আমরা কি ‘বিনিময়’ ছাড়া কোন কাজ করার কথা ভাবতেও পারি না ?
লিখেছেন লিখেছেন নোমান২৯ ২৬ আগস্ট, ২০১৪, ০২:০৩:২৮ দুপুর
মনুষ্যত্ব,মানুষকে মানুষ করে তুলেছে।আর মনুষ্যত্ব হচ্ছে বিবেক ও অনুভুতির সমষ্টি।বিবেক ও অনুভুতির জন্যেই মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব।মানুষ যখন বনে-জঙ্গলে বাস করত তখন সে তার বিবেকের তাড়নায় লজ্জাস্থান ডাকত।এবং তখন মানুষের বিবেক ও অনুভুতির তীব্রতা প্রখর ছিল।আর এ কারণে মানুষ আজ বন-জঙ্গল ছেড়ে সব কিছু জয় করেছে।কিন্তু হারিয়ে ফেলছে বিবেক ও অনুভুতির তীব্রতা।
সংখ্যারেখায় যদি ধরি,আমাদের অনুভুতির তীব্রতা মাইনাসে গিয়ে ঠেকেছে।প্রাক সভ্যযুগে এর অবস্থান ছিল প্লাসে।সভ্যযুগে এর অবস্থান ছিল শূন্যতে।এবং অতিসভ্য/ আধুনিকযুগে(বর্তমান)এর অবস্থান মাইনাসে।
আবার যদি মাইনাসে হিসেব করি তবে বুঝাবে অনুভুতির তীব্রতা হ্রাস পেয়েছে কিন্তু অনুভুতি তীব্রতা এখনও আছে।সত্যিকারার্থে আমাদের অনুভুতির বিষয়টা মাইনাস পর্যায়েও নেই।এটা মাইনাস পর্যায়ও অতিক্রম করেছে।আমাদের অনুভুতির তীব্রতা প্রতিস্থাপিত হয়েছে ‘বিনিময়’ নামক একটা ধারণা দ্বারা।
আমরা এখন কোন কাজের শুরুতে ভাবী এর বিনিময়ে আমরা কি পাব?আমার লাভ হবে না ক্ষতি হবে?বা আদৌ লাভের সম্ভবনা আছে কিনা?নিঃস্বার্থভাবে কোন কাজ করার কথা আমরা ভাবতেও পারিনা,মাথায় আনা দূরের কথা।‘বিনিময়হীন’কর্মচিন্তা যেন পাগলের কর্মের মধ্যে পড়ে গেছে।এর কারণ আমাদের অনুভুতির তীব্র বৈকল্য।
আমরা জানি,গত ৮জুলাই থেকে গাজায় ইসরাইলী আগ্রাসন অব্যাহত আছে।এতে বিশ্ব নেতারা নিরব থাকলেও সারা বিশ্বের মানবতাবাদী মানুষ এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে।এবং যে যতটুকু পারছে নিজ অবস্থান থেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছে।এটা হতে পারে পন্য বর্জন করে কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে।
আর এই সুযোগ হাতিয়ে নিচ্ছে আমাদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সেলেব্রিটিরা।তারা মানুষের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে নির্লজ্জভাবে নিজেদের আইডি কিংবা পেজের প্রচারণা চালাচ্ছে(প্রমাণ সংযুক্ত ছবিতে)।আমার এখানে প্রশ্ন জাগে এদের আসল উদ্দেশ্যটা কি?অসহায় মানুষগুলোর পক্ষ অবলম্বন করা না আইডি কিংবা পেজের প্রচারণা চালান?হ্যাঁ,আপনি যদি যুদ্ধক্ষেত্র থেকে একটা ছবি তুলে এনে এতে আপনার যোগ করেন তবে কোন আপত্তি নেই।কিন্তু আপনি এফবি বা যেকোন উৎস্য থেকে একটা ছবি ডাউনলোড করে তার মাঝে আপনার আইডি বা পেজ লিংক কেন দিবেন?কি কারনে দিবেন?এখানে আপনি কি করছেন?ধিক্কার জানায় আপনার এই হীন মানসিকতাকে।
আমাদের সেলেব্রেটিরা ‘জন্ম হোক যথাতথা,কর্ম হোক ভাল’এটা ভুলে গিয়ে/অস্বীকার করে ,অনুসরণ করছে,‘কর্ম যায়ই হোক ,প্রচারণা হোক ভাল’।
মানুষের মাঝে যেঁচে বেঁচে থাকা যায় না।কর্মের মাধ্যমে আপসে বেঁচে থাকা যায়।
তাই,ভাই-বোন আমার !আসুন, ‘সৎকর্মই উদ্দেশ্য হোক,প্রচারণা নয়।
বিষয়: বিবিধ
৯৮৩ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বিনিময় ছাড়া একটা কদম ফেলা বা একমিনিট খরচ করাও বোকামী!
সেই ছাত্রজীবনে শিখেছিলাম-
প্রতিটি কদম বা মিনিটের জন্য হয় অর্থ নয়তো সওয়াব(/গুনাহ) আসতে হবে! যদি এর কোনটাই না আসে তবে জানবে যে তুমি মারা গেছো!
যেকোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করলে সওয়াব হবে, আর প্রতিবাদ না করলে গুণাহ হবে, কিন্তু "রিয়া" যুক্ত হলে সওয়াব নষ্ট ুয়ে গুনাহ হবে
আবার পরিচিতিলাভের উদ্দেশ্য যদি সত হয় তবে সওযাব নষ্ট হবেনা!
ইসলামী আন্দোলনের লোকেরা "রিয়া" নামক জুজুর ভয় দেখহাতে গিয়ে "জাতীয় নেতৃত্ব" তৈরীর সুযোগগুলো যেভাবে হাতছাড়া করেছে, নেতৃত্বের অভাবে আজ জাতিকে তার খেসারত দিতে হচ্ছে!
তাই প্রচার মানেই রিয়া- এমন ধারণা আমি সঠিক মনে করিনা!
বরং ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিপক্ষে আমার অবস্থান যত বেশী মানুষে জানবে, আমার কাজ ততই সহজ ও কার্যকর হবে! "রিয়া"র অভিযোগটি বান্দার সাথে তার রবের ব্যাপার হয়ে থাকুক, মন্তব্য করতে কারো নি্য্যত পর্যন্ত না পৌঁছানো-ই উত্তম!
আল্লাহতায়ালাই সবার মনের খবর ভালো জানেন!!
_______
তবে এররকম মানুষের সংখ্যা একেবারে কমেছে |
সহমত।
আমি মনে হয় 'বিনিময়' ও 'স্বার্থ' এর মধ্য গুলিয়ে ফেলছি ?
আচ্ছা 'বিনিময়' এর জাগায় 'স্বার্থ' দিলে কি হয় ?
তাহলে ত ভাইয়া ,এরা চাইবে যুদ্ধটা লেগে থাকুক ।
তাই নয় কি ভাইয়া ?
ধন্যবাদ ভাইয়া ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন