যে রাত হাজার মাসের চেয়ে উত্তম
লিখেছেন লিখেছেন রাজু আহমেদ ২৪ জুলাই, ২০১৪, ০৯:৫৮:৩১ রাত
পবিত্র রমজান মাস শেষ প্রান্তে এসে পৌঁছেছ । রহমাতের প্রথম দশক, মাগফেরাতের দ্বিতীয় দশক শেষ হয়ে নাজাতের শেষ দশকের শেষ প্রান্ত অতিবাহিত হচ্ছে । আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তার বান্দাহের প্রতি বিশেষ করে উম্মতে মোহাম্মদীর প্রতি রমযান মাস এক অপার অনুগ্রহের মাস । কুরআন মাজীদ ও হাদীস শরীফের আলোকে এ মাসের গুরুত্ব অপরীসীম । বিশেষ করে রমযানের শেষ দশক আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উপযুক্ত সময় । কেননা রমযানের শেষ দশদিনের সাথে ইসলামের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইবাদাত সংযুক্ত । ই’তিকাফ আদায়, আল্লাহর পক্ষ থেকে মহিমান্বিত রাত লাইলাতুল ক্বদর উপহার , জুমাআতুল বিদা, ফিতরা ও যাকাত আদায় এবং রোযা সমাপান্তে খুশির ঈদ উৎসবের জন্য নির্ধারিত সময় নাজাতের শেষ দশদিন । আল্লাহর রাসূল (সাঃ) রমযানের শেষ দশদিনকে খুবই তাৎপর্যমন্ডিত উল্লেখ করেছেন । তিনি এ সময় সর্বদা ইবাদাতে মশগুল থাকতেন এবং তার অনুসারীদেরকেও বেশি বেশি ইবাদাত করার নির্দেশ দিয়েছেন । রমযানের শেষ দশকের সকল গুরত্বপূর্ণ ইবাদাতকে ছাপিয়ে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে লাইলাতুল ক্বদরের রাত । পবিত্র কুরআন মাজীদে লাইলাতুল ক্বদরের পরিচয় এবং এর মর্যাদা বর্ণনা করে আল্লাহ তায়ালা তার বন্ধু এবং বন্ধুর অনুসারীদের জন্য একটি স্বতন্ত্র সূরা ( সূরা ক্বদর) অবতীর্ন করেছেন । কথিত আছে, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার উম্মতদের কল্যান নিয়ে সব সময় চিন্তিত থাকতেন । তিনি ধারনা করতেন, অন্যান্য নবীদের উম্মতগণ দীর্ঘ আয়ু লাভ করেছে । এদের মধ্যে কারো উম্মত হাজার বছর, আটশ বছর কিংবা পাঁচশ বছর জীবিত ছিল। অথচ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতগণ মাত্র ৬০-৭০ বছর আয়ুষ্কাল লাভ করে । অন্যান্য নবীর উম্মতগণ দীর্ঘকাল আয়ু লাভের কারনে অধিক পরিমাণ পূণ্যের কাজ করার সুযোগ পেয়েছে অথচ হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর উম্মতগণ সল্প আয়ুপ্রাপ্ত হওয়ার কারনে অধিক সওয়াবের কাজ করতে পারে না । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর মনের এ অভিব্যক্তির কারনে আল্লাহ তায়ালা উম্মতে মুহাম্মাদীকে শবে ক্বদর দানের মাধ্যমে অন্যান্য নবীদের অনুসারীদের চেয়েও অধিক সওয়াব অর্জন করার সুযোগ দান করলেন । প্রতি বছর রমযান মাসের শেষ দশকের বেজোড় রাত্রির মধ্যে এমন একটি রাত্রি লুকায়িত রাখা হয়েছে যে রাত্রিতে, আল্লাহর পক্ষ থেকে ক্বদর অবতীর্ন হয় । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর যে সকল উম্মতগণ এ ক্বদর পাবে তাদের ঐ রাত্রের ইবাদাতে যে সওয়াব হবে তা হাজার মাসের (৮৩ বছর ৪ মাস) সওয়াবের সমতুল্য বা তারও বেশি । তবে আল্লাহ তায়ালা কিংবা তার প্রিয় বন্ধু উম্মতের জন্য এ রাতকে নির্ধারিত করে দেননি । উম্মতে মুহাম্মদীর জন্য এ রাত পাওয়ার প্রেষণা কতটুকু তা পরীক্ষা করার জন্যই স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা এ রাতকে গোপন রেখেছেন । এ গোপণীয়তার মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালা তার বান্দাহের সওয়াব লাভের মানসিকতা এবং কর্মতৎপরতার পরীক্ষা নিতে চান ।
লাইলাতুল ক্বদরের পরিচয় এবং এ রাতের মর্যাদা বর্ণনা করে স্বয়ং আল্লাহ তায়ালা বলেন , ‘‘নিশ্চয়ই আমি এ কোরআন অবতীর্ণ করেছি মহিমান্বিত রজনীতে । (হে নবী) মহিমান্বিত রজনী সম্বন্ধে আপনি জানেন কি ? মহিমান্বিত রজনী হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ । প্রত্যেক কাজে সে রাতে ফেরেশতাগণ ও জিব্রাঈল অবতীর্ণ হয় তাদের প্রতিপালকের অনুমতিক্রমে । ঊষার আবির্ভাব পর্যন্ত সে রজনী শান্তিপ্রসূ ও নিরাপত্তা’’ (সূরা ক্বদর) । শ্রেষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদগণ লাইলাতুল ক্বদরের আরও কয়েকটি নাম উল্লেখ করেছেন । যেমন- লাইলাতুল হুকুম, লাইলাতুল রহমান, লাইলাতুল ক্বাদা, লাইলাতুল মাগফিরাহ, লাইলাতুল মুবারাকা এবং লাইলাতুল জায়িযাহ । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রিয় সাহাবী এবং তাবেয়ীদের মতে, লাইলাতুল ক্বদরের রাতে প্রত্যেক বান্দাহের জন্য লাওহে মাহফুজ থেকে পরবর্তী এক বছরের জীবন-মৃত্যু, রিজিক, ধন-দৌলত, সম্পদ বৃষ্টি, ভালো-মন্দ ইত্যাদি বিষয় অর্থ্যাৎ বান্দাহর তাকদীর বিষয়ক ফিরিস্তি ফেরেশতাদের কাছে প্রেরণ করা হয় । তাই পত্যেক মুসলিম বান্দা-বান্দীর জন্য এ রাতটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ । পূর্বেই বলেছি, লাইলাতুল ক্বদরের রাত নির্ধারিত নয় । মানবতার মুক্তির দিশারী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) তার উম্মতদের উদ্দেশ্যে শবে ক্বদরের দিক-নির্দেশনা দিতে গিয়ে বলেছেন, ‘তোমরা রমযানের শেষ ৭ দিনে লাইলাতুল ক্বদর অনুসন্ধান করিবে’ । বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূল (সাঃ) বলেন, ‘লাইলাতুল ক্বদর হলো রমযানের ২৭ অথবা ২৯ তারিখ’ । তিনি আরও বলেন, ‘তোমরা রমযানের শেষ দশকে লাইলাতুল ক্বদর অন্বেষণ কর’ । বিশ্বনবী আরও বলেন, লাইলাতুল ক্বদর ২৯, ২৭,২৫ কিংবা ২৩ তারিখেও হতে পারে । হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) বলেন, মহনবী (সাঃ) যখন রমযানের শেষ দশকে প্রবেশ করতেন , তখন নিজের লুঙ্গি শক্তভাবে বেঁধে নিতেন অর্থ্যাৎ ইবদাতের প্রতি খুবই মনোনিবেশ করতেন । এ রাতে তিনি জাগ্রত থাকতেন এবং নিজ পরিবারবর্গকেও জাগিয়ে দিতেন । হযরত আয়েশা সিদ্দিকা (রাঃ) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর কাছে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘হে আল্লাহর নবী ! যদি আমি লাইলাতুল ক্বদর পেয়ে যাই তবে আমি কি বলব ? রাসূল (সাঃ) বললেন, বলবে হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল, ক্ষমাকে ভালবাসেন, আমাকে ক্ষমা করে দিন’ (সুনান আত তিরমীযি-৩৫১৩) । হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে বলতে শুনেছি, লাইলাতুল ক্বদর আসলে মহান আল্লাহ তায়ালা বলেন-হে আমার বান্দা, আমার কাছে প্রার্থনা কর, আমার সম্মান মর্যাদার কসম, আজ তোমরা আখেরাতের জন্য যা কিছু প্রার্থনা করবে আমি তোমাদের তাই প্রদান করব । আর তোমাদের দুনিয়ার জন্য যা কিছু প্রার্থণা করবে সেদিকেই আমি দৃষ্টি দিব । আমার সম্মানের কসম, তোমাদের পাপসমূহ গোপন রাখা হবে যেহেতু তোমরা আমাকে পর্যবেক্ষক হিসেবে গ্রহন করেছ । আমার সম্মানের কসম, তোমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করা হলো । তোমরা আমাকে সন্তুষ্ট করেছ বলে আমিও তোমাদের উপর সন্তুষ্ট । প্রতিটি জিনিস চেনার জন্য আলাদা কিছু বৈশিষ্ট্য থাকে । লাইলাতুল ক্বদর কোন রাত্রিতে হতে পারে তা চেনার জন্য কিছু লক্ষণের কথা হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন । এ প্রসঙ্গে হযরত উবাদা বিন সামেত বর্ণনা করেন, বিশ্বনবী (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, লাইলাতুল ক্বদরের নিদর্শন হচ্ছে- এ রাতটি পরিষ্কার ও উজ্জল হবে । মনে হবে যেন উজ্জ্বল, নীরব ঠান্ডা চাঁদ উদ্ভাসিত হয়েছে । এ রাতে অধিক গরম বা অধিক ঠান্ডা হবে না । সকালের সূর্য হবে মৃদু ধূসর ও আলোক বিশিষ্ট । টিপ টিপ বৃষ্টি হতে পারে । এ রাতে আবহাওয়া হবে ভারসাম্যপূর্ণ । মোটকথা এ রাতের ইবাদাতে অন্তরে প্রশান্তি ও মু’মিনের বিশেষ প্রফুল্লতা আসবে । যা অন্য কোন রাতে আসে না ।
বিশেষ কয়েকটি কারনে লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রি অত্যন্ত ফযিলতপূর্ণ । এসকল কারনের মধ্য থেকে কয়েকটি হল ১-লাইলাতুল ক্বদরের রাতে পুরো কোরআন শরীফ লাউহে মাহফুজ থেকে প্রথম আকাশে নাযিল হয়েছে । ২- এ রাতের ইবাদাত হাজার মাসের ইবাদাতের চেয়েও উত্তম । ৩- এ রাতে ভাগ্য নির্ধারণ করা হয় । ৪-এ রাতে নফল নামাজ আদায় করলে মু’মিনদের অতীতেকৃত সগীরা গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় । ৫- লাইলাতুল ক্বদরের রাত তালাশের জন্য বিশ্বনবীর নির্দেশ রয়েছে । ৬-এ রাত পাওয়ার জন্য রাসূল (সাঃ) অধিক পরিশ্রম করতেন । ৭- আল্লাহর নির্দেশে এ রাতে পৃথিবীতে অসংখ্য ফেরেশতা নেমে আসে এবং উম্মতে মুহাম্মাদীর জন্য দোয়া করে । যে সকল মুসলমান নর-নারী পবিত্র লাইলাতুল ক্বদর পাওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করে এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির নিমিত্তে আল্লাহর ইবাদাত করে আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে বিশেষ পুরষ্কার দেওয়ার ঘোষণা করেছেন । হাদীস শরীফে এসেছে, ‘আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে ফেরশতাগণ এ রাতে আমলকারী যখন আমল পূর্ণ করবে তার প্রতিদান কি হবে ? ফেরেশতাগণ উত্তরে বলেন, তাদের প্রতিদান পূর্ণ করে দিন । আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমরা স্বাক্ষী থাক, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম’ । হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) অন্য এক হাদীসে ঘোষণা করেছেন, যে ব্যক্তি ইমানের সাথে ও সওয়াবের উদ্দেশ্যে রাত্রি (লাইলাতুল ক্বদরের) জাগরণ করে ইবাদাত-বান্দেগী করে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হয় ।
লাইলাতুল ক্বদরের রাত অত্যন্ত তাৎপর্যমন্ডিত ও গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারনে প্রত্যেকটি মুসলমান নর-নারীকে এ রাতে কিছু বিষয় মেনে চলতে হয় এবং কিছু বিষয় এড়িয়ে চলতে হয় অর্থ্যাৎ শবে ক্বদরের রাতে কিছু পালনীয় এবং কিছু বর্জনীয় কাজ রয়েছে । লাইলাতুল ক্বদরে যে সকল আমল করা আবশ্যক তার মধ্যে অন্যতম কয়েকটি হল-ক. ফরয সালাতসমূহ ঠিক সময়ে জামাআ’তের সাথে আদায় করা । কেননা হাদিস শরীফে এসেছে, সময়মত সালাত আদায় করা জান্নাতের নিকটবর্তী আমলসমূহের অন্যতম । খ. কিয়ামে লাইলাতুল ক্বদর করা অর্থ্যাৎ রাতে তারাবীর নামায আদায় করা । গ. লাইলাতুল ক্বদরের রাতে বেশি বেশি দুআ, প্রার্থনা করা । এ রাতে দুআর গুরুত্ব প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে এসছে, রাতে ও দিবসে প্রতি মুসলিমের দুআ কবুল হয় । ঘ. লাইলাতুল ক্বদরের রাত্রিতে বেশি বেশি করে আল্লাহর জিকির, তাসবীহ তাহলীল, তওবা-এস্তেগফার, কুরআন তেলাওয়াত করা উত্তম । হাদীস শরীফে কুরআন তেলাওয়াতকে সর্বোত্তম নফল ইবাদাত বলে ঘোষণা করা হয়েছে । এ রাতকে কেন্দ্র করে আমাদের সমাজে কিছু কুপ্রথা চালু হয়েছে । অন্যান্য সামাজিক বিষয়ের সাথে মিল রেখে লাইলাতুল ক্বদরের রাতে বিভিন্ন রকম অনুষ্ঠানমালা স্থির করা হচ্ছে । যেমন-ভিআইপি ব্যক্তিদের বক্তব্য দেয়ার জন্য আমন্ত্রন করা, রেডিও, টিভি ও পত্র-পত্রিকায় প্রকাশ ও প্রচার করার জন অনুষ্ঠানমালা নির্মানের জন্য অধিক অর্থ ব্যয় করা । লাইলাতুল ক্বদরের রাত সম্পূর্ণ ইবাদাতের জন্য হলেও বিভিন্ন অনুষ্ঠানমালা নিয়ে আমাদের সমাজের কিছু লোক ব্যস্ত হয়ে পড়ে এবং ইবাদাত ছেড়ে দেয় । এটা আদৌ উচিত নয় কেননা এ রাতে ইবাদাতের মাধ্যমে ইইকালীন কল্যান ও পরকালীন মুক্তি লাভ হয় ।
লাইলাতুল ক্বদর একটি গুরত্বপূর্ণ ও তাৎপর্য মন্ডিত ইবাদাত হওয়ার পরেও আমাদের সমাজের কিছু লোক এ ইবাদাতের সুফল থেকে বঞ্চিত হবে । বাহ্যত তারা এ ইবাদাতে পূর্ণ রাত্রি কাটালেও আল্লাহর রাসূলের ঘোষাণা অনুযায়ী তারা এ রাত দ্বারা মোটেও উপকৃত হবে না । হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, লাইলাতুল ক্বদর উপস্থিত হলে প্রত্যেক মু’মিন পুরষ ও মহিলার উপর ফেরেশতাগণ সালাম প্রেরণ করেন । তবে মদ পানকারী, শুকরের গোস্ত ভক্ষনকারী এবং জাফরানের সুগন্ধি ব্যবহারকারীর নিকট ফেরেশতাদের সালাম পৌঁছে না অর্থ্যাৎ তারা ফেরেশতাদের দোয়া থেকে বঞ্চিত হয় । অন্য এক হাদীসে এসেছে, বিশ্বনবী (সাঃ) বলেছেন, পিতামাতার অবাধ্য সন্তান, আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী ও বিদ্বেষীর প্রতি ফেরেশতাগণ সালাম প্রেরণ করেন না । এরা সর্বদাই আল্লাহর ফযিলত ও রহমত থেকে বঞ্চিত থাকেন । তবে যদি তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে তবে আল্লাহ তায়ালা তাদের তওবা কবুল করতে পারেন ।
নিশ্চয়ই লাইলাতুল ক্বদর একটি পবিত্র এবং মহিমান্বিত রাত । এ রাত ঘুমিয়ে কাটানোর রাত নয় । ইসলামকে যারা পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে ধারন করে তাদের প্রত্যেকেরই এ রাতে আল্লাহ তায়ালার ইবাদাত বান্দেগীতে কাটানো উচিত । আল্লাহ তায়ালা তাদেরকেই ভালবাসেন যারা তার কাছে বিনীত । কাজেই যে রাতগুলোর ব্যাপারে আল্লাহর রাসূলের নির্দেশ দিয়েছেন সে রাতগুলোতে বেশি বেশি আল্লাহর ইবাদাতে মশগুল থাকা প্রতিটি মুসলিম নর-নারীর ঈমানী দায়িত্ব । অধিকাংশ আলেমের মতে, ২৭শে রমাযান দিবাগত রাত্রিতে লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি । কাজেই বিশ্বনবীর নির্দেশ মত ২৭শে রমাযান জামা’আতের সাথে এশার নামায আদায় থেকে শুরু করে সারা রাত্র আল্লাহর ইবাদাত করে এবং তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে যাতে জামাতের সাথে ফযরের নামায আদায় করতে পারি তার চেষ্টা করা উচিত। সর্বোপরি আল্লাহর কাছে সব সময় বেশি বেশি দোয়া প্রার্থনা করতে থাকব, যাতে আমাদের ভাগ্যে লাইলাতুল ক্বদর উপস্থিত হয় এবং এ রাতে ইবাদাত করার মাধ্যমে আমরা হাজার রাতে ইবাদাত করার সমতুল্য সওয়াব অর্জন করতে পারি । আল্লাহ আমাদের ভাগ্যকে প্রশস্থ করে দিন । আল্লাহর কাছে যখন নিজেদের জন্য কিছু চাইব তখন যেন বিশ্বের মুসলিম উম্মাহ বিশেষ করে গাজার অত্যাচারিত মুসলমানদেরকে রক্ষার জন্যও আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি ।
রাজু আহমেদ । কলাম লেখক ।
বিষয়: বিবিধ
১১৫৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
শুভেচ্ছা...
মন্তব্য করতে লগইন করুন