আধুনিক শল্য চিকিৎসার জনক কে?
লিখেছেন লিখেছেন কাজী মিয়াজান ২২ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৪৭:৫৯ রাত
আবু আল কাসিম খালাফ ইবনে আল আব্বাস আল জাহরি (936-1013)। তিনি সর্বশ্রেষ্ঠ মধ্যযুগীয় সার্জন আধুনিক সার্জারি জনক . চিকিত্সা শাস্ত্রে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান কিতাব আল তাশরীফ গ্রন্থটি. অস্ত্রোপচার পদ্ধতি ও যন্ত্রের ক্ষেত্রে তার অবদানসমূহ জগত্খ্যাত। তার আবিষ্কারের কিছু বিষয় এখনও প্রয়োগ করা হয় যেখানে আধুনিক যুগের পূর্বে সবসময় তার প্রভাবই বিদ্যমান ছিল।
একটোপিক প্রেগনেন্সি এবং বংশগত হেমোফিলিয়ার বিশদ বর্ণনা তিনিই প্রথম দেন।
তার জন্ম আন্দালুসিয়াতে,কর্ডোভা শহর থেকে ৬ মাইল উত্তর পশ্চিমে আল জাহরায়।তিনি জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটান কর্ডোভায় এবং মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর।
তিনি আন্দালুসিয়ার খলিফা ২য় হাকামের রাজচিকিত্সক ছিলেন। তার সমগ্র জীবন ব্যায় করেন চিকিত্সাবিগ্গান তথা শল্যচিকিত্সার পেছনে।
তিনি কষ্টিক দহন দ্বারা রোগ আরোগ্যকরণ বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি তিনি ৯৬৩ সালে ectopic গর্ভাবস্থা বর্ণনা করেন যা চিকিত্সাবিগ্গানের একটি অমুল্য বিষয়। মূত্রনালী অভ্যন্তর পরিদর্শন, গলা থেকে অপদ্রব্য অপসারণ, কান পরিদর্শন, অস্ত্রোপচারের সময় ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্র উদ্ভাবন করেন যা ঐ সময় একটি মারাত্মক কষ্টসাধ্য ব্যাপার ছিল।
তিনি বিভিন্ন ক্যানুলার ব্যবহার করেন এবং লোহার নল এবং কষ্টিক ধাতুর সাহায্যে আঁচিল অপসারন করেন।
১০০০ সালে আবু আল কাসিম একত্রিশ অধ্যায়ের চিকিৎসা গ্রন্থ ,কিতাব আল তাশরীফ প্রণয়ন করেন। এতে তার ৫০ বছরের কর্মজীবনের অভিগ্গতা বর্ণিত হয়েছে এবং এতে অনুজীববিজ্ঞান,শিশুপ্রসব সহ চিকিৎসাবিদ্যার প্রত্যেকটি বিষয় ব্যাপকভাবে বর্ণিত হয়েছে। ডাক্তার রোগীর সম্পর্কের গুরুত্ব তার নিকট ছিল সর্বাধিক। তিনি তার ছাত্রদেরকে" আমার শিশু " হিসাবে উল্লেখ করেছেন । তিনি রোগিদের চিকিত্সার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়ার ব্যাপারে সবসময় জোরালো ছিলেন।
আল তাশরীফ পরে দ্বাদশ শতাব্দীতে জেরার্ড কর্তৃক ল্যাটিন ভাষায় অনুদীত হয় এবং তা সমগ্র ইউরোপ তথা বিশ্বে চিকিত্সকদের অগ্রবর্তিকা হিসেবে বিবেচিত হয়।
তিনি পাতন পদ্ধতিতে ঔষুধ প্রস্তুতেরও জনক।
আজ আমরা যারা পশ্চিমাদের অবদান নিয়ে আমোদিত তারা হয়ত শল্যচিকিত্সার পথিকৃত এই মহান ব্যক্তিটি সম্পর্কে জানিনা যা একজন মুসলিম হিসেবে অপমানজনক।আমাদের গর্বের এই ব্যক্তিটি সম্পর্কে সবাই জানুক এটাই আমার কাম্য।
বিষয়: বিবিধ
২৫২৬ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
Click this link
Click this link
মন্তব্য করতে লগইন করুন