রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম এবং কিছু শেকড়ের কথা
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ১৩ মার্চ, ২০১৬, ১২:২৩:৪২ রাত
৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ ছিলো একান্তই এদেশের মুসলিম জনগোষ্ঠির যেখানে মুসলমানদের অবদান এবং অন্যান্য জাতিগোষ্টির অবদান কতটুকু ছিলো তা আজকে মুক্তিযুদ্ধের দলিল এবং খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের লিষ্ট দেখলেও জানা যাবে।
যেমন খেতাবপ্রাপ্ত ৬৭৬ জন মুক্তিযোদ্ধার মধ্যে হিন্দু ছিলো মাত্র ৬ জন অর্থাত শতকরা হিসেবে মাত্র ০.৮৮% । অথচ ঐ সময় হিন্দুদের সংখ্যা ছিলো (তাদের দাবি অনুসারে) ২৮% ।
.
মুক্তিযুদ্ধ শেষ হওয়ার পর ১৯৭২ সালে সাংবিধান প্রনয়ন করতে গিয়ে কিছু প্ররোচনার শিকার হয়ে তাজ উদ্দিন এবং শেখ মুজিব বাংলাদেশের বৃহত্তর মুসলিম জনগোষ্টির মতামত উপেক্ষা করে ধর্মনিরপেক্ষতা সংযোজন করেছেন যেটা অনেকটা মুক্তিযুদ্ধের সাথেই বেইমানি ছিলো ।
.
যাকে আমরা পাগল, মাতাল বলে থাকি সেই এরশাদই মুসলিম জনতার দাবি মেনে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম করেছিলো । এই একটা কারনে আজ পর্যন্ত এরশাদকে ট্রল করার দুঃসাহস আমার হয়নি কোথাও।
.
ঐ সময়েই বিশিষ্ট (?) ১৫ ভারত দালাল সুফিয়া কামাল, ড. কামাল, দেবাষিশ ভট্টাচার্য, সি আর দত্ত, ফয়েজ আহমেদ সহ এই পান্ডাদল হাইকোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করেছিলো।
.
১৯৮৮ থেকে ২০১১ পর্যন্ত এই পান্ডাদল খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি।
৮৯ তে একবার, ৯৮ তে একবার এভাবে কয়েকবারই ব্যাপারটা আলোচনায় এসেও থেমে গিয়েছিলো।
.
সর্বশেষ এখন ২০১৬ সালে ঐ ভারত দালালদের পুর্নরুপ 'হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ' নামের এই চরম সহিংস এবং ভারতের শিবসেনার বাংলাদেশ ভার্সনের সংগঠনটির প্রত্যাক্ষ মদদে আরো একদল পাক্কা ভারত দালালদের সাথে নিয়ে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাতিল করার পুর্ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে যাচ্ছে দিল্লি মদদপুষ্ট বর্তমান সরকার ।
.
অথচ যাদের কথায় আজকে এই সাপের লেজ নিয়ে নাড়াচাড়া করার মত একটা আত্মঘাতি কাজ এই সরকার করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ গঠনে বা এই দেশ স্বাধীন হওয়ায় তাদের অবদান কতটুকুই বা সেটা একটা বার চিন্তাও হয়ত কেউ করছে না!
.
এরা তো সেই ভারতের দালাল যেই ভারত ৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সাহায্যের নামে এই দেশকে গিলে খেতে চেয়েছিলো। মুজিব এবং মুক্তিযোদ্ধাদের দৃঢ় অবস্থানে সেটা সেদিন না পারলেও আজকে ঠিকই তাদের সেই স্বার্থ আদায় করে নিচ্ছে ।
.
এরা তো সেই ভারতের দালাল যেই ভারতের যোগসূত্রেই বাংলাদেশের রিজার্ভ ফান্ড চুরি হচ্ছে । অথচ সেটা নিয়ে কোন চিন্তা না করেই বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যাচ্ছে ভারতেই প্রোগ্রাম এ্যাটেন করতে !
'
এই ভারত তো তারাই যারা ন্যায্য হিসসার তিস্তার পানি আটকে রেখেছে আমাদের।
'
এই ভারত তো সেই ভারত যারা বাংলাদেশের ম্যানগ্রোভ সুন্দরবন ধ্বংশ করছে।
'
এই ভারত তো সেই ভারত যারা বাংলাদেশের প্রতিটা সেক্টরে 'র' এজেন্ট দিয়ে দেশকে চুষে খাচ্ছে। অর্থনীতি ধ্বংশ করছে, গার্মেন্টস শিল্প নিয়ে একের পর এক ষড়যন্ত্র করছে ।
অথচ
আজ সেই ভারত দালাল একদল কুলাঙ্গার দেশদ্রোহীদের প্ররোচনায় ৯০% মুসলমান হওয়া সত্বেও এদেশের সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম উঠিয়ে দেয়ার পুর্ন প্রচেষ্টা চালাচ্ছে 'ইনশাআল্লাহ' বলে স্বাধীনতার ডাক দেয়া মুজিব কন্যা পরিচালিত সরকার !!
.
এমন তো নয় যে বিশ্বের কোত্থাও রাষ্ট্রের আলাদা ধর্ম নেই । জনগন পরিচালিত সরকার যেহেতু তাই জনগনের চাহিদা পুরনে ব্যার্থ হলে সেই সরকার অবশ্যই জনগনের নয় বরং সেই সরকার দিল্লি ওয়াশিংটনের সরকার ।
.
বিশ্বের প্রায় ৭০ টির অধিক রাষ্ট্রে আলাদা রাষ্ট্রধর্ম রয়েছে এবং সবচেয়ে মজার কথা হলো বিশ্বের যেই দেশেই কোন একটা ধর্মের লোক একক ভাবে ৭০% পার করেছে সেই সকল দেশেরই রাষ্ট্রধর্ম ঐ ধর্মই হয়েছে ।
এক্ষেত্রে ভারত পাকিস্তান আলাদা হলেও ভারতে হিন্দু এবং পাকিস্তানে মুসলমানরাই গুরুত্ব পায় এবং সেটা পুর্নমাত্রাতেই ।
.
যেমন উদহারন দিলে আর্জেন্টিনা, স্পেন, পর্তূগাল, নরওয়ে, ব্রিটেন ডেনমার্কের মত প্রায় ৩১ টি দেশ যেই দেশগুলোতে খ্রিষ্টান সংখ্যাগরিষ্ট সেখানে রাষ্ট্রধর্ম ক্যাথলিক প্রোটেষ্ট্যান্ট বা খ্রিষ্টধর্ম।
.
থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভুটান সহ প্রায় ৫ টি দেশ যেখানে বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ট সেখানে তাদের রাষ্ট্রধর্ম বুদ্ধিষ্ট!
.
হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ট নেপালের আলাদা রাষ্ট্রধর্মও ছিলো সনাতন হিন্দু ধর্ম।
.
সৌদি আরব, কাঁতার, আরব আমিরাত সহ আরব বিশ্বের প্রায় ৩২ টি দেশ যেখানে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট প্রধান দেশ তাদের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম।
.
আফটার অল মাই পয়েন্ট ইজ!
সংখ্যাগরিষ্ট জাতি বা ধর্মই ঠিক করে যে রাষ্ট্রধর্ম কি হবে না হবে সেটা।
.
এ্যাডভোকেট জগলুল হায়দার বা জাফর ইকবাল টাইপের নাম মুসলমানদের বাদ দিলেও বাংলাদেশের জনগনের ৮০% এর বেশি পাওয়া যাবে যাদের রক্তে-গোস্তে ইসলাম রয়েছে জড়িয়ে।
তারপরও এদেশের 'রাষ্ট্রধর্ম' ইসলাম হতে পারবে না ?
কেন ?
কোন ইশারায় ?
.
১৭ কোটির ৮০%...
আবারও বলছি ১৭ কোটির ৮০% জনগনের এই ধর্মীয় সেন্টিমেন্ট নিয়ে ছিনিমিনি খেললে ফলাফল কি হতে পারে!
লেখকঃহাসিব আর রহমান, ফেসবুক থেকে।
বিষয়: বিবিধ
১১৯৮ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের সেন্টিমেন্ট নিয়ে সরকার কাব যাব করবে বলে মনে হয় না
That means they must destroy u this ID, no doubt about this
- 'রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম' আর 'রাষ্ট্রভাষা বাংলা' এ জাতীয় প্রতারনাতুল্য, মানুষের ফোকাসকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার মত স্লোগান হতে বাংলাদেশী মানুষকে বের করে আনা উত্তম।
- মূলতঃ এ জাতীয় ইস্যু জনমনের সামনে উপস্থাপন করে তাদের সত্যিকার ঈমান ও সত্যিকার সেন্স অব আন্ডারস্ট্যান্ডিংকে সরিয়ে তাদের হাতে শির্ক, কুফর ও সকল রকমের ইসলামদ্রোহীতা চাপিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
- তথাকথিত রাষ্ট্র আর তার উপর রাষ্ট্রের ধর্ম, অন্যান্য ধর্মাবলম্বীর, স্যেকুলারের মানবীয় ভাবনা চিন্তা ও আবেগ প্রসূত। যা ইসলাম নেগেট করেছে, ছুড়ে ফেলে দিয়েছে। যা কিছু কোরান ও হাদীস সমর্থিত নয় - তার বিরুদ্ধে গনমত ও আন্ডারস্ট্যান্ডিং বৃদ্ধি করা - সামর্থ্যবান মুসলমান এর দায়িত্ব।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন