০৬-০২-২০১৪ তারিখের ডায়েরী

লিখেছেন লিখেছেন রাজু আহমেদ ০৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১২:২২:৪৪ রাত

সকাল থেকেই মন খারাপ । রাতের দীর্ঘ ঘুম থেকে জেগে ফজরের নামাজ আদায় করে শরীর খারাপ থাকার কারনে আবারও বেশ লম্বা চওড়া একটি ঘুম দিয়েছিলাম । উঠতে উঠতে দেখি সকাল সাড়ে আটটা বেজে গেছে । বালিশের নিচে রাখা মোবাইলটা হাতে নিতেই দেখি মেঝ ভাইয়ের বউ মানে মেঝ ভাবী কল দিয়েছিল সকাল সাড়ে সাতটায় । তড়িঘড়ি করে কল ব্যাক করলাম । ভাবী কল রিসিভ করতেই শুনলাম তার আশে পাশে অনেক মহিলাদের গলার আওয়াজ । এ আওয়াজ শুনে অবাক হওয়ার কিছু ছিল না কেননা ভাবী খুব মিশুক প্রকৃতির হওয়ার কারনে তার কাছে মহিলারা থাকেই । কিন্তু ফোনে ভাবী যা বলল তা শুনে খুবই কষ্ট অনুভব্ করলাম । বরিশালে ভাবীরা যে বাসায় বাড়া থাকে ( বাংলাবাজারের খান মঞ্জিলের তিন তলায়) । সে বিল্ডিংয়ের প্রতি তলাতে চারটি করে ফ্লাট থাকায় চারটা ফ্লামিলি থাকে । ভাবীদের ঠিক উল্টো অর্থ্যাৎ দরজার মুখোমুখি দরজার ফ্যামিলিটির সদস্য সংখ্যা চারজন । স্বামী স্ত্রী ও একটি মেয়ে ও একটি ছেলে । মেয়েটির নাম হোমায়রা হিমু । বয়স সতের কি আঠারোর মধ্যে হবে । পড়াশুনা করত বরিশাল মডেল স্কুল এন্ড কলেজে একাদশ শ্রেনীতে । সঠিক জানিনা তবুও মনে হয় মাস চারেক আগে বিয়ে হয়েছিল । স্বামী ঢাকায় কোন এক ফার্মে জব করে । আমি প্রায়শই বরিশাল থাকার কারনে বাসার মধ্যে অথবা ছাদে অবস্থান করতাম । তবে দীর্ঘ দিন থাকার মধ্যেও মেয়েটিকে বার দু’য়েক দেখেছি । সর্বশেষ গত সপ্তাহে আমি সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় মেয়েটি ওপরে ওঠছিল । কানের কাছে মোবাইল ছিল বলে আমাকে সম্ভবত ততোটা খেয়াল করে নি । আমিই পাশ কাটিয়ে নেমে গিয়েছিলাম । ভাবীর কাছে মাঝে মধ্যে আসত অথবা ভাবী তাকে ডাকত । আমার সাথে কখনো কথা হয় নি । আজকে শত চেষ্টা করেও তার অবয়ব স্মরণ করতে পারছি না । তবে গাঁয়ের রং ফর্সা ছিল এবং দেখতে অকেটাই সুশ্রী ছিল সে ব্যাপারে অনেকটাই নিশ্চিত । এমন একটি মেয়ে ০৫/০৫/২০১৪ তারিখ রাতে চারতলার ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে সেটা ভাবতেই যেন কষ্ট হয় । ভাবীর সাথে কথা বলে যেটুকু জানতে পেরেছি তাতে মনে হয়েছে স্বামীর সাথে বোঝা-পরা ভাল ছিল না । প্রায়ই ঝগড়াজাটি হত । স্বামী-স্ত্রীর কথোপকথনের অনেক রেকর্ডও নাকি আছে । সে যাই হোক স্থানীয় পত্রিকা ‘আমাদের বরিশাল’ এর রিপোর্ট পড়ে মনে হয়েছে আত্মহত্যার রাত্রে প্রেমের সূত্রধরে মায়ের সাথে ঝগড়া হয়েছে ।

বয়সটা আবেগের ছিল তাতে কোন সন্দেহ নাই । মায়ের বকুনি ভাল লাগে নি তাই আত্মহত্যা করে থাকলে সেটাও ভূল সিদ্ধান্ত ছিল । যে যাবার সে চলে গেছে । মা, বাবা এবং ছোট ভাই হাজার বার ডাকলেও সে আর ফিরে আসবে না । আমি ঘটনাটিকে ঠিকমত ফুটিয়ে তুলতে পারিনি অথবা তুলতে চাইও না । এ ঘটনা থেকে এদেশের প্রতিটা ছেলেমেয়ের অনেক কিছু শেখার আছে । বাবা মা সন্তানের জন্য যে সিন্ধান্ত গ্রহন করুক না কেন তার মধ্যে অবশ্যই কোন না কোন কল্যান নিহিত আছে । একটি কাজ করার আগে প্রত্যেকেই হাজার বার ভাবুন । আমি এ কাজটি কেন করছি ? একটি ভূল সিদ্ধান্ত গ্রহন করে ফেললে জীবন চলে যেতে পারে যেমনটি হয়েছে হিমুর ক্ষেত্রে ।

রাজু আহমেদ



বিষয়: বিবিধ

৯৫৪ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

174017
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:৪১
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : অপসংস্কৃতির কাছে আজ আমাদের সমাজ বেহাল সেই সুত্রে আমাদের হিমুরা আত্মহত্যা করে।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
127491
রাজু আহমেদ লিখেছেন : এ অপসংস্কৃতি থেকে উত্তরণের পথ কোথায় ?
174071
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:২৬
ইবনে হাসেম লিখেছেন : বয়সের এ আবেগকে নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের পরিবারের এবং স্কুল কলেজে যে ইসলামিক শিক্ষা, সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ থাকা দরকার সেসবই এখন হাওয়া হয়ে উড়ে যাচ্ছে আকাশ সংস্কৃতি, ভারতীয় সিরিয়াল নাটক, হাতে হাতে অনিয়ন্ত্রিত মোবাইল, থ্রি ডাব্লিউ ওয়েব এবং সেকুলার সরকারের ইসলামের প্রতি বিমাতাসূলভ আচরণের কারণে। দেখলেন না সেদিন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের তথাকথিত শিক্ষিকা হিজাবধারীদের সাথে কি জঘন্য আচরণ করলো?
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৭
127492
রাজু আহমেদ লিখেছেন : আপনার সাথে সম্পূর্ণ একমত । পরিবর্তমন চাই ।
174083
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫৬
প্যারিস থেকে আমি লিখেছেন : ভাই ৫/৫/২০১৪ আসতে যে এখনো অনেক বাকি।
০৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ সকাল ১০:৫৮
127493
রাজু আহমেদ লিখেছেন : দু:খিত ভাই এটা একটি অনাকাঙ্খিত ভূল । তারিখটা হবে ৫/২/১৪ । আশা করি মার্জনা করবেন ।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File