আমাদের পর্যটন শিল্প কে বাঁচাতে ছবির মত সুন্দর বাংলাদেশের এই জায়গা গুলি বেচে নেন----

লিখেছেন লিখেছেন শর্থহীন ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৩০:১১ রাত





-নাফাখুম...... বাংলাদেশের নায়েগ্রা



বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার রেমাক্রি স্থানটি সাঙ্গু নদীর উজানে একটি মারমা বসতী। মারমা ভাষায় 'খুম' মানে হচ্ছে জলপ্রপাত। রেমাক্রি থেকে তিন ঘন্টার হাঁটা পথ পাড়ি দিয়ে যেতে হয় আশ্চর্য সুন্দর সেই জলপ্রপাতে, যার নাম 'নাফাখুম'। রেমাক্রি খালের পানি প্রবাহ এই নাফাখুমে এসে বাঁক খেয়ে হঠাৎ করেই নেমে গেছে প্রায় ২৫-৩০ ফুট....প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি হয়েছে চমৎকার এক জলপ্রপাত! সূর্যের আলোয় যেখানে নিত্য খেলা করে বর্ণিল রংধনু! ভরা বর্ষায় রেমাক্রি খালের জলপ্রবাহ নিতান্ত কম নয়... প্রায় যেন উজানের সাঙ্গু নদীর মতই। পানি প্রবাহের ভলিউমের দিক থেকে সম্ভবতঃ নাফাখুম-ই বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাত। আমার দেশে এত সুন্দর একটা জলপ্রপাত....অথচ আমরা খুব কম জন-ই এই জলপ্রপাতটা সম্মন্ধে জানি!



নাফাখুমের পড়ন্ত জলের ধারার নীচে গিয়ে বসার সুযোগ রয়েছে। আমার-আপনার জন্য বিষয়টা বেশ রিস্কি হলেও পাহাড়ীরা জলপ্রপাতের পিছনে বসে অনায়াসে মাছ শিকার করে। এক ধরনের উড়ুক্কু মাছ (স্থানীয় ভাষায় মাছটির নাম নাতিং মাছ) উজান ঠেলে এসে নাফাখুমে বাধাপ্রাপ্ত হয়, লাফ দিয়ে এই প্রপাত-টা আর ক্রস করতে পারেনা....গিয়ে পড়ে জলপ্রপাতের ভিতরে ছোট্ট একটা গুহায়। অনায়াসে সেখান থেকে মাছ সংগ্রহ করে স্থানীয় পাহাড়ীরা।



রেমাক্রি বাজার

রেমাক্রি বাজার থেকে দুইভাবে নাফাখুম-এ যাওয়া যায়। এক ঘন্টা উঁচু-নীচু পাহাড়ী পথ মাড়িয়ে(পাহাড় ডিঙিয়ে) তারপর রেমাক্রি খালের পাড় ধরে বাকিটা হেঁটে চলা। এই পথে গেলে নাফাখুমে পৌঁছাতে আপনার সময় লাগবে চার ঘন্টা। রেমাক্রি খাল ক্রস করতে হবে তিন বার, যার মধ্যে শেষবার আপনাকে সাঁতার পানি পেরুতে হবে। আপনি পাহাড় না ডিঙিয়ে গোটা পথই রেমাক্রি খালের পাশ দিয়ে যেতে পারেন। কিন্তু সেক্ষেত্রে নৌকা করে রেমাক্রি খালের মুখে (যেখানে রেমাক্রি খাল সাঙ্গুতে পড়েছে, রেমাক্রিখুম) যেতে হবে আপনাকে...তারপর খালের পাড় দিয়ে হাঁটা পথে নাফাখুম বরাবর। এই পথে আপনাকে চার বার খালটি ক্রস করতে হবে...তবে সময় লাগবে তিন ঘন্টা। আমি আপনাকে দ্বিতীয় পথেই যেতে পরামর্শ দেব...এতে আপনার সময় ও এনার্জী দু'টোই ব্যয় হবে কম। আর শীতের দিনে গেলে খাল ক্রস করার ঝামেলাই নেই.... গোটাটাই আপনি ঝিরিপথ দিয়ে হেঁটে যেতে পারবেন। তবে শীতকালে নাফাখুম-এর এই পূর্ণ সৌন্দর্য উপভোগ করার সুযোগ হবেনা.... পানি প্রবাহ অনেক কমে যাবে তখন।

রেমাক্রিখুম-টাও খুব সুন্দর! রেমাক্রি বাজারের কাছেই এই 'রেমাক্রি খুম'। রেমাক্রি খাল যেখানে এসে সাঙ্গু নদীতে পড়েছে.... সেটাই রেমাক্রি খুম।



পাঁচ-ছয় ফুট উপর থেকে কয়েকটি ধাপে পানি পড়ছে এই জলপ্রপাতে। এ'টি অনেক চওড়া। এই জলপ্রপাতটিও আপনাকে মুগ্ধ করবে নিঃসন্দেহে। তিন্দু থেকে রেমাক্রি যাবার পথেই চোখে পড়বে এই রেমাক্রিখুম।



বান্দরবান শহর থেকে থানচি উপজেলা (বান্দরবান জেলার সর্বদক্ষিণের উপজেলা) সদরের দূরত্ব ৮২ কিঃমিঃ। রিজার্ভ চাঁদের গাড়ীতে বান্দরবান থেকে থানচি যেতে সময় লাগবে ৩ ঘন্টা, ভাড়া নেবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। পথে চিম্বুক আর নীলগিরিতে নেমে কিছু ছবি তোলার ইচ্ছে থাকলে সময় কিছুটা বেশী লেগে যেতে পারে।



যারা কারনে অকারনে হানিমন অথবা চলচিত্র নির্মানের জন্য বিদেশমুখি তাদের শুধু এইটুকু বলব আমাদের পর্যটন শিল্প কে বাঁচাতে ছবির মত সুন্দর বাংলাদেশের এই জায়গা গুলি বেচে নেন --

বিষয়: বিবিধ

২৬৩৮ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

163403
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৪৪
আলোর আভা লিখেছেন : সত্যি অনেক সুন্দর আমাদের দেশটা ।কাছ থেকে কখনো দেখা হয় নাই ।শর্থহীন ভাইজান সুন্দর ছবিগুলো শেয়ার করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ ।
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০২:৫১
117680
শর্থহীন লিখেছেন : গুরে এসেন যদি সময় পান - ভাল লাগবে সোনার বাংলার লুকানো সন্দর্য গুলি দেখে --

পোষ্টে চোখ রাখার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি--
163414
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৩৯
জোবাইর চৌধুরী লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:১১
118159
শর্থহীন লিখেছেন : আপনার ভাল লাগা প্রকাশের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
163428
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৫:৩৯
তহুরা লিখেছেন :
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:১২
118160
শর্থহীন লিখেছেন : :Thinking :Thinking :Thinking :Thinking :Thinking
163435
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৬:১৮
বৃত্তের বাইরে লিখেছেন : যাওয়া হয়নি। ভালো লাগলো দেখে Rose
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৩
118162
শর্থহীন লিখেছেন : আমাদের দেশের এই জায়গা গুলি যে কত অপরুপা সুন্দর।মাঝে মাঝে ভাবি এই সউন্দরয্যে ভরা দেশটিতে জন্মিয়ে আমরা কেন অসহায় বোধ করি নিজেকে।
সময় এর জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।
163465
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:০০
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : খুব সুন্দর Day Dreaming Thumbs Up Bee যাওয়ার ইচ্ছা আছে Waiting Waiting অনেক ধন্যবাদ Good Luck Good Luck
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৫
118163
শর্থহীন লিখেছেন : যাবেন,ভাল লাগবে।
পোস্টে চোখ রাখার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।
163499
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৪৪
সাঈদ রাহমানী লিখেছেন : ধন্যবাদ, অনেক ধন্যবাদ
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৬
118164
শর্থহীন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ পোস্টে এসে সময় দেওয়ার জন্য।
১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৬
118165
শর্থহীন লিখেছেন : আপনাকেও ধন্যবাদ পোস্টে এসে সময় দেওয়ার জন্য।
163527
১৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:৫৮
হতভাগা লিখেছেন : বাংলাদেশ এ ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন ।

অন্য দেশগুলোতে যে সব প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আছে তারা সেটাকে ঘঁষে মেঝে তৈরি করে পর্যটকদের আকর্ষন করার জন্য ।

আর বাংলাদেশকে আল্লাহ তায়ালা এ ব্যাপারে বেশী বেশী করে দিলেও বাংলাদেশীদের অবস্থা হচ্ছে '' দাঁত থাকতে দাঁতের মর্যাদা না বোঝা''র মত ।

গত বছরের ফেব্রুয়ারী থেকে প্রধান পর্যটন স্থান কক্সবাজারে যে অফ সিজন চলছে তার সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক অস্থিরতা ।

প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার লোকসান গুনছে সেখানকার পর্যটন সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলো । ব্যবসা গুটিয়ে নেবার উপক্রম হয়েছে । নভেম্বর - ডিসেম্বরের ভরা মৌসুমেও এখন সেখানকার পরিবেশ ভূতুড়ে ।

২০১৪ সালের টি২০ বিশ্বকাপ বাংলাদেশে নির্ধারণ হয়েছিল ২০১২ টা শুরু হবার আগেই ।

মার্চ এপ্রিলেই পুরুষ ও মহিলা দুই ইভেন্টই হবে বাংলাদেশে ।

ফুটবলের মত ক্রিকেটেও ছেলেদের ইভেন্ট টাই জনপ্রিয় ।

কক্সবাজারের মত দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ও তত সংলগ্ন এলাকা গুলোতে বিদেশী পর্যটকদের আকর্ষন বাড়ানোর জন্য ছেলেদের ইভেন্টগুলো এখানে দেওয়া উচিত ছিল বেশী বেশি করে , বিশেষ করে বাংলাদেশের খেলাগুলো তো বটেই ।

ফলে এটার বদৈলতে এখানকার পর্যটন ব্যবসাও আবার চাঙ্গা হয়ে উঠতো । লোকসান ছাপিয়ে তারা লাভের মুখ দেখা শুরু করতো । বাংলাদেশের অর্থনীতিতে তা বিরাট ভূমিকাও রাখতো সন্দেহ নেই ।

এর জন্য উচিত ছিল কক্সবাজারে আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম তৈরি করা , অন্য সেটআপ তো সেখানে আগে থেকেই আছে।

খুবই আফসোস লেগেছিল জেনে যে কক্সবাজারে শুধু মেয়েদের ইভেন্টই হবে ।

একমাত্র টেনিস ছাড়া মেয়েদের কোন খেলাই দর্শকদের টানতে পারে না । ফুটবলও না । ক্রিকেট তো নাইই ।

তাই মেয়েদের ক্রিকেটের মত বোরিং খেলা দিয়ে কক্সবাজারের মত এই বিশাল পর্যটন কেন্দ্রকে একেবারে পথে বসানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে এই বিলম্বিত ও দীর্ঘায়িত অফ সিজনে ।

বিশ্বের যে সব দেশে সমুদ্র সৌকত আছে এবং ক্রিকেট খেলে তাদের সেই সমুদ্র সৌকতের পাশে ক্রিকেট স্টেডিয়াম আছেই ।
তারা এটা করে তাদের পর্যটন শিল্পকে সমুজ্জল করতেই ।

বাংলাদেশ কি পারতোনা ছেলেদের ইভেন্টগুলো কক্সবাজারে আনতে ?

অন্যদেশ গুলো যেখানে এসব ব্যাপারে খুবই একটিভ সেখানে বাংলাদেশ কেন বারবারই পেছনে সরে যায় ?

১৮ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২৮
118166
শর্থহীন লিখেছেন : আপনার সাথে একমত।ধন্যবাদ মত প্রকাশের জন্য।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File