ইয়াবার বিষাক্ত ছোবল: আক্রান্ত বাংলাদেশ
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ২০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৮:৫৫:০৭ রাত
মরণনেশা ইয়াবার ভয়ঙ্কর বিস্তার ঘটেছে সারা দেশে। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত মহামারীর মত ছড়িয়ে পড়েছে নীরব ঘাতক ইয়াবা। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রী, তরুণ-তরুণী শুধু নয়, ব্যবসায়ী, চাকরিজীবীদের একটি অংশ এখন ইয়াবায় আসক্ত। হাত বাড়ালেই ইয়াবা চলে আসায় এর সেবনকারীর সংখ্যা বাড়ছে আশঙ্কাজনক হারে। ইয়াবার ভয়াবহ আগ্রাসন নিয়ে সরকার যেমন উদ্বিগ্ন, চিন্তিত অভিভাবকমহলও। অথচ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নাকের ডগা দিয়ে বেড়েই চলছে ইয়াবা ব্যবসা। প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম ধ্বংস করে মাদক ব্যবসায়ীরা হাতিয়ে নিচ্ছে হাজার কোটি টাকা। দুই শতাধিক প্রভাবশালী ব্যক্তিবর্গ ও এমপি, রাজনৈতিক নেতার সমন্বয়ে গঠিত শক্তিশালী সিন্ডিকেট ইয়াবা ব্যবসায় সক্রিয়।
ইয়াবার বিস্তারে প্রতিটি মহল যখন উদ্বিগ্ন ঠিক তখনই কক্সবাজারের চিহ্নিত একজন ইয়াবা ব্যবসায়ীকে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থেকে শুরু করে প্রতিটি মহলেই উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে। ওই ব্যবসায়ীর আগামী ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমার যাওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে ইয়াবার খুচরা ব্যবসায়ীরা মাঝে-মধ্যে গ্রেফতার হলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে যাচ্ছে মূল হোতারা। এতে করে ঠেকানো যাচ্ছে না ইয়াবা ব্যবসা। বানের পানির মতো দেশে ঢুকছে ইয়াবার চালান। আর যারা গ্রেফতার হচ্ছে তাদেরও আটকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। আইনের ফাঁক গলে তারা বেরিয়ে আসছে কারাগার থেকে। ফিরে যাচ্ছে তাদের ইয়াবা ব্যবসায়। মাদকের বিরুদ্ধে অভিযানে এখন বড় ভূমিকা রাখছে র্য্যব।তবে এখনই ইয়াবাকে রোধ করা না গেলে দেশের কোনো পরিবার এ থেকে পরিত্রাণ পাবে না।
মানব দেহের সবচেয়ে ক্ষতিকর নেশাদ্রব্যের মধ্যে ইয়াবা অন্যতম একটি। ইয়াবা অর্থ হলো, ক্রেজি মেডিসিন বা পাগলা ওষুধ। মেথ্যাম ফিটামিন, উত্তেজক পদার্থ ক্যাফিনের সঙ্গে হেরোইন মিশিয়ে তৈরি করা হয় ইয়াবা। এ নেশাদ্রব্য হেরোইনের চেয়ে ভয়াবহ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, ইয়াবা সেবন করার পর সাধারণত নির্ঘুমতা, চাঞ্চ্যলতা ও শরীরে উত্তেজনা দেখা দেয়। ক্রমান্বয়ে আসক্ত হওয়ার পর এটা মানব শরীরে নানা প্রকার ক্ষতি করে থাকে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, শুধু বাংলাদেশের চাহিদার কথা বিবেচনা করে মিয়ানমারে স্থাপিত হয়েছে ৭টি ইয়াবা কারখানা। দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে বড় মাদক চোরাকারবারি সিন্ডিকেট মিয়ানমারের ওয়া আর্মি নামের সংগঠনের তত্ত্বাবধানে তৈরি হচ্ছে এসব ইয়াবা। প্রতিদিন এ ৭টি কারখানায় ৫ লাখেরও বেশি ইয়াবা বড়ি উৎপাদন করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্ত গলিয়ে চোরাইপথে এসব ইয়াবা আসছে টেকনাফে। সেখান থেকে আসছে কক্সবাজার। আর এসব চালান সংগ্রহ করছে কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়াসহ পাশের এলাকার কিছু প্রভাবশালী মাদক ব্যবসায়ী। তারাই রাজধানীসহ দেশের নানা প্রান্তে পৌঁছে দিচ্ছে লাখ লাখ পিস ইয়াবা।
পরিশেষে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই,আমরা চাই না ঘরে ঘরে নেশাখোর ঐশীরা তৈরী হোক।তাই,
দেশ ও জনগনের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে অতি দ্রুত ইয়াবার বিস্তার রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হোক।
বিষয়: বিবিধ
১০৪০ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন