সমকামিতা: ইসলাম কি বলে?

লিখেছেন লিখেছেন সত্যের বিজয় ১৫ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৪:০১:২০ বিকাল

বর্তমানে যুগ পাল্টেছে ।মানুষ আধুনিক হতে শিখছে। সেই আধুনিকতার নামে মানুষ অশ্লীলতার গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে। আর এই আধুনিক জগতে মানুষ আধুনিক হতে পারছেনা বরং অন্ধকার যুগে তারা ফিরে যাচ্ছে। আধুনিকতার নামকরন করে ইহুদীরা আবিস্কার করেছে নারী-পুরুষের অবাধ প্রকাশ্য যৌনমিলন দর্শন খেলা। দর্শক তা দেখে মুগ্ধ হয়ে সেই পথকে আকর্ষনীয় মনে করে তা অনুসরণ করছে।খৃষ্টানরাও সেই পথের অনুসারী হয়ে নানা ধরনের নগ্নতার ছবি প্রকাশ করছে। পশ্চাতের এসব প্রভাব পরেছে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে। বাংলাদেশ ও পিছিয়ে নেই।

প্রকৃত পক্ষে দেখা যাচ্ছে, ইহুদি-নাসারারা ইসলামের প্রকাশ্য শত্র“। তারা সদা-সর্বদাই চেয়েছে ইসলামকে ধ্বংস করতে। সেই ধ্বংসের বীজ হিসেবে ইহুদী ও খৃষ্টানরা মানব জাতির যৌনাচারকে সর্বনিন্ম পর্যায়ে নামিয়ে প্রদর্শণ করছে। বর্তমানে ইহুদী ও নাসারারা এই যৌনচারিতার খেলার নতুন পদ্ধতি অবলম্বন করছে। আর তা হলো পরুষ-পরুষের সাথে ও নারী-নারীর সাথে যৌনমিলন। ইহাকে ইংরেজীতে খবংনরধহ ও বাংলায় সমকামিতা বলা হয়।

সমকামিতা হলো ইসলামে সবচেয়ে নিকৃষ্ট কাজ। সমকামিতা যিনা-ব্যভিচারের মধ্যে পরে। যিনা-ব্যভিচার সর্ম্পকে পবিত্র কোরআনে এসছে-

”তোমরা যিনা-ব্যভিচারের নিকটবর্তি হয়োনা। নিশ্চয় এটা অশ্লীল কাজ ও নিকৃষ্ট পথ।”

(সূরা: বনী-ইসরাঈল:৩২) আমেরিকা ও আমদের পার্শ্ববর্তি দেশ ভারতে সমকামিতা নিয়ে নানা চলচিত্র তৈরি হচ্ছে । আবার তারা তাদের টেলিভিশন টকশো গুলোতেও সমকামিতা নিয়ে নায়ক – নায়িকাদের অথিতি করে এনে তাদের বক্তব্য রাখছে। অনেক ক্ষেত্রে তারা সমকামি ব্যক্তিদের মর্যাদার আসনে বসাচ্ছে। ভারতীয় অপসংস্কৃতি যেহেতু আমাদের দেশের রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করেছে। তাই এধরনের টক শো দেখে আমাদের দেশের মুসলিম যুবক-যুবতিরা সমকামিতার প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে। অনেকে আবার এধরনের সমকামিতার প্রতি ঝুকে পড়ছে। তারা জানেও না কি পরিমান ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছে তারা।

বর্তমানে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাও সমকামিতার সাথে জড়িত আছে। এরাই পৃথিবীতে সম্মান কুড়াচ্ছে ! অথচ এরা ইসলামের নিকৃষ্টব্যক্তি। এরা জানেনা অচিরেই এদের পরিনাম কত ভয়াবহ হবে।

হযরত লুত (আ) এর সম্প্রদায়কে আল্লাহ তা’য়াল পুরো জনপদসহ উল্টিয়ে দিয়েছিলেন। তার কারন এই সমকমিতা। পবিত্র কোরআনে মহান রাব্বুল আলামীন বলেছেন-

”আর লুতকে স্মরণ করুন যখন সে তার সম্প্রদায়কে বলেছিল নিশ্চয় তোমরা একটি অশ্লীল কাজ করছ, তোমরা ব্যতীত ইতিপূর্বে বিশ্বেও আর কেউ করেনি। তোমরা কি পুরুষের সাথে কামভাবপূর্ণ করছ এবং তোমরা রাস্তায় ডাকাতি কর এবং তোমাদের ভরা মজলিসে অবৈধ কাজ কর। (সূরা: আনকাবুত:২৮,২৯)

লুত (আ) এর সম্প্রদায়ের এই সমকামিতার মত ভয়াবহ ও জঘন্য অপরাধের কারনে তাদেরকে চার প্রকারের শাস্তি প্রদান করা হয়েছিল। যা পূর্বের কোন জাতির উপর একসাথে চার প্রকারের শাস্তি দেওয়া হয়নি। শাস্তিগুলো এরূপ ছিল তাদের দৃষ্টি শক্তি কেড়ে নেওয়া হয়েছিল, তাদেও বাড়িঘর উল্টে দেওয়া হয়েছিল, তাদের বিকট শব্দ প্রেরণ করা হয়েছিল। এগুলো পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে।

তাহলে দেখা যাচ্ছে সমকামিতার কি কঠিন শাস্তি আমাদের পূর্ববর্তী জাতিদের উপর প্রদান করা হয়েছে। আর আল্লাহ তা’য়ালা কতইনা অসন্তুষ্ট হন ঐ সব ব্যক্তির উপর যাহারা সমকামিতায় লিপ্ত থাকে এবং মানুষকে উৎসাহ প্রদান করে সমকামিতার প্রতি। ইহার শাস্তি দুনিয়াতে যদি এতো কঠিন হয়। না জানি আখিরাতে কত কঠিন শাস্তি রয়েছে।

আধুনিকতার নামে অশ্লীলতা আমাদেরও রন্দ্রে রন্দ্রে প্রবেশ করেছে। আর সমকামিতার মত জঘন্যতম অশ্লীলতা ধীরে ধীরে আমাদের ইসলামে প্রবেশ করে ইসলামকে ধ্বংস করার বীজ বপন করছে। ইসলামে সমকামিতা দূরের কথা এর নারী অপর নারীর সাথে এক লেপের নিচে শয়ন করতে পারবে না। এ সর্ম্পকে হাদীস শরীফ হতে এসেছে-

”হযরত আবু সায়ীদ খুদরী (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, এক পুরুষ যেন অপর পুরুষের আবরণীয় অঙ্গের প্রতি নজর না করে। এভাবে এক নারী যেন অপর নারীর আবরণীয় অঙ্গের প্রতি নজর না করে এবং এক পুরুষ যেন অপর পুরুষের সাথে একই লেপের নিচে না শোয় এবং এর নারী যেন অপর নারীর সাথে লেপের নিচে না শোয়।

(মুসলিম, মিশকাত:২৯৬৬)

বর্তমানে আমাদের সমাজেও সমকামিতার মায়াজাল মুসলিম জাতির উপর ছেয়ে বসেছে। আপনারা হয়তো জানতে চাইছেন সমকামিতা কি আমাদের দেশেও আছে?

জ্বি হা, সমকামিতা আমাদের মত মুসলিম দেশেও যুবক-যুবতির মধ্যে ঝড়ের বেগে ঢুকে পড়েছে। এর জন্য আমি ১টি উদাহরণ পেশ করছি আপনাদের মাঝে,

বেশ কিছুদিন আগে পত্রিকায় পড়েছিলাম বরিশালের এক মেয়ে অন্য জেলার অপর এক মেয়ের সাথে ফোন আলাপ হয়। এক সময় তার প্রেমে পড়ে যায়। তারপর তারা উভয়ই তাদেও বাড়ি ঘর পিছনে ফেলে পাড়ি জমায় অজানা শহরের দিকে। ঐ মেয়ে দুটি বিয়ে করে এবং তারা ঢাকা শহরে বসবাস করছে বর্তমানে। এই বিষয়টা বিভিন্ন পত্রিকায় সবচেয়ে বড় খবর হিসাবে স্থান পেয়েছিল। অনেক মেয়ে ছেলেরা এতে প্রভাবিত হয়েছিল। কিন্তু কাজটি ছিল ইসলামের দৃষ্টিতে নিকৃষ্টতম কাজ।

...চলবে।

২য় পর্বে সমাপ্ত।

বিষয়: বিবিধ

২২৪৯ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

162800
১৫ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:১১
তাহমিদ ইব্রাহীম লিখেছেন : সুন্দর পোস্ট। জাযাকাল্লাহ। Happy
১৫ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩০
117153
সত্যের বিজয় লিখেছেন : তাহমীদ ইব্রাহিম@ ধন্যবাদ আপনাকে । Happy

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File