"একজন আলোকবর্তিকা"
লিখেছেন লিখেছেন লুকোচুরি ০২ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৩:১৩:৪২ দুপুর
“প্রতিটি মানুষই আমাদের জীবনের কোন না কোন শিক্ষার বাহন হিসেবে আসে।” এই কথাটি আমাকে যিনি বলেছিলেন তিনি নিজেও শিক্ষার ফল্লুধারা সাথে করে নিয়ে এসেছিলেন আমার জন্য। পরবর্তীতে শুধু একজন শিক্ষিকাই নয়, মা, বোন,বন্ধু সব রূপে তিনি আমার মনের ঘরে জায়গা করে নিয়েছিলেন। একই মানুষকে এই চার রুপেই পেয়েছি। নিঃস্বার্থ এই মানুষটি গভীর মমতায় শত মাইল দূরে থাকা মানুষকে কাছে টেনে নিতে পারে খুব সহজে। খুব কম মানুষকেই এমন হতে দেখেছি। এই মানুষটাকে পরম নির্ভরতার জায়গা বললেও ভুল হবে না। তাঁর সাথে পরিচয় অধরা জগতে হলেও এখন আত্মার সাথে মিশে গেছেন তিনি। আম্মুর পরে যদি কোন নারীকে আমার সবচাইতে শ্রদ্ধার আর ভালবাসার মনে হয় এটা বিনা বাক্যে তিনি হবেন।
কখনো পরম মমতাময়ী বোন হয়ে, কখনো বন্ধু হয়ে, কখনো শিক্ষক অথবা মনের বিশালতায় আমাকে কন্যার জায়গায় নিয়ে বুঝিয়েছেন বহু কিছু, চোখে আংগুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন ভুল, বাতলে দিয়েছেন ভুল শুধরানোর উপায়। রাহবার হয়ে পথ দেখিয়েছেন সত্য আর সুন্দরের। বন্ধু হয়ে সঙ্গ দিয়েছেন অলস সময়গুলোতে। অজ্ঞানতার বেড়াজাল ছিন্ন করে হাত ধরে উদ্ধার করে আনতে চান জ্ঞানের আলোয়। আর সেই আলোর মিছিলে সাথী হয়ে নিয়ে যেতে চান বহু বহু ক্রোশ দূরে। স্বপ্ন নাওয়ে ভেসে ভেসে পাড়ি দিতে চান স্বপ্নিল সমুদ্র আর পৌছুতে চান স্বপ্নের চুড়ান্ত শিখরে যেখানে বাস্তবতা আঁচল বিছিয়ে অপেক্ষা করছে স্বপ্নারোহীদের।
যার উচ্চারিত প্রতিটি বর্ণমালা গভীর সমুদ্র থেকে তুলে আনা মুক্তোর মত দামী, যার কথাগুলো মনের কর্ণকুহরে বার বার ধ্বনিত হয়ে ঝংকৃত হতে থাকে আর মনে করিয়ে দিতে থাকে, -ছোট্ট সোনা ওই পথে যেও না, আল্লাহর ক্রোধের রোশানলে পড়বে না হয়, এই যে এই দিকে যাও আর আল্লাহর প্রিয় বান্দা হয়ে যাও। যা কিনা একজন মানুষকে পথভোলার দল থেকে নিয়ে আসে সঠিক পথে। কারণ তার কথামালার প্রতিটা কথাই হয় কুর'আন সুন্নাহর ভিত্তিতে। আর এমন করে একজন মায়ের রুপ ফুটে ওঠে তার মাঝে।
আশা জাগানিয়া হয়ে হতাশাগুলোকে মিটিয়ে দেন মন থেকে। উৎসাহ দেন, নিজের নাফস আর শয়তানের গোলামী বাদ দিয়ে আল্লাহর একনিষ্ঠ বান্দা হওয়ার। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলে সামনে এগিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। অন্যের দোষ-ত্রুটি দেখার আগে নিজের মনের ভিতরে আয়না বসিয়ে নিজেকে ভাল করে দেখতে বলেন। যোগ্য করে নিজেকে তৈরি করতে বলেন সমাজকে বদলে দেবার জন্য।
এক কথায় কোনপ্রকার প্রাপ্তির আশা ছাড়াই মানুষকে অন্ধকার থেকে মুক্ত করে আনতে চান তিনি। আমার জীবনেও আলোকবর্তিকা হয়ে আসা সেই মানুষটির “আফরোজা হাসান”।আমার সাধ্য নাই তার জন্য কিছু করার, না তাকে কিছু দেবার, তিনি এখনো আমার জন্য যা করছেন তা ভাষায় বলে প্রকাশ করার মত না। আমার এমন কোন শব্দ জানানাই যা দিয়ে তাঁকে যথাযথ ভাবে ধন্যবাদটুকু দিতে পারি। মনের গভীরে, একদম গহীনে কোথাও তাঁর জন্য একটা জায়গা আপনা আপনি তৈরি হয়ে গেছে। আমার হয়ত সাধ্য নেই কিছু দেয়ার কিন্তু মহান আল্লাহ্ পাকের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। দুয়া করি, মহিমান্বিত আল্লাহ্ সুবহানাহু তা'আলা তাঁর অফুরন্ত ভান্ডার থেকে যেন অনেক অনেক অনেক কিছু দিয়ে পুরষ্কৃত করেন আমার এই বিশেষ মানুষটাকে। (আমীন)
বিষয়: বিবিধ
২০৭০ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক অনেক দোয়া রইলো তোমাদের দুইজনের জন্যই।
আমার খুব প্রিয় আরেকটি বাণী তোমার জন্য।
আমার জন্য একটু দুআ চাই আপনার কাছে
আল্লাহুম্মা আমীন। আল্লাহ্ আপনাকে এবং আপনার পরিবারের সবাইকে তাঁর প্রিয় বান্দা করে নিন। আর জাযাকাল্লাহু খাইর।
আপনার জন্যও অনেক অনেক দোআ। যাজাকিল্লাহু খাইর। আর আফরোজা আপুম্মুণির জন্য এই অশ্রুমাখা মন্তব্যটা দিয়ে গেলাম।
আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়াতা'আলা যেন এই অসাধারন মানুষটাকে কবুল করে নেন। তাঁর প্রিয় বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করে নেন। উনার সব প্রয়োজনীয়তা, সমস্ত যায়েজ ও মোবাহ্ ইচ্ছেগুলো যেন আল্লাহ্ তা'আলা পুরণ করে দেন। আমীন।
আমার জন্যও দোআ করবেন।
http://www.bdmonitor.net/blog/blogdetail/detail/8159/samiya007/47188#.VImH_fnohX8
জাযাকিল্লাহু খাইর।
আদর্শময়ী এমন মহিয়ষী নারীর জন্যে অনেক শুভ কামনা জানাই!
মন্তব্য করতে লগইন করুন