প্রাপ্য অধিকার বনাম সম অধিকার
লিখেছেন লিখেছেন সিমানা ০২ জুন, ২০১৪, ০১:০৭:২৯ দুপুর
।
।
নারী অধিকার নিয়ে যত্রতত্র নানা সমালোচনার ঝড়। কখনো চায়ের দোকানে, কখনো বা বাসের ভীড়ের কোন এক প্রান্ত থেকে, আবার কখনো বা বিতর্ক প্রতিযোগীতায়।
একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করছি। একদিন, বাসে ওঠার পর দেখি কোনরকম তিল ধারণের জায়গা নেই যেন, তবুও আমাকে যেতেই হবে, সময়ের সাথে পাল্লা দিতে এভাবে ওঠা। দেখলাম সামনের মহিলা প্রতিবন্ধি আর শিশুদের জন্য বরাদ্দকৃত সিটগুলোর একটিতে একজন পুরুষ বসা। আমি কিছু বলার আগেই পুরুষটির পাশে বসে থাকা একজন মহিলা বললো, মহিলা সিট ছেড়ে দেন। লোকটির কোন উদ্যোগ নেই, অন্য একজন রেগে যেন আগুন, মহিলাটি মধ্যবয়সী হবেন, লোকটিকে যেন ধমকে উঠলেন, বললেন,
“এই ছেলে চোখে দ্যাখোনা নাকী? ওঠো!
লোকটি উঠলেন ঠিকই আমি বসতেও পারলাম, কিন্তু তার কথা শুনে সবাই চুপ হয়ে গেলো, সে যা যা বলেছে আমি নারী হয়ে তাতে একমত,
বললো,
-আপনারা নারীরা তো সম অধিকারের জন্য আন্দোলন করেন, এখন আবার এক্সট্রা সূযোগও চান, সম অধিকারের এরকম এক্সট্রা কোন কিছুরই সূযোগ নাই! আপনারা সব ধরণের কাজ করতে পারবেননা, অথচ বেতন ঠিকই সমান সমান চাইবেন! চাকুরীর ক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রাধিকার বেশী, তাহলে আমরা পুরুষরা কি আঙ্গুল চুষবো! ঘরের বউ হয়ে আসলে আপনাদের সমস্ত দায় আমাদের উপরে বর্তায়, আবার নিজেরা াকুরী করলে ো সারা জীবন খোটা দিতে থাকেন…………
আরো অনেক কিছু! আমি শুধু একটা কথা বলতে চেয়ে থেমে গিয়েছিলাম, যে যারা প্রাপ্য অধিকারটুকু পেতে চায় তাদের ক্ষেত্রে আপনি কী বলবেন?
আমি বলতে পারিনি কারণ আমি জানতাম তার উত্তর কী হবে? এর উত্তর হবে, সমঅধিকার যারা চায় তাদের সংখ্যায় বেশী।
আসলেই তাই! এক্ষেত্রে আমরা যারা প্রাপ্য অধিকারের পক্ষে তারা বিপদে পড়ে যাই, জীবন যুদ্ধে যাদের আজ পর্যন্ত প্রাপ্য অধিকারই পাওয়া হলোনা তারা সম অধিকার চেয়ে নিজেদেরকে সমাজের চোখে কলঙ্কিত নাইবা করলাম!
সৃষ্টিগত কারণেই নারী শারীরিক ভাবে পুরুষদের চেয়ে দুর্বল! এজন্য ইসলাম তাদেরকে বাইরের চেয়ে ঘরের কাজেই বেশী উৎসাহিত করেছে, তবে কেউ বাইরে করতে চাইলে নির্দিষ্ট নিয়মমতো সেটাও করতে পারবে। নারীকে ইসলাম সবচেয়ে বেশী সম্মানিত করেছে মা হিসেবে । যেটার পরিপ্রেক্ষিতে সন্তান লালন পালনে মা এতটকুও বিচলিত হননা।
তবে এবার কথা হলো যারা সম অধিকারের বিরুদ্ধে কথা বলছে তাদের এতটুকু খেয়াল রাখতে হবে, ঘরের বউটাকে যেন কাজের মেয়ে না মনে করি, তার ইচছা অনিচ্ছার কেয়ারতো পুরুষদেরই করা উচিত! আমি সারাদিন বাইরে কষ্ট করে আসি বলে একটু এদিক সেদিক হলেই তার উপর মানসিকভাবে, শারিরীক ভাবে চাপ প্রয়োগ করবো! জৈবিক প্রয়োজন মেটাতে স্ত্রীর ইচ্ছের তোয়াক্কা না করেই তা পূরণ করবো।
শুধু দাম্পত্য জীবনেই কেন! আজও কোন না কোন ঘরে কণ্যা সন্তান জন্ম দেয়ার জন্য মাকে কটুক্তি করা হয়! আজও কন্যা সন্তানকে ইউনিভার্সিটিতে পড়ানোর ক্ষেত্রে বাবা মা পরিবার পরিজনদের মানসিক দুশ্চিন্তার শেষ নেই! যে বাবা মা কণ্যা সন্তান পেয়ে খুশি থাকেন, তারাও এক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা করেন! কারণ কী? কারণ একটাই নারী প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত, কারন নারীকে মানুষ নয় ভোগ্য বস্তু হিসেবে মনে করা হয়! এখনও বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষরা নারীর সৌন্দর্যকেই বেশী প্রাধান্য দেয়! এটাও কী ঠিক সেই কারণেই নয়? আজ কোন নারী যদি বিয়ের ক্ষেত্রে একজন সুন্দর পুরুষকে প্রাধাণ্য দেয় তবে সেটা নাকী অহেতুক বোকামী, তকে বলা হয় ছেলে অমুক বড় কোম্পানীর মালিক, অমুক বড় চাকুরী করে ………… ব্লা ব্লা ব্লা।
আমি জানি লেখাটা হয়তো অনেকটা অগোছালো! তবুও সবশেষে আমি এই ব্লগের মাধ্যমে সব্বাইকে বলতে চাই নারীকে মানুষ মনে করুন! আমরা সম অধিকার চাইনা আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকারটুকু পেতে চাই।- কুয়াশা
বিষয়: বিবিধ
১৪৬০ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এবার নিজেরা যাচাই করে দেখুন সে যোগ্যতায় যোগ্য কিনা মেয়েরা।
ধর্মের বিধান না মেনে নারীর অধিকারের নামে নারীরা দিন দিন পণ্য হয়ে যাচ্ছে।
আগের দিনে একজনকে বিয়ে করতে হলে পন দিতে হত মেয়েকে। আর এখন একটি ছেলে বিয়ে করতে চাইলে মেয়ের বাবারা হামলে পড়ে; যৌতুক নয় উপহার দিয়ে কিনতে
যদি মানেন , তাহলে ....
০ ২য় বিবাহে স্ত্রীর অনুমতি নেওয়ার যে কথা বলা আছে মনুষ্য আইনে যা কি না আল্লাহর বিধানের সাথে সাংঘর্ষিক - সেটার প্রতিবাদ করুন ।
০ একটা পর্যায়ে গিয়ে স্বামী যে তার স্ত্রীকে প্রহার করতে পারে বলে শরিয়তে বলা আছে তার বিপরীতে যে নারী নির্যাতন আইন বানানো হয়েছে - সেটার প্রতিবাদ করুন ।
আপনারা আসলে সমঅধিকার বা ন্যায্য অধিকার কোনটাই চান না - আপনারা চান অগ্রাধিকার ।
ধর্মীয় ভাবে আপনাদের যে প্রেফারেন্সগুলো আছে ( স্বামী কর্তৃক দেনমোহর নির্ধারন ও তা উসূল , মা জাতির গুরুত্ব) তা তো খুব ভাল ভাবেই দেওয়া হয় ।
আপনারা এসব নিয়ে কোন কথা বলেন না কারন এগুলোর জন্য আপনারা এনটাইটেলড ধর্মিয়ভাবে ।
আর যেখানে পুরুষের প্রেফারেন্স ( এবং তা সঙ্গত কারনেই, কারণ তাকে সংসার ও পরিবারের দায়দায়িত্ব নিতে হয় , যেটা মেয়েদের জন্য একেবারেই শিথিল বা নেই বললেই চলে ) আছে বাবার সম্পত্তিতে সেখানে আপনারা সমান চান যেটা শরিয়তপরিপন্থী ।
আর যেখানে স্বামীরই আপনার উপর বসিং করার কথা শরিয়ত মতে যেহেতু সেই খরচ করে সেখানে আপনারাই স্বামীর উপর বেশরিয়তীভাবে বসিং করেন ।
প্রথমত, আমি মানি বলেই এই লেখাটি পোষ্ট করেছি।
আপনার কথার যৌক্তিক উত্তর দেয়ার চেষ্টা করছি,
-আপনি দ্বিতীয় বিবাহের কথা খুব সহজে অবতারণা করছেন, সেক্ষেত্রে কিছু শর্ত আছে যা কিনা আপনার প্রথম স্ত্রীর অধিকারের সাথে রিলেটেড, সে ক্ষেত্রে আপনি যদি তাকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিবাহটা করেন তাতে আপনি শর্তের বিরোধিতা করে ফেলার আশংকা থাকে প্রায় ৮০ শতাংশ। হ্যা আপনি অনুমতির বিরোধীা করেছেন, আমি মোটামুটি একমত কিন্তু জানানোতো প্রয়োজন নাকী?
-আমি আমার দেশের আইন নিয়ে কিছু বলছিনা, কেননা আমি এই সরকারের কার্যকলাপকে সমর্থন করিনা।
আপনি প্রহারের কথা বলেছেন সেটা একটা পর্যায়ে গিয়ে, আগে ভেবে দেখুন সবসময়য়ই কী আপনার স্ত্রী সেই পর্যায়ে দোষী হয় কিনা? কিন্তু সে প্রহারেরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে, কিন্তু আপনারা সেই প্রহারকে বৈধতা দিতে গিয়ে আপনার স্ত্রীকে রক্তাক্ত করে ফেলেন, দশ পনেরো দিন তার নড়াচড়া কষ্টকর হয়ে যায়, অথচ তবুও তাকে আপনার জন্য রান্নাঘরে যেতে হয়।
-খুব ভাোভাবেই দেয়া হয়? মানে আপনারা দেন? হা হা হাসালেন। লাখ লাখ টাকা দেনমোহর ধ্যার্য করেন লোকসম্মুখে কিন্তু সবায় কী আদায় করে? স্ত্রী একবার মাফ করে দিলেই যেন হাতে আকাশ পেয়ে যান।
আর মায়ের মর্যাদা, আপনি নিজেকে প্রশ্ন করুন আশেপাশে দেখুন মাকে আদৌ তার প্রাপ্য সম্মান দেয়া হয়েছে কী না?
-এটা আপনি আমাকে কেন বলছেন? অন্যরা চাইলেও চাইতে পারে, আমি এটার পক্ষে নই।
-আরে ভাই বসিং করার কথা বলছেন? যেখানে স্ত্রীকে মানুষ হিসেবে সম্মান না করে, বরং তাকে আপনার মর্জির দাসী মনে কেন সেখানে বসিং কী করে করা যায়?
http://www.onbangladesh.org/blog/blogdetail/detail/2030/chorabali/46141
ছেলেটাকে আমার তরফ থেকে লাইক পৌছাইয়া দিবেন ।
Simply awesome ছিল তার প্রতিরোধ গুলো ।
ইশ! প্রত্যেকে যদি সম অধিকার ও প্রাপ্য অধিকারের পার্থক্য বুঝত ? তবে কতই না ভাল হত !ধন্যবাদ ।পুরোপুরি অগোছালো না তবে আরেকটু সুন্দর হতে পারত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন