কুরবানী হোক লৌকিকতা মুক্ত
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ০৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১০:৫৪:৩৬ সকাল
আমাদের সমাজের এক শ্রেণীর বাবা মা আছেন যারা কুরবানীর সময় ভাবেন, আমাদের ছেলে-মেয়েরা অন্যের দুয়ারে যাবে। অন্যের কাছে হাত পাতবে। প্রতিবেশীর পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখবে। ব্যাপারগুলো কেমন দেখায় না! আমরা মা-বাবা বেঁচে থাকতে আমাদের ছেলে-মেয়ে প্রতিবেশীর ঘরে কোরবানির গোস্ত খেতে যাবে কেনো? তারা প্রতিবেশীর পশু জবাইয়ের দৃশ্য দেখতে, আর মন ছোট করবে এই ভেবে যে, ইশ! আমাদের ঘরেও যদি পশু জবাই হতো?! তাদের মা-বাবা বলে, এটাতো কিছুতেই হতে পারেনা! অন্তত আমাদের ছেলে-মেয়েদের জন্য হলেও কোরবানির পশু কিনবো। কোরবানি করবো। যে করেই হোক কোরবানি করবো। অনেকে এমন আছেন যাদের নিয়ত গলত। তারা বলে, আমরা যদি কোরবানি না করি মানুষ আমাদেরকে কৃপণ ভাববে। গরিব ভাববে! কাজেই সুদে টাকা ধার নিয়েও কুরবানী করতে হবে! ইত্যাদি অজুহাতে আজ দেশে অসংখ্য মানুষ হাজারো পশু কোরবানি দিচ্ছে। অথচ তাওফিক না থাকলে কোরবানি দেওয়ার বাধ্যবাধকতাও শরিয়তে নেই। তারা হয়ত জানেও না যে এই কোরবানি তাদের জন্য নাজাতের বিপরীত আযাবের কারণ হতে পারে! আবার কিছুকিছু মানুষ দেখা যায় জাকাত দেওয়ার বেলায় কৃপণতা দেখালেও পশু কোরবানির বেলায় প্রতিযোগিতায় নামে। তারা চ্যালেঞ্জ নেয় যে তাদের কোরবানির পশু এলাকার সবার চেয়ে দামি হতে হবে। সবচেয়ে বড়ো হতে হবে। কোরবানির পশু ক্রয় করে তার গলায় মালা পড়িয়ে গোটা এলাকাতে তা প্রদর্শন করে। মানুষ যেন বলে অমুক ধনাঢ্য লোক সবার চেয়ে বড় পশু দিয়ে কোরবানি করছে। সবার চেয়ে বেশি টাকা দিয়ে পশু কিনেছে....! এক আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের নিয়ত বাদ দিয়ে এসব লোক দেখানো কুরবানীতে কোন লাভ নেই। সমাজে এমন লোকও দেখা যায় যারা ধর্মীয় অন্যান্য ফরয হকুমের ব্যাপারে উদাসীন, অথচ কোরবানির বেলায় বেপরোয়া! অনেকে শুধু গোস্ত খাওয়ার উদ্দেশ্যেই কোরবানি করে। তারা মনে করে কোরবানি করা মানে শুধু খাওয়া! আরে! গোস্ত খাওয়ার জন্য তো এতো টাকা খরচ করে কোরবানির নাম দিয়ে অপচয় করার মানে হয় না! আগেভাগে পশু কিনে জবাই করে খেলেও তো হয়। এবং এভাবে খাওয়াতে আযাবের লক্ষণও নেই। কোরবানির মৌসুমে পশুর দাম স্বাভাবিকভাবে বেড়ে যায়। তখন কেনো কোরবানি নাম দিয়ে গোস্ত খেতে হবে? একবার ভেবে দেখা উচিৎ এই ত্যাগ, কোরবানি লোকদেখানোর জন্য নয়, মহান আল্লাহকে খুশি করার জন্য। যদি লোকদেখানো কোরবানি হয় তা কখনো আল্লাহ কবুল করবেন না। আল্লাহ কোরবানির পশুর গোস্ত কিংবা রক্ত দেখেন না। দেখেন মানুষের অন্তর। এব্যাপারে মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআনের সুরা হজ্বে বলেন, "তাদের গোস্তও আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, তাদের রক্তও না। কিন্তু আল্লাহর কাছে পৌঁছে যায় তাদের তাকওয়া। " -আল কুরআন
এক হাদিসে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)বলেন "সকল কাজের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল"। - মিশকাত শরীফ।
নিয়ত যদি সহীহ হয় খাঁটি হয় তাহলে এর পুরস্কার আল্লাহপাক অবশ্যই দিবেন। আর যদি রিয়া, লৌকিকতা হয় তাহলে তা উল্টো জাহান্নামে যাওয়ার কারন হবে। তাই লোকদেখানো নয়,লৌকিকতা নয়। কোরবানি হওয়া চাই একমাত্র আল্লাহকে রাজি খুশি করার জন্য । আল্লাহ আমাদের তাওফীক দান করুন। আমীন
বিষয়: বিবিধ
১২৯৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন