রাসূলাল্লাহ (সাঃ) রামাদান মাসে যে কাজগুলো করেছেন এবং করার উৎসাহ দিয়েছেন
লিখেছেন লিখেছেন পবিত্র ২৬ জুন, ২০১৪, ০১:২০:২৭ রাত
ত্বাকওয়া অর্জনের এ মুবারক মাসে মুমিনদের উপর অর্পিত হয়েছে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব, পূণ্য অর্জনের বিশাল সুযোগ এবং প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করে মহান চরিত্র অর্জনের সুন্দর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। রামাদান মাসে রোযা ছাড়াও যেসব কাজ রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বেশী বেশী করতেন এবং করার উৎসাহ দিয়েছেন এমন কিছু কাজ;
রোযাদারকে ইফতার করানো;
রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: ‘‘যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করায়, সে উক্ত রোযাদারের সাওয়াবের কোনরূপ ঘাটিত না করেই তার সমপরিমাণ সওয়াব লাভ করবে”। সুনান তিরমিযী, মুসনাদ আহমাদ।
কিয়ামুল লাইল/তারাবীহের নামায;
‘‘যে ব্যক্তি রামাদান মাসে ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় (রাতের নামাযে) দাঁড়ায় তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ মাফ করে দেয়া হবে”। বুখারী, মুসলিম।
সুনানের গ্রন্থসমূহে সহীহ সনদে বর্ণিত হয়েছে, রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বলেছেন : ‘‘যে ব্যক্তি ইমাম নামায থেকে বিরত হওয়া পর্যন্ত ইমামের সাথে (কিয়ামুল লাইলে) দাঁড়াবে, তাহলে তার এ আমল রাত্রিভর কিয়ামের সমতুল্য হিসাবে লিখা হবে”। সুনান আত-তিরমিযী, সুনান আন-নাসাঈ।
কুরআন তেলাওয়াত করা এবং এর মর্ম উপলব্ধি করা;
ইবনু আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন:
“জিবরীল রামাদানের প্রতি রাতে এসে রাসূল (সাঃ) এর সাথে সাক্ষাৎ করতেন এবং তাকে নিয়ে কুরআন পাঠ করতেন”। বুখারী।
উসমান (রাঃ) রামাদানে প্রতিদিন একবার কুরআন খতম করতেন। সালাফে সালেহীন নামাযে ও নামাযের বাইরে কুরআন খতম করতেন। রামাদানের কিয়ামুল লাইলে তাদের কেউ তিনদিনে, কেউ সাতদিনে এবং কেউ দশদিনে কুরআন খতম করতেন। ইমাম যুহরী রামাদান এলেই হাদীস পাঠ ও ইলমের মজলিস ত্যাগ করে কুরআন পাঠে লেগে যেতেন।
আল্লাহর রাস্তায় বেশী বেশী দান ও সদকা করা;
আল্লাহর রাস্তায় দান-সদকা ও ব্যয় করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত। সব সময় যাতে সামর্থবান ব্যক্তিবর্গ এ ইবাদাত পালন করে সে ব্যাপারে ইসলাম ব্যাপক উৎসাহ প্রদান করেছে। আর রামাদান মাসে এ ইবাদাতের তাৎপর্য ও গুরুত্ব আরো বহুলাংশে বৃদ্ধি পায়।
ইবনু আববাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন,
“রাসূল (সাঃ) সকল মানুষের চেয়ে বেশী দানশীল ছিলেন। আর রামাদান মাসে যখন জিবরীল তার সাথে সাক্ষাতে মিলিত হতেন তখন তিনি আরো দানশীল হয়ে উঠতেন.....।
অন্য বর্ণনায় এসেছে:
জিবরীলের সাক্ষাতে তিনি বেগবান বায়ুর চেয়েও বেশী দানশীল হয়ে উঠতেন”। বুখারী।
উমরা পালন;
রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :
‘‘রামাদান মাসে উমরা করা হজ্জের সমতুল্য’’ অথবা ‘‘আমার সাথে হজ্জ করার সমতুল্য’’। বুখারী,
ইতেকাফ;
রামাদান মাসের শেষ দশদিন ইতেকাফে বসা অতি উত্তম ইবাদাত। রাসূলাল্লাহ (সাঃ) রামাদানের প্রথম দশদিন ইতেকাফে বসেন। এরপর লাইলাতুল ক্বদরের অনুসন্ধানে মাঝের দশদিন ইতেকাফে বসেন। এরপর যখন লাইলাতুল ক্বদর শেষ দশদিনে হওয়া স্পষ্ট হয়ে গেল, তখন থেকে তিনি শেষ দশদিন ইতেকাফে বসতে লাগলেন।
রামাদানের শেষ দশদিনে লাইলাতুল ক্বদরের অনুসন্ধানে ব্যাপৃত থাকা;
রাসূলাল্লাহ (সাঃ) বলেছেন :
‘‘যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে এবং সওয়াবের আশায় ক্বদরের রাত্রিতে (নামাযে) দাঁড়ায়, তার পূর্ববর্তী সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হল”। বুখারী।
ইমাম মুসলিম আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন,
‘‘রাসূল (সাঃ) রামাদানের শেষ দশদিনে আল্লাহর ইবাদাতে এতটা পরিশ্রম করতেন যা তিনি অন্য সময় করতেন না”। মুসলিম।
বিষয়: বিবিধ
১৯১৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
রমাদান মোবারক!!
সুন্দর পোস্টের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে!
মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন।
হেদায়েত দান করুন।
রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহুআলাইহিওয়াসাল্লামের দেখানো পথ অনুযায়ী আমাল করার তৌফিক দান করুন।
আমিন।
আপনার উপস্থিতিতে ভীষন খুশী হলাম!
দোআ করবেন যাতে রাসূল (সাঃ)এর দেখানো পথে চলতে পারি!
রমাদান মোবারক!
মন্তব্য করতে লগইন করুন