গাউসুল আযমের পুজারী ভন্ড ভৈরবীর কান্ড দেখুন।
লিখেছেন লিখেছেন Medha ২২ জুলাই, ২০১৪, ০৪:০৪:২৬ বিকাল
ট্রলারে করে শরীয়াতপুরের একটি ইউনিয়নে যাচ্ছিলাম। মাইকে চলছিলো ভন্ড তোফাজ্জল হোসেন ভৈরবির ওয়াজ।
অনেকে মনোযোগ দিয়ে ওয়াজ শুনছিলেন। ওয়াজের এক
পর্যায়ে ভন্ডটা বললো, “হযরত হাসান বসরী (রহ) জানতে পারলেন রাবেয়া বসরী এই জামানার মহিলাদের মধ্যে আল্লাহ পাকের শ্রেষ্ঠ অলী। তার আমল আর মুজাহাদার কথা দুনিয়ার সকল মানুষ জানে। এই কারনে হাসান বসরি সিদ্ধান্ত নিলেন, রাবেয়া বসরীকে বিবাহ করবেন। প্রস্তাব দেওয়ার, পরে রাবেয়া বসরী রাজি হলেন না।
তাই হাসান বসরী পেরাশানীতে পড়ে গেলেন কিভাবে রাবেয়া বসরীর মন জয় করা যায়। হাসান বসরী চিন্তা করলো কিছু কেরামত দেখাই, তাতে যদি রাজি হয় তাহলে তো ভালোই হয়। এই ভেবে হাসান বসরী (রহ) নদীর ওপর জায়নামাজ
বিছিয়ে দিয়ে রাবেয়া বসরীকে ডাকতে লাগলেন, রাবেয়া এহানে আসো, এক সাথে নামাজ পড়ুম।
রাবেয়া বসরী ঘরের জানালা দিয়ে সব কিছু দেখতেছিলো।
রাবেয়া বসরী বুঝতে পারলো বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে সাড়া না পেয়ে কেরামত দেখানো শুরু করছে।
রাবেয়া বসরীও কম যায় না। রাবেয়া বসরী নদীরে ডাক দিয়া কয়, নদী এহানে আয় আমি অজু করুম। নদীর পানি সোজা রাবেয়া বসরীর দরজার সামনে চলে গেলো। এটা দেখে হাসান বসরী বুঝতে পারলো রাবেয়া বসরী সত্যিকার ভাবেই আল্লাহ পাকের বড় অলী। আল্লাহর অলীদের সাথে বেয়াদবী করলে কোন উপায় নাই।”
এতক্ষন এই গাজাখোরী গল্পটা শুনে ট্রলারের অনেকেই সোবহানাল্লাহ বলে চিল্লিয়ে উঠলেন। আমি পাশের একজনকে বললাম, ভাই এমন ডাহা মিথ্যা কথা শুনার পরে সুবহানাল্লাহ না, নাউজুবিল্লাহ বলা দরকার। আল্লাহর জমিনে ওয়াজের নামে এমন মিথ্যা, শিরক আর শরীয়াত বিরোধী বয়ান শুনে আপনার মতো অজ্ঞ জাহেলরা তাকে পঞ্চাশ হাজার টাকা দিয়ে ভাড়া করেন।
এটা কি আলেম নাকি শয়তান ?
এটা শুনার পরে ভদ্রলোকের মেজাজটা মনে হয় বিগরে গেলো।
তিনি আমাকে বললেন, একজন আলেম মানুষ কি মিথ্যা ওয়াজ করে ? আমি বললাম, ভাই আপনার
আব্বা কি জীবিত আছে ? তিনি বললেন, না ভাই আমার
আব্বা গত বছর মারা গেছে। বললাম, এটা যদি সত্য হয় তাহলে একটা কথা আমাকে বুঝিয়ে বলুন।
আজকে কোন মহিলা যদি এসে বলে আপনার আব্বা গত
মাসে তাকে বিয়ে করে পালিয়ে গেছে আপনি তাকে কি বলবেন ?
লোকটি উত্তর দিলো, এটা তো ডাহা মিথ্যা কথা।
তারে জুতা পিটা করুম। আমি বললাম, হাসান বসরী জন্ম নিয়েছেন ২২ হিজরীতে আর মৃত্যু বরণ করেছেন ১০৯ হিজরীতে।
অন্যদিকে রাবেয়া বসরীরর জন্ম তারিখ হলো ১০০ হিজরীতে। এবার বলেন নয় বছরের একটা মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিতে হলে তো হাসান বসরীকে ত্রিশ বছরের হতে হবে ?
যদি তাই হয় তখন কি রাবেয়া বসরী জন্ম নিয়েছিলো ? যার মৃত্যুর সময় একটি মেয়ের বয়স নয়, তার ত্রিশ বছরের সময় তার বয়স কতো ভাইজান ?
এরকম ডাহা মিথ্যা কথা বলার আগে আসল শয়তানও লজ্জা পাবে কিন্তু মানুষরুপী এই তাগুতটার তাও নাই। সে মনে করে দুনিয়ার সকল লোক তার মতো জাহেল। যা বলবে তাই বিশ্বাস করবে।
এটা বাদ দেন, একজন তাবেয়ী কি করে কোন বেগানা মেয়েকে এক সাথে প্রকাশ্যে দাড়িয়ে নামাজ পড়ার আহ্বান করতে পারে ? তাদের কি ক্ষমতা আছে যখন তখন কেরামত
দেখানো ? এরকম ক্ষমতা বিশ্বাস করা শিরক। মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর লা’নত এটা আমার কথা নয়, কোরআনের কথা। এসব ভন্ডদেরকে জুতা পেটা করা দরকার যেমনটা একটু আগে আপনি বলেছেন।
লোকটা বললো, ভাই আপনি জানেন বলে তার ভুল ধরতে পারছেন আমরা তো জানি না তাই সোবহানাল্লাহ বলছি।
আমি বললাম, এই জন্যই তো প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন করা ফরজ করা হয়েছে। আজকে থেকেই লেগে যান, এসব ভন্ডদের ওয়াজশুনে ইসলাম বুঝার পরিবর্তে সরাসরি কোরআন হাদিস
অধ্যায়ণ করুন।
বিষয়: বিবিধ
২৩৯৩ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এদেরে ওয়াজ এর ঠেলায় সময় আর বয়স এর নিতি উল্টায় যায়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন