প্রচলিত ওয়াজ-মাহফিল:কিছু ভাবনা

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ২৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১২:১৯:০৬ দুপুর

‪‬‪আমাদের‬দেশে বিশেষ করে শীতের সিজনে ওয়াজ মাহফিল অনেক বেশি হয়।আমরা কম বেশি অনেকেই মাহফিলে ওয়াজ শুনতে যাই।কিন্তু ওয়াজ শুনার পর গুনাহ পরিত্যাগ করেছে,নামায ধরেছে,সর্বোপরি দ্বীনের উপর চলা শুরু করেছে সাধারণত তেমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যায় না।ওয়াজ শুনার আগে যেমন বেনামাযী,ওয়াজ শুনার পরও বেনামাযী থেকে যায়।অনেকেই ওয়াজ শুনতে যায় ফ্যাশনেবল হিসেবে। কিন্তু ওয়াজ শুনার পরের কর্মসূচী শুনে বিশ্বাস হবেনা তারা কোন দ্বীনি মাহফিল থেকে এসেছেন।

ওয়াজের কোন অভাব নয়।

অভাব হলো প্রভাবের।

প্রফেশনাল ওয়ায়েজদের দাপটে নিষ্টাবান ওয়ায়েজ এবং তাঁর প্রভাব বিলুপ্তির পথে।

যুবক ছেলেরা ওয়াজ শুনাকে সমাজে দ্বীনদার ও ভালো সাজার ফ্যশন হিসাবে গ্রহন করছে।

আগে শুনতাম কোন এলাকায় কোন বুযূর্গের আগমনে দৃশ্যপট পাল্টে যেত।

এলাকার মানুষ দ্বীনদার হয়ে যেত।

কিন্তু এখন সহস্র ওয়াজের তুলনায় শতক নয় বরং দশক মানুষ হেদায়াত হচ্ছে কিনা সন্দেহ ।

কারন এখন ওয়াজের চেয়ে আওয়াজই মূখ্য।

মৌলিক আলোচনার চেয়ে কৌতুকই বিবেচ্য।আমল সংশোধনের ফিকির নেই,কানসুখ করাই উদ্দেশ্য ।মানুষ এখন সুরের পাগল।যে বক্তা যত মিষ্টি সুর দিয়ে ওয়াজ করতে পারে তাকেই অনেক বড় আলেম মনে করে জাহেল পাবলিক।যেমনঃ তোফাজ্জল ভৈরভী একজন ভণ্ড।তার ওয়াজ কিচ্ছা কাহিনীতেই ভরপুর থাকে।কিন্তু তার গলার সুর ভাল।তাই সে হয়ে গেল আন্তর্যাতিক খ্যাতিসম্পন্য বক্তা।আমি বলি আন্তর্যাতিক ক্ষতিসম্পন্য বক্তা।কারণ তার ওয়াজে মানুষের হেদায়াত তো দূরের কথা,উল্টো গোমরাহ হচ্ছে।সে হল খাঁজা বাবা মাইজভাণ্ডারীর মুরীদ।যাক, যে কথা বলছিলাম,অনেক পাবলিক আছে যারা ওয়াজ মাহফিল বেশ আগ্রহের সাথে শুনতে যায়,অথচ নামায পড়ে না।এমন যে রাতে ওয়াজ শুনে ওই রাত শেষে ফজর নামায-ই পড়ে না।বক্তা যখন শ্রোতাদের লক্ষ্য করে ওয়াজের একপর্যায়ে বলেন-'রাত অনেক গভীর হয়ে গেছে।এখন মুনাজাত দিয়ে ওয়াজ শেষ করে দেই কি বলেন আপনারা?

তখন শত শত শ্রোতা হাত উঁচিয়ে বলে-'না হুজুর ! আরেকটু ওয়াজ করেন।ওয়াজটা খুব টেস্ট লাগতেছে।"...

অথচ ওয়াজ শুনেও আমল করে না।নামায পড়ে না।তার মানে ভাবখানা এমন যে ওয়াজ শুনবো মাগার আমল করুম না ! তারপরও ওয়াজ শুনা ভাল।নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল'র মত আরকি! অন্তত যতক্ষণ ওয়াজ শুনল ততক্ষণ তো গুনাহ থেকে বাঁচল ! তবে বর্তমানে মানুষের ঈমান আমল দূরস্ত হচ্ছে দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতের বদৌলতে।

আসুন ! আমরা দাওয়াত ও তাবলীগের মেহনতে কিছু সময় ব্যয় করি।আমল করার জজবা ও মাদ্দাহ্ পয়দা হবে ইনশা-আল্লাহ্ ।

আসুন ,আমরা নিয়ত কে সহীহ করে নিই,আমরা আমলের নিয়তে ওয়াজ শুনি এবং আমল করার চেষ্টা করি ।আল্লাহ পাক তাওফীক দান করুন।আমীন ।

বিষয়: বিবিধ

৩০৮২ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

167854
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ১২:৫৩
হতভাগা লিখেছেন : ওয়াজে আসল কথার চেয়ে সমালোচনামূলক কৌতুক করা হয় বেশী । জোরে জোরে কথা বলা হয় যেখানে মাইক আছে ।

মহিলাদের প্রসঙ্গ আসলে খুব রসিয়ে রসিয়ে বলা হয় যা ভদ্র লোকেরা শুনতে পারে না ।

তবে এরা তাদের কথা ভেবে এসব রসাত্মক কথা বলে যারা আসেই এরকম কথা শুনতে ।
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:২৫
122248
সত্যের বিজয় লিখেছেন : ধন্যবাদ ,যথার্থ কমেন্ট করেছেন ।আসলেই ব্যাপারটা দুঃখজনক ।
167877
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ দুপুর ০২:২০
প্রবাসী আশরাফ লিখেছেন : প্রফেশনালী ওয়াজ তথা অর্থের মানদন্ডে চুক্তিভিত্তিক ওয়াজ বা দাওয়াত দেবার প্রথাটি প্রশ্নবিদ্ধ সবসময়। এ যেন গল্পরসে টইটুম্বুর ওয়াজে উপস্থিত জনতার মাঝে বিনোদন বিতরন করা।

যদিও আমি দেখেছি অনেক আলেমে দ্বীন সহীহ কোরআন-হাদিসের বর্ননা তুলে ধরেন এই ওয়াজের মজলিসেই যার প্রভাব উপস্থিত জনতার মধ্যে পড়ে বৈকি।

বর্তমানের সমাজের যেই অবক্ষয় হচ্ছে তাতে সামাজিক আন্দোলনের অংশ হিসাবে ওয়াজের গুরুত্ব অবশ্যই আছে। তাই বলবো ওয়াজ বা দাওয়াতের বিরোধীতা নয় বরং ভন্ডদের প্রত্যাখান করুন যে যার অবস্থান থেকে।
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:৩৪
122250
সত্যের বিজয় লিখেছেন : অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ মন্তব্য করেছেন ।ধন্যবাদ ।
168181
২৬ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:০৪
জবলুল হক লিখেছেন : শুধু বছরে একবার ওয়াজ শুনে মানুষ শুদ্ধ হবে না।দাওয়াত এর কাজ প্রতিদিন প্রতি ঘরে ঘরে চালাতে হবে। এক এলাকায় আমি দেখেছি সেখানে প্রতি সপ্তাহে এলাকার কোন আলেম এনে আছর থেকে এশার নামাজ পর্য্ন্ত তালিম দেয়া হয়।
২৭ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:৩৯
122251
সত্যের বিজয় লিখেছেন : মা শা আল্লাহ্ ! খুবই ভাল উদ্যোগ । প্রত্যেক এলাকায় এরকম দাওয়াতের কাজ চালু করা উচিত । ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File