ধর্ষণ নং-৭১
লিখেছেন লিখেছেন সজল আহমেদ ০৮ মে, ২০১৪, ১২:২৭:০২ দুপুর
ঐ তরে যা কইলাম তাই করিস, নইলে কিন্তু এক্কেরে খাসি কইরা দিমু! খাসি কিরাম করে জানস?
ইমাম সাব ঘাড় নাড়িয়ে বল্ল, জানিনা।
আছমত রাজাকার বলতে লাগল, ঐ হারামীর বাচ্চা, তোরে খাসি করমু কিরাম শুন, তোর পায়জামা খুইলা, ব্লেড দিয়া অন্ডকোষ ফাইরা বিচি বাইর কইরা ফেলমু।
শুন বড় ছাব তোর ১৪ বচ্চর বয়সের অপরুপ যৌবন প্রাপ্ত মাইয়াডারে গোসল করবার সময় দেখছে, তোর মাইয়ার যৌবন, রুপ দেইখা ছাবের পছন্দ অইছে, বেশি না আইজকা রাইতটার জন্যি বড়ছাবের কাছে তোর মাইয়ারে পাঠাইয়া দিবি নইলে বাপ মাইয়া ২ডারেই চীর জীবনের লাই খোজা কইরা দিমু।
—ইমাম সাহেব ঠায় দাঁড়িয়ে আছে যেন একটা ঠাটা (বর্জ্রপাত) তার মাথায় পড়ল। যেই মসজিদে এই তেত্রিশ বছর ধরে ইমামতি করছে সেই মসজিদেরই এক আনকোড়া মুছল্লি তাকে আজ হুমকি দিচ্ছে তার মেয়েকে বড় ছাহেবের যৌন উপঢৌকন হিসেবে পাঠাতে! আহা কি আফসুস!
ইমাম সাহেব আল্লাহ পাককে ডাকছেন আর উপরের দিক চেয়ে হাঁটছেন, এখন গিয়ে কিভাবে একথা তার মেয়েকে বলবে যে মিলিটারির প্রধান অফিসার তার সাথে রাত্রি যাপন করতে চায়!
ঘরের সামনে এসে ইমাম সাহেব হঠাৎ বসে পড়লেন। পিতাকে হঠাৎ বসে পড়তে দেখে ইমাম সাহেবের মেয়ে রহিমা দৌড়ে এসে পিতাকে প্রশ্ন করলেন,
আব্বা কি হইছে আপনার?
ইমাম। না কিছুনা
মেয়ে। শরীর খারাপ আব্বা?
ইমাম। ন , আছমত রাজাকারের লগে দেখা হইছিল মা। অয় কইছে!
রহিমা। কি কইছে আব্বা?
ইমাম। না কিছুনা!
রহিমা। আব্বা আপনি কনতো! (বিরক্ত মুখে)
ইমাম। মিলিটারির বড়ছাব নাকি তোরে খুব পছন্দ করছে আইজকা রাত্রে তোর তার কাছে যাইতে অইব মা! (ইমাম সাহেবের চোখে পানি।) শোন তুই আইজকা মাছায় (কাঠের তৈরী ঘরের ছাদ বিশেষ) পলায়া থাক। অরা খুঁজতে আসলে আমি বলমু রহিমা ঘরে নাই, নানা বাড়িত গেছে।
—আচ্ছা আব্বা আমি পলাইতেছি, আব্বা একটা কথা কই, আমিতো জীবনে পর্দার বাহির হই নাই ঐ পাকিস্তানি ব্যাডা আমারে দেখল ক্যামতে?
ইমাম সাহেব কিছুক্ষণ ভেবে বল্ল, মনকয় আছমত কইছে তোর কথা। যাহ মা কথা বাড়াইসনা পলা আগে পলা।
রহিমা পিতার নির্দেশ মত পালালো।
সন্ধ্যায় দেখা গেল আছমত রাজাকার আর কিছু মিলিটারি ইমাম সাহেবের বাড়ি আসছে। আছমত ইমাম সাহেবেকে ডাক দিলেন। ইমাম সাহেব আছমত রাজাকারের গলা শুনে প্রায় দৌড় দিয়ে এলো।
ইমামকে উদ্দেশ্য করে আছমত বল্ল, তোমার মাইয়া কই ওরে যাইতে কইলাম না?
—ওর নানা বাড়ি গ্যাছেগা । বল্ল ঈমাম সাহেব।
আছমত প্রচন্ড রেগে ইমাম সাহেবকে বল্ল, ঐ হারামী তরে কি কইছিলাম মান্দির পুত?
ইমাম:—আমি আইসা দেখি ও বাড়িত নাই নানা বাড়িত চৈলা গেছে।
আছমত এ কথা শুনে ধপাস করে ইমাম সাহেবের বুকে লাথি মারল।
লাথিটা খেয়ে ইমাম সাহেব মাটিতে পড়ে গেল তার টুপিটা ছিটকে পড়ল প্রায় পাঁচ হাত দূরে, আর তজবিটা পড়ল মিলিটারিদের পায়ের সামনে। আছমত বন্দুকের নলটা ইমাম সাহেবের মাথায় ঠেকিয়ে চেচিয়ে বল্ল, শ্যালা মাদাচ্চোদ তুই মিথ্যা কৈতাছস কই লুকায়া রাখসস তাড়াতাড়ি ক!
ইমাম সাহেব ভয়ে ভয়ে বল্ল, অর নানা বাড়ি গ্যাছেগা কৈলাম তো।
আছমত রাজাকার মিলিটারিদের উদ্দেশ্য করে বল্ল, সাব ইয়ে সালে আচ্ছা মাদাচ্চোদ হ্যায় পাকড়াও সালেকো।
পরক্ষনে ঠাস, ঠাস করে কয়েকটি শব্দ হলো। ইমাম সাহেব আর্তনাদ করে উঠল, আল্লাহ গো! ইমাম সাহেবের মেয়ে মাছা থেকে লাফ মেরে নেমে এসে পিতার নিথর দেহের উপর লুটিয়ে পড়ে , আব্বাগো আব্বা! আব্বা গো আব্বা ! আব্বাগো আব্বা! মিলিটারির দল রহিমার মুখ চেপে ধরে অর একজন আরেকজনকে আনন্দের সহিত বলে, ইয়ে মাল আচ্ছা হ্যায়। রহিমাকে নিয়ে মিলিটারির দল ক্যাম্পে চলে যায় সাথে আছমত রাজাকার। বাড়িতে শুধু পড়ে থাকে ইমাম সাহেবের নিথর দেহ।
ক্যাম্পে পৌঁছে আছমত রাজাকার বড় ছাবের কাছে গিয়ে প্রায় ফিস ফিস শব্দে বল্ল, ছাব রহিমা আজায়ে!
বড় ছাবের মুখে আনন্দের হাসি। আছমত ও আনন্দের হাসি হেসে বলতে লাগল, ইয়ে মাল বড় আচ্ছা হ্যায় ছাব! বড় ছাব রহিমাকে তার সামনে নিয়ে আসতে বল্ল। কয়েকটা মিলিটারি রহিমাকে প্রায় টেনে হেঁচড়ে বড় ছাবের সম্মুক্ষে হাজির করল।
রহিমার সম্মুক্ষে পিছনে বড় ছাব ঘুরে ঘুরে হাঁটছে, তুমারা নাম কিয়া হ্যায়?
রহিমার মুখে কথা নেই। বড় ছাব রহিমাকে ধমক দিয়ে বল্ল, তুমার নাম কিয়া হ্যায়?
রহিমা তবুও কোন কথা বল্লনা হয়তবা রাগে শোকে হবে।
বড় ছাব রহিমার একটি হাত ধরে টেনে টেনে তার রুমে নিয়ে যেতে চাইল। রহিমা একটা হেচকা টান মেরে তার হাতটা ছাড়িয়ে নিলো। আবার বড় ছাব তার হাতটা জোরে ধরল। রহিমা স্বজোরে একটা কামড় দিলো বড় ছাবের হাতে, চিৎকার মেরে বল্ল তোর কি মা বোন নাই ঘরে?
বড় ছাব রহিমার চুলের গোছাটা একহাতে ধরে স্বজোরে একটা চড় বসাল রহিমার গালে। রহিমা মাটিত বসে পড়ল, দুইটা মিলিটারি তাকে মাটিতে শুইয়ে ফেল্ল এবং কয়েকটা মিলিটারি তার কাপড় চোপড় খুলতে লাগল। রহিমা আত্মচিৎকার করছে আর বলছে বাবা রে মারে । মিলিটারিদের অনুনয় বিনয় করতে লাগল কিন্তু মিলিটারিরা তাতে কর্ণপাত করলেন না।
প্রায় উলঙ্গ বড় ছাব তার গায়ের উপর ঝাপিয়ে পড়ল। রহিমা শুধু চিৎকার করছে, তার আত্মচিত্কার শুধু প্রতিধ্বনিত হচ্ছে কিন্তু কেউ আসছেনা তাকে সাহায্য করতে। কেউ নেই তাকে সাহায্য করবার মতো।
তার আত্মচিৎকার শুনে পাশ থেকে কয়েকটি মিলিটারি শুধু দাঁত কেলিয়ে হাসছে।
একেক জন আসছে আর তাকে ভোগ করছে। রহিমা কাউকে কিছুই বলতে পারেনা। কথা বলার মতো সামান্য শক্তি তার নেই।
রহিমাকে প্রায় অর্ধমৃত, এখন কেউ আসছেনা। রহিমার শক্তি ক্ষীণ হয়ে এসেছে। পানির তৃষ্ণায় তার ছাতি ফেঁটে যাচ্ছে। এ ঘরে কাউকে দেখা যাচ্ছেনা। শুধু আছমতকে দেখা গেল, আছমত লোভাতুর দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে রহিমার নগ্ন দেহের দিকে। রহিমা আছমতের কাছে পানি চাইল। আছমত পানি এনে রহিমাকে খাওয়ালো। পরক্ষণে আছমত ও শকুনের মতো ঝাপিয়ে পড়ল রহিমার দেহের উপর। রহিমা বাক রোধ হয়ে গেল। রহিমা শুধু বল্ল, কাকা আপনিও? এরপর আর কিছু রহিমার মনে নাই। যখন রহিমার জ্ঞান ফিরল, রহিমা লক্ষ্য করল আছমত রাজাকার মৃত অবস্থায় তার পাশে পড়ে আছে। দূরে কয়েকটা মিলিটারির লাশ। রহিমার বাংলাদেশের একটা পতাকা তার গায়ে জড়ানো। আস্ত একটা সূর্য উঁকি দিয়েছে জানালার পাশে। সারা গ্রামে জয় বাংলা প্রতিধ্বনিত হচ্ছে।
রহিমা আকাশের দিক তাকিয়ে অঝোর নয়নে বল্ল, এতক্ষণ পর ফিইরা চাইলা মাওলা?
রহিমা উঠে দাড়াতে চাইল কিন্তু সে শক্তি তার নাই।
বিষয়: বিবিধ
১৬২২ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এমনি করে কত মা বোন তাদের সম্ভ্রম হারিয়ে দেশকে স্বাধীনতার স্বাদ দিয়েছে কিন্তু সেই রহিমারা এখনো নিরাপদ নয় তাদের চিৎকার এখনও শুনা যায় ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন