ইনশা আল্লাহ বলার গুরুত্ব।
লিখেছেন লিখেছেন সালু সুন্দর ৩১ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৩৯:৪৮ সন্ধ্যা
সুরা কাহফ এর নাযিল হওয়ার ঘটনা।
ইবনে আব্বাস রাঃ বলেনঃ
কুরাইশরা নাযার ইবনে হারিস ও উকবাহ ইবনে মুঈত কে মদিনার ইয়াহুদী আলেমদের নিকট পাঠিয়ে দেয় এবং তাদেরকে বলেঃ তোমরা তাদের কাছে গিয়ে তাদের সামনে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সমস্ত অবস্থা বর্ননা করবে। তারাই প্রথম কিতাব প্রাপ্ত হয়েছিলো। পুর্ববর্তী নবীগণ সম্পর্কে তাদের বেশি জ্ঞান রয়েছে। সুতরাং মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে তাদের মতামত কি তা তাদেরকে জিজ্ঞেস করবে।
এই দুইজন তখন মদিনার ইয়াহুদী আলেমদের সাথে স্বাক্ষাত করে এবং তাদের সামনে মুহাম্মাদসাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বাক্যাবলী ও গুণাবলী বর্ননা করে।
তারা এদেরকে বলেঃ দেখ! আমরা তোমাদেরকে একটি মীমাংসাযুক্ত কথা বলছি। তোমরা ফিরে গিয়ে তাঁকে তিনটি প্রশ্ন করবে। যদি তিনি উত্তর দিতে পারেন তাহলে তিনি যে সত্য নবী এতে কোন সন্দেহ নেই। আর যদি উত্তর দিতে না পারে তাহলে তাঁর মিথ্যাবাদী হওয়া সম্পর্কে সন্দেহ থাকবে না। তখন তোমরা তাঁর ব্যাপারে যা ইচ্ছা করতে পারো।
১| তোমরা তাঁকে জিজ্ঞেস করবেঃ পুর্বযুগে যে যুবকগণ বেরিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের ঘঠনা বর্ননা করুন। এটা একটা বিস্ময়কর ঘটনা।
২| তারপর তাঁকে ঐ ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে যিনি সমস্ত পৃথিবী ভ্রমণ করেছিলেন। তিনি পুর্ব প্রান্ত হতে পশ্চিম প্রান্ত পর্জন্ত ঘুরে এসেছিলেন।
৩| আর তাঁকে তোমরা রুহের অবস্থা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে।
যদি তিনি এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিতে পারেন তোমরা তাঁকে নবী বলে স্বীকার করে তাঁর অনুসরণ করবে। আর যদি উত্তর দিতে না পারেন তাহলে জানবে যে, তিনি মিথ্যাবাদী। সুতরাং যা ইচ্ছা তা'ই করবে।
এরা দুজন মক্কায় ফিরে গিয়ে কুরাইশদের বললওঃ চূড়ান্ত ফয়সালার কথা ইহুদী আলেমগণ বলে দিয়েছেন। সুতরাং ছল আমরা তাকে প্রশ্নগুলি করি।
অতঃপর তারা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর কাছে আগমন করে তাঁকে ওই তিনটি প্রশ্ন করলে তিনি তাদেরকে বললেনঃ তোমরা আগামী কাল এসো, আমি তোমাদের এই প্রশ্নগুলোর উত্তর দিব। কিন্তু তিনি ''ইনশা আল্লাহ (যদি আল্লাহ চান)'' বলতে ভুলে যান। এরপর পনের দিন অতিবাহিত হয়ে যায় কিন্তু তাঁর কাছে না কোন ওহী আসে, আর না আল্লাহ তা'আলার পক্ষ থেকে তাঁকে এ প্রশ্নগুলির জবাব জানিয়ে দেয়া হয়।
এর ফলে মক্কাবাসী সন্দেহ করতে থাকে এবং পরস্পর বলাবলি করেঃ দেখ! একদিনের ওয়াদা ছিল, অথচ আজ পনের দিন কেটে গেল, তবু সে জবাব দিতে পারল না।
এতে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম দ্বিগুণ দুখে জর্জরিত হতে লাগলেন। এক তো কুরাইশদের জবাব দিতে না পারায় তাদের কথা শুনতে হচ্ছে, দ্বিতীয়ত ওহী আসা বন্ধ হয়েছে।
এরপর জিবরাঈল (আঃ) আগমন করেন এবং সুরা কাহফ অবতীর্ন হয়। এতেই ''ইনশাআল্লাহ'' না বলায় তাঁকে ধমকানো হয়, ঐ যুবকদের ঘটনা বর্ননা করা হয়, ঐ ভ্রমনকারীদের বর্ননা দেয়া হয় এবং রুহের ব্যাপারেও জবাব দেয়া হয়।
বিঃ দ্রঃ
সরা কাহফ এর প্রথম ১০ আয়াত যে মুখস্ত করবে তাকে দাজ্জালের ফেতনা থেকে রক্ষা করা হবে- সহিহ মুসলিম, আবু দাউদ, নাসাঈ।
জুম্মার দিন সুরা কাহফ পাঠ করলে দুই জুম্মার মধ্যবর্তী সময় আলোকিত থাকে- হাকিম, ইমাম বুখারী ও মুসলিম হাদিসকে সহিহ সাব্যস্ত করেছেন যদিও তাঁদের কিতাবে উল্লেখ করেন নি।
বিশেষ শিক্ষণীয়ঃ ''ইনশা আল্লাহ'' বলার গুরুত্ব এতে প্রকাশিত হয়েছে !
রেফারেন্সঃ- তাফসির ইবনে কাসির।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪৭ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন