হাইব্রীড় সাংবাদিকের সংবাদের উত্পত্তি
লিখেছেন লিখেছেন বিন হারুন ২৮ জুলাই, ২০১৬, ১০:৩৪:৪৭ সকাল
আমার পাশের ঘরের এক বড় ভাই উচ্চ মানের সাংবাদিক. তার কাছে প্রায় সময় ৫/৬ জন ছাত্র থাকত, ছাত্রগুলো ডায়েরী কলম নিয়ে তার পিছু ঘুর-ঘুর করত, সংবাদ লিখে তাকে দেখাতো. তিনি শব্দ চয়ন করে দিতেন বা বদলিয়ে দিতেন. বছর দু'য়েক পর তাদেরকে নিউজ করতে মাঠে ছেড়ে দিতেন. তখনকার খবর পড়ে মানুষ হাসতো কাঁদতো. আর এখন রাস্তা থেকে কুড়িয়ে ক্যামেরা একটা ধরিয়ে দিয়ে সাংবাদিক বানিয়ে দেওয়া হয়. যে যেটা বলে সেটা সাংবদিকরা সংবাদ বলে চালিয়ে দেয়. দূর থেকে ধোঁয়া দেখে লিখে দেয় "পুরো দুনিয়া জ্বলে গেছে" তাই এখন সংবাদ পড়ে লোকজন সত্য-মিথ্যার গোলকে পড়ে যান.
কোন মন্ত্রী এমপি চুপ করে বসে থাকলে তার সামনে সিলেটি কালো বেগুন একটা ধরে বলে স্যার কিছু বলুন
স্যার- না আমার কিছু বলার নেই
সাংঘাতিক - স্যার ঐদিন আপনি বাথরুমে যাওয়ার পথে স্লিপ খেয়ে পড়ে যেতে চেয়েছিলেন ঐ সম্পর্কে কিছু বলুন.
স্যার - হ্যাঁ গত মাসের তেত্রিশ তারিখে আমি বাথরুমে যাওয়ার পথে স্লিপ খেয়ে পড়ে যেতে চেয়েছিলাম.
সাংঘাতিক - কেন পড়ে যেতে চেয়ে ছিলেন? ওখানে কি কাদা ছিল? না জেল জাতীয় কিছু ছিল?
স্যার- না ওসব কিছু ছিল না. কেউ মনে হয় পথে পানি ফেলেছিল.
সাংঘাতিক - আপনি কি মনে করেন ঐ পানি আপনার বিরোধী দলের কেউ ফেলেছে?
স্যার - কি করে বলব, ফেলতেও পারে.
এরপরদিন জনগণের জন্য ঐ সাংঘাতিকের নিউজ. "গত মাসের তেত্রিশ তারিখ আতংক নেতাজি স্লিপ খেয়ে পড়ে যেতে চেয়েছিলেন, তাতে তিনি মরেও যেতেন হয়তো. তিনি বলেন তার জনপ্রিয়তা দেখে বিরোধী দলের লোকজন তাকে হ্ত্যা করার ষড়যন্ত্র করছে. বিরোধী দলের কেউ তাকে পঙ্গু করার উদ্দেশ্যে তার যাতায়াত পথে পানি ঢেলেছে. এ ব্যাপার আজগুবি থানায় অসাধারণ ডায়েরী করার প্রস্তুতি চলছে....."
তবে এ ব্যাপারে বিরোধী নেতার মতামত জানা সম্ভব হয়নি (মোবাইলে পয়সা ছিল না) আপনারা অপেক্ষায় থাকুন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানানো হবে.
এর পরদিনের নিউজ.
আতংক নেতাজিকে হত্যা চেষ্টার প্রতিবাদে লুঠেরা গ্রামে তার সমর্থকরা প্রতিবাদ সভা করেন, সভা শেষে তাদেরকে নগরীর মোড়ে মিছিল করতে দেখা যায়, এসময় তারা অসংখ্যা গাড়ি ভাংচুর করে. এবং অনেক লোকের মানি ব্যাগ খোয়া যায়.
বিরোধী দলের নেতা কর্মীদের গ্রেফতার চলছে, ক্রস ফায়ার চলছে, গুম-খুন শুরু হয়ে গেছে, যাদের অসংখ্য টাকা আছে তারা কিছুদিনের জন্য মুক্তি পাচ্ছে যাদের টাকা নেই তারা শান্তির নীড়ে ঘুমোতে যাচ্ছে আর তাদের স্বজনরা কান্না-কাটি করে আকাশ-বাতাস প্রকম্পিত করছে. তাদের কান্নায় শব্দ দূষন হওয়ায় পরিবেশবাদীরা নিন্দা জ্ঞাপন করছে....
আজকের দিনের সংবাদগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সমস্যার সমাধান দেয় না, বরং সমস্যাকে জিইয়ে রাখার চেষ্টা করে. তবু আমরা সংবাদগুলো পড়ি সময় কাটানোর জন্য.
বিষয়: বিবিধ
১৫০৭ বার পঠিত, ১৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ
মজাদার!!
আপনার খুশিতে আমিও আনন্দিত
অনেক অনেক ধন্যবাদ ভাই
সংবিধিবদ্ধ সতর্কি করণ: এই লেখায় আইএস এর কোন প্রসঙ্গ ছিল না.
মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
যথার্থ সত্য বিশ্লেষণ। সহমত পোষণ না করে উপায় নেই।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সহমত পোষন করে লেখায় উত্সাহিত করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
আল্লাহ্ আপনাকেও উত্তম প্রতিদান দিন
মন্তব্য করতে লগইন করুন