"অতঃপর নারীদেহ টয়লেট"
লিখেছেন লিখেছেন নূর আল আমিন ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ০৫:৪১:৩৯ বিকাল
"আমি কী বেশ্যা?
সুন্দরী মেয়ে মানুষের রাগ উঠলে চেহারা রক্তবর্ণ ধারণ করে। অধিকাংশ মানুষ রাগের চোটে কাঁপেও। ফারজানার অবস্থাও একই। রাগে সমস্ত শরীর গজগজ করছে। সুন্দর চেহারা টকটকে লাল রক্তবর্ণের মতো হয়ে গেছে। চিন্তারেখাও কপালের ভাজে স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। ঘামছেও খানিকটা। ঘাম মুছতে মুছতে ফারজানা আবারো বললো- শুনোনাই আমার কথা? জামান চুপ থাকবানা- আমি কী বেশ্যা?
-অই মাইয়া! তুই বেশ্যার চাইতে কম কীসে?-
"জামানের এমন উত্তর শুনার জন্য একদমই অপ্রস্তুত ছিলো ফারজানা। মনে হচ্ছে অনেকটা শূন্যের উপর ঠাই দাঁড়িয়ে। পায়ের নিচে মাটি নাই ফারজানার।-কপালের ভাজের সংখ্যা আরো বেড়ে গেলো। ভ্রু কুঞ্চিত করে:- কী বললা জামান? আবার বলো?
-শুনোসনাই? তুই বেশ্যার চাইতে কম কীসে? তুইতো বাজারের টপক্লাস মাগী। তুই কী মাগনা শুইছিস। এইটা ছিঃনেমা না। তুই শুইলি। আর বিয়া কইরা ফেললাম। আমার সাথে শোয়ার আগে তুই যে অন্য পোলাপানের বিছানা গরম করিসনাই গ্যারান্টি কী?। যে মাইয়া বিয়ার আগে অন্য পুরুষের বিছানা গরম করতে পারে। বিয়ার পর স্বামীরে রাইখা সে যে অন্য পোলার বিছানা গরম করবেনা গ্যারান্টি কী? যাহ্! ভাগ! এখান থিকা। শালী বেশ্যা কুয়ানকার- এক নাগাড়ে জামান বলেই যাচ্ছিলো। আজ যেন ফারজানার শুনার দিন। অসহায় ভঙ্গীতে ফ্যালফ্যাল দৃষ্টিতে শুধু জামানের রাগী মুখটার দিকে চেয়ে আছে ফারজানা। ভাবছে কিছু বলবে। কিছু বলার চেষ্টা করেও পারছেনা। পাশে রাখা কাপড়ের ব্যাগ ছাড়া কিছুই সম্বল নাই। আছে শুধু বাড়ি থেকে চুরি করে আনা মায়ের দু-টা কানের দুল।
"গলা ধরে আসে ফারজানার-
কিছুটা রিলাক্স হয়ে ফারজানা তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে জামানকে বলো:-কী বললা? এখন জানু থেকে বেশ্যা হয়ে গেলাম?
-হ, বললাম :/ তুই শুধু বেশ্যা না। তোরে পাবলিক টয়লেট বললেও ভুল হবেনা। তুইতো পাবলিক টয়লেট।
"জামানের খুঁচা খুঁচানো কথার চোটে টপটপ করে ফ্লোরের মধ্যে পানি পড়ছে ফারজানার চোঁখের। জামান ভাবলেশহীন ভাবে সিগারেটের পশ্চাদে মুখ লাগিয়ে সুখ টান দিচ্ছে। ফারজানার দিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নাই তার। ছিঃ জামান ছিঃ তুমি এতটা বিশ্বাস ঘাতক। কল্পনাও করিনাই-আমাকে তুমি পাবলিক টয়লেট বললা?- কাঁদো কাঁদো কন্ঠে ফারজানার বিশাল এক দীর্ঘস্বাস।
"আমার দেহ আমি দেবো যাকে খুশী তাকে দেবো"
"এইটা আমার স্বাধীনতা। এইটা নারীর অধিকার"
"এটা ছিলো ফারজানার ৬-মাস আগের ফেসবুক ষ্ট্যাটাস।কলেজ ভার্সিটিতে মেয়েরা প্রগতিশীলতার ছবক হিসেবে সম্ভবত এ শব্দগুলো পূজি করে নিজেকে বিশাল নারীবাদী মনে করতে শুরু করে। আস্তে আস্তে সিনিয়র সেকুলার আপাগোষ্ঠীরা ফারজানাদের মস্তিষ্কে "ইনষ্টল" ছেলেরা সিগারেট ফুকলে তুমি ফুকবা। ছেলেরা গাঞ্জা খাইলে তুমিও খাবা। ছেলেরা দাঁড়াইয়া মুতলে তুমিও মুতবা। তুমি ছেলেদের চেয়ে কম কীসে? জাগো নারী জাগো। ব্লা.. ব্লা.. ব্লা..
"সেকুলাররা এটা বলেনা- গু-য়ের এপিঠ-ওপিঠ কোনোটাই ভালো নয়। খারাপ অলওয়েজ খারাপ। সেটা হোক নারী-পুরুষ সবার ক্ষেত্র।- জামান ফারজানার গালে ঠাস! ঠাস করে একটা থাপ্পড় বসিয় স্ট্যাটাসের স্কীনশটটা তুলে ধরলো ফারজানার সামনে। অন্য গালে আরেকটা থাপ্পড় বসিয়ে- মাগী এখন বুঝলি কেন তোরে পাবলিক টয়লেট কইলাম? তুই বলছিস তোর দেহ তুই যাকে ইচ্ছা তাকে দিবি- নে এখন ইচ্ছামত দে।
"বুঝলি? একমাত্র পাবলিক টয়লেটে সবাই যাইতে পারে। তোর দেহটাও পাবলিক টয়লেট। তোরে ইউজ করা যায়। পাগলেও পাবলিক টয়লেট ইউজায়। বিয়া করেনা- যাহ্ ভাগ এখান থিক-
"ফারজানা বুঝতে পারলো। এখন তার কিছুই করার নাই। ওয়েষ্টার্ণ কালচারের শ্রোতে গা ভাসিয়ে আধুনিকা প্রগতিশীল হতে যেয়ে নিজের দেহকে পাবলিক টয়লেট বানিয়ে ফেলেছে ফারজানা নিজেই-ইচ্ছা করলে পারতো ফারজানা ওয়েষ্টাণ কালচার থেকে নিজেকে ফিরিয়ে নিতে। কিন্তু বড্ড দেরী হয়ে গেছ। এ-কুল- ও-কুল- দু-কুলই ফারজানার অনুকুলের বাইরে।
"জামান শুনো- তুমি আমাকে বিয়ে না করলে সুইসাইড করবো। সুইসাইড নোটে তোমার নাম লিখে যাবো। তুমি জেলে যাবা- শেষবারের মত ফারজানার ব্যার্থচেষ্টা---
-যাহ্! ভাগ!! মাগী- কী চুল ছিঁড়তে পারিস ছিঁড়-গা।- তাচ্ছিল্যেভরা জামানের উত্তর-
-অবশেষে যা হওয়ার তাই হলো-
"সুইসাইড নোটের শেষাংশে লিখা ছিলো- বঙ্গনারী তোমার দেহকে যদি পাবলিক টয়লেট বানাতে চাও। এখনই পশ্চিমা(ওয়েষ্টার্ণ)সংস্কৃতিতে গাঁ-ভাসাও
-মোরাল: ভালোবাসা দিবস
বিষয়: সাহিত্য
১৯৫৬ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিন্তু ভাষায় আরেকটু শালীনতা বজায় রাখলে ভালো হতো। ধন্যবাদ!
কারণ সেখানে সেক্স যখন হয় তখন উভয়ের সন্মতিতেই হয়, একজন মজা দিয়ে টাকা পায় আর একজন টাকা দিয়ে মজা নেয় । একজন যদি মনে করে যে সে ঠকে গিয়েছে তাহলে ধানাই পানাই করতে পারে না ।
এসব কালচারে তাল মিলিয়ে চলতে হলে একজনকে ছেড়ে আরেকজনকে ধরতে হয় , কারও প্রতি মায়া রাখা চলে না। এসব দূর্বলতা যাদের আছে তারা সাফার করে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন