মৃত্যু যন্ত্রনা বড় কঠিন
লিখেছেন লিখেছেন পবিত্র ২৬ মার্চ, ২০১৪, ১২:৫২:১৭ রাত
এ মনপুত আরামদায়ক জীবনের শেষে আগত সবচেয়ে কঠিন, বেদনাদায়ক স্তর হলো মৃত্যু। মৃত্যু ঐ তিক্ত স্বাদ যা প্রত্যেক প্রাণীকেই গ্রহণ করতে হবে।
মৃত্যুর পর কোন মানুষ ফিরে আসে না, তাই মৃত্যুর ভয়াবহতা হুবহু বর্ণনা করা সম্ভব নয়। কিন্তু কোরআন হাদিসে মৃত্যুর কঠিনতা ও ভয়াবহতার ব্যাপারে যা বর্ণিত হয়েছে তা থেকে অনুমান হয় যে, পৃথিবীর সর্বপ্রকার দুঃখ ব্যাথা, কষ্ট বিপদ যদি একত্রিত হয়, তাহলে মৃত্যুর কষ্ট কয়েক গুণ বেশী হবে।
মৃত্যুর কঠোরতা বর্ণনা করতে গিয়ে সূরা ক্বিয়ামাহ বর্ণিত হয়েছে: কখনও না, যখন প্রাণ কন্ঠাগত হবে এবং বলা হবে, কে ঝাড়বে এবং সে মনে করবে যে, বিদায়ের ক্ষণ এসে গেছে এবং গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাবে। (২৬-২৯) গোছা গোছার সাথে জড়িত হয়ে যাওয়ার অর্থ হলো মৃত্যুর সময় মৃত্যু যন্ত্রনা পর্যায়ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকে ফলে মানুষের প্রাণ বের হয়ে আসে।
রাসূল (সাঃ) বলেছেন: মৃত্যু যন্ত্রনা অত্যন্ত কঠিন। {আহমদ} অন্য হাদীসে এসেছে, স্বাদ বিনষ্টকারীকে (মৃত্যু) বেশী বেশী স্মরণ কর। {তিরমিযী}
রাসূল (সাঃ) এর মৃত্যুকালীন সময়ে বারংবার হাত ভিজিয়ে চেহারা মুছতেন, ককনো স্বীয় চাদর দিয়ে মুখ ঢাকতেন, আর কখনো তা মুখ থেকে সরিয়ে নিতেন। যখন মৃত্যু যন্ত্রনায় বেহুশ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হতেন তখন তিনি চেহারা থেকে ঘাম মুছতেন আর বলতেন: মৃত্যু যন্ত্রনা বড় কঠিন।{বোখারী}
আমর ইবনুল আস (রাঃ) বার বার বলতেন: ঐ সমস্ত লোকদের দেখে আমার আশ্চর্য্য লাগে, মৃত্যুর সময় যাদের হুশ জ্ঞান ঠিক থাকে অথচ তারা কেন যেন মৃত্যুর হাকীকত বর্ণনা করেনা। আমর ইবনুল আস (রাঃ) যখন মৃত্যু শয্যায় সায়িত ছিলেন তখন তাকে আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) তার ঐ কথা স্মরণ করিয়ে দিলেন। আমর (রাঃ) শীতল নিঃশ্বাস ত্যাগ করে বলতে লাগলেন: মৃত্যুর প্রকৃত অবস্থা বর্ণনা করার মতো নয়। তবে এতটুকু বলতে পারি যে, আমার মনে হচ্ছে যেন পৃথিবীর উপর আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে, আর আমি এ উভয়ের মাধ্যেমে পেশিত হচ্ছি এবং আমার কাঁধে মনে হয় কোন পাহাড় রাখা হয়েছে, পেটে খেজুরের কাঁটা ভরে দেয়া হয়েছে। আর মনে হচ্ছে আমার শ্বাস সূচের ছিদ্র দিয়ে বের হচ্ছে।
একদা রাসূল (সাঃ) কবরের পার্শ্বে বসে অশ্রুসজল হয়ে গেলেন, এমনকি তাঁর চোখের পানিতে কবরের মাঠি ভিজে গেল, আর তিনি তাঁর সাহাবাগণেকে সম্ভোদন করে বললেন: হে আমার ভায়েরা এমন পরিণতী বরণে প্রস্তুতি নেও। {ইবনে মাজাহ}
আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন: রাসূল (সাঃ) দুআ করতেন, "হে আল্লাহ! তুমি আমার দ্বীনি অবস্থাকে সংশোধন কর যা আমার পরিণতির সংরক্ষক, তুমি আমার পার্থিব অবস্থাকে ভালো কর যেখানে আমি রুযী রোজগার করি এবং তুমি আমার পরকালকে সংরক্ষন কর যা আমার প্রত্যাবর্তন স্থল, আর তুমি আমার হায়াতকে ভালো কাজ বৃদ্ধির মাধমে কর, আর আমার মৃত্যুকে সর্বপ্রকার অকল্যাণ থেকে বাচার মাধ্যম কর। {মুসলিম}
বিষয়: বিবিধ
৪২০২ বার পঠিত, ২৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পবিত্র ভাই কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ভাইয়া।
পবিত্র ভাই কেমন আছেন?
আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি ভাইয়া।
ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।
একটি ইনজেকশন নিতে একটি সূঁচ আমাদের শরীরের কিছু সেল(কোষ)কে আহত করে, সরিয়ে দেয়, কিছু সেল মারাও যায় - তাতেই আমাদের কতো ব্যথা, কতো কষ্ট হয়! আর যেদিন আমার শরীরের সবগুলো সেলের একসাথে মরে যাওয়ার ঘটনাটি ঘটবে - সে সময়টা কেমন লাগবে?! লাগতে পারে?!
আমাদের প্রত্যেকের জন্য আখিরাতের জীবনের এই প্রবেশদ্বারটি যেন দয়াময় মহান আল্লাহ সহজ করে দেন!
ইন্নাল্লাযিনা ক্বালু রব্বুনাল্লাহু সুম্মাসতাকামু - তাতানাজ্জালু আলিহিমুল মালা..ইকাতু আল্লা তাখাফু ওয়ালা তাহজানু...> > > এই সৌভাগ্য যেন আমাদের সবারই হয়! আমীন!
সুন্দর বিষয় ও কম্পোজিশনের জন্য অনেক অন্নেক ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয়া আপনাকে! জাযাকাল্লাহু খাইরান কাসীরা...
সুন্দর কমেন্টটির জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। বারাকাল্লাহু ফীক।
তাকাওয়াবিহীন এ জীবন আর ভালো লাগেনা ভাই।
তাকাওয়া দাও রহিম আমার তাকাওয়া দাও।
সমস্ত গুণাহগুলোকে ধুয়ে মুছে নাও।
হিফাজত কর আমল আমার হেফাজত কর চরিত্র।
মৃত্যুর আগেই তুমি আমাদেরকে করে নাও পবিত্র।
এত্তো সুন্দর দোআ+কমেন্টাটর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
বড় কঠিন কথা। বিস্মিত হবার মত। এ লাইন গুলোই যথেষ্ট মৃুত্যর সময়ের পরিস্থিতি বুঝার জন্য। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন