উপজেলা নির্বাচনের হাওয়া ঝিনাইদহ সদর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে
লিখেছেন লিখেছেন টুটুল বিশ্বাস ২২ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:১৫:২২ সকাল
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি ঃ
উপজেলা পরিষদের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর ঝিনাইদহের ৬টি উপজেলায় সম্ভাব্য প্রার্থীদের গনসংযোগ ও দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। বিশেষ করে সদর উপজেলায় শুরু করেছে নির্বাচনী হাওয়া। কারা প্রার্থী হবেন, তা নিয়ে আওয়ামী লীগ এমনকি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জনকারী বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় আওয়ামীলীগ, বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় পার্টিসহ ডজনখানেক প্রার্থীর নাম আলোচিত হচ্ছে। এ সব প্রার্থীরা দলীয় বোঝাপাড়া শেষ করে সঠিক সময়ে মনোনয়নপত্র কিনতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। বিএনপি নির্বাচনে আসবে এমন খবরে রাজনীতির মাঠ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। দলীয় সমর্থন লাভের জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতারা লবিং শুরু করে দিয়েছেন। অনেকে মতবিনিময়ের নামে দলের তৃণমূল নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করছেন। সংসদ নির্বাচন বর্জন ও প্রতিরোধ করলেও উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে অংশ নিতে বিএনপির স্থানীয় নেতারা আগ্রহী বলে সংশ্লিষ্ট দলের তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এদিকে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রার্থী হতে নড়েচড়ে বসেছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কনক কান্তি দাস আবারও প্রার্থী হবেন বলে শোনা যাচ্ছে। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সফল ব্যার্থতা যাই থাকুক সীমিত ক্ষমতা দিয়ে তৃনমুলের উন্নয়ন নিয়েই কনক কান্তি বেশি ব্যাস্ত ছিলেন। এছাড়া বতর্মান ভাইস চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জেএম রশিদুল আলম রশিদ ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুর রশিদসহ দলের কিছু তরুন নেতা প্রার্থী হতে পারেন। জেলা আওয়ামী লীগের একটি সুত্র জানায় দলীয় সভা করে একক প্রার্থী দেওয়া হবে। এদিকে বিএনপি চেয়ারপার্সনের নির্দেশনার দিকে চেয়ে আছে বিএনপির তৃনমুলের নেতারা। সে ক্ষেত্রে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বিএনপির দক্ষ সংগঠক হিসেবে পরিচিত নেতারা নির্বাচন করতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন। নেত্রী যদি উপজেলা নির্বাচন করার নির্দেশনা দেন তবে ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান প্রার্থী চুড়ান্ত করবেন। ইতিমধ্যে প্রার্থী হতে আগ্রহ প্রকাশ করছেন ঝিনাইদহ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি এ্যাডভোকেট মুন্সী কামাল আজাদ পান্নু, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট আব্দুল আলীম, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কেএম ওয়াজেদ ও পাগলাকানই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম। তবে কিছু উইনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বিএনপির পক্ষে মনোনয়ন চাইতে পারেন। এ বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক বলেন, আমরা নির্বাচনে যাব কি না, তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে বিএনপির একটি সুত্র জানায় ঘরোয়া ভাবে বিএনপির প্রার্থী বাছায় করার কাজ চলছে। চেয়ারম্যান হিসেবে এড আব্দুল আলীম ও এড মুন্সি কামাল আজাদ পান্নুর নাম শোনা যাচ্ছে। অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে বিএনপি নেতা জিয়াউল ইসলাম ফিরোজ, এনামুল হক মুকুল ও জাহিদ জোয়ারদারের নাম উঠে এসেছে। বিএনপি নির্বাচনে গেলে জিয়াউল ইসলাম ফিরোজ মনোনয়ন দৌড়ে এগিয়ে যেতে পারেন। স্থানীয় ভাবে বিএনপি নির্বাচনের কাজ জোরে সোরে চালিয়ে যাচ্ছে। ঢাকা থেকে জেলা বিএনপির সভাপতি মসিউর রহমান ফিরে এলেই সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে। এদিকে ইতিমধ্যে জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদকে জামায়াতের একক প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। এদিকে জাতীয় পার্টি (এরশাদ) থেকে প্রার্থী হতে চান দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ড.এম হারুন অর রশীদ ও ঝিনাইদহ জেলা জাতীয় পার্টির যুগ্ম আহবায়ক রাশেদ মাজমাদার। এছাড়া সদর উপজেলায় মহিলা ও পুরুষ ভাইস চেয়ারম্যান পদে এক ডজন প্রার্থীর নাম শোনা যাচ্ছে। জেলা নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, প্রথম ধাপে ঝিনাইদহ সদর, কালীগঞ্জ, কোটচাঁদপুর ও শৈলকুপা উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাকি দুটি মহেশপুর ও হরিণাকুণ্ডু উপজেলায় দ্বিতীয় ধাপে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সংসদ নির্বাচনের পরপরই উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা আছেন ফুরফুরে মেজাজে। তবে ছাড় দিতে নারাজ বিএনপি, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি। সর্বশেষ ২০০৯ সালের নির্বাচনে ঝিনাইদহ সদর উপজেলায় ৯৮ হাজার ৭৫০ ভোট পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা কনক কান্তি দাস। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জামায়াত নেতা নূর মোহাম্মদ পেয়েছিলেন ৭৪ হাজার ১১১ ভোট।
বিষয়: বিবিধ
১৬২৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন