হোটেলের বয় এবং এক চাওয়ালা মোদীর গল্প
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ২৯ মে, ২০১৪, ০৩:৫৯:১১ দুপুর
"সক্ষম কিন্তু অক্ষম, অক্ষম কিন্তু মারাত্মক।"
কে জানেন?
হোটেলের বয় আর চাওয়ালারা।
পৃথিবীতে এই দুই ধরনের লোকেরা সবচেয়ে বেশী বকা খায়। কারনে অকারনে মাইর খায়। কিন্তু এরা কখনো কাউকে কিছুই বলতে পারেনা। নীরবে অপমান সয়ে যায়। আবার কেউ কেউ নীরবে নির্মম ঘৃন্য প্রতিশোধ নিয়ে নেয়।
পানি দিতে দেরী হয়েছে, খাবার আসতে সময়লেগেছে, চায়ে চিনি কম দিয়েছে ব্যাস গালের মধ্যে ঠাস করে চড় মেরে বসেন গ্রাহকেরা। অথচ এইসব বয়দের দোষ থাকেনা। ফিল্টারে যদি পানি না থাকে, ভিতরথেকে খাবার দিতে দেরী করে, বাবুর্চি যদি চায়ে চিনি বা তরকারীতে লবন ঠিকমত না দেয়, তাহলে তার কি করার আছে! তার কাজই হচ্ছে সাপ্লাই দেওয়া। টেবিল পরিস্কার করে অর্ডার অনুযায়ী খাবার পরিবেশন করা। অযথা এরা মার খায় বেশী। মাঝখানে বেঁচে যায় বাবুর্চী আর ম্যানেজার।
হোটেলের শাটার ফেলে দিয়ে সব বয়রা যদি গ্রাহককে পিটিয়ে আধামরা করে ফেলে, তাহলে কিছু করার আছে? কক্ষনো না। পরে হয়তো অনেক কিছুই করতে পারবে। পুলিশ বা মহল্লার পোলাপানদের দিয়ে মাইর খাওয়াতে পারবে। কিন্তু তার আগেতো মার খেতে হবে গ্রাহককে। প্রেস্টিজ সেখানেই অর্ধেক পাংচার।
মজার কথা হচ্ছে, এইসব কাজ করার সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও বয়রা ভুলেও এইসব কাজ করতে যায়না। তার কারন মালিকদের প্রতিবন্ধকতা।একটু গ্যাঞ্জাম হলেই হোটেলের বদনাম। আর হোটেলের বদনাম মানে গ্রাহকশুন্য মানে ব্যাবসা লোকসান।তাই বেশীর ভাগ মালিকেরা এইসব ঝামেলায় যেতে চায় না।স্টাফদের কঠোর ভাবে বারন করে দেন। অনিচ্ছা সত্ত্বেও মেনে নেন স্টাফরা। কারন প্রতিবাদ করলে অভিযোগ যাবে মালিকের কাছে। ফলাফল চাকুরী নট।
এই হচ্ছে সক্ষম কিন্তু অক্ষমদের কথা।
অক্ষম কিন্তু মারাত্মক ভয়াবহ এর কথা কি?
এবার বলি...।
জাতি হিসাবে মানুষ প্রতিশোধ পরায়ন। বিশেষ করে অশিক্ষিত যারা। এরা ভাল-মন্দ কোন কিছু ভাবেনা। হুট করে হামলা করে বসে পড়ে। আপনিএকটা বয়কে থাপ্পড় মারবেন, আর সে আপনাকে ছেড়ে দেবে। এতই সোজা মনে করেছেন ? এরা হয়তো আপনাকে মারতে পারবেনা, কিছু একটাতো করতে পারবে!
প্রতিশোধের জন্য বেশীর ভাগ বয়রা চা বা পানিরমধ্যে থু থু দিয়ে দেয়।আর সেই থু থু মিশ্রিত চা বা পানি দেয় গ্রাহকদের।না জেনে সেই পানি বা চা পান করে ফেলে অনেকে। এইভাবেই এই সকল সামর্থ্যবান কিন্তু অক্ষম আর অক্ষমেরা ভয়াবহ প্রতিশোধ নিয়ে নেয়।মারতে তো আর পারবেনা তাই মিশিয়ে দিলো থু থু।নে ব্যাটা এইবার খা...!
কিছু কিছু দুঃসাহসী বয়দের প্রতিশোধের ধরনটা আবার একটু অন্যরকম।এরা সেই চায়ের কাপ নিয়ে চলে যায় বাথরুমে। একটু খানি পেশাবের ফোটা।ভয়াবহ প্রতিশোধ।
হোটেলে একটু বেশী হম্বি দম্বি করে মেয়েরা।ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা বেশী পার্ট দেখায়।"এই সালাদে বালু কেন?""গ্লাসে ময়লা যে?" "প্লেটটাতো ধোয়াই হয় নাই"।"কাবাবটা কাচা কেন? ফ্রাই না করে নিয়ে এসেছ নাকি?"এইসব বলতে বলতে মেয়েরা বয়ফ্রেন্ডের মাথা গরম করে ফেলে। আর বয়ফ্রেন্ড বেচারা আর কি করবে।বীরত্বতো দেখাতেই হবে। হামলা করে বসে নিরীহ বয়দের উপর।ফলাফল মেয়েটার প্রতি ক্ষোভ সৃষ্টি বয়দের। একটা মানুষ দুনিয়ার সব কিছু সহ্য করতে পারে, কিন্তু মেয়েদের কর্তৃক অপমান কখনো সহ্য করতে পারেনা।মাথায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে থাকে।ইচ্ছা করে শাটারটা নামায়ে চেইন খুইল্লা মাইয়াটাকে মেঝেতে ফালায় দিয়ে....
তো সেই বয়টাও এইভাবে প্রতিশোধ নেয়।সুযোগ মত মাস্টারবেশন করে মেয়ের খাবারের মধ্যে নিজেদের বীর্য্য মিশিয়ে দেয়। এই বীর্য্য মিশ্রিত খাবার খেয়ে মেয়েটা বলেঃ আহা... খাবারটাতো দারুন হইছে ! মেয়ের কত্থাটা শুনে বয়টা মুচকি হাসে। মনে মনে কয়, মাগী মজাহইবোনা! কি জিনিস দিছি একবার যদি দেখতিছ!
এতো বললাম আপনার শোনা কথা।
এখন যদি আপনি নিজের চোখে দেখেন, একটাবয় সবার অগোচরে চায়ের কাপে কিংবা পানির ক্লাসে থু থু কিংবা বীর্য্য বা মুত মিশিয়ে দিচ্ছে সেভেন আপ বোতলে বা স্যুপের সাথে। তখন আপনার কেমন লাগবে? খেতে পারবেন কখনো! খাওয়াতো দুরের কথা, এই কথাটি যতবার আপনার মাথায় ঘুরঘুরকরবে, ততবারই আপনি নিজের ঘরের পানি পর্যন্ত খাবেননা। হোটেলে যাওয়াতো দুরেরকথা।
তো এই হচ্ছে দুর্বল লোকদের ঘৃন্য প্রতিশোধের কথা।
"সক্ষম কিন্তু অক্ষম, অক্ষম কিন্তু মারাত্মক।"
যারা হোটেলে গিয়ে কথায় কথায় ক্ষমতা দেখান। ফাপড়নেন। চিল্লাচিল্লি করেন। তারা বিষয়টি নিয়ে একটু ভেবে দেখবেন। কারনএকটা মানুষের পেশাব খাওয়ার চেয়ে থাপ্পড় খাওয়াটা অনেক ভাল।অন্তত আমি তাই মনে করি।
আপনি যতই চেষ্টা করেন, এদেরকে এইসব কাজকরা থেকে কখনো বিরত রাখতে পারবেননা। তো একটু কুল হোন। শান্ত থাকুন। নরম স্বরে কথা বলুন।মিষ্টি ব্যাবহার দিয়ে এদের মন জয় করুন। সুন্দর আচরন দিয়ে সর্বোৎকৃষ্ট সেবাআদায় করুন।এতে আপনি ভাল থাকবেন, এরাও ভাল থাকবে। সমাজও অনেক সুন্দরথাকবে। আর হ্যা, হোটেল থেকে বের হবার আগ মুহূর্তে এদেরকে ভাল বখশিশ দিতে ভুলবেননা। তাহলে পরপর্তীতে এলে আরো ভাল সেবা পাবেন। বুদ্ধিমান লোকেরা এই কারনে এদেরকে বখশিশ দেয়। অন্য কিজন্য দেয় আমি জানিনা।
আমার আজকের এই পোষ্টের উদ্দেশ্য হচ্ছে, সেইসব রাজনীতিবীদ ও ইসলামপন্থিরা। যারা ভারতের নির্বাচনে মোদীর বিজয়ে খুশি হয়ে খুব লাফালাফি করতেছে। যেচে পড়ে ফুলের তোড়া উপহার দিচ্ছে। কদমবুসি করতেছে।
মোদী ও তার দল বিজেপি উগ্রপন্থী। কট্টর হিন্দু।তার কাছে ধর্ম আর দেশ অনেক বড়।বাকি সব গোল্লায় যাক। দেশের জন্য সে বাংলাদেশীদের লাথি মারতে পারে। পাকিস্তানে পারমানবিক বোমা নিক্ষেপ করতে পারে। চীনের সাথে যুদ্ধে জড়াতে পারে। আবার ধর্মের জন্য ভারত জুড়ে মুসলিমদের কচুকাটা করতে পারে। তাই মোদীর বিজয়ে উল্লাসিত হবার কিছু নেই। তার কাজ সে করবে। এভাবে না হোক সেভাবেই করবে। কৌশলী হবে। হোটেলের বয়ের মত নোংরা চাতুরতার আশ্রয় নিবে।
জানেনইতো এই মোদী একটা সময় চা বেচতো।সে জানে,কিভাবে নির্মম উপায়ে ঘৃন্যরুপে প্রতিশোধ নেওয়া যায়। হাসি মুখেগ্রাহকদের থাপ্পড় মারা যায়।ভুলে যাবেন না,
গুজরাটের মুসলমানদেরদেরকেনির্মম ও নির্বিচারে হত্যার ইন্ধন জুগিয়েছিল এই রক্তখেকো নরেন্দ্র মোদী ।
বিষয়: বিবিধ
১৫৭৬ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ
আর মোদির ব্যাপারে বলতে পারি তিনি কখনই আরএসএস এর নিতির বাইরে যাবেননা। কিন্তু তাদের উগ্রতার নিতি দিয়ে ভারতের অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধার করতে পারবেননা। মোদি সম্ভবত এই মেয়াদে সেই ঝুঁকি নেবেনা। মনে রাখবেন হিটলার জার্মানিতে সরকার গঠন করেছিলেন ১৯৩৩ সালে আর দ্বিতিয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর মত অবস্থায় পোছেছিলেন ১৯৩৮ সালে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন