দাড়ি কামিয়ে ফেলার ফলে সংঘটিত ভয়াবহ সাতটি গুনাহ (পর্বঃ২)
লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ২০ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:১৬:৩০ সকাল
(৪) অবিশ্বাসীদের সাথে সাদৃশ্য গ্রহণঃ
আল্লাহ মহামহিম তাঁর কালামে বলেছেন, “এরপর আমি আপনাকে রেখেছি ধর্মের এক বিশেষ শরীয়তের উপর। অতএব, আপনি এর অনুসরণ করুন এবং অজ্ঞানদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না। ” (আল কুর’আন ৪৫:১৮) [৬]
এই আয়াতে পরিষ্কারভাবে তাদের থেকে পৃথক হবার কথা বলা হয়েছে যারা নিজেদের খেয়াল খুশির অনুসরণ করে এবং আল্লাহর রাসুলের আদেশের অনুসরণ করে না। তাদের খেয়াল খুশির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত তাদের বাহ্যিক চেহারা-সাজ পোশাক এবং তারা তাদের বাতিল জীবনাচরণের থেকে যা অন্তর্ভুক্ত করে। কাজেই তাদের খেয়াল খুশির সাথে একমত পোষণ তাদের মিথ্যা বাতিল পথ অনুসরণেরই নামান্তর। আমাদের প্রতি আদেশ হল তাদের থেকে পৃথক হবার।
আল্লাহ পাক বলেন, “যারা মুমিন, তাদের জন্যে কি আল্লাহর স্মরণে এবং যে সত্য অবর্তীর্ণ হয়েছে, তার কারণে হৃদয় বিগলিত হওয়ার সময় আসেনি? তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল। তাদের উপর সুদীর্ঘকাল অতিক্রান্ত হয়েছে, অতঃপর তাদের অন্তঃকরণ কঠিন হয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশই পাপাচারী।” (হাশর ১৬)
এই আয়াতে: “তারা তাদের মত যেন না হয়, যাদেরকে পূর্বে কিতাব দেয়া হয়েছিল”, বিজাতিদের অনুকরণের বিরুদ্ধে একটি চূড়ান্ত নিষেধাজ্ঞা। ইবন কাসীর (রাহিমাহুল্লাহ) তাঁর তাফসীরে উল্লেখ করেছেন: “এ কারণেই আল্লাহ মুমিনদেরকে নিষেধ করেছেন তাদের (অবিশ্বাসীদের) অনুকরণ করতে”।
কুর’আনের শিক্ষা এবং রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি যা কিছু নাযিল হয়েছে তার অন্যতম শিক্ষা হল মুসলমানদের স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট রক্ষা করা। একারণেই আমাদের কথা, কর্ম, ইচ্ছা বাসন ইত্যাদি এবং শরীয়তের বিষয়াদি পর্যন্ত যেমন সালাত, জানাযা, সাওম, খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ, পোশাক, চাল চলন, আচরণ, অভ্যাস ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে জাতীয় বৈশিষ্ট রক্ষা করার জন্যে আল্লাহর রাসূল সা. বিশেষ গুরুত্বারোপ করেছেন। এরপরেও যারা মুসলমানদের জাতীয় বৈশিষ্ট ত্যাগ করে অন্যদের অনুসরণ অনুকরণ করে তাদের প্রতি তিনি বলেছেন, “যে আমাদের সুন্নাহ পরিত্যাগ করে অন্যদের সুন্নাহ অনুসরণ করে সে আমাদের মধ্য হতে কেউ নয়।”।
মদীনার ইহুদীরা এই উদ্দেশ্যগুলো বুঝতে পেরেছিল এবং অনুধাবন করেছিলো যে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের থেকে সকল বিষয়ে আলাদা হতে যাচ্ছেন এমনকি একেবারে ব্যক্তিগত কোন বিষয়েও। তারা মন্তব্য করেছিলো, “আমরা যা করি তার কোন কিছুরই বিরোধীতা না করে এই লোকটি (মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদের ছাড়বে না।”।
হাসান আল বসরী রহ. বলেন, ” এমন ঘটনা খুব বিরল যে কেউ কাউকে অনুকরণ করে অথচ সে তার অনুসরণ করে না ( ইহকাল এবং পরকালে)।”
সম্মানিত আনসারদের থেকে কয়েকজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞেস করলেন, ” হে আল্লাহর রাসূল ! আহলে কিতাবীরা তাদের দাড়ি কামিয়ে ফেলে এবং গোঁফ লম্বা করে।” জবাবে তিনি বলেন, “তোমরা তোমাদের গোঁফ ছাট এবং দাড়ি ছেড়ে দাও এবং আহলে কিতাবিদের সাথে বৈসাদৃশ্য গ্রহণ কর।”
তিনি আরও বলেন,”তোমরা গোঁফগুলো কর্তন কর এবং দাড়ি ছেড়ে দাও (অর্থাৎ বড় করো)। তোমরা অগ্নিপূজকদের বিপরীত কর”। [(মুসলিম ২,৫১০]
আরেকটি হাদীসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “গোঁফ ছোট কর (জুযযু) , আর দাড়ি বাড়তে দাও, এবং মেজিয়ান(পৌত্তলিক)দের বিপরীত কর।” (মুসলিম)।
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১১৯২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন