জিন-শয়তানদের অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়
লিখেছেন লিখেছেন পবিত্র ০৩ মার্চ, ২০১৪, ০১:১২:৪৪ দুপুর
ইবনু কাআব (রাঃ) এর একটি খেজুরের বাড়ী (খেজুর শোকানোর স্থান) ছিল। তিনি দেখলেন যে খেজুর কম হয়ে যাচ্ছে। তখন এক রাতে পাহারা দিলেন। তখন এক সাবালেগ ছেলের মত একটি পশু দেখতে পেলেন। তিনি সালাম করলেন, সে সালামের উত্তর দিল। তিনি বললেনঃ তুমি কে? জিন না মানুষ? সে বললঃ জিন। বললেনঃ তোমার হাত দাও। সে হাত দিল। হাত ধরে তাঁর মনে হল যেন হাতটি কুকুরের হাত এবং লোমগুলিও কুকুরের লোম। তিনি বললেনঃ এরূপই তাহলে জিনের সৃষ্টি? সে বললঃ জিনরা জানে যে তাদের মধ্যে আমার চেয়ে শক্ত আর কেউ নেই। তিনি বললেনঃ তুমি এখানে কেন এসেছো? সে বললঃ আমাদের কাছে খবর পৌঁছেছে যে আপনি ছদকাকে পছন্দ করেন তাই আমরা আমাদের অংশ নিতে এসেছি। তিনি বললেনঃ কোন বস্তুটি আমাদেরকে তোমাদের থেকে মুক্তি দিবে। বললঃ সূরা বাক্বারার এই আয়াত -“আল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল ----। যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় বলবে সে সকাল পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদ থাকবে। আর যে সকালে বলবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত আমাদের থেকে নিরাপদ থাকবে। ফজরে যখন রাসূল (ছাঃ) এর কাছে এসে ঘটনা বলল। তখন তিনি উত্তরে বললেনঃ সে দুষ্ট, তবে কথাটি সত্যই বলেছে।
নাসায়ী।
আবু আইয়ূব আনছারী (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তাঁর খেজুর বাগানে ছোট্ট একটি মাচান ছিল। তিনি তাতে শুকনা খেজুর রাখতেন। রাতে শয়তান জিন এসে মাচান থেকে খেজুর নিয়ে যেত। তিনি এ বিষয়ে নবী করীম (ছাঃ) এর কাছে নালিশ করলেন। তিনি বললেন: যাও, এটিকে তুমি যখন দেখবে তখন বলবে, বিসমিল্লাহ, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) তোমাকে ডেকেছেন। রাবী (বর্ণনাকারী) বলেন, জিন আসতেই তিনি তাকে ধরে ফেলেন। সে তখন কসম করে বলল যে, আর কখনও আসবে না। কাজেই তিনি তাকে ছেড়ে দিলেন। অতঃপর তিনি নবী করীম (ছাঃ) এর কাছে আসলে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার বন্দী কি করেছে? তিনি বললেন, সে শপথ করেছে যে, সে আর কখনও আসবে না। তিনি বললেন, সে মিথ্যা বলেছে এবং সে তো মিথ্যা বলার অভ্যস্ত। রাবী বলেন, এরপর তিনি তাকে আবার ধরলেন। এবারও সে শপথ করে বলল যে, সে আর আববে না। তিনি তাকে ছেড়ে দিলেন।
অতঃপর তিনি নবী করীম (ছাঃ) এর কাছে হাযির হ'লে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, কি হে! তোমার বন্দীর কি খবর? তিনি বললেন, সে কসম করে বলেছেন যে, সে আর আসবে না, এজন্য আমি তাকে ছেড়ে দিয়েছি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বললেন, সে আবারও মিথ্যা বলেছে, আর সে মিথ্যা বলায় অভ্যস্ত। রাবী বলেন, তিনি আবারো তাকে ধরে ফেলেন এবং বলেন, আমি তোকে নবী করীম (ছাঃ) এর কাছে না নিয়ে ছাড়ছি না। সে বলল, আমি আপনাকে একটি বিষয় স্মরণ করাতে চাই। আপনি আপনার ঘরে ‘আয়াতুল কুরসী’ পাঠ করবেন। তা’হলে কোন শয়তান বা অন্য কিছু এতে প্রবেশ করতে পারবে না। এবার তিনি নবী করীম (ছাঃ) এর কাছে হাযির হ'লে তিনি জিজ্ঞেস করলেন, তোমার বন্দী কি করেছে?
রাবী বলছেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) কে জিনের কথা ব্যক্ত করলাম। তিনি বললেন: "সে মিথ্যাবাদী হলেও একথাটা সত্য বলেছে"।
ছহীহ তিরমিযী।
অর্থঃ আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন মাবুদ নেই। তিনি চিরঞ্জীব ও সব কিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রা ও নিদ্রা স্পর্শ করতে পারেনা। আসমান ও যমিনে যা কিছু রয়েছে সব কিছু তাঁরই। কে আছে এমন যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তাঁর অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে বা পিছনে যা কিছু রয়েছে সব কিছু তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোন কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারেনা, কিন্তু যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসী সমস্ত আসমান ও যমীনকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে রক্ষণা বেক্ষণ করা তাঁর পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ ও সর্বাপেক্ষা মহান।
বিষয়: বিবিধ
২৩৫৩ বার পঠিত, ৩১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহ আপনাকেও উত্তম বদলা দান করুন।
ধন্যবাদ। ভালো থাকেন, শুভেচ্ছা রইল।
একটা ভাবীর ব্যাবস্থা করার জো নেই পক পক পক পক।
ওয়া আনতা কাযালীক।
তবে আমারও একই কথা, আমাদের ভাবী কই?
হুমমম আয়াতুল কুরসীর অর্থ আমার কাছে অনেক প্রিয়।
বুঝতে পেরেছি, সকাল সন্ধ্যা আয়াতুল কুরসী পড়েন তাই না??
আপু ভালো আছেন তো??
আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো। তবে অসুস্থতা যেন সবসময় ঘিরে থাকে।
মনে করেন ঘুমালে আপনার সাথে অদ্ভুত জন্তু যুদ্ধ করে তখন কি করবেন?
মনে করেন একটি অজগর সাপ আপনার পিছনে শুধুই লেগে আছে সময়ে অসময়ে ভয় দেখাতে চায় । তখন কি করবেন?
দ্বিতীয় প্রশ্ন: ঘুমালে অনেক সময় ভয়ের কিছু দেখলে আমি আয়াতুল কুরসী পড়ি, সূরা ফালাক নাসও পড়ি।
যদি ভয়ের কিছু দেখে ঘুম ভেঙ্গে যায়, তবে "আউযুবিল্লাহি মীনাশ শায়ত্বানীর রাযীম" পড়ে তিনবার বামে থু দি এবং অন্য দিকে ফিরে দুআ পড়ে ঘুমায়।
তবে আমার ভাইটি ঘুমের মধ্যে কেমন অদ্ভুত জন্তুর সাথে যুদ্ধ করে তা ঠিক বুঝতে পারছি না। ?
যদি শেষের প্রশ্নটি জাগ্রত অবস্থায় হয়, তাহলে চিৎকার করে পুরো বিল্ডিং কাঁপিয়ে তুলব!!
না না, পুরো বিল্ডিং তো একটা তেলাপোকা দেখলে কাপিয়ে তুলি!! একটা অজগর দেখলে কি হবে??
এমন সব কথা জিজ্ঞেস করে কি আমাকে ভয় দেখানো হচ্ছে!!??
চেষ্টা করলাম কিঞ্চিৎ ভয় দেখানোর জন্য
তবে জ্বীন আমাকে ভয় দেখাতে আসলে আমি আয়াতুল কুরসী পড়ে ওকেই ভয় দেখাই।
ঘুমে ভয় পেলে যে পদ্ধতির কথা বলেছি তা কিন্তু হাদীসেই আছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন