সাধের ডেনমার্ক ট্যুর
লিখেছেন লিখেছেন রেজু ২২ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৩৬:৪৫ রাত
প্রচণ্ড ট্যুর বাতিক আর কিছু প্রিয় নাছোড় বান্দার শাসানী উপেক্ষা করতে না পেরে অসুস্থতা সত্ত্বেও ডেনমার্ক ট্যুরে গিয়েছিলাম বন্ধুদের সাথে। সবাই অনেক মজা করেছে, আমি দেখেছি তাদের হৈ হট্টগোল আর সহ্য করেছি নিজে মজা না করতে পারার যন্ত্রণা ও অসুস্থতার প্রকটতা।
স্টকহোল্ম থেকে আমরা বড় মিনি বাস ভাড়া করেছি, সাথে প্রায় ১ হালি ড্রাইভার মামু আছে কারণ সব মিলিয়ে প্রায় ১৫০০ কিমি ড্রাইভ।
পথিমধ্যে হেব্বি আড্ডা আর গল্পে মাতিয়ে রাখলেন আমাদের ভাইয়েরা। বিশেষ করে কিবরিয়া ভাইয়ের হাগার গল্প আর হালিম ভাইয়ের বমির গল্পে সবাই জারপরনাই খুশি ও অতিষ্ট যদিও নিজেকে সবার কাছে বার্ডেন মনে হচ্ছিল যেহেতু আমি অংশগ্রহণ করতে পারছিনা আবার অনেকেই আমার অসুস্থতার কারনে মন খুলে আড্ডায় অংশগ্রহণ করতে পারছেনা।
কয়েকটা বিরতির পর আমাদের গাড়ি যখন সুইডেনের সীমানা অতিক্রম করে ডেনমার্কে প্রবেশ করবে তখনি সবাই আবার সজাগ ক্যামেরা হাতে। তানবির ভাই-তো গাড়ি থেকে নেমে রাস্তায় শুয়ে কয়েকটা শট নিলেন । সীমানা ব্রিজ ট্যাক্স পরিশোধ করে গাড়ি ছুটল সুইডেন ও ডেনমার্কের ঐতিহাসিক সীমানা ব্রিজ (সমুদ্রের নীচের ব্রিজ http://www.readnrock.com/?p=43) ভেদ করে। সে এক নান্দনিক দৃশ্য।
ব্রিজের ওপারেই হামিদ ভাইয়ের বাসা। হামিদ ভাই আগে থেকেই হরেক রকমের খাবার রেডি করে রেখেছেন এই খাদক পালের জন্যে। আর সবকিছু আমাদের সাথে কো-অরডিনেট করছেন সর্ব জনাব সজিব ভাই ও বিপ্লব ভাই। সবাই গিয়ে একযোগে ডাইনিং টেবিলে আক্রমন। কিবরিয়া ভাই নতুন বছরে JMC´র দায়িত্বশীল হয়েছেন তাই হামিদ ভায়ের বাসায় গিয়ে ফারদিন, জাইমা আর ? নিয়ে উনার স্বভাবসুলভ মানব স্ট্যাচু করলেন আর তানবির ভাই নিলেন ছবি। সব মিলিয়ে অনেক মজা। সবশেষে হামিদ ভাই ও ভাবি কে ধন্যবাদ দিয়ে আবার যাত্রা শুরু।
কোপেনহেগেনের কোন এক বড় ফ্ল্যাটে (তানবির ভাইয়ের বোনের) বাসার চাবি সহ আমি বন্দী আর ট্যুর প্রেমী ২ হালি তরতাজা যুবক দাবড়িয়ে বেড়িয়েছে ২০১৩ সালের শেষ মুহূর্ত (থার্টি ফার্স্ট নাইট, যদিও এটা উদযাপন টার্গেট ছিলোনা বাট এক্সিডেন্টলি মিলে গেছে) এবং ২০১৪ সালের প্রথম দিন ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনে। ডেনমার্ক কিং সজিব ভাইয়ের বাহারি আর জম্পেশ সব নাস্তা শেষ করে সবায় বাইরে গেছে আড্ডায়। অসুস্থতার কারনে আমি খেতে পারিনি বাট বিরাট মিস করেছি।
বেলা এগারটায় অনুভব করলাম খুব ক্ষুধার্ত, বের হলাম বাইরে। শঙ্কা ছিল কিছু কিনতে পারবনা যেহেতু ১লা জানুয়ারি সব দোকান বন্ধ থাকে। আন্দাজে ঘুরছি আর দেখছি। কাউকে রাস্তায়ও পাচ্ছিনা যাকে কিছু জিজ্ঞেস করবো। হঠাৎ এক মেয়েকে পেলাম। ইংরেজিতে জিজ্ঞেস করলাম, আশেপাশে কোন খাবারের দোকান আছে কি? মেয়েটি ভাঙ্গা ভাঙ্গা ইংরেজিতে অনবরত উত্তর দিলেন।
ইউ গো দিজ অ্যান্ড রাইট অ্যান্ড বিগ শপিং। মুসলিম হালাল ফুড অ্যান্ড মস্ক। নামাজ নামাজ বলে ইশারায় বুঝালেন আমাকে। আমি ধন্যবাদ দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম আর ইউ মুসলিম? মেয়েটি বাম হাতের বিয়ারের ক্যানটি মুখে দিতে দিতে বললেন, “আলহা’মদুলিল্লাহ্ আলহা’মদুলিল্লাহ্”।
সবাই বাইরে থেকে ঘুরে এসে বাসায় ফিরলেন আর ফিরেই ট্যুর মাষ্টার আনিস ভাই ভরাট কণ্ঠে ঘোষণা দিলেন “রেজা ভাই রেডি হন, আর ৫ মিনিটের মধ্যে আমরা রওয়ানা করবো”।
যথারীতি রওয়ানা করে সবশেষ দাওয়াত রাশেদ ভাইয়ের বাসায় ব্যাটালিয়ন হাজির।
আরিব্বাপরে!!! ফাটাফাটি সব আয়োজন, সাথে সাইফুল ভাইয়ের ডাইনিং টেবিলে বসে ইশটাইলিশ সব পোজ। খাওয়া শেষে বিদায়। শেষবারের মত বাথরুমে যাবার প্রতিযোগিতা। মাশুদ (নট মাসুদ) ভাই শুরু করলেন প্রতিযোগিতা, সবার শেষ হতে না হতে আবার মাশুদ ভাই
সবশেষে আসতে আসতে রাস্তায় কত যে আড্ডা। এতক্ষনে আমি সুস্থ। যতসব পাজি পাজি গল্প আর হৈ-চৈ।
গাড়ি চলছে সেইরাম গতিতে, ড্রাইভার মামু সাইফুল ভাই আর ফেরদৌস ভাইয়ের সুনিপুন হাতে। তুমুল গল্প চলছে আর হাসি ঠাট্টা।
কেউ গল্প বলে- ছোট বেলায় বিছানায় প্রশাব করে বিছানা ভেজানো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে “বাবাকে এক অভিনব প্রস্তাব” হাহাহাহহা...
মাশুদ ভাইয়ের বুজে যাওয়ার গল্প । নাজমুল ভাইয়ের “ওরে তোরা আমার এই সর্বনাশটা করিসনারে” আরও কত্ত কি........................
বিষয়: বিবিধ
১৩৬৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Thanks for your compliment.
মন্তব্য করতে লগইন করুন