সেনোরার বিজ্ঞাপন ও কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন তানজিমুল হাসান মায়াজ ০৭ মার্চ, ২০১৪, ০৪:৪৬:৩৪ রাত
SENORAস্যানিটারি ন্যাপকিন এর কথা বলছি। ইদানীং শহরের দর্শনীয় স্থানের বিশালাকার বিলবোর্ডে, রাস্তার মোড়ে মোড়ে, পত্রিকার পাতায়, টিভিতে SENORA একটি বিজ্ঞাপন দিয়ে যাচ্ছে। বিজ্ঞাপনটির সারমর্ম এরকম- মেয়ে বড় হয়েছে। সেটা বাবা বুঝতে পেরেছেন। তাই সংকোচ না করে মেয়েকে সচেতনার অংশ হিসেবে মেয়েকে SENORA কিনে দিয়েছেন। বাপ মেয়ের ছবির সাথে ইনভার্টেড কমা দিয়ে বাবার বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে “বাবা হয়েও সংকোচ করিনি, সচেতন হয়েছি।”
এই বিজ্ঞাপন নিয়ে আপত্তি করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এর মাধ্যমে বাবা মেয়ের পবিত্র সম্পর্ককে হালকা করা হলো, ফেলনা বানিয়ে দেয়া হলো। এটি একটি অনৈতিক বিজ্ঞাপন যেটি কোনো অবস্থাতেই আমাদের মূল্যবোধের সাথে মানানসই নয়। সবকিছুর একটা সীমারেখা থাকে। এই বিজ্ঞাপন শুধু সীমারেখাই লঙ্ঘন করেনি, এটি চূড়ান্তাভাবে অরুচিকর, এটি সৌন্দর্য্য, শালীনতা, সাধারণ বিবেকবোধ এর পরিপন্থী।
কেউ কেউ হয়তো যুক্তি দিবেন, এটি সচেতনার অংশ …। না এটি মোটেও সচেতনতা নয়, এটি নোংরা মার্কেটিং। এর মূল উদ্দেশ্য আমাদের মূল্যবোধকে নষ্ট করে দেয়া।
কিছু প্রাসঙ্গিক প্রশ্নঃ
1। মেয়ের স্যানিটারি ন্যাপকিন কেন বাবাকে কিনে দিতে হবে? বোন, ভাবি, বান্ধবী, কাজিন, মা খালা তারা কি যথেষ্ট নয়?
2। কেউ হয়তো বলবেন-যে মেয়ের বাবা ছাড়া কেউ নেই তার কি হবে? অন্য কেউ না থাকলে মেয়ের বান্ধবী বা উপর ক্লাসের সিনিয়র আপুরাতো আছেন। আর এটাতো খুবই ব্যতিক্রম কেস। ব্যতিক্রম কেস নিয়েই কেন বিজ্ঞাপন বানাতে হবে?
আজকাল ক্লাস সিক্সের মেয়েরা অনৈতিক প্রেম এ জড়িত থাকে (ব্যতিক্রম বাদে) আর তারা স্যানিটারি ন্যাপকিন চিনবেনা এটা কি আদৌ বিশ্বাসযোগ্য?
3। এসব বিজ্ঞাপন কি বার্তা দিচ্ছে? এরা কি অমি পিয়াল নামক কুখ্যাত চটিলেখকদের ইনচেস্ট চটি লেখার অনুপ্রেরণা দিচ্ছে?
4। ছাত্র শিক্ষক বন্ধু হতে পারে, বাবা মেয়ে বন্ধু হতে পারে, ভাই বোনও বন্ধু হতে পারে। কিন্তু সেই বন্ধুত্বের অবশ্যই একটা সীমারেখা থাকতে হবে। এ বিজ্ঞাপন কি সুস্পষ্টভাবে এ সীমারেখা লঙ্ঘন করেনি?
বিষয়: বিবিধ
২৬৬৫ বার পঠিত, ১১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু বেশী লজ্জাও পেতে নেই । ছেলে যখন বা যেদিন সাবালক হবে সেদিন থেকে যদি তাকে শরীয়তের হুকুম-আহকাম মেনে চলতে হয়, পাক-সাফ অত্যাবশ্যকভাবে হতে হয় এসবতো কারো কাছ থেকে জানতে হবে । এখন মক্তবের সিস্টেম উঠে গিয়ে অনেকে বাসায় মৌলভী ডেকে নিয়ে কোরান, মাসয়ালা-মাসায়েল তালিম দেন । যাদেরকে মুন্সীরা তালিম দেয়ার সুযোগ পায়নি তারা যদি সাবালক হবার পরেও শরীয়তের হুকুম মেনে না চলে এরজন্য দায়ী কে হবে ?
পবিত্রতার হাদিস অধ্যায় পড়ে দেখুন । কি খোলাখুলিভাবে বর্নিত হয়েছে । শুনেছি আরব বিশ্বে বাবা-ভাইয়েরা মেয়েরা সাবালিকা হবার পর প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে দেয় ।
এখন মেয়ে যখন বাসর রাতে স্বামীর সাথে মিলিত হতে যাবে তখন এই সচেতন বাবার মেয়েকে সে ব্যাপারেও সচেতন করা উচিত । কিভাবে কি করতে হবে ।
'' যখন নেই কিছু লুকাবার , তখন অনেক কিছুই আছে দেখাবার ''
এসব বিষয়ে মেয়েরা সাধারনত মেয়েদের কাছ থেকেই অভিজ্ঞতা নিয়ে থাকে , শেয়ার করে ।
এখানে বাবা যখন তার মেয়ের মাসিকের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছে , সামনে এমন এডও আসবে যেখানে মা তার ছেলের একই ধরনের ব্যাপারে সচেতন হচ্ছেন ।
বাবা - মেয়ে , মা -ছেলের মধ্যে যে পবিত্র বন্ধনের সাথে যে একটা পবিত্র সীমাও আছে সেটাকে প্রগতিশীলরা আর রাখতে নারাজ ।
এদের নজর এখন পারিবারিক পবিত্র বন্ধনের দিকে । এরা শয়তানের খপ্পড়ে পড়ে নিজেদের এই ঘৃন্য নোংরা কাজকেও ভাল বলে মনে করছে ।
আল্লাহ এদেরকে এদের অপরাধের মধ্যেই বাড়তে দিচ্ছে। তাদেরকে যদি সংশোধন করার ইচ্ছা আল্লাহর থাকতো তাহলে অল্প কিছু পাপের ফলেই তাদের জন্য শাস্তি চলে আসতো । যাতে তারা তাদের কৃতকর্মের ভুল বুঝতে পেরে ফিরে আসতে পারে ।
কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে অনেক কঠিন ও শক্ত আযাবে পাকড়াও করতে চান বলে তাদেরকে তাদের এই কর্মের মধ্যে বাড়তে দিচ্ছেন ।
কঠিনতম শাস্তি অপেক্ষা করছে এদের জন্য যারা আল্লাহর দেওয়া সীমাকে লঙ্ঘন কর
বাচার উপায় হচ্ছে - সবাই নিজকে, নিজের ভাই/বোন কে, আপনজন এবং নিকটাত্মীয়দেরকে রক্ষা করার দায়িত্ব নিন।
আল্লাহ যেন আমাদের সবাই কে হেদায়ত দেন এবং সিরাতুল মুসতাক্বীমের উপর অটল থাকার তৌফিক দেন। আমীন
মন্তব্য করতে লগইন করুন