"মাতা ও তাহার কন্যারা"
লিখেছেন লিখেছেন লুকোচুরি ১৫ নভেম্বর, ২০১৪, ০৭:৫০:৪২ সন্ধ্যা
রাজ্যের নাম স্বপ্নপুরী। না, না... কল্পনার স্বপ্নপুরী নয় এটা সত্যি সত্যি স্বপ্নপুরী। কতগুলো স্বপ্নিল মানুষ এই রাজ্যের বাসিন্দা এছাড়াও স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে এমন মানুষও রয়েছে স্বপ্নপুরীতে। স্বপ্নিল মানুষগুলো জেগে জেগে, ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে স্বপ্ন দেখে যায় অনবরত। শুধু তাই নয় তারা তাদের স্বপ্নগুলো পরবর্তী প্রজন্মের অন্তরে রেখে যেতে চায়।
তাদের কাজ স্বপ্নের বীজ বোনা, চারা গাছের দেখাশোনা করা, চারা গাছ বড় করা তারপর সেই গাছের স্বপ্ন ফল সবার মাঝে বিলিয়ে দেয়া। এভাবে সারা রাজ্যে স্বপ্ন কায়েম করতে বদ্ধ পরিকর তারা। কারন রাজ্যের মানুষজন স্বপ্ন দেখতে ভুলে গেছে, তারা মিথ্যা মোহ আর দুষ্ট দৈত্যের চক্রান্তে পড়ে তারা অলীক বস্তুর পিছনে ছুটছে। অথচ আজ অবধি একটা মানুষও সেই অলীক বস্তুর খোঁজ পায়নি। তারা শুধু ছুটে চলছে তো চলছে।
স্বপ্নরাজ্যের রয়েছে অনেক গুলো প্রদেশ সব প্রদেশের রাজা, রানী, উজির নাজির, পাইক পেয়াদা, মন্ত্রী, সৈনিক সবাই স্বপ্ন দেখে। স্বপ্নপুরীর মানুষ জনকে স্বপ্ন দেখানোর এবং তা বাস্তবায়নের গুরু দায়িত্ব তাদের।
সে যাই হোক, আজ গল্প বলি এক প্রদেশের স্বপ্ন রানীর আর স্বপ্নালু রাজন্যাদের। স্বপ্ন রানীকে সবাই স্বপ্ন মাতা বলে ডাকে আর তার কন্যাদের ডাকে স্বপ্ন কন্যা। একদল স্বপ্নালু কন্যাকে স্বপ্ন মাতা তার মহলে নিয়ে এসেছেন। স্বপ্ন বিলাসী চোখগুলো প্রতি মুহুর্তে কত শত স্বপ্নের জাল বুনে যায়। আর মাতাও তাদের সাথে যোগ দেন।
স্বপ্ন কন্যারা যখন ক্লান্ত হয়ে যায়, স্বপ্ন দেখতে ভুলে যেতে বসে তখন মাতা কন্যাদের সাথে নিয়ে ডুব দেন স্বপ্ন ঝিলে। কন্যারা ঝিল থেকে উঠে আসে আলোকোজ্জ্বল চেহারা নিয়ে, নতুন করে প্রাণ ফিরে পায় তারা, মাতা তাদের মাঝে প্রানের সঞ্চার ঘটান নতুন করে, চোখে মুখে আনন্দ খেলা করতে থাকে, স্বপ্ন দেখা শুরু করে নতুন উদ্যমে নতুন উচ্ছাসে, তারপর নেমে পড়ে মাঠে।
কিন্তু দুষ্ট দৈত্য তো এত সহজে হাল ছাড়ার নয়, প্রাণপণে বাধা দিতে থাকে। কন্যারাও দমে যাবার নয়, তাদের মাতা যে সবসময় সাথে আছে। কন্যারা স্বপ্ন দেখে সত্য ও সুন্দরের, স্বপ্ন দেখে হানা হানি, মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, যুদ্ধ বিগ্রহ, অভাব, অশ্লীলতা, মিথাচার, অহংকার মুক্ত একটি পৃথিবীর মোট কথা অদ্ভুত সুন্দর একটি পৃথিবীর। যেখানে মানুষ দিনের শুরু করবে তার সৃষ্টিকর্তার স্মরণের মাধমে। প্রতিদিন সুয্যি মামা আসবে মিষ্টি মধুর ভোরের সাথে, ঊষার আলো কিরণ ছড়াবে প্রতিটি মানুষের মনে, আলোকচ্ছটায় উদ্ভাসিত মানুষগুলো তাদের মনের কিরণ দিয়ে পুড়িয়ে দেবে দুষ্টু দইত্যের সব বংশধরদের। এভাবে একের পর এক নীরব ভোরের পর আসবে স্নিগ্ধ সকাল, শান্ত দুপুর তারপর মন ভাল করে দেয়া বিকেল এরপর ঘুম ঘুম রাত। কেটে যাবে সবার সময় স্বপ্ন ঝিলে ডুব দিয়ে, পরোপকার করে, একে অন্যের আনন্দ ভাগ করে, সৃষ্টিকর্তার আদেশ পালন করে। এভাবে প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম চলে যাবে শেষ দিন পর্যন্ত। আর তারপর তারা পুনরুত্থিত হবে প্রাশান্ত চিত্তে তাদের প্রভুর সাথে দেখা করতে, সবাই উদগ্রীব থাকবে কখন প্রভু তার সাথে দেখা করবে।
.........................................................
আমাদের সবারই একটা করে স্বপ্ন জগৎ থাকে। সেখানে নিজেই রাজা নিজেই প্রজা। খুব সহজেই আমরা সবাই আমাদের স্বপ্নগুলোকে সুন্দর করে সাজাতে পারি। আর হারিয়ে দিতে পারি দুষ্টু দইত্যকে। দুষ্টু দইত্য আর কেউ না, সে হচ্ছে বিতাড়িত শয়তান, আমাদের দুনিয়াবি চাহিদা। যখন হতাশা আমাদের ঘিরে ধরবে, স্বপ্ন দেখা ছেড়ে দিব তখন স্বপ্ন ঝিলে ডুব দিয়ে আসতে পারি অনায়েসে, সেখানে ডুব দিতে সাঁতার কাটতে জানতে হয় না, কারন স্বপ্ন ঝিল সেতো কুরান, সুন্নাহ, অধ্যয়ন করাকে বুঝিয়েছি, যত আমরা জানব তত আমাদের জ্ঞানের পরিধি বাড়বে, আমরা তত আমাদের চাহিদাগুলোকে লাগাম দিয়ে টেনে ধরতে পারব, ততই কৌশুলী হয়ে উঠতে পারব শয়তানকে হারিয়ে দিতে।
[আমাদের স্বপ্নপুরীর এক রাজকন্যাকে উপহার হিসেবে দিচ্ছি এই গল্পটি। সে স্বপ্ন রাজকন্যা থেকে অন্য স্বপ্ন রাজ্যের রানী হতে চলেছে কিছুদিনের মধ্যে, ইন শা আল্লাহ্। তার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা আমাদের মাতা ও অন্য কন্যাদের পক্ষ থেকে।]
বিষয়: বিবিধ
১৮৮১ বার পঠিত, ১৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
...............
হ্যারি ভাইয়া আমি তো ব্লগে আজ এলাম। আগে এলে একটা কার্ডের ব্যবস্থা করতে পারতাম। বিয়ে তো হয়ে গিয়েছে :(
মন্তব্য করতে লগইন করুন