শিশু-শৈশব, তরূণ-তারূণ্য, তরূণী'র সংসার ভাবনার বিবর্তন ।
লিখেছেন লিখেছেন নোমান২৯ ১০ ডিসেম্বর, ২০১৪, ১২:১৮:০৪ দুপুর
গ্রামীণ এলাকার জন্য ======== >>>>>>>>
আগেকার দিনে ব্যাটা ছেলে এদিক-সেদিক কর্লে সঠিক দাওয়ায় দিয়ে দিতেন বাবা-মা'রা।ফলে ব্যাটা ছেলে পার্মানেন্ট ম্যাম পেয়ে একেবারেই খোকা হয়ে যেতেন।তারা আর এদিক-সেদিক কর্তেননা।
এদিকে শিশুরা দাদার হাত ধরে মকতব-স্কুলে যেতেন।দাদির কাছে রুপকথার গল্প শুনতেন।আর তরূণীরা পুতুলের বিয়ে দিতে দিতে নিজের স্বপ্ন সংসার বুনতেন।এভাবে একসময় নিজেও পুতুল হয়ে যেতেন।
সময়ের পরিক্রমায় সবকিছুতে পরিবর্তন এসেছে।বাবা-মা'রা আর ছেলে-মেয়ের(বিশেষ করে ছেলের)বিয়ের দ্বায়িত্বে আর নেই।তারা শুধু বড় করার দ্বায়িত্বে আছেন।ফলে শিশুরা পাচ্ছেনা মক্তবে যাওয়ার সাথী।না পাচ্ছে কাজ্লা দিদি।প্রতিটি ঘরে ঘরে আছে টিভি।সাথে প্রাঈভেট টিউটর।স্কুল-প্রাইভেট টিউটর-টিভি এ তিন্টিকে সময় দেয়ার পর আর খেলাধুলায় সময় দেয়া হচ্চেনা।ফলে শৈশব গেইলের গ্যাংনেম, শাহরুখের লুংগি কিংবা মেসি-নেইমার এর পক্ষে-বিপক্ষে কয়েকটি কথার ফুল্ঝুড়ীতে সীমাব্দ্ধ হয়ে যাচ্ছে।
এদিকে তরূণের তারূণ্য জটিল ভবিষ্যতের চিন্তায় মুখ থুবড়ে পড়ছে।পাড়ার মাঠে ছক্কা মারার চেয়েও জি এফ এর সাথে দু ঈয়র কথা বলা তরূণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।আবার শীতের রাতে রস চুরি করে পায়েস রান্নার চেয়েও কম্বল মুড়ি দিয়ে ফেচবুকে দুঈখান ছবি, একখান সেফ্ফী, সাথে মী লিখে পোস্ট আফ্ডেট করা অথবা ব্লু-থুতের মাধ্যমে যাবতীয় কিছু আদান-প্রদান তরূণের নিকট অতিশয় জরুরী বিষয় হয়ে পড়ছে।
ওদিকে তরূণীরা বর্তমানে এক অলিখিত চুক্তি সম্পাদন করেছে বাবা-মা'দের সাথে।তারা মায়ের জলসা নেশায় ব্যুদ হওয়ার কারণে বাড়তি সুবিধা কাটছেন।আগেকার দিনে মায়েরা মেয়েদের গৃহস্থলির কাজ শিখাতেন।ফলে মায়ের সাথে কিছুটা তিক্ততা সম্পর্কের সৃষ্টি হত।এধরণের বিষয়গুলো আর ঘটছে না।কারণ মায়েরা এখন কোনমতে দিন যাক এবং ফাস্টফুড নীতিতে আছেন ।জাদুর বাক্স অনবরত চলতে থাকায় জলসা দেখতেও বেগ পেতে হচ্ছে না আবার মায়ের মোবাইল দিয়ে আগেকার দিনের পুতুলের বিয়ের জড় পাত্রকে লাভ ঈউ আনলিমিটেড পাঠাতেও সমস্যা হচ্ছে না।তারপরও জাতির ঐতিহ্য রক্ষায় কেউ কেউ পাখি ডেস নিয়ে ন্যাকামি করে থাকে । তবে পুতুলের বিয়ে দিতে দিতে আগে তারা যে স্বর্গসম সুন্দর সংসারের স্বপ্ন বুনতেন তা আর বোনা হচ্ছে না ।
সিটি এলাকার জন্য ======== >>>>>>>>
এমনিতেই শহুরে জীবন যান্ত্রিকতায় পরিপূর্ণ।প্রযুক্তির উতকর্ষতায় এ যান্ত্রিকতার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে।শিশুদের জন্য ইট-কংক্রিট-বালির মাঝে ফুলগাছ-বনসায়- টবের মাধ্যমে গ্রামীণ প্রকৃতির স্বাদ নেয়ার নিমিত্তে কিছু কৃত্তিম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য তৈরী করে বিভিন্ন জাগায় কতক শিশু পার্ক নির্মিত হলেও প্রেমিক-প্রেমিকাদের দৌরাত্যে তা আজ অবৈধ প্রেম চর্চা কেন্দ্রে পরিনত হয়েছে।তবে মানুষের ভাবনাতেও এখন যান্ত্রিকতা।গ্রামীণ প্রকৃতির কোমল মায়ামাখা আহবান শহুরে মানুষদেরকে আর আকৃষ্ট করে না।এ যেমন মাঠগুলোতে এখন নেই শিশুদের সরব উপস্থিতি।উঠতি তরূণের তারূণ্যও নেই আগের মত।শিশুরা হয়ত মায়ের সাথে রিমোট নিয়ে ঝগড়া করছে।আর উঠতি তরূণেরা হয়ত একটি সুন্দর বউয়ের স্বপ্নে বিভোর হয়ে কোন সুন্দরী তরূনীকে পটানোর চেষ্টা করছে নয়ত ফেসবুকিং কিংবা ভিডিও গেম এ সময় পার করছে।তাদেরও দোষ কি? একদিকে বাবা-মা'রা বিয়ের ব্যাপারে যথেষ্ট উদাসীন সাথে তরূণী সমাজও মায়ের ঝ্লসা নেশায় ব্যুদ হয়ে থাকায় মোটামুটি বেকার এবং অ্যাংগেঈজ।আবার বিয়ের যোগ্যতা অর্জন করতে করতে এ তরূণদের আইবুড় হয়ে যেতে হয়।আগে মেয়েরা আইবুড় হয়ে থাকত আর এখন ছেলেরা হয়ে যায়।তাছাড়াও আছে বেশী বেশী জ্ঞান আহরনের গভীর তাগিদ এবং খেলার মাঠের প্রচন্ড সংকট।
তবে খেলার সময়টা ঠিকই অন্য যেকোন উপায়ে নষ্ট করছে শিশু ও তরূণরা।অর্থাত আগের খেলার সময়টা শরীর চর্চায় কাজে লাগত আর এখন মানসিক বৈকল্যে কাজে লাগে।
যেমন শিশুরা নিয়ে আসছে ক্রিকেটের হস্ত ভার্সন।তরূণরা খুঁজছে শারীরিক নড়াচড়া ছাড়া কিভাবে আনন্দ পাওয়া যায়।আর তরূণীরা ব্যাকুল-উন্মুখ হয়ে থাকে কোন শাকীব খান তাকে ডীফ্যারেন্টলী প্রপোজ কর্বে।কবে কোন ছেলে কবি কবি ভাব নিয়ে তার রূপের বর্ণনা দিবে।
বিষয়: বিবিধ
১৮৪২ বার পঠিত, ৩৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমার কলিগ যার মেয়ে ঘুম থেকে ওঠে ৬টার সময় স্কুল শেষে কোচিং শেষে যখন বাসায় ফিরে তখন প্রায় সন্ধ্য; সন্ধ্যার সঙ্গে সঙ্গে ইংরেজী টিচার; এর পর অংকের টিচার এর পর তার মা বসেন বাংলা নিয়ে। মাসে দুইদিন গানের ক্লাস আসে শিল্পকলার নাচের ক্লাস সব মিলিলিয়ে দম ফেলবার উপায় নেই মেয়েটির। মা বাবা দুজনা চায় মেয়ে ডাক্টার হবে; হবে জ্বি বাংলার সেরা নাচিয়ে; আর গানে হবে বিশ্ব সেরা।
এটা কি বাচ্চাকে শিক্ষা নাকি রোবটে সফটওয়ার আপলোড হচ্ছে আল্লাহ পাক রব্বুল আলামিন জানেন
অন্নেক ধন্যবাদ আপনাকে|
লেখা অনেক ভাল হয়েছে নোমান আপু ধন্যবাদ ।
এবার পেরেছি?| <:-P
অন্নেক দিন পর এলেন আমার ব্লগবারীতে?
অন্নেক ধন্যবাদ আপনাকে|
একটু সহাতুড়ির পদচারণা দেখতে চাইছিলাম? তাই ইস্টাইল চ্যাঞ্জ করি নাই
আপনার হাতুড়িরসহ পদচারণায় সিক্সটি নাইনদের কথা মনে পড়ে যায়|
সূর্যের পাশে হারিকেন ভাইয়া অনেক ধন্যবাদ নোমান আপুর সচিত্র পরিচয় তুলে ধরার জন্য ।@ সূর্যের পাশে হারিকেন ভাইয়া
@নোমানাপু - তুমি যে দুষ্টুর হাড্ডি ছিলা, সেটা আঁচ করতে পেরেছি অনেক আগে থেকে
আপনাকে অঅনেক ধন্যবাদ ভাইয়া|
পুতুল বিয়ের আনন্দ এখন আর নেই!
ধন্যবাদ।
শিরোনামের যথার্থতা উপস্হাপনায় ফুটিয়ে তুলতে কিছুটা মুন্সিয়ানা স্বীকার করতেই হবে!
চরম তিক্ত ও পরম করণীয় কিছু বিষয় যদি সাধারণ কে একটুও নাড়া দেয় তাহলেই লেখনীর পুর্ণ সফল!
ভাল থাকবেন অনেক-এই শুভ কামনা রইল!!
ভাল থাকবেন|আপ্নার জন্যও অনেক শুভ কামনা|
ধন্যবাদ ভাইয়া|
মন্তব্য করতে লগইন করুন