ভগ্নীকে ভ্রাতা
লিখেছেন লিখেছেন আবু সিদ্দীক ২৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৭:৫০:৫৭ সন্ধ্যা
বাঙ্গালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু-কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদিও আমার কাছে তাঁর মাতা সম্বোধনই যথোপযুক্ত, জাতির পিতার কন্যা সুত্রে বোন সম্বোধনটিই চয়ন করছি। আশা করব কেউ তাতে ধৃষ্টতা খোঁজার চেষ্টা করবেন না।
পত্র নং-০১
পরম শ্রদ্ধেয় বোন! আপনি গোপালী পিতার সত্যিই কপালী কন্যা। আপনার পিতা গোটা বাঙ্গালী জাতির পিতা তাই বাঙ্গালী হিসেবে যারা পরিচয় দিতে লজ্জিত ও কুণ্ঠিত নয় তারাও নিজেদের কপালী ভাবতে গৌরববোধ করবে। আমিও করি। আমাদের কির্তিমান পিতার আপোষহীন নেতৃত্বে পাকিস্থানী শাসন-শোষনের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন এবং ৯ মাসের মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে এদেশ স্বাধীন হয়েছিল। নিরংকুশ নেতৃত্ব ও কতৃত্বের আসনে বরন করে সমগ্র জাতি তার পিছনে ঐক্যবদ্ধ ছিল। তখন আমি ছিলাম ৭ম শ্রেনীর ছাত্র। আর আজ অবসর সময়ের কাছাকাছি একজন শিক্ষক। ছাত্র জীবন থেকে এ পর্যন্ত রাজনৈতিক আন্দোলন, ক্ষমতার পালাবদল সব কিছু দেখেছি এবং ইতিহাসের ছিটে ফোটা যা কিছু পড়েছি তার প্রভাবে আমার উপলদ্ধি থেকে বর্তমান প্রেক্ষাপটে আপনাকে কিছু লিখতে চাই, আপনার প্রতি আমার পরম শ্রদ্ধায়-শুধু বিবেকের তাড়নায়। আমার বক্তব্য সাঠিক না হতে পারে এবং কারো কাছে গ্রহন যোগ্য না হতেও পারে তবুও লিখছি গ্রাম বাংলার জনপদের সাধারন সংখ্যা গরিষ্ঠ মানুষের মনের যে ভাষা অতী নিকট থেকে নিরন্তর পাচ্ছি তার সার সংক্ষেপ। যেহেতু আমি কোন দলের সাথে সংশ্লিষ্ট নই তাই আমার কথার গতি দলান্ধ বা কোন দলের পক্ষে নয়- সম্পূর্ন নীরপেক্ষ।
১। স্বাধীনতা ও মুক্তি যুদ্ধের চেতনাঃ- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বাংলাদেশ গড়ার আপনার দৃঢ় প্রতিজ্ঞাকে আপামর জনতা আভিনন্দন জানায়। যে জাাতির সাহসি সন্তানেরা ৯ মাস রক্ত ক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে সে জাতি মুক্তি যুদ্ধের চেতনার বিপরীতে অবস্থান নিতে পারে না। কিন্তু এই চেতনাকে ভিন্ন-ভিন্ন পক্ষহতে ভিন্ন-ভিন্ন ব্যাখ্যা দেয়ার মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। মূল চেতনা সম্পর্কে সুদৃঢ় ঐক্য পরিলক্ষিত কিন্তু এর ব্যাখ্যা ও স্বরুপ নিয়ে জাতি বিভক্ত। কোন অনৈক্য ও বিভক্তি কোন মহৎ উদ্দেশ্য ও লক্ষকে দৃঢ় ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠা করতে পারেনা। তাই মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সুস্পষ্ট করে জাতির কাছে উপস্থাপন ও ব্যাপক প্রচার হওয়া প্রয়োজন।
এক প্রকারের ধারনার মধ্যে রয়েছে বাক স্বাধীনতা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি, শোষন বঞ্চনা হতে নিস্কৃতি, সকল শ্রেনীস্বার্থের প্রভাব মুক্ত সুবিচার, প্রতেকের ধর্ম কর্ম পালনের অবাধ অধিকার ইত্যাদি।
আর এক প্রকারের ধারনার মধ্যে রয়েছে ধর্ম নীরপেক্ষতা, অসম্প্রদয়ীকতা, মুক্ত চিন্তা, প্রথা বিরুধী অবস্থান ইত্যাদী।
উভয় প্রকারের ধারণার মধ্যে তেমন কোন মৌলিক পার্থক্য নাই বলে মনে করি। কিন্তু ৩য় আর একটি ধারনা বর্তমান বহুলভাবে প্রচলিত ও সাধারন জনতার মাঝে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে। এখানেই আমার আশংকা সে মতটি হলো সরকারী ও বিরোধী দলিয়দের পক্ষ হতে দলীয় ও জোট গত বক্তত্য যাই থাক সেটি তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য মাত্র। ক্ষমতায় থাকা আর ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য রাজনৈতিক দল গুলোর কেবল অপকৌশল বৈ নয়। তাই রাজনৈতিক দল ও জোটগুলো তারাই স্বাধীনতা ও মুক্তি যুদ্ধের চেতনার পক্ষ শক্তির যত জোরালো দাবী করুক না কেন তাদের আচরনগত বাস্তবতায়, তারা ইসলামকে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা-বিরুদ্ধ এবং ইসলামের বিপক্ষের অবস্থানকে মুক্তি যুদ্ধের চেতনা বলে বিশ্বাসও ধারণ করেছে।
মাননীয় প্রধান মন্ত্রী, আপনার মত একজন ইসলাম ধর্মানুরাগী প্রত্যহ কোরান তেলাওয়াৎ ও ৫ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা নেত্রীর সম্পর্কে সংখ্যা গরিষ্ট আম জনতার এ ধারনা সত্য বলে মানতে পারি না। আমার মত অনেকেই পারে না। কিন্তু দুঃখ এবং শংকা হলো- এই ভুল ও মিথ্যা ধারনার কারণে প্রাণ প্রিয় মাতৃভূমি স্বাধীনতা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দানকারী সর্ববৃহৎ দল এবং বর্তমান স্বাধীনতার চেতনা বাস্তবায়নে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ সরকারের নেতৃত্ব দানকারী আওয়ামীলীগের বিশাল জন সমার্থন বিভ্রান্ত হচ্ছে এবং ক্রমাগত ভাবে জাতীয়তাবাদী ও ইসলামী মূল্য বোধের সাইন বোর্ডের প্রতি ঝুকে পড়েছে। গ্রাম বাংলার সিংহভাগ মানুষই আওয়ামীলীগ হতে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। কেবল মাত্র সুবিধা প্রাপ্ত নেতা কর্মিরা ছাড়া অন্য নতুন-পুরাতন আওয়ামীলীগাররা এখন স্বক্রিয় থাকছে না। অপর পক্ষে চেতানার ব্যাখ্যা নিয়ে তর্ক-বিতর্ক, বাক-বিত-া সদরে-গোপনে সমানে চলছে। জাতি ভীতরে ভীতরে বিভক্তি ও বিভ্রান্তির শিকারে পরিনত হচ্ছে।
তাই ঐক্যের জন্য, দেশ ও জাতীর জন্য, সর্বোপরি আওয়ামীলীগের জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে, স্বাধীনতার মূল চেতনা বাস্তবায়ন ত্বরান্বীত করতে এবং মুক্তি যোদ্ধাদের ত্যাগের মর্যাদা রক্ষায় স্বাধীনতা ও মুক্তি যুদ্ধের চেতনা গুলো আজকের প্রেক্ষাপটে সুস্পষ্ট করে (বিস্তারিত ব্যাখ্যা সম্বলিত) জাতির সম্মুখে পেশ করা প্রয়োজন বলে মনে করি। কারণ জনতার সামনে এ-ভুল ধারনার অনেক বাস্তব সম্মত কারণ বিদ্যামান রয়েছে। পরবর্তী পত্রে বিভ্রান্তির কারণগুলো নিয়ে লেখার আশা রইল।
E-mail:
বিষয়: বিবিধ
১৭০৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে জন জেগে ঘুমায়
তার ঘুম কে বলুন ভাঙায়?
আর শুনেও যে কানে দেয় তুলো
বলুন তারে কে শোনায়???
কোটি কোটি মাইল দুরত্বে আছি।
দোয়া করুন চাঁদের কলঙ্কের মত কোন ছায়া যেন স্পর্শ করতে না পারে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন