে ক্লাশ শেষ করে হলে ফিরছিলাম। হলের গেইটের কাছে ছিলো হল গেষ্ট রুম। হলের গেষ্ট রুমে বাইরের কেউ আসলে ওখানে বসত। বিশেষ করে মেয়েদের হলের ভেতরে প্রবেশ নিষেধ ছিলো তাই হলের গেষ্ট রুম পর্যন্ত তাদের অনুমতি ছিলো প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যেটা বলছিলাম, যেই হলের গেইট পার হয়ে গেষ্ট রুমের দরজা ক্রস করছিলাম দেখলাম এক ছেলে- একটি মেয়ে জড়িয়ে আপত্তিকর অবস্থায় আছে। আমিতো শকড এসব কি? আমি একটু পার হয়ে হলের এক জুনিয়র সাথী ভাইকে বললাম যে, ভাই একটু দেখেনতো কি কাহিনী আমি কি দেখলাম শিউর হয়ে আসেন আমি ভূল দেখেছি কিনা। উনি গিয়ে দেখেলেন একই অবস্থা। হলের গেইটের পাশে সভাপতির রুম উনি হলের ডাইনিং থেকে রুমের ফিরছিলেন সাথে ছিলেন আর এক ভাই উনাদের কাহিনী খুলে বল্লাম। উনারা সহ গিয়ে দেখলাম মেয়ে একা ছেলে ঘটনা বুঝতে পেরে সরে পরেছে। মেয়ে কে বললাম ছেলে কই? বলে যে সে হলের ভেতরে গেল, বললাম, যে উনি কি হন আপনার? বলে যে ফ্রেন্ড। বললাম আপনি কিসে পড়েন? বলে ইকোনমিক্স, আর ছেলে কিসে পড়ে বলে ম্যানেজমেন্ট বললাম তাহলে ফ্রেন্ড হলেন কিভাবে। ছেলে এসে পড়লো ইতোমধ্যে ছেলে বললাম যে, হলে উঠলেন কতদিন? বলে ১ বছর তখন বললাম যে গেস্টরুম হলো সবার জন্য এখানে তো অনেক ভদ্রঘরের ছেলে মেয়ে আসে এসব এখানে কেন?

এসব বাধা দেয়া কে অনেকেই অপছন্দ করে। যেমন, ক্যাম্পাসে কোন প্রোগ্রাম হলে মেয়েদের হলের পারিমিশন থাকে অনেক মেয়ে রাতে করে ফিরে। এসময়টিকে শয়তান উপযুক্ত সময় হিসেবে বেচে নেয়। তো শিবিরের ছেলেরা ক্যাম্পাসে ঘুরে বেরাত এসবের ভয়ে অনেক মেয়ে হয়ত তাদের ইজ্জ্বত হারানো থেকে রক্ষা পেয়েছে। কিন্তু শয়তানের প্ররোচনা তো থেমে থাকেনা শয়তান তাদের বুঝিয়েছে শিবির তোদের স্বাধীনতা খর্ব করেছে।

এসব কারনে অনেকেই শিবিরের বিরোধিতা করে। এরকম হাজারো ঘটনা আছে যেগুলো শিবিরের নামক শব্দটির উপস্থিতি থাকার কারনে হয়ত কারো জীবন বিনাশের কারন হয়ে দাড়ায়নি।

শিবিরের কারনে ক্যাম্পাসে মেয়েরা নিরাপদে যাতায়াত করতে পারে। শিবির ক্যাম্পাসে থাকাকালীন সময় কোন মেয়েকে ক্যাম্পাসের ভেতরে নিগ্রহের শিকার হতে হয় নি।

তাই ক্যাম্পাস গুলোতে শিবিরের উপস্থিতি শয়তানের বিপক্ষে নিরিহ ছেলে-মেয়েদের রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে।

তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে শিবিরের স্বল্প সংখ্যক কিছু দায়িত্বশীল দায়িত্বের অপব্যবহার করে। এসব ঘটনাকে দ্রুত আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নিলে, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির সাধারন মানুষের ভালোবাসা ও বিশ্বাস আদায়ে আরো কয়েকধাপ এগিয়ে যাবে। ইনশাল্লাহ।

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশের মাটিতে যুগ যুগ বেচে থাক এই কামনাই করি।

বিষয়: বিবিধ

১৩৫০ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

259301
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:২৮
আবু সাইফ লিখেছেন : বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, বাংলাদেশের মাটিতে যুগ যুগ বেচে থাক এই কামনাই করি Praying Praying Praying
259304
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৩৩
আহমাদ তাহসীন লিখেছেন : ধন্যবাদ
259308
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৪৩
বদর বিন মুগীরা লিখেছেন : পজেটিভ-নেগেটিভ দুইটাই আছে।কিন্তু কোনটা সমাজে কোনটা দ্রুত প্রচার হয়,সেটা দেখতে হবে।
হাজার ভালো কাজকে একটি খারাপ কাজ দিয়ে ঢেকে ফেলা যায়।
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫৬
203125
আহমাদ তাহসীন লিখেছেন : পজেটিভ-নেগেটিভের সমন্বয়ে মানুষ। পজেটিভ কে পজেটিভ নিয়ে নেগেটিভকে সংশোধনের জন্য নিয়ে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। সমালোচনাকে গ্রহন করার মত মানসিকতা তৈরী খুবই প্রয়োজন। কেউ নেগেটিভ বললে খারাপ লাগবে এটাই স্বাভাবিক সেই স্বাভবিকতাকে স্বাভাবিক ভাবেই রোধ করা যায়, নেগেটিভ গুলো সংশোধন করার মাধ্যমে। আপনিও লিখার নেগেটিভ টাই ধরেছেন পেজটিভগুলো ধরতে পারেননি। মানুষের দৃষ্টিভংগী এমনই। কেউ দুটোকে আমলে নিয়ে পর্যালোচনা করবে। আর কেউ পজিটিভটি নিবে আর কেউ নেগেটিভের কথা গুলো ভাববে।

সামনের দিন গুলোতে আরো কথা হবে। ইনশাল্লাহ
259314
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫০
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
২৮ আগস্ট ২০১৪ রাত ১১:৫৭
203127
আহমাদ তাহসীন লিখেছেন : ধন্যবাদ। ব্লগের বেড়াতে আসার জন্য
259321
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৫:৩৭
নিশা৩ লিখেছেন : সহমত আপনার লেখার সাথে।
২৯ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:০১
203270
আহমাদ তাহসীন লিখেছেন : ধন্যবাদ
259350
২৯ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৭:১১
কাহাফ লিখেছেন : আমি শিবির করিনি,তবে ওদের প্রতি আত্মার টান অনুভব করি সব সময়।শুভ কামনা রইল। Rose Rose
259416
২৯ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:০১
আহমাদ তাহসীন লিখেছেন : আপনার জন্য ও শুভকামনা

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File