স্বাধীনতাকে ধর্ষণ ও একজন জাব্বার মুন্সির অসমাপ্ত প্রেম!!

লিখেছেন লিখেছেন নূর আল আমিন ২৬ মার্চ, ২০১৫, ০৪:৫৭:১৮ বিকাল

জাব্বার মুন্সি বার

বার মুখ ভরে ভরে থুথু

ফেলছে চেহারার

মধ্যেও অনেক... রাগ

ক্ষোভ ফুটে উঠেছে।

জব্বার মুন্সি তো

এরকম নয় একদম

সহজ সরল।।

এক বছরের বাচ্চা

থেকে শুরু করে নব্বই

বছরের বৃদ্ধকেও

সালাম দিয়ে হাসি মুখে

কথা বলে

আজ মসজিদ থেকে

বের হওয়ার পর

কবরের পাশে

অনেকক্ষণ দাড়িয়ে

দাড়িয়ে কাঁদলো

জাব্বার মুন্সি... এখানে

এসে পোষ্টার দেখে

থমকে দাড়িয়ে

পোষ্টারের উপর মুখ

ভরে থু ফেলছে.

জাব্বার মুন্সির পাশে

গিয়ে দাড়াতেই উনার

কাধটা আমার মাথায়

রেখে বাচ্চাদের মতো

ফুপিয়ে ফুপিয়ে কান্না

শুরু করে দিলো।

ব্যাপার কি? এই

লোকটার চোখে একটু

আগেও ক্ষোভ

দেখেছি।।।

উনার কান্না দেখে

আমিও কান্না থামাতে

পারলাম আস্তে

আস্তে হেটে মাঠের

কোনায় গিয়ে বসলাম।।।

সদা হাসৌজ্বল

জাব্বার মুন্সি কাঁদছে

আর বলছে।

বাবা ওই যে কবরের

পাশে দাড়িয়ে

কাঁদছিলাম ওটা

নাছিমার কবর। ওর

সাথে আমার বিয়ের

কথা ছিলো তাই এ

জন্য আজ পর্যন্ত

বিয়ে করিনি। হাট

থেকে বাড়িতে ফিরলে

নাছিমার জন্য

বাতাসা। মিষ্টি নিয়ে

ফিরতাম নাছিমা

মিষ্টি খুব পছন্দ

করতো।।।

.

.

সন্ধ্যায় বাড়ির

আঙিনায় আমরা দেখা

করতাম কুপি বাতির

আলো ওর সুন্দর

মুখটা'কে সুন্দর থেকে

আরো সুন্দর করে

দিতো।।

মা যে দিন নাছিমার

সাথে বিয়ে ঠিক

করেছিলো। দু দিন পর

সন্ধ্যাতেই ওর সাথে

শেষ দেখা আর পাইনি

বিয়েও হয়নি।।

দেশে যোদ্ধ শুরু হয়ে

গেছে সেই সন্ধ্যাতে

ওকে বলছি যদি ফিরে

আসি আমাদের বিয়ে

হবে ইনশা আল্লাহ।।

.

আমি ফিরে আসলেও

নাছিমাকে দেওয়া

আমার কথা রাখতে

পারিনি।।

ওই যে পোষ্টারের উপর

থুথু ফেলছিলাম।

বাড়িতে ফিরে শুনি ওই

পিশাচে দলেরা

নাছিমার পরিবারকে

খুন করে ওকে ধর্ষণ

করার পর করে

পৈশাচিক ভাবে খুন।

করেছিলো।।।

.

আজ পোষ্টারের উপর

দেখলাম প্রধান

পিশাচটার নামের

উপরে লেখা ৭১ এর বীর

মুক্তি যোদ্ধা জনাব

আলমগীর সাহেব।।

জাব্বার মুন্সি

কাঁন্নার মধ্যেই

আলমগীরের

নামের উপর ঘৃনা ভরে

আরো এক দলা থু

ফেললো

উনার সাথে অনক্ষণ

সময় কাটিয়ে বাড়িতে

ফেরার সময় বললাম

চাচা

চলেন আমার বাসায়

মন ভালো হবে।

আপনাদের বৌমা আজ

ভালো কিছু রান্না

বান্না করেছে।।।

উনি চোখ মুছে বললো

বাবা রাতে ইনশ

আল্লাহ

আসবো। এখন আমি

একটু জেলে যাবো

আমার ছোট ভাই

জসিম মুন্সি আমার

সহযোদ্ধা হলেও এখন

সে যোদ্ধাপরাধের

মামলায় জেলে আছে।।।

.

উনার কাছ থেকে

বিদায় নিয়ে নাছিমার

কথা ভেবে ভেবে

হাটছি একবার

আকাশের দিকে

তাকাচ্ছি আরেক বার

জাব্বার মুন্সির দিকে

তাকাচ্ছি।

.

আমার চোখ দিয়ে

এখনো কিঞ্চিত পানি

বের হচ্ছে।

বিষয়: বিবিধ

১১১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File