অবুঝ মনের কথা ৫ম পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন জাতীয় আবাল ১৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:২৮:২৪ রাত

দোস্ত এইটাই রহমান ভাতঘর,চল পিছনে চলছ

তুই যেয়ে দেখে আয়,আমার ভয় লাগছে৷

সিপু তুই যে কি বলিস,ভয় করলে দেখা করতে আসলি কেন?

আসছি কি হইছে৷

কি হইছে মানে তোর লাইফে ফাস্ট কেউ আসল,আহা কি লাগল ছেলেটার৷তখন সুযোগ থাকলে তোদের কথা বার্তা রেকর্ড করে রাখতাম৷এরকম যদি কেউ আমারে প্রপোজ করতো৷কত প্রেম করলাম কোন ছেলের এত সাহস দেখিনি৷

তাহলে তুই প্রেম কর৷

তুই আমার বেস্ট ফ্রেন্ড না হলে ঠিকি প্রপোজ করতাম ছেলেটাকে,দেখতেও ফাটাফাটি৷

জিবি তোর মন চাইলে তুই প্রেম কর না,এত কথা বলছিস কেন?

আরে দোস্ত বলছি যে ছেলেটা তোকে ছিট করেছে মনে হয়,পিছনে কেউ নেই৷

কই চল তো দেখি৷

মন খারাপ করিস না,এই সব ছেলেরা এই রকম৷নির্ঘাত কারো সাথে দেখা করতে আসছিল সুযোগে পেয়ে তোকে বাজিয়ে নিল৷দেখ কোথাও গার্লফ্রেন্ডের সাথে রোমান্টিক খেলা খেলছে৷

নারে আর কিছুক্ষণ বসি,আমাকে তো বলেছে পাঁচটা পর্যন্ত থাকবে৷ক্ষিধা লাগছে তাই খেতে গেছে৷

দোস্ত তুই তো দেখি সত্যি সত্যি ওই পোলার প্রেমে মইজা গেছস৷

কেন তুই যে এত পোলার প্রেমে মজিস আমি কিছু বলিছে

দোস্ত তোরে কইতে অইবো না,আমি আবার চারটায় ডেটে যামু৷তুই থাক,গেলাম৷

যাবি আচ্ছা যা,আমি আর কিছুখন থাকি৷

নম্বর দিছে ফোন দিয়ে দেখ৷

না দরকার নাই৷

আহা মজনু বিরহে লাইলী সাইজা বইসা থাকছে

ঠাট্টা করছিস৷

না তবে ওই পোলা আর আইবোনা,খুকি৷

দেখিস আসবে৷

আসবে মানে এসেই বসে আছি,উ সিপু গো কোমর গেছে গো৷এত্ত বিশাল শরীর নিয়া পাথরের চিপায় লুকানো যায় ৷

আপনি৷

হ্যাগো আমি,তুমি যখন আসছ তখন পস্রাব করছিলাম৷কিন্তু তোমরা দু জন আমাকে এমন এক্সরে করলে লুকিয়ে শোনার খায়েস মিটে গেছে৷

সরি ভাইয়্যা৷

আপনাকে আর সরি বলতে হবে না৷

দোস্ত তোরা কথা বল আমি আসি৷

তা মেডাম সিপু খুব কষ্ট হচ্ছিল নাকি৷

কষ্ট হবে কেন,শুনুন আপনি যে উল্টোপাল্টা বকেছেন সেসবের জবাব দিতে আসছি৷

মিস একদম মিথ্যা কথা বলোনা,এটা ছাড়া পৃথিবীর সব কিছু আমার ভালোলাগে৷বিশেষ করে প্রিয়জনদের মুখ থেকে মিথ্যা শুনতে কষ্ট লাগে৷

এতক্ষন ধরে ইচ্ছে করে আমাকে বসিয়ে রাখলেন৷

এইতো আমার সুন্দরী লাইনে আসছো৷

এখানে বেশ রোদ ওদিকে চলো৷

চলুন৷

তোমার কি মনে হয় তোমাকে প্রপোজ করে কোন অপরাধ করেছি৷

একথা কেন বলেছেন৷

আসলে আমি সব কিছু খোলাসা করে বলতে পছন্দ করি৷

এটা আমি ও পছন্দ করি৷

তোমার চুল গুলো এলোমেলো হওয়াতে ভীষণ দারুন দেখাচ্ছে৷

আচ্ছা৷

আচ্ছা মানে কি আমি কি ভুল বলেছি৷

হ্যা৷

ও আচ্ছা কিন্তু তোমাকে সত্যিই সুন্দর লাগছে৷

ওও৷

ও মানে কথা বল না কেন?ক্ষুধা লাগছে চিপস খাবে?

না৷

না কেন?

আমি বাইরের খাবার খাই না,আম্মু রাগ করে৷

কিন্তু আমার ক্ষুধা লাগছে,সকালে বেরিয়েছি৷

আচ্ছা ঠিক আছে৷

এই পিচ্ছি চিপস আর পানি দে৷

মামা এইটা কি মামী৷

ধুর হ বদমায়েশ পোলাপাইন৷

আমি বুঝতে পারছি না,তুমি কোন কথা বলছ না কেন?

আমি কম কথা বলি৷

একটাই কম যে প্রেম করতে এসে ও মুখে তালা মেরে রাখতে হবে৷

না তা নয়,সত্যি কম কথা বলি৷

তুমি কি আমার সাথে সম্পর্ক করতে অস্বস্তি বোধ করছো৷

অনেকটা সেরকম আপনাকে বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে৷

সেটা কেন?

আমি পরিবারের একমাত্র সন্তান,বাবা ছোট বেলায় মারা যান৷মা আমাকে নিয়ে নানা বাড়ীতে থাকেন৷মায়েরা তিন বোন৷

তোমাদের ফ্যামিলিতে কোন ছেলে নেই,হাহা৷

না না তা নয়,আমার দুটো খালাত ভাই আছে৷আর ছোট খালা এখন ও পড়াশুনা করছেন৷

কিন্তু আমাকে অবিশ্বাসই বা করবে কেন?

আমার বান্ধবীদের আমি দেখেছি ওদের সাথে যা হয়,আমি এসব সহ্য করতে পারবো না৷

সব সময় এই ভয়ে ছেলেদের এডিয়ে চলি কিন্তু আজ কেন যে আপনার কথায় কি হল এখন ও বুঝতে পারছি না৷

তোমার কোন বান্ধবীদের কথা বলছো,একটু আগে যার সেম্পল দেখলাম৷শোন মেয়ে হাদিসে আছে খারাপরা খারাপদের জন্য আর ভালোরা ভালোদের জন্য৷

জ্বী আমি এটা জানি৷

তোমাকে একটা বিশেষ কথা বলি তুমি যতটুকু নিজেকে বিশ্বাস কর ঠিক ততটুকু আমার সাথে সম্পর্ক গড়ো৷

আমি ঠিক ঠাক কিছু বুঝতে পারছি না৷

বুঝতে না পারলে এখন থাক,তোমার মনটা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ন৷সেখানে তোমার একটা পৃথিবী আছে৷তোমার তুমি আছে,যাকে তুমি চিনতে পার,বুঝতে পার৷নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নাও৷কারো লোভনীয় প্রস্তাবে প্রলুব্ধ হয়ে নয়৷

বাব্বা আপনি কত কথা জানেন৷

আর শোন ওইযে পরিবারের কথা বললে৷তোমার শশুর-শাশুডী দুজনেই আছেন,আর একটা ভাই ও বোন আছে৷দুটো মিষ্টি বাচ্ছা ও আছে৷

বাচ্ছা গুলো কার?ভাইয়ের না আপুর৷

আপুর৷

আপনি কেন আমাকে পছন্দ করলেন৷

সেটাতো জানি না,তবে এতটুকু বলতে পারি ঊনিশ বছরের সুদীর্ঘ এই নিশ্বাসে বিশ্বাস করার মতো শুধু তোমাকেই মনে হয়েছে৷

আমাকে?

হ্যা তোমাকে৷কিন্তু ভেব না এখানেই সব বরং অনেক বাকি আছে৷আজ তোমাকে আমি পেয়েছি আর বাকিটা জীবনটা ও আমি তোমাকে পেতে চাই,আমার মতো করে৷

সেটা কি রকম৷

আমি আবেগ থেকে বাস্তবকে সত্য বলে মেনে নিতে পছন্দ করি৷আমার একটা জগত আছে থাকবে ছিল৷যখন থেকে আমি আমাকে চিনতে শিখেছি তখন থেকে আমি তোমাকে চিনতে শিখেছি৷

কিন্তু কিভাবে৷

এখন তুমি দৃশ্যমান কিন্তু তখন তোমার অবয়ব,ছায়া আমার কল্পনায় ছিল৷আর সামনের সময় গুলোতেও থাকবে৷জানিনা তুমি আমার হয়ে থাকতে খুশি হবে কিনা৷

শুধু বলব তুমি ছিলে,আছো,থাকবে এতেই আমি খুশি৷

যখন রাস্তা পেরোবার সময় আমার দিকে তাকালে,তখনি মনে হল তুমি সেই আমার কল্পনার সঙ্গী ভালোবাসার মহারথী৷তাই থাকতে পারলাম না তৃষাতুর হয়ে ছুটে গেলাম তোমার কাছে৷বছরের পর বছর ধরে যে সপ্নের বীজ বুনেছি৷সেই বীজ গজিয়ে ডালপালা মেলেছে অনেক আগে৷তোমাকে দেখে কলি গুলো প্রস্ফুটিত হতে থাকল সবেগে৷অদেখা একটা বিশ্বাস বলছিল তুমি আসবে,আমি তোমাকে ধরে দেখব৷

এই তুমি এলে,আর ধরাটা বাকি থাকবে কেন?

না!

কিসের না ছুয়ে দিলাম তোমাকে,কাঁপছ কেন এমন করে৷

কি ঠান্ডা আপনার হাত৷

শীতকাল হয়তো তাই৷

হয়তো৷

একটু কাছে আসবে?

আজ আর নয়৷

তুমি নয় বললে নয়,জানো আমার কল্পনায় তুমি ছিলে এমন তুলতুলে নরম সবসময় আমি তোমাকে কোলে চড়িয়ে রাখতাম৷তুমি খুশিতে তোমার নরম ঠোঁট আমার গলায় ঘষতে৷

তাই,আপনার হাতটা ধরি৷

আমার সবকিছু এখন থেকে তোমার,কাজেই যা খুশি করতে পারো৷

আপনার সাথে আমার সব কল্পনা মিলে যায় কেন?আমার একটা পৃথিবী থাকবে যেখানে আমি,আপনি আর আর সবকিছু৷

সবকিছু৷

আপনি আমাকে মজা করছেন৷

আরে আমার সব মজাতো তোমার মাঝে৷

আপনি আমাকে আমি যেভাবে চাইব ওভাবে ভালোবাসবেন তো৷

বাসব ঠিকি কিন্তু আমার আর তোমার মতো দুটোই এক ভালোবাসাতো৷

ছেড়ে যাবেন না,কথা গুনছে

যদি আমার ভালোবাসা কাউকে শেয়ার না করো তবে তুমি আমার আমৃত্যু৷

সত্যি বলছেন৷

ততটা সত্যি যতটা রক্ত আছে আমার শরীরে৷ভালোবেসেছি তোমাকে ভালোবাসতে চাই তোমাকে৷

আমিও কিন্তু আপনার খারাপ লাগবে না,আমি যে কম কথা বলি৷

একটু খারাপ হয়তো লাগবে,কারন আমি চাই আমার সব কিছু তুমি বলবে৷

আচ্ছা আমি বেশি বেশি কথা বলার চেষ্টা করবে৷

না থাক মেডাম এখন বরং আপনার বাড়ী যাওয়ার চেষ্টা করা দরকার,সন্ধ্যা হয়ে এল৷

ও হ্যাঁ৷

চলুন পৌছে দিই৷

আজ না অন্য সময় আর আমার বাড়ি ১৪ নম্বরেই৷

ঠিক আছে তবে যাও৷

আপনি?

কিছুটা সময় বসি৷

আপনার কাশির সমস্যা,রাত হলে ঠান্ডা লাগবে৷

আচ্ছা উঠে যাচ্ছি৷

ওদিকে কোথায়?

পস্রাব করে আসি৷

ঠিকাছে,তবে বাসায় যেয়ে ফোন দিবেন৷

দেব৷

বিষয়: সাহিত্য

১৭৮৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File